ত্রাণ সাহায্যের দেখা নেই
১৩ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫ এএম
আষাঢ় মাস শেষ প্রান্তে, দুয়ারে কড়া নাড়ছে শ্রাবণ। ভরা বর্ষাকালের ঠিক মাঝামাঝিতে এসে বর্ষার ধারক-বাহক দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এর ফলে দেশের অভ্যন্তরে অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। একই সঙ্গে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের উজানের অববাহিকায় বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারত ও বিহার, নেপাল এবং চীনের তিব্বতীয় অঞ্চলে অতি বর্ষণ হচ্ছে। এর ফলে ভাটিতে দেশের নদ-নদীসমূহের পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। কোথাও কোথাও হ্রাস পাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে নদ-নদীসমূহের পানি হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। অনেক স্থানে ছিল স্থিতিশীল।
এ অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি বিলম্বিত হওয়ায় বন্যার্তদের নানামুখী কষ্ট ও দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। এ মুহূর্তে বানভাসিদের খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, অসুস্থদের চিকিৎসা ও ওষুধ-পথ্য, শিশুখাদ্যের প্রয়োজন হলেও ত্রাণকর্মী এবং ত্রাণ সাহায্য-সামগ্রীর দেখা নেই। অনেক গ্রাম-জনপদে বসতঘর এখনও বানের পানিতে প্লাবিত থাকায় ঘরে ফিরতে পারছে না বানভাসিরা। আশ্রয়কেন্দ্র, বাঁধ, রাস্তাঘাটে তারা করুণ দুর্দশায় দিনাতিপাত করছে।
উল্লেখযোগ্য নদ-নদীসমূহেরর প্রবাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বুলেটিনে নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান গতকাল জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। অন্যদিকে যমুনা নদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ৭২ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা নদী গোয়ালন্দ পয়েন্টে সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুরমা ও ভুগাই-কংস নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে। কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে এবং তা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
বৈশি^ক আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর সংলগ্ন উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ সংলগ্ন কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল বা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি কতিপয় পয়েন্টে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে যমুনেশ^রী, করতোয়া, ইছামতি-যমুনা ও আত্রাই নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে। এ সময়ে মহানন্দা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আত্রাই নদী সংলগ্ন সিরাজগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। এ সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল বা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পাউবো’র পর্যবেক্ষণাধীন দেশের ১১০টি নদ-নদীর পানির প্রবাহ পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৭০টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৩৮টি পয়েন্টে হ্রাস পায়, দু’টি স্থানে পানি অপরিবর্তিত ছিল। আগের দিন বৃহস্পতিবার নদ-নদীসমূহের ৬১টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি এবং ৪৭টিতে হ্রাস পায়। গতকাল ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, আত্রাই, সুরমা, কুশিয়ারা, সোমেশ^রী, মেঘনা এই ৭টি নদ-নদী ১৮টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ মুহূর্তে বন্যা কবলিত জেলাগুলো হচ্ছে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা।
গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতে উল্লেখযোগ্য ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ১৬০ মিলিমিটার, শিলংয়ে ৬৬ মি.মি., সিকিমের গ্যাংটকে ৫৭ মি.মি. পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে ৫৪ মি.মি.। অন্যদিকে একই সময়ে প্রধান নদ-নদী সংলগ্ন দেশের অভ্যন্তরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছেÑ সুনামগঞ্জের লরেরগড়ে ২২৬ মি.মি., ময়মনসিংহে ১৯৭ মি.মি. সুনামগঞ্জের মহেশখোলায় ১৬০ মি.মি., সুনামগঞ্জে ১৫৫ মি.মি., জামালপুরে ১৩৬ মি.মি.।
কুড়িগ্রাম জেলার সার্বিব বন্যা পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। কমেনি মানুষের দুর্ভোগ। এখনো ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার সহ ১৫টি নদীর পানির বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। গত এক সপ্তাহে জেলায় নদী ভানের শিকার হয়েছে ৪৫৮ পরিবার এবং তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বন্যার কারণে এখনো ৪৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
এদিকে কুড়িগ্রামে ১১দিন ব্যাপী বন্যা ও বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে কাটছে চরবাসীদের দিন। জেলার ১৬টি নদ-নদীর মধ্যে অবস্থিত সাড়ে ৪ শতাধিক চরসহ প্রায় ২ লাখ মানুষ বন্যায় অসহনীয় ভাবে দিন যাপন করছে। চরের মানুষ অপরিচিত নৌকা দেখলেই ভেলায় করে অথব ডিঙি নৌকায় ছুটে আসছে। বাদ যাচ্ছে না বয়স্ক থেকে শিশুরাও। জেলা প্রশাসন থেকে প্রায় ৭০ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। দুর্গম অনেক চরের মানুষের কাছে পৌঁছেনি খাদ্য সহায়তা। এদিকে বেশির ভাগ সহায়তা চরের মানুষকে দেয়া হলেও মেইনল্যান্ডে অবস্থিত বন্যা কবলিতরা ত্রাণ থেকে বঞ্চিত বলে তারা অভিযোগ তুলেছেন। বন্যা কবলিতরা জানিয়েছে একদিকে বন্যা ও জিনিসপত্রের চড়া দাম অপরদিকে চেয়ারম্যান মেম্বার কেউই কাদের খোঁজখবর নিচ্ছেননা। ফলে দুর্বিষহ ভাবে কাটছে তাদের দিন।
এদিকে, শেষ প্রান্তে এসেই স্বরূপে ফিরেছে আষাঢ়। এ যেন শুধুই আষাঢ় নয়; ভরা মেঘ-বাদলের ঘনঘোর শ্রাবণের আগমনধ্বনি। গতকাল শুক্রবার দেশজুড়ে ‘আষাঢ়ি’ বর্ষণে প্লাবিত হয় মাঠ-ঘাট-প্রান্তর। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ১৮৮ মিলিমিটার। এ সময়ে রাজধানী ঢাকায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয় ১৩১ মি.মি.। সকাল থেকেই হঠাৎ মুষলধারে বর্ষণে রাজধানীর অনেক জায়গায় রাজপথ-সড়ক, অলিগলিতে থৈ থৈ করে পানি। তুলনামূলক অনাবৃষ্টি ও খরতাপদগ্ধ বরেন্দ্র জনপদ রাজশাহীতে গতকাল রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৩৫ মি.মি.। এছাড়া টাঙ্গাইলে ১০৮ মি.মি., ফেনীতে ১০৬ মি.মি., রাঘাবাড়ীতে ১০৪ মি.মি., কুষ্টিয়ায় ১০২ মি.মি.। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশের প্রায় প্রত্যেক জেলায় কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে আসে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ২৩.৮ ডিগ্রি সে.। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৩১ এবং সর্বনি¤œ ২৫.৮ ডিগ্রি সে.।
আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, বৃষ্টিপাতের ব্যাপকতা আরো দুই থেকে তিন দিন চলতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাতের মাত্রা আপাতত হ্রাস পেতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মৌসুমী বায়ুর একটি বলয় বা অক্ষ ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। বর্ষারোহী মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
পাহাড়ধসের সতর্কবার্তা : ভারী বর্ষণের সতর্কবার্তায় আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বাংলাদেশের উপর মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত) অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ী এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
টাঙ্গাইলে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন, দুর্ভোগে বন্যাকবলিতদের :
টাঙ্গাইলে সব নদীর পানি কমার সাথে সাথে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। জেলার যমুনা, ঝিনাই, ধলেশ^রী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি কমার সাথে সাথে প্রবল স্রোতে যমুনা ও ঝিনাই নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙনে জেলার ভুঞাপুর, বাসাইল, দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকার বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার, ফসলী জমি, রাস্তা, কবরস্থান, মসজিদসহ অনেক স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। ফলে বন্যা ও ভাঙনে নদীপাড়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাদের দাবি, জরুরিভাবে নদী ভাঙন রোধ করা হোক এবং বন্যার্তদের সরকারি সহায়তা করা হোক।
এদিকে বন্যার পানির চাপে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের এলেঙ্গায় সার্ভিস লেনের পাশে কিছু অংশ ভেঙে যায়। পরে তাৎক্ষণিক সড়ক বিভাগ, ব্লক ও মাটি ফেলে মেরামত করে। এছাড়া বন্যার পানিতে জেলার গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার ও বাসাইল উপজেলার চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, ফসলী জমি তলিয়ে গেছে। জেলার ৬টি উপজেলায় এখনো ৪৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে জীবন যাপন করছেন। জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম জানান, জেলার প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলের ৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।
সুনামগঞ্জে কখনো বাড়ে পানি, কখনো কমে :
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টি হওয়ায় আবারও নদীর পানি বাড়ছে। শুক্রবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে এই মৌসুমের তৃতীয়বারের মতো বন্যার আশঙ্কা করছেন জেলাবাসী। এদিকে গত ১৬ জুন রাতে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় এবং ১৭ জুন সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টি হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সুনামগঞ্জে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছেন ভারি বৃষ্টি হলেও এবার বন্যার শঙ্কা নেই। ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জের সাথে তাহিরপুর উপজেলার সড়ক পথে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর আগে দুই দফায় বন্যায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। বিশেষ করে দ্বিতীয় দফা বন্যায় জেলার বিশ্বম্ভরপুর এবং তাহিরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ২৬০ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও সুনামগঞ্জ জেলায় এরকম ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে শুক্রবার সকালে ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।
পানি বাড়ায় সুনামগঞ্জ শহরের সবজি মার্কেটের গলিপথ পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও শহরের কাজীর পয়েন্ট, পশ্চিম হাজীপাড়া, কালিপুরসহ যেসব এলাকায় প্রথম এবং দ্বিতীয় দফা বন্যার ছাপ ছিল, সেসব এলাকায় আবারও পানি প্রবেশ করেছে। ফলে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে সুনামগঞ্জের লাখো মানুষকে।
এদিকে তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের শক্তিয়ারখলা অংশে মৌসুমের তৃতীয়বারের মতো পানিতে তলিয়েছে। এতে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রীরা এই অংশে নৌকা করে পার হতে হচ্ছে। এই সড়কে তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর অংশেও পানি উঠেছে। তবে এই অংশে পানিতে স্রোত কম থাকায় যাত্রীরা হেঁটে পারাপার হতে পারছেন। অনেকে সিএনজি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চালিয়ে পার হতে পারছেন।
ব্যবসায়ী শামসুল আলম রাজু জানান, টানা বৃষ্টিতে বাসা থেকে বের হতে পারি নাই। শহরে সব দিকে পানি। কোনও দিকে যাওয়ার মত অবস্থা নেই। আমি পাইকারি পণ্য সাপ্লাই দেই। আমার কাজের লোকজনও আসতে পারে নাই। একদিনে আমার অনেক টাকা ক্ষতি হবে। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হলে তো কি পরিমাণে লোকসান হবে তা বলে বুঝাতে পারবও না। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো মামুন হাওলাদার ইনকিলাবকে জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। বৃষ্টি হলেই জেলার নদ-নদীর পানি কিছুটা বাড়বে। তবে সেটার পরিমাণ বেশি হবে না। আগের মতো পরিস্থিতি হওয়ার কোনো পূর্বাভাস নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
লালমনিরহাটে তিস্তায় কমছে বন্যার পানি, ভাঙন আতঙ্কে নদী পাড়ের হাজারো মানুষ :
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে লালমনিরহাট জেলার তিস্তা তীরবর্তী মানুষ চতুর্থ দফা স্বল্পমেয়াদি বন্যা কাটিয়ে এবার পড়েছে ভাঙনের মুখে। গত সোমবার সকাল থেকে পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। তবে তিস্তার বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলে তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।
বন্যার পানির স্তর নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার গোকুন্ডা, রাজপুর ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা এবং আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের চর গোবরর্ধন ও হাতিবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকায় নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এদিকে জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবর্ধন চর এলাকার কয়েকটি বসতভিটা, মসজিদ মন্দিরসহ অন্যান্য স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা।
রাজশাহীতে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড :
রাজশাহীতে ১২ ঘণ্টায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিট থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাজশাহীতে মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এতে শহরের বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। এই বৃষ্টিতে খুশি রাজশাহীর কৃষকেরা। তারা জানিয়েছেন, রাজশাহীতে এখন নতুন করে ধানের চারা লাগানোর কাজ চলছে। এখন সেচের দরকার। বৃষ্টিতে কৃষকেরা উপকৃত হয়েছেন। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, রাজশাহীতে ১২ ঘণ্টায় ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটি মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। এর আগে গত ৩ জুলাই ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, এই বৃষ্টি ফসলের জন্য ভালোই হলো। জমিতে কৃষকেরা ধানের চারা লাগাচ্ছেন। এখন বৃষ্টির দরকার ছিল। পাটের জন্যও ভালো হলো এই বৃষ্টি। জমিতে কৃষকের ক্ষতি হওয়ার মতো কোনো ফসল নেই।
সিলেট থেকে ফয়সাল আমীন জানান, ‘জলে আসে, জলে যায় লুটেপুটে তারা খায়।’ কারা তারা ? তারা পদস্থ। আফসোসের সুরে একথা দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামের কেন্দ্রিয় সেক্রেটারী মকসুদ হোসেনের। তিনি বলেন, বন্যা পদস্থদের জন্য আর্শিবাদ। যদিও বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়ে মানবকূলসহ জীব বৈচিত্র্য। সেই সাথে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে অবকাঠামো। ভেঙে পড়ে যোগাযোগ। সেই সমস্ত আয়োজন নতুন করে সাজাতে কোটি কোটি টাকার বরাদ্দের অর্থ কাজের নামে লুটেপুটে উদর ভর্তি করে পদস্থসহ সংযুক্তরা। দেখার কেউ নেই, যারা আছে তারা অনিয়ম ও দুর্নীতির বৃদ্ধিভিত্তিক চাষী।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে সিলেটে পরপর তিন দফা বন্যায় অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও এ হিসেব চূড়ান্ত নয়। পানি নেমে যাওয়ার পর নিরূপন করা হবে পুরোপুরি। কৃষি, মৎস, অবকাঠামোগত ক্ষতির পাশাপাশি জনভোগান্তি বেহিসাব।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এবার কয়েক দফা বন্যার কারণে জেলায় ৩৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে ৭৮টি। এছাড়া কয়েকটি কলেজে পানি উঠে যাওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে পাঠদান কার্যক্রম। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বন্যার কারণে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ষান্মাসিক মূল্যায়ন পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশনা দেওয়া আছে।
অপরদিকে, বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ধরণের পানিবাহিত রোগ। দূষিত পানি পান ও চলাফেরা করায় দুর্গত এলাকা থেকে তথ্য আসছে ডায়রিয়া চর্ম ও চোখের রোগে আক্রান্তের। বিভাগজুড়ে দুর্গতদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ৪ শতাধিক মেডিক্যাল টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এবারের দফায় দফায় বন্যায় সিলেট বিভাগের প্রায় ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছিলেন। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো পানিবন্দী প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ। নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আট শতাধিক। এ পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮১, শ্বসতন্ত্রের সংক্রমনে ৩২, চর্মরোগে ৫০, চোখের রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫জন। অন্যান্য রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আরো ৬৫৩।
এদিকে, এবার বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষি, মৎস্য, বেড়িবাঁধ, বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোর। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, চাষাবাদযোগ্য জমি পানির নিচে থাকায় অনেকেই আমনের বীজতলা করতে পারছেন না। এবার বেশি ক্ষতি হয়েছে আউশ ফসলের। সিলেট বিভাগীয় কৃষি বিভাগ জানায়, প্রাথমিকভাবে কৃষির ক্ষতি হয়েছে ৪১৮ কোটি টাকার। বিভাগে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৩ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মৎস্যের ক্ষতি ১০ কোটি ৬৬৭ কোটি টাকা। ২৩ হাজার ৮১৩টি মৎস্য খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা জানান, সিলেট জেলার ১৩ উপজেলায় আউশ বীজতলা, সবজি ও বোনা আমন ধানের ২০ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমি আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে বন্যার পানিতে ১৫ হাজার ৫০৬ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জেলার ৯৮ হাজার ৬৫৩ কৃষক। তিনি বলেন, বন্যায় মোট ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭৫ কোটি ২১ লাখ টাকায়। এর মধ্যে আমন ধান চাষিদের আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। সামনে আরো দেওয়া হবে।
সিলেট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সীমা রাণী বিশ্বাস জানান, বন্যায় সিলেট জেলায় ৪৪ কোটি ৮৫ লাখ ৬৬ হাজার টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। জেলার ২১ হাজার ১১১টি পুকুর-দিঘী-খামারের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া সিলেটের ১৩টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জকিগঞ্জে। উপজেলার ছয় হাজার ৭৫৫টি পুকুর-দিঘি-খামারের মাছ ভেসে গিয়ে ১৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আর কম ক্ষতি হয়েছে সিলেট সদর উপজেলায়, ৩১ লাখ টাকার।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, বন্যায় নগরীর ২৫০ কিলোমিটার রাস্তাঘাটে পানি উঠেছিল। এতে আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো পুরোপুরি ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করিনি আমরা। সিলেট সড়ক জোনের সহকারী প্রকৌশলী খন্দকার আনিসুল হক জানান, সিলেট বিভাগে মোট ১৬৩ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির অঙ্ক ৬৮৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
সিলেট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এনামুল কবির জানান, দ্বিতীয় দফায় সিলেট জেলায় ১৬০ কিলোমিটার রাস্তা ডুবে ক্ষতি হয় ১২০ কোটি টাকার। কিন্তু তৃতীয় দফার পানিতে আরো সড়ক ডুবেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ২০০ কোটি টাকা হবে। পানি কমলে আরো বাড়তে পারে এই হিসাব।
এদিকে, সিলেট বিভাগ গণদাবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ বলেন, বছর ঘুরতেই একই ভোগান্তি। বন্যার পর রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো সংস্কারে সরকারের বরাদ্দের কমতি নেই। কিন্তু বন্যার পানি নামার পর শুস্ক মৌসুমের হাকডাকে সংস্কারের নামে শুরু হয় কাজ, শেষ হয় পুনরায় বর্ষা আসার আগে। এতে যেই সেই রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো। সেকারণে সংশ্লিষ্টরা কখন বৈশ্বিক জলবায়ু তথা বন্যার পানির দোহাই দিয়ে বরাদ্দের অর্থ হরিলুট করে সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তা ও তাদের অনুগত ঠিকাদারা। তিনি আরো বলেন, বরাদ্দ ও সংস্কারে জবাবদিহীতা নিশ্চিত না করলে, একদিকে বন্যায় সর্বনাশ করবে, অপরদিকে বন্যার ক্ষত সংস্কারের নামে জনগনের অর্থ লোপাটের এমন অশুভ তৎপরতা বন্ধে করতে হবে বিহীত ব্যবস্থা। চলতি বন্যায় রাস্তাঘাটের পাশাপাশি সুরমা-কুশিয়ারা নদীর কয়েকটি স্থানের ডাইক ভেঙে বিভিন্ন জনপদ তলিয়ে গেছে পানিতে। সেখানে সওজ, এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ তৎপর হবে সংস্কার ও মেরামতে। এই তিনটি সংস্থা সংশ্লিষ্টরা লোপাটে সেরা। তাদের উপর নজরদারী বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রাজনীতির মধ্যে ঢুকতে চায় না ইসি, ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু সোমবার
টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রে পরিষেবা বন্ধ, আইনি নিষেধাজ্ঞার প্রভাব
ইউল্যাবের হাল্ট প্রাইজ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ
স্পিকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন হাসিনা : দ্য হিন্দু
আওয়ামী দুঃশাসনের যেন পুনরাবৃত্তি না হয়: রিজভী আহমেদ
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি, আ.লীগের জয়জয়কার
নাম পাল্টিয়েও শেষ রক্ষা হলো না সাইফের আততায়ীর
থানায় বসে ঘুষ গ্রহণ: সেই এসআই প্রত্যাহার
জেলেদের দিক নির্ণয়ের জন্য বরগুনায় লাইট হাউজ স্থাপন
ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের অভিষেকের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ
বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের দুরবস্থা বর্ণনার বাইরে
বেনাপোলে ৩০ হাজার মার্কিন ডলারসহ ৪০ লাখ টাকার চোরাই পণ্য জব্দ
গাজায় যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ ‘অস্থায়ী’: নেতানিয়াহু
রক্তে প্লাবিত শরীর, সিংহের মতো তৈমুরের হাত ধরে হাসপাতালে সাইফ
বড়লেখায় যুবদল নেতাকে হত্যা
মার্কিন বিমানবাহী জাহাজে হামলার দাবি হুথির
সীমান্তের কাঁটাতার: কীসের, কেন আর কবে থেকে এই বেড়া?
জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে শীতার্ত মানুষের পাশে স্বেচ্ছাসেবক দল
নোয়াখালীর চৌমুহনীতে পাওনা টাকার দ্বন্দ্বে কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
ঘরে ফেরার আশায় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিচ্ছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা