অবিলম্বে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন
০৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৪ এএম
অনতিবিলম্বে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় এমন সকল রাজনৈতিক দল, পেশাজীবি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শক্রমে অনুর্ধ্ব ১৫ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। যার মেয়াদ ৬ মাসের বেশি হতে পারবে না। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কেউ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। গ্রহনযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইবুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। একই সাথে গত ১৬ বছরে সংগঠিত সকল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে নিহত-আহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে যে সকল ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে সেসব দুর্নীতিবাজ খুনীদের রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা দেশ থেকে পালিয়েছে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় বিচার করতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিহার করে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় উপাসনালয়, জানমলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সকল ধর্মমতের মানুষের জানমাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ইসলামের কড়া নির্দশনা রয়েছে। গতকাল বুধবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে ৫৫/বি পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে গণহত্যাকারী, জালিম ও স্বৈরাচার সরকারের পতন পরবর্তী দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জাতির এই মহান অর্জনের যারা জীবন দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও আহতদের পাশে দাঁড়ানোর সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে। এখন সময় দেশ গড়ার। এখন সময় সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচারভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণের। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বর ও নৃশংস আওয়ামী দুঃশাসন উৎখাতের সংগ্রামের সূচনা করেছে আমাদের গর্ব শিক্ষার্থী সমাজ। তাদের অসীম সাহস, ত্যাগ ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব আমাদের গর্বিত করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই এই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত থেকেছে। আমাদেরও অনেক ভাই জীবন দিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন। দলের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, খন্দকার গোলাম মাওলা, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা নেছার উদ্দিন, মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, অ্যাডভাকেট শওকত আলী হাওলাদার।
এই যুগ সন্ধিক্ষনে আগামী পরিকল্পনা হিসেবে কতিপয় প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে, তদন্ত সাপেক্ষে গত ১৬ বছরে সকল দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সকল সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনবার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিগত ১৬ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। সকল দুর্নীতি ও টাকা পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যে সকল কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠির চিন্তা-চেতনা ও অনুভূতির বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না।
নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি (চ.জ) চালু করতে হবে।
আওয়ামী দুঃশাসনের বিগত ১৬ বছরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এদেশের সাধারণ শিক্ষাখাতের মান ও নৈতিকতা। এই ক্ষতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ ও উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে একটি জাতীয় শিক্ষাকমিশন গঠন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
অন্তর্র্বতীকালীন সরকারে উলামায়ে কেরামদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি অবশ্যই থাকতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, যারা লুটতরাজ, দখলদারী ও অরাজকতায় লিপ্ত তারা আন্দোলনে সম্পৃক্ত কেউ না। বরং তারা সুযোগ সন্ধানী। আমরা দৃঢ়তার সাথে সবাইকে আহবান করছি যে, এখনই সব ধরণের অরাজকতা, সহিংসতা, প্রতিহিংসামূলক হামাল লুটপাট বন্ধ করুন। যারা অরাজকতা করছে তাদের প্রতিরোধ করুন। যারা দেশের সম্পদ নষ্ট করছে তাদের প্রতিরোধে এলাকায় এলাকায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করুন।
ধর্মের কারণে কাউকে আঘাত করা বা কাউকে প্রতিপক্ষ বানানোকে ইসলাম ও রাষ্ট্রিয় আইনও সমর্থন করে না। দেশের সংখ্যালঘুদের প্রতিটি উপসানালয় ও ধর্মীয় স্থাপনায় পাহারার ব্যবস্থা করুন। উক্ত ৯ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে নিন্মোক্ত কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়। কর্মসূচি হচ্ছে, আগামী শুক্রবার বিকেল ৩টায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে বিশাল গণ জমায়েত। পর্যায়ক্রমে বিভাগ ও জেলা শহরে সমাবেশের আয়োজন করা হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাব্বির হত্যা মামলায় জাকির খানসহ সকল আসামি খালাস
ধামরাইয়ে ছাত্র হত্যা মামলায় ইউনিয়ন আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার
কিশোরগঞ্জে ইট উৎপাদনে উন্নত প্রযুক্তি সম্প্রসারণে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
কোনো বন্ধুরাষ্ট্র জনগণের হত্যাকারীকে আশ্রয় দিতে পারে না : দুদু
রিয়েলমি সি৭৫ এর কার্যক্ষমতা দেখার সুযোগ পেল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা
রাবি কর্মকর্তা দাবি, বন্দুকের নল ঠেকিয়ে বাতিল করা হয়েছে আমাদের ন্যায্য সুবিধা
ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি
মোরেলগঞ্জে কৃষি অফিসে দুদকের অভিযান
কাজী জাহিদ ইকবাল খিলখিলের ইন্তেকাল
পূর্ব সুন্দরবনের শেলারচরে শীতে মৃত্যু এক শুঁটকি পল্লীর জেলে
লক্ষ্মীপুরে ফার্মেসীতে অভিযান, ২০ হাজার টাকা জরিমানা
লক্ষ্মীপুরে ফার্মেসীতে অভিযান, ২০ হাজার টাকা জরিমানা
ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড তিব্বতে নিহত বেড়ে প্রায় ১০০
রাবি ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি মোস্তাকুর, সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল
ঢাকাকে চতুর্থ হারের স্বাদ দিয়ে রংপুরের পাঁচে পাঁচ
ইন্দোনেশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকস জোটে যোগ দিল
সান্তাহারে মালিকানা দাবি করে ২কোটি টাকার সরকারী জায়গা দখল
কুয়াকাটায় শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী পর্যটন মেলা
লক্ষ্মীপুরে ৩ দিনে ৮ ইটভাটায় অভিযান, জরিমানা ১২ লাখ ৮০ হাজার
আর্থিক ভীতি কাটলেও পাঁচ মাসের অর্জনে খুশি নয় বাংলাদেশ ব্যাংক: ইডি শিখা