২১ আগস্ট বিশৃংখলার শঙ্কা
২০ আগস্ট ২০২৪, ১২:১০ এএম | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৪, ১২:১০ এএম
এ যেন সর্ষের ভিতরে ভূত! সরকারি ও আধা সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর-পরিদপ্তরে কর্মরত প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীরাই নতুন সরকারকে অস্থির করে তোলার চেষ্টা করছে। তারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনের নামে মাঠে নেমেছে। অনেকেই বলছেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যারা আন্দোলন করছেন তাদের বেশির ভাগই দিল্লিতে পালানো হাসিনার ইন্ধনে মাঠে নেমেছেন। কারণ তারা আওয়ামী লীগের দলীয় পরিচয়ে চাকরি পাওয়ায় শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়নে নতুন সরকারকে বিব্রত করতেই হঠাৎ দাবি দাওয়া নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
১৫ আগস্ট ব্যর্থ হওয়ার পর ২১ আগস্ট তারা বিশৃংখলা বাধাতে চায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিগত সরকারের সময় অনেকেই বঞ্চিত হয়েছে। তবে নতুন সরকারকে সময় দিতে হবে। দাবি আদায়ের নামে যারা রাজপথ অস্থির করে তুলছেন তাদের পিছনে পতিত শেখ হাসিনার ইন্ধন রয়েছে। ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছেই। প্রশাসনের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত পেশাজীবীদের দাবি আদায়ের নামে মাঠে নামিয়ে এ চেষ্টা চলছে। নানা দাবিতে গত দুই দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করছে বিভিন্ন সংগঠন, ফোরাম, পেশাজীবীরা। তাদের অভিযোগ বিগত সরকারের সময় তারা সুবিধা বঞ্চিত। রাজধানীর পল্টন, সচিবালয়, জাতীয় প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন, শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে যানজটের এই চিত্র দেখা গেছে। শাহবাগে ঢাকার বাইরে থেকে বাস ভাড়া করে এসে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। এমনকি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবালয় লাইব্রেরিতে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের কল্যাণ সমিতির নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমবেত হয়ে তাদের পদনাম পরিবর্তন, পেশাগত ও বেতন বৈষম্য দূরীকরণ, বেতন কমিশন গঠনের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি দাবি জানান।
গতকাল সরেজমিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চাকরি জাতীয়করণ, বৈষম্য দূরীকরণ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে শাহবাগ মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও সচিবালয়ের সামনে বিভিন্ন সংগঠন, ফোরাম ও বঞ্চিতরা সভা-সমাবেশ করছে। ১৭ দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন মিডওয়াইফ ও নার্সরা। একই স্থানে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আওতাধীন মহিলা স্বেচ্ছাসেবীরা। আগের দিন ১৮ আগস্টও এই সংগঠনগুলো সমাবেশ করেছে।
এছাড়া আন্দোলনে দেখা যায় আরও বেশ কিছু সংগঠনকে। সচিবালয়ের সামনে বিভিন্ন দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেন গ্রাম পুলিশের সদস্যরা, বিসিএস মৎস্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা, মৎস্য অধিদফতরের আওতাধীন এনএটিপি-২ এর সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (মৎস্য) কল্যাণ ফোরাম, বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা স্বেচ্ছাসেবী (মহিলা) দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ, জাতীয় মহিলা সংস্থা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম’।
সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবালয় লাইব্রেরিতে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের কল্যাণ সমিতির নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমবেত হন। এ সময় ৯ দফা দাবি জানিয়ে বলেন, আন্দোলনের সঙ্গে ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
এর আগে গত ১৮ অক্টোবর ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের নারীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনা অতিথি ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে। এ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা এইচ এস সি পরীক্ষা বাতিল, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তর, তৎকালীন বিডিআর থেকে চাকরিচ্যুত সদস্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেয়া, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা, চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা স্বেচ্ছাসেবী (মহিলা) দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ, মাদরাসা বোর্ডের বৈষম্যে রোধে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতি, গ্রাম পুলিশ সদস্য, ডিপ্লোমা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংস্কারের দাবি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্মচারী, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মচারী, বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্পের গেইটকিপার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের কর্মচারীরা সমাবেশ ও মানববন্ধন করে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে অনেকগুলো পৈশাচিক বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান, পল্টন ময়দানে সিপিবির অনুষ্ঠান, নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের বাসা, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, যশোরে উদীচীর সমাবেশে হামলাসহ অসংখ্য বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ কেবল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকে প্রচারণায় রেখেছেন। ফলে ভারতের ইন্ধনে সংখ্যালঘু নির্যাতন, জুডিশিয়াল ক্যু, ১৫ আগস্ট ঢাকায় ১০ লাখ লোক সমাগমের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এখন বিভিন্ন পেশাজীবীদের আন্দোলনের নেপথ্যে ২১ আগস্টকে কেন্দ্র করে কিছু করার অপচেষ্টা কিনা তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ধানের ট্রাকে গাঁজা পাচার : বিপুল পরিমাণ গাঁজা, ট্রাক ও ধানসহ নকলার মাদক কারবারিকে ফুলপুরে আটক
বিপিএলে অনিশ্চিত সাকিব নাম লেখালেন পিএসএলে
আলফাডাঙ্গায় চলছে হালি পেঁয়াজ লাগানোর মহোৎসব, শ্রমিকের অভাবে বাড়ছে চাষির খরচ
শ্রীনগরে পুকুর থেকে ভাসমান বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
কলকাতায় দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা চিন্ময়ের আইনজীবী এবার জাতিসংঘে যাওয়ার হুমকি দিলেন
রোববার হারিছ চৌধুরীর পুনর্দাফন
চলছে বিক্ষোভ, তারেক রহমানকে স্মারকলিপি, জবির অন্যান্য সংগঠনের প্রতিবাদ
চীনে তৈরি হবে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ
কোহলির আরও বড় শাস্তি প্রাপ্য ছিল: পন্টিং
বান্দরবানে আগুন দিয়ে ১৭ ঘর পুড়ে দেয়ার সাথে জড়িত দের ছাড় দেয়া হবে না- পার্বত্য উপদেষ্টা
জাহাজ সেভেন মার্ডারের খুনি ধর্মান্তরিত ইরফানের অজানা কাহিনী
খুলনার তাবলীগ মসজিদ এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল
দেশে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? জামায়াত আমীরের প্রশ্ন
ভারতে ইসকন মন্দিরে চিন্ময়ের আইনজীবীর বৈঠক
নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের আইনগত কোনো বাধা নেই : অ্যাটর্নি জেনারেল
শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের নৌ ধর্মঘট, বন্ধ রয়েছে পায়রা বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম
'কাঠামোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে গণতান্ত্রিক উপযোগী করলেই আমরা গণতন্ত্রকে সফল করতে পারব
ইসরাইলের বিমানবন্দরে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হুতিদের
ভর শীতে ও গারো পাহাড় সীমান্তাঞ্চলের বিলে-ঝিলে দেখা মিলছে না অতিথি পাখির!
এ বছর আর হচ্ছে না বিজিবি-বিএসএফের বৈঠক