ঢাকা   মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২ আশ্বিন ১৪৩১
দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃত্ব দিতে পারেন ড. ইউনূস

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়

Daily Inqilab স্টালিন সরকার

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ এএম

‘পিন্ডির গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করেছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়’ (মওলানা ভাসানী)। মজলুম জননেতার দেশপ্রেম এই চেতনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গত ১৮ বছর দেশকে দিল্লির দাসত্বই শুধু নয়, ক্রীতদাসে পরিণত করা হয়েছিল। ওয়ান ইলেভেন সরকারের দুই বছর ও পতিত আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে ভারতের সেবাদাসে পরিণত করা হয়েছিল। ভারতের শাসকদল হিন্দুত্ববাদী বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দালের ঔদ্ধত্যের কথা মনে আছে? ২০২২ সালের জুন মাসে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে তাদের কটূক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। প্রতিবাদে গোটা দুনিয়া কেঁপে উঠেছিল। প্রতিবাদে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ভারতীয় পণ্য বর্জন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়ায় ভারতের পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বিশ্বের কয়েকটি মুসলিম দেশ ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দেয়। বিপর্যয়ের মুখে পড়ে যায় মোদির ভারত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজেপি থেকে নূপুর শর্মাকে বহিষ্কার ও নবীন কুমার জিন্দালের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়। বিশ্বের অর্ধশত দেশ যখন ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে; তখন ব্যতিক্রম ছিল শুধু বাংলাদেশ। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ হয়েও নূপুর শর্মা ও জিন্দালের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেনি হাসিনা রেজিম। ঘটনার কয়েক মাস পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর ঢাকা সফরে এলে ওই সময়ের বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, ‘আমরা কিন্তু নূপুর শর্মার বক্তব্যের প্রতিবাদ করে ভারতকে বিপদে ফেলিনি’। শুধু তাই নয়, বিএসএফ সীমান্তে প্রতিনিয়ন বাংলাদেশীদের হত্যা করছে, অথচ কোনোদিনই প্রতিবাদ করেনি হাসিনা রেজিম সরকার। ভারত-বাংলাদেশ ‘স্বামী-স্ত্রীর সমম্পর্ক’ ‘দু’দেশের বন্ধুত্ব সর্বোচ্চ পর্যায়ে’ ‘ভারতকে বলেছি শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে’ ‘ভারতকে যা দিয়েছি সারাজীবন মনে রাখবে’ ইত্যাদি বক্তব্য দিয়ে ভারতের অধীনস্থতা প্রমাণের চেষ্টা হয়েছে। সব শেষ কয়েক মাস আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে গিয়ে চীনের সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার তিস্তা মহাপ্রকল্প ভারত দেখবে এবং দিল্লির অনুমতি নিয়ে শেখ হাসিনার চীন সফর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মানুষের আত্মমর্যাদাকে ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান এবং ৮ আগস্ট ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাধ্যমে যেন নতুন করে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছে।

মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার সীমান্তে বিএসএফের হাতে কিশোরী স্বর্ণা দাস হত্যার তীব্র প্রতিবাদ করে অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের অবস্থান ভারতকে জানান দেয়। অতঃপর ভারতের গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ‘দিল্লি থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে’, ‘তিস্তার পানির অধিকার চাইবে বাংলাদেশ’ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন। এছাড়া দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাকে (সার্ক) গতিশীল করার প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের হাসিনা রেজিমে করা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পাদিত সব চুক্তি ও স্মারকসই পর্যালোচনা করে দেখা হবে’ বক্তব্য যেন নতুন করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়কে জানান দিচ্ছে।

দিল্লি অখুশি হয় এমন কাজ শেখ হাসিনা রেজিম কখনো করেনি বরং পররাষ্ট্রনীতি ও কৌশলে ভারতের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সিকিমের লেন্দুপ দর্জির মতোই শেখ হাসিনা কার্যত মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার অজুহাতে বাংলাদেশকে প্রতিবেশী ভারতের পায়ের তলায় নিয়েছিল। লেন্দুপ দর্জির সিকিম ভারত দখল করে অঙ্গ রাজ্য করলেও বর্তমানের বিশ্ব বাস্তবতায় বাংলাদেশ দখল করা সম্ভব নয়। তবে চানক্যনীতিতে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের তিনটি পাতানো জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় এনে ‘নাচের পুতুল’ করে রেখেছিল। হাসিনার আদেশ নির্দেশে রাষ্ট্রের প্রশাসনযন্ত্রে কর্মরত সিভিল-মিলিটারি আমলা ও কর্মকর্তারা নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণে ঢাকার চেয়ে দিল্লির স্বার্থকে প্রাধান্য দিতেন। এখনো সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সর্বত্রই ‘ভারতের অনুগত’ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বহাল তবিয়তে থাকলেও ড. ইউনূসের দেশপ্রেমের দৃঢ়তা ও কঠোরতা দেশের মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছে। ইতোমধ্যেই তিনি দিল্লির দাসত্বের মনোপলি চেতনায় চপেটাঘাত করেছেন।

ড. মুহম্মদ ইউনূস গোটা বিশ্বে সুপরিচিত নাম। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার আগেই দেশবাসী এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নতুন বার্তা দিয়েছেন। ভারতকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে তা প্রতিবেশী মিয়ানমারসহ ভারতের সেভেন সিস্টার্সে (উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সাতটি রাজ্য) ছড়িয়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশ স্থিতিশীল না হলে প্রতিবেশীদের পক্ষে তা হবে বিপজ্জনক।’ অতঃপর তিনি একের পর এক সুচিন্তিত বক্তব্য দিচ্ছেন এবং নিজের চিন্তা চেতনা তুলে ধরছেন যা বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে উদ্বেলিত করছে। দেশের নতুন জেনারেশন ঐক্যবদ্ধ। ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশ যেন নতুন রূপে আবির্ভাব ঘটেছে। কোনো চাতুর্য ও রাখঢাক নেই; যা বিশ্বাস করেন এবং করতে চান রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাই বলছেন অকুতোভয়ে-অবলীলায়। তাঁর সততার বার্তা যেন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে শহর থেকে গ্রামান্তরে। দেশের মানুষ তাকে দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাখঢাক না করেই ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘দিল্লিতে থাকা শেখ হাসিনাকে নীরব থাকতে হবে। তিনি বাংলাদেশে গণহত্যা করেছেন, রক্ত ঝরিয়েছেন। দেশের মানুষ চায় তাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।’ তিনি বাংলাদেশ ও ভারত তথা দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টনের সমস্যা অবশ্যই আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী সমাধান করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশগুলোর নদীর পানি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের মতপার্থক্য দূর করতে কাজ করা করবে। এটা যেন বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের প্রাণের প্রত্যাশা তার মুখ দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। পুতুল হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত একের পর এক চুক্তি করে সমুদ্র বন্দর, ট্রানজিট, রেলপথ, নৌপথ, করিডোর সবকিছু নিয়েছে; অথচ ৩০ বছরের গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী পানির হিস্যা দেয়নি। ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তির সবকিছু চূড়ান্ত করেও একযুগ ধরে তা ঝুলিয়ে রেখেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ২ কোটি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে চীনের সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা মহাপ্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। তিস্তা নদী পাড়ের দুই কোটি মানুষ এতে দারুণ খুশি। কিন্তু চীন তিস্তা প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রক্রিয়া করতেই দিল্লির ইন্ধনে শেখ হাসিনা সেটা স্থগিত করে। এখন ভারতের বিশেষজ্ঞরা তিস্তা প্রকল্প করার প্রস্তাব দিয়েছে। অনুগত ভৃত্যের মতো হাসিনা তা মেনে নিয়ে ২ কোটি মানুষের স্বপ্ন ভঙ্গ করেছে। কিন্তু ড. ইউনূস স্পষ্ট করে বলেছেন, তিস্তার পানি নিয়ে তালবাহনা চলবে না।

ড. ইউনূস বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আসিয়ানের মতো সার্ককে গতিশীল করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। এটাই হচ্ছে একজন দেশপ্রেমী রাষ্ট্র নেতার সময়োপযোগী এবং দৃঢ়চেতা চেতনা। প্রধান উপদেষ্টার পদের শপথ নিয়েই তিনি বুঝেছেন উন্নয়ন, শাস্তি শৃংখলা রক্ষায় প্রতিবেশী দেশগুলোর ঐক্য অপরিহার্য। সে জন্য তিনি সার্ককে নতুন করে গতিশীল করার কথা বলেছেন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আসিয়ান হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম ১০টি দেশ নিয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর এই সমিতিকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইউনিয়ন বলা হয়। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইউরোপ মহাদেশের ২৭টি দেশ নিয়ে গঠিত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জোট। গোটা বিশ্বের এই জোট খুবই শক্তিশালী। দেশগুলোর নাগরিকদের অন্যদেশে যেতে ভিসার প্রয়োজন হয় না। এক সময় এ জোটের সদস্য ছিল যুক্তরাজ্য। কিন্তু ব্রেক্সিট (ইইউ থেকে ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্য আলাদা হয়ে যায়) করে পৃথক হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার পর থেকে যুক্তরাজ্য প্রচণ্ড অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে গেছে।

ভারতের গণমাধ্যমে ড. মুহম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, তিনি আসন্ন জাতিসংঘ অধিবেশনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দমোদর মোদির সঙ্গে সাইডলাইনে বৈঠক করতে চান। সেখানে তিনি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) সব সদস্য রাষ্ট্রের সরকার প্রধানদের একত্র করে ছবি তোলার চেষ্টা চালাবেন। তিনি বলেছেন, ‘মহৎ একটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সার্ক জোট গঠন করা হয়েছিল। এখন এর অস্তিত্ব শুধু কাগজেকলমে। সার্কের কোনো কার্যকারিতা নেই। আমরা সার্কের নামই ভুলতে বসেছি। আমি সার্কের চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাই।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সার্ক সম্মেলনের আয়োজন হচ্ছে না। আমরা সবাই একত্র হলে, অনেক সমস্যার সমাধান হবে’। কত সুদূর প্রসারী চিন্তা। সার্কের বর্তমান সদস্য দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভারত, আফগানিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। সর্বশেষ ২০১৬ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলন আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরের উরি সেনা ক্যাম্পে হামলার জেরে ভারত এতে যোগ দিতে অস্বীকার করে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ, ভুটান ও আফগানিস্তানও সুর মেলালে সম্মেলন বাতিল হয়। মূলত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের চিন্তা চেতনার ফসল হচ্ছে এই সার্ক। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারতের সাথে দূরত্ব কমাতে আঞ্চলিক সহায়তাকে গুরুত্ব দিয়ে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহায়তা সংস্থা (সার্ক) গঠনে তার উদ্যোগ নেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র-সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে রাশিয়া) বিরোধে পক্ষভুক্ত হয়ে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার বদলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সহযোগিতা স্থাপিত হলে বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে। জিয়াউর রহমান এই লক্ষ্যে সার্কের রূপরেখা রচনা করেন এবং এইচ এম এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৫ সালে তা বাস্তবে রূপ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় সার্ক। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা করার জন্যই মূলত সার্ক গঠন করা হয়। কিন্তু সেটা অকার্যকর করে রাখা হয়েছে বহুদিন থেকে।

ড. ইউনূস যেন বাংলাদেশের মানুষকে যাদু দেখাচ্ছেন। ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ছাত্রদের অনুরোধে ড. মুহম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হন। ৮ আগস্ট শপথ নিয়েই ১১ আগস্ট থেকে তিনি সংস্কার শুরু করেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব হওয়ায় বিশ্বের বহুদেশে তিনি সমাদৃত ব্যক্তিত্ব। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে তিনি গোটা বিশ্বে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। ভারতে পালিয়ে যাওয়া পতিত হাসিনা তাকে ‘সুদখোর’ হিসেবে অভিহিত করলেও বাংলাদেশের মানুষ এবং তামাম বিশ্বে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। একজন রাষ্ট্র নায়কের সফল নেতৃত্বের জন্য প্রয়োজন বিশ্বাস, সৎকর্ম, কল্যাণকামিতা ও সহিষ্ণুতা চিন্তা চেতনা। ড. ইউনূসের যোগ্য নেতৃত্বে রয়েছে সেসব মহৎ গুণ। নেতৃত্বের চেয়ারে বসে সুবিচার, সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও নিরপেক্ষতার সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন, সত্যবাদী হওয়া আবশ্যক। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের আগে সক্রিয়ভাবে পরিকল্পনা করা এবং কৌশল সুসংগঠিত করা জরুরী রাষ্ট্রনায়কের জন্য। এছাড়াও কঠিন পরিস্থিতিতেও একজন নেতাকে আশা না হারিয়ে দৃঢ়চেতা হয়ে সততার সঙ্গে এগিয়ে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবগুলো গুণই ড. মুহম্মদ ইউনূসের রয়েছে। ড. ইউনূস বাংলাদেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথেই হাঁটছেন।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‌্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা

বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা