সিংগাইর উপজেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক শহিদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
১১ জুলাই ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৪, ১২:০১ এএম
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুর রহমান ওরফে ভিপি শহীদ ও তার স্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের বিঞ্জান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নারগীছ আক্তারের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৩০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে বলে মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক আল আমীন গতকাল বুধবার দুপুরে নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) তিনি এ মামলা দুটি দায়ের করেন বলে দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দুদকে দায়ের করা মামলার আসামি শহিদুর রহমান সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের অনুসারি ও তার প্রথম স্বামী প্রয়াত আব্দুর রশীদ সরকারের ভাগিনা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় শহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ করা হয়। ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি তিনি সম্পদ বিবরণী কমিশনে দাখিল করেন।
সম্পদ বিবরণীতে তার নামে ৩৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬৫০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং এক কোটি ৪৭ লাখ ৯১ হাজার ৪০৫ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট এক কোটি ৮৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্যাদি প্রদর্শন করেন।
সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে শহিদুর রহমানের নামে এক কোটি ৮৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫৫ টাকার সম্পদ অর্জনের রেকর্ডপত্র পাওয়া যায়। তার আয়কর নথি পর্যালোচনায় ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ করবর্ষে সম্পদ অর্জনকালীন তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৮১০ টাকা। ফলে তার ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় দুই কোটি চার লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৫ টাকা।
দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তার স্ত্রীর সঙ্গে যৌথ নামে ব্যাংক ঋণ (মোট ঋণের ৫০% বা অর্ধেক) পাওয়া যায় ১৮ লাখ ছয় হাজার ২২৭ টাকা। এক্ষেত্রে ব্যাংকঋণ বাদে সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় এক কোটি ৮৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৩৮ টাকা। তার অর্জিত সম্পদের বিপরীতে গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় এক কোটি ৩১ লাখ ১১ হাজার ২৬৯ টাকা। এক্ষেত্রে তার আয় অপেক্ষা অতিরিক্ত সম্পদ পাওয়া যায় ৫৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৯ টাকা। যা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ বলে প্রতীয়মান হয়। ফলে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি করা হয়।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় মামলায় নারগীছ আক্তারের বিরুদ্ধে স্বামীর অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদকে বৈধতা দানের অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত দুই কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার ৯২১ টাকা টাকার সম্পদ অর্জন ও দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৩০ লাখ ৭৮ হাজার ৭৬৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় নারগীছ আক্তারের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ করা হয়। ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি তিনি সম্পদ বিবরণী কমিশনে দাখিল করেন। সম্পদ বিবরণীতে তার নামে দুই কোটি ৭৪ লাখ ৫৩৮ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৬১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪০ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট তিন কোটি ৩৫ লাখ ৫৫ হাজার ৩৭৮ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্যাদি প্রদর্শন করেন।
তবে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে নারগীছ আক্তারের নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বাবদ মোট তিন কোটি ৬৬ লাখ ৩২ হাজার ১৪২ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্যাদি পাওয়া যায়। মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানাধীন সিংগাইর মৌজায় ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত বাড়ি নির্মাণ ব্যয়ের ক্ষেত্রে তিনি ৩০ লাখ ৭৮ হাজার ৭৬৪ টাকার সম্পদের তথ্যাদি গোপন করেছেন। তার স্বামীর সঙ্গে যৌথ নামে ব্যাংকঋণ বাদে সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় তিন কোটি ৮০ লাখ ২৩ হাজার ৯৮৬ টাকা। তার অর্জিত সম্পদের বিপরীতে গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৮৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫ টাকা।
এক্ষেত্রে আয় অপেক্ষা অতিরিক্ত সম্পদ পাওয়া যায় দুই কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার ৯২১ টাকা। যা তার জ্ঞাত আয়ের সহিত অসংগতিপূর্ণ সম্পদ বলে প্রতীয়মান হয়। আসামি নারগীছ আক্তার একজন গৃহিণী। তার নিজের আয়ের কোনো উৎস নেই। তিনি স্বামীর আয়ের ওপর নির্ভরশীল। আসামি নারগীছ আক্তারে নামে বৈধ উৎসবিহীন ওই টাকার সম্পদ তার স্বামী শহিদুর রহমান কর্তৃক অবৈধভাবে অর্জিত বলে অনুসন্ধানকালে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারা ২৬(২) ধারা ও দ-বিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত মো. শহিদুর রহমান (ভিপি শহীদ) বলেন, তদন্তধীন বিষয় নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মামলা রেকর্ড হলেও এখানকার প্রভাবশালী এমপির অনুসারিরা মামলার কপি পেয়ে ফেসবুকে প্রকাশ করে। আমি এটাকে ষড়যন্ত্র বলব। আমার প্রত্যেকটি সম্পদের ট্যাক্স পে করেছি। একই অভিযোগে ইতোপূর্বে তদন্তকারী তিন কর্মকর্তা মামলাটি নথিজাত করার সুপারিশ করলেও এবার একটি প্রভাবশালী মহলের চাপে মামলা হয়েছে। এদিকে, নারগীছ আক্তার জলির মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম জানান, দুদকে মামলার বিষয়টি আমরা জেনেছি। এ ব্যাপারে ভিপি শহীদ ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
'মারা গেছেন 'টারজান' খ্যাত অভিনেতা রন এলি'
পঞ্চগড়ে আহত নৈশ্য প্রহরীর মৃত্যু,যুবদল নেতাসহ আটক ৫
কসবায় অটোরিকশা ছিনতাই করতে চালক খুন
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করায় হিলিতে ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল
সচিবালয়ে নাশকতার অভিযোগে ২৬ শিক্ষার্থী কারাগারে
জেনেভা ক্যাম্পে আবারো সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ
ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে সমালোচিত কমলা
মোরেলগঞ্জে ঘুর্নীঝড় "দানা"মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা
প্রেসিডেন্টের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদ : রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত
প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ পিপি এডভোকেট ফয়েজকে প্রতিহত করার ঘোষণা আইনজীবিদের
উত্তরার বিএনপি'কে ঢেলে সাজাতে চান সেগুন
সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলার মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা কারাগারে
তারাকান্দায় বাস ও অটোরিক্সার সংঘর্ষে নিহত-১ আহত-২
বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের ইন্টার্নশিপের উদ্বোধনী
ইন্দুরকানীতে ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাব প্রস্তুত ২৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র
দেশে প্রথমবারের মতো এমআরসিপি পিএসিইএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
‘দানা’র প্রভাবে অকাল বর্ষণে বিপর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড উপকূল জুড়ে ব্যপক প্রস্তুতি
ক্ষমা চেয়ে চিরদিনের জন্য দল ত্যাগ করলেন আ’লীগ নেতা!
কেশবপুরে ঋন পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে এক ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা
বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে গড়ার জায়গা : খুবির নবনিযুক্ত উপাচার্য