ঢাকা   শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১

ইসলামিক স্কলারকে ভিসি হিসেবে দেখতে চান ইবি শিক্ষার্থীরা

Daily Inqilab ইবি সংবাদদাতা

২০ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম

সম্প্রতি আওয়ামী সরকারের পতনের পর ৮ই আগস্ট ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আব্দুস সালাম ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে শূন্য থাকায় ভিসি হতে তদবির শুরু করেছেন প্রার্থীরা। বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে দেখা গেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার যে উদ্দেশ্য ছিল সেখান থেকে অনেকটাই দূরে। রাজনীতির রোষানলে পড়ে ইবি বারবার বাধাগ্রস্থ হয়েছে। এটি ২ নভেম্বর ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে ১৭৫ একর জমিতে রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ঐশী জ্ঞানের সাথে সাধারণ শিক্ষার সমন্বয় গড়ে তুলতেই এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শিক্ষার্থীদের চাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একজন ইসলামিক স্কলার আসুক যিনি আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়ার আদলে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে রুপান্তর করবেন। নিম্নে ইবি শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিক রাকিব রিফাত।

ইসলাম ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় : গোলাম রাব্বানী জানান, স্বাধীনতার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হলো কুষ্টিয়ায় অবস্থিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ইসলামী শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় করে পাঠদানের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮৬ সালের ২৮ জুন তাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে। তবে ইসলামি শিক্ষা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বনামধন্য ইসলামী স্কলার ভাইস চ্যান্সেলর প্রয়োজন যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ঘটেনি। এখন দেশ একটা সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাবছে একজন ইসলামি স্কলার ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পেলে এদেশের প্রথম স্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে সচেষ্ট হবে। পাশাপাশি এটি আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়ার আদলে হোক এমনই আশা প্রতিটি শিক্ষার্থীদের।
যিনি শিক্ষার্থীদের সন্তানের মত দেখবেন : আফিফা হুমায়রা জানান,

আমি একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ইসলামিক স্কলারকে ভিসি হিসেবে চাই কারণ একজন ধর্মপ্রেমী মানুষই পারে বৈষম্যহীন ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে। কারণ ইসলাম বা যেকোন ধর্মই কখনো বৈষম্য প্রাধান্য দেয়না। সকল শিক্ষার্থীবৃন্দ, তাদের নায্য অধিকার কিন্তু প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক তথা উপাচার্যের নিকট আমানত। এই আমানত সঠিকভাবে রক্ষা করতে একজন ধর্মভীরু স্কলার প্রয়োজন। সকল রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বে যিনি সকল ছাত্রছাত্রীদের সন্তানের চোখে দেখবেন সেই কামনা রইল।

ইসলামিক স্কলার ভিসি প্রয়োজন : মুহিববুল্লাহ নোমান জানান,
ইসলামি শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় করে দেশ-বিদেশের উচ্চশিক্ষায় ভূমিকা রেখে উন্নত জাতি গঠনের লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালের ২২শে নভেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। কালের বিবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ নিজের প্রতিষ্ঠালক্ষ্য থেকে যোজন যোজন দূরে সরে এসেছে। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এমন একজন ইসলামিক স্কলারকে ভিসি হিসেবে প্রয়োজন, যিনি এটিকে পুনরায় তার প্রতিষ্ঠা লক্ষ্য অনুযায়ী পরিচালনা করবেন এবং একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ধাবিত করবেন। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমি মনে করি, অন্যান্য ধর্মের কৃষ্টি-কালচারের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে ইসলামি সংস্কৃতিকে পরিপূর্ণতা দান করার জন্য একজন ইসলামিক স্কলারকে ভিসি হিসেবে প্রয়োজন, যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় সারা বিশ্বের নিকট এক অনন্য দৃষ্টান্ত হবে।

এমন ভিসি প্রয়োজন যিনি নৈতিকতার ক্ষেত্রে কঠোর : ত্বকী ওয়াসীফ জানান, পিতা যেমন একটা পরিবারের পরিচালক, তেমনি ভিসি একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ভিসি বৃন্দের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করলে যথেষ্ট অনিয়ম ও বিতর্ক স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। যেটিই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যৌক্তিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন এমন ভিসি দরকার যিনি তাঁর নৈতিকতার ক্ষেত্রে কঠোর। আর পৃথিবীর সকল নৈতিকতার আঁতুরঘর হচ্ছে প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম । পৃথিবীতে যত ভাল কাজ রয়েছে,কোনোটাই ধর্ম বহির্ভুত নয়। আমরা এমন কাউকে ভিসি চাই, যিনি হবেন ধর্মীয় স্কলার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন জরুরি : শাহীদ কাউছার জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ও তার মধ্যে অন্যতম। ইবি স্বাধীন দেশের প্রথম এবং সুপ্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কে নতুন করে সাজিয়ে, বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে, এখন একজন একাডেমিক সেক্টরে যোগ্য ইসলামী স্কলারদের মধ্য থেকে ভিসি নিয়োগের বিষয় টা খুব জরুরী। নতুন বাংলাদেশ গঠন করার জন্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কে নতুন করে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিকরণ এবং ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
এছাড়াও ক্যাম্পাসে সকল প্রকারের ছাত্র এবং শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষনার পরিবেশ তৈরী হোক।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

কলকাতায় দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা চিন্ময়ের আইনজীবী এবার জাতিসংঘে যাওয়ার হুমকি দিলেন
রোববার হারিছ চৌধুরীর পুনর্দাফন
দেশে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? জামায়াত আমীরের প্রশ্ন
ভারতে ইসকন মন্দিরে চিন্ময়ের আইনজীবীর বৈঠক
নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের আইনগত কোনো বাধা নেই : অ্যাটর্নি জেনারেল
আরও

আরও পড়ুন

মঠবাড়িয়ায় মালয়শিয়া প্রবাসীর ঘরে ডাকাতি বৃদ্ধাসহ ৩ নারী আহত

মঠবাড়িয়ায় মালয়শিয়া প্রবাসীর ঘরে ডাকাতি বৃদ্ধাসহ ৩ নারী আহত

টুইটার থেকে এক্স ,ইলন মাস্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নতুন যুগ

টুইটার থেকে এক্স ,ইলন মাস্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নতুন যুগ

বিপুল পরিমাণ গাঁজা, ট্রাক ও ধানসহ নকলার মাদক কারবারিকে ফুলপুরে আটক

বিপুল পরিমাণ গাঁজা, ট্রাক ও ধানসহ নকলার মাদক কারবারিকে ফুলপুরে আটক

বিপিএলে অনিশ্চিত সাকিব নাম লেখালেন পিএসএলে

বিপিএলে অনিশ্চিত সাকিব নাম লেখালেন পিএসএলে

আলফাডাঙ্গায় চলছে হালি পেঁয়াজ লাগানোর মহোৎসব, শ্রমিকের অভাবে বাড়ছে চাষির খরচ

আলফাডাঙ্গায় চলছে হালি পেঁয়াজ লাগানোর মহোৎসব, শ্রমিকের অভাবে বাড়ছে চাষির খরচ

শ্রীনগরে পুকুর থেকে ভাসমান বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

শ্রীনগরে পুকুর থেকে ভাসমান বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

কলকাতায় দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা চিন্ময়ের আইনজীবী এবার জাতিসংঘে যাওয়ার হুমকি দিলেন

কলকাতায় দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা চিন্ময়ের আইনজীবী এবার জাতিসংঘে যাওয়ার হুমকি দিলেন

রোববার হারিছ চৌধুরীর পুনর্দাফন

রোববার হারিছ চৌধুরীর পুনর্দাফন

চলছে বিক্ষোভ, তারেক রহমানকে স্মারকলিপি, জবির অন্যান্য সংগঠনের প্রতিবাদ

চলছে বিক্ষোভ, তারেক রহমানকে স্মারকলিপি, জবির অন্যান্য সংগঠনের প্রতিবাদ

চীনে তৈরি হবে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ

চীনে তৈরি হবে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ

কোহলির আরও বড় শাস্তি প্রাপ্য ছিল: পন্টিং

কোহলির আরও বড় শাস্তি প্রাপ্য ছিল: পন্টিং

বান্দরবানে আগুন দিয়ে ১৭ ঘর পুড়ে দেয়ার সাথে জড়িত দের ছাড় দেয়া হবে না- পার্বত্য উপদেষ্টা

বান্দরবানে আগুন দিয়ে ১৭ ঘর পুড়ে দেয়ার সাথে জড়িত দের ছাড় দেয়া হবে না- পার্বত্য উপদেষ্টা

জাহাজ সেভেন মার্ডারের খুনি ধর্মান্তরিত ইরফানের অজানা কাহিনী

জাহাজ সেভেন মার্ডারের খুনি ধর্মান্তরিত ইরফানের অজানা কাহিনী

খুলনার তাবলীগ মসজিদ এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল

খুলনার তাবলীগ মসজিদ এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল

দেশে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? জামায়াত আমীরের প্রশ্ন

দেশে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? জামায়াত আমীরের প্রশ্ন

ভারতে ইসকন মন্দিরে চিন্ময়ের আইনজীবীর বৈঠক

ভারতে ইসকন মন্দিরে চিন্ময়ের আইনজীবীর বৈঠক

নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের আইনগত কোনো বাধা নেই : অ্যাটর্নি জেনারেল

নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের আইনগত কোনো বাধা নেই : অ্যাটর্নি জেনারেল

শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের নৌ ধর্মঘট, বন্ধ রয়েছে পায়রা বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম

শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের নৌ ধর্মঘট, বন্ধ রয়েছে পায়রা বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম

বিএনপির সংস্কার চায় না, এ কথাটি সঠিক নয়: মির্জা ফখরুল

বিএনপির সংস্কার চায় না, এ কথাটি সঠিক নয়: মির্জা ফখরুল

ইসরাইলের বিমানবন্দরে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হুতিদের

ইসরাইলের বিমানবন্দরে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হুতিদের