সিএমপির এডিসি কামরুলের ১১ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোকের আদেশ
১০ জুলাই ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪, ১২:০২ এএম
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) কামরুল হাসান ও তার স্ত্রী সায়মা বেগমের মালিকানায় থাকা প্রায় ১১ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক) দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার আদালত এই আদেশ দেন।
এ পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে। অনুসন্ধান করে পুলিশ ওই দম্পতির নামে ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার স্থাবর-স্থাবর অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে। গত মাসে দুদক প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
দুদক তথ্য পেয়েছে, অনুসন্ধানের মধ্যে ওই পুলিশ কমকর্তা ও তার স্ত্রী পরস্পর যোগসাজশে তাদের সম্পদ হস্তান্তর, বিক্রি অথবা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। এ অবস্থায় অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারি পরিচালক মো. এমরান হোসেন সোমবার আদালতে উভয়ের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার আবেদন করেন।
ওই আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক ড. বেগম জেবুননেছা দুদককে উভয়ের সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধের আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু।
এডিসি কামরুল হাসানের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলায়। ১৯৮৯ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে পুলিশ বিভাগে যোগ দেন। পদোন্নতি পেয়ে তিনি সিএমপির পাঁচলাইশ, ডবলমুরিং, জেলার হাটহাজারী-বাঁশখালীসহ একাধিক থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্ব পালন করেন। সহকারি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পাবার পর তার সিএমপিতে পদায়ন হয়। তিনি সিএমপির প্রসিকিউশন শাখার সহকারি কমিশনার ও পরবর্তীতে অতিরিক্ত উপ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অপরাধ) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি সিএমপির পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার পদে আছেন।
২০২৩ সালের ৩১ মে দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে কামরুল হাসানের সম্পদের অনুসন্ধানের অনুমোদন দেয়া হয়। ১৪ আগস্ট তাকে দুদক কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে দুদক কর্মকর্তা এমরান হোসেন চলতি বছরের ১৩ মে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাতে কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৭৩ লাখ ২২ হাজার ৪৪ টাকা এবং তার স্ত্রী সায়মা বেগমের নামে এক কোটি ৬২ লাখ ৮৫ হাজার ১৮৮ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎস বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কামরুল হাসান ও সায়মার মোট স্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯১৯ টাকার। এর মধ্যে আছে, নগরীর উত্তর হালিশহরে পৃথকভাবে ৪০ শতক জমি, পশ্চিম নাছিরাবাদে শূন্য দশমিক ৩৩ শতক ও পৃথকভাবে দুই কড়া তিন সমস্ত ছয় ভাগের এক গন্ডা ভিটি ভূমি, ঢাকার সাভারে ২৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি, সাভার সিটি সেন্টার অ্যান্ড টাওয়ার নামে একটি বারো তলা ভবনের বেসমেন্টে ২২টি দোকানের সমান জায়গা যা ইনফিনিটি মেগামল নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেয়া হয়েছে, প্রথম থেকে চতুর্থ তলায় ছয়টি দোকান এবং এর ওপরে সাতটি ফ্ল্যাট।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে আরো আছে, নগরীর খুলশী মৌজায় দি চিটাগং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের আওতাধীন জমিতে নির্মিত ফয়জুন ভিলা নামে একটি ভবনে মোট ২৭০৬ বর্গফুট জায়গা, পশ্চিম নাছিরাবাদে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ ও পৃথকভাবে শূন্য ছয় দশমিক ৫৯ শতাংশ নাল জমি, পশ্চিম নাছিরাবাদে সাত শতাংশ ভিটের ওপর ঘর, ঢাকার সাভারের আনন্দপুরে ৫ দশমিক ২০ শতাংশ নাল জমি, সাভার সিটি টাওয়ারে একটি ফ্ল্যাট এবং সিডিএর অনন্যা আবাসিক এলাকায় পাঁচ কাঠার একটি প্লট।
উভয়ের অর্জিত অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে এক কোটি ৯০ লাখ টাকার। এর মধ্যে আছে, সোনালী ব্যাংকে ১৫ লাখ করে ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, বাংলাদেশ ব্যাংকে ৪৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র, সায়মার নামে এক কোটি ১৫ লাখ টাকা মূল্যের চারটি লাইটারেজ জাহাজ- এমভি প্যাসিফিক রাইডার, এমভি পানামা ফরেস্ট-১, এমভি রাইসা তারাননুম এবং বার্জ আল বাইয়েৎ।
দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু বলেন, কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে কামরুল হাসান ও তার স্ত্রীর আয়ের উৎসের কোনো সঙ্গতি পাওয়া যায়নি। এখন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে তাদের সম্পদ বিবরণী জমা দেয়ার নোটিশ দেবেন।
আদালতের আদেশের বিষয়ে দুদক চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, আদালত সমুদয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন। এ আদেশ আমাদের কাছে আসার পর আমরা সম্পদ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসহ বিভিন্ন দফতরে চিঠি দেব। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে আমরা সম্পদের রিসিভার নিয়োগের জন্য আদালতে আবেদন করবো। পাশাপাশি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের অনুসন্ধান প্রক্রিয়াও চলমান থাকবে। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সালথা উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন বহিষ্কার
হোক না সবার সুপারনিউমেরারি পদোন্নতি, কর্মক্ষেত্রে আসুক গতি
জামিনে এসে হত্যা মামলার সাক্ষীসহ ৫ জনকে কুপিয়েছে প্রধান আসামি
সীমান্তে ভারত উত্তেজনা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: ইসলামী আন্দোলন
কলম্বিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৬০
প্রতিযোগিতায় যারা টিকে থাকবে তারাই গ্রহণযোগ্য সাংবাদিক হবে
কাঁটাতার পেরিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে কুড়িগ্রামে ভারতীয় গৃহবধূ
জাতির সংকট উত্তরণে সর্বদা মানুষের আস্থা ও ভরসাস্থল জিয়া পরিবার : মীর হেলাল
স্বৈরাচার মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে বিএনপি সবকিছু নতুনভাবে শুরু করতে চায়: আমিনুল হক
গুলি করা পুলিশের শাস্তি নয়, চিকিৎসকের গ্রেফতার ফ্যাসিবাদের উদাহরণ - ডা. রফিকুল
ফেনীতে সিক্সার্স ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে ছাগলনাইয়া উপজেলা দল চ্যাম্পিয়ন
দৌলতপুর সরকারি প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
গোপালগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করণে জেলা প্রশাসকের ব্যতিক্রম আয়োজন
সৈয়দপুরে শহিদ জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালন
বিশ্বনাথের চাউলধনী হাওরে সীমানা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত
স্বভাবী চোরের শাস্তি ইসলামেই নির্ধারিত - পীর সাহেব চরমোনাই
‘সীমান্তে গন্ডগোল শুরু হয়েছে, জীবন বিপন্ন হলেও দেশের সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রাখবো’
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী: সরকারের নতুন পদক্ষেপে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ সম্ভাবনাময়
আলজেরিয়ায় কুরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ তাওহিদুলের দেশত্যাগ
লামায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষীকি পালিত