ঢাকা   শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪ | ২৪ কার্তিক ১৪৩১
কিছু হলেই সড়ক অবরোধ করে দাবি আদায়ের যে অপসংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তা বন্ধ করতে হবে

সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীদের অবরোধে চরম দুর্ভোগ

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম


রাজধানীর সাতটি কলেজের জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কমিশন গঠন করার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সায়েন্সল্যাব অবরোধ করেছেন এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে এসে শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাবে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করেন। সাত কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিক্ষোভ করছেন ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মো. নেয়ামুল হক ও উপাধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমানের পদত্যাগ এবং আগের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক বেদর উদ্দিনকে পদে ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলেজের মূল ফটকে বিক্ষোভ করেছেন। এর ফলে ধানমন্ডি সাত মসজিদ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরাও বলেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে থাকবেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে শহরজুড়ে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব, মিরপুর রোড, এলিফ্যান্ট রোড সংলগ্ন সব রাস্তায় যানজট তৈরি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী ও পথচারীরা। এসময় এই সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও কেউ কেউ এই সড়কে এসে বিপদে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়েছেন এ্যাম্বুলেন্সের রোগীরা। অবরোধের কারণে রোগীবহনকারী গাড়ি হাসপাতালে পৌঁছাতে পারছেনা। এতে রোগীর সাথের স্বজনরা পড়েছেন অসহনীয় কষ্টের মধ্যে। এই এলাকার বেশকয়েকটি সড়ক অবরোধের কারণে বন্ধ থাকার ফলে অন্য সড়কগুলোতে দেখা দেয় তীব্র যানজট। এই যানজট ছড়িয়ে পড়ে সারা ঢাকা নগরীতে।

সাত কলেজ এবং সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও সড়কে নেমেছেন ৩৫ প্রত্যাশীরা। তারা সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে সেই এলাকাতেও যানজট।

শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে স্থবির যান চলাচলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পথচারীরা। আবুল কালাম নামের একজন পথচারী বলেন, আমরা কী দোষ করেছি। প্রতিদিন সড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তি সৃষ্টি করে অথচ সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয় না। এই সরকার তো শিক্ষার্থীদের সরকার তাহলে কেন শিক্ষার্থীরা বারবার সড়কে নামছে। আমাদের দোষ হচ্ছে আমরা এই দেশের নাগরিক। কিছু হলেই আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হবে। আমাদের আগেও দুর্ভোগ ছিল, এখনও আছে।

আরেক পথচারী বলেন, আমার মেয়ের পরীক্ষা আছে। তাড়াতাড়ি পরীক্ষার হলে যেতে হবে নয়তো পরীক্ষার হলে ঢুকতে পারবে না। তাই রিকশা থেকে নেমে হেঁটে যাচ্ছি। কিছু থেকে কিছু হলেই সড়ক অবরোধ করে দাবি আদায়ের যে অপসংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তা বন্ধ করতে হবে। আগে দাবি দাওয়া ছিল প্রেসক্লাব কেন্দ্রিক। সেখানে সবাই তাদের দাবি আদায়ের জন্য প্লেকার্ড বা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়াতেন। এখন সবাই সড়ক অবরোধ করে। এই সংস্কৃতি বন্ধ না হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি থেকে যাবে।

মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক চালক বলেন, সকাল সকাল হোন্ডাটা নিয়ে বের হয়েই একটা যাত্রী পেয়েছি। কিন্তু সায়েন্সল্যাব এসেই আটকে গেছি। সড়ক অবরোধের কারণে যাত্রী অতিষ্ঠ হয়ে নেমে চলে গেছে। আমি তিন ঘণ্টা ধরে এখানেই দাঁড়িয়ে আছি। শিক্ষার্থীদের অনেক রিকোয়েস্ট করার পরেও তারা আমার হোন্ডাটা যেতে দেয়নি। দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে, অথচ এখনও এক টাকাও ইনকাম করতে পারিনি, দুঃখের কথা আর কাকে বলবো।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ফর্মে ফিরতে বাবরকে কোহলির পথে হাঁটতে বললেন পন্টিং

ফর্মে ফিরতে বাবরকে কোহলির পথে হাঁটতে বললেন পন্টিং

মেরিটাইম সেক্টরে বিদেশীদের বিনিয়োগের আহবান উপদেষ্টার

মেরিটাইম সেক্টরে বিদেশীদের বিনিয়োগের আহবান উপদেষ্টার

সাঁতারে আক্ষেপের নাম ‘ইলেক্ট্রোনিক্স স্কোরবোর্ড’!

সাঁতারে আক্ষেপের নাম ‘ইলেক্ট্রোনিক্স স্কোরবোর্ড’!

সাবিনাদের জন্য শনিবার পুরস্কার ঘোষণা করবে বাফুফে

সাবিনাদের জন্য শনিবার পুরস্কার ঘোষণা করবে বাফুফে

ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-২ আহত-৩

ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-২ আহত-৩

সর্বনি¤œ হজ প্যাকেজ ৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা ঘোষণা

সর্বনি¤œ হজ প্যাকেজ ৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা ঘোষণা

যশোরে মাদক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

যশোরে মাদক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

৭ নভেম্বরের চেতনাকে যারা ধারণ করে না, তারা গণতন্ত্রের শত্রু  - ডা.মাজহার

৭ নভেম্বরের চেতনাকে যারা ধারণ করে না, তারা গণতন্ত্রের শত্রু - ডা.মাজহার

প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার ২ সেকেন্ডের মধ্যেই কার চাকরি খাবেন ট্রাম্প?

প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার ২ সেকেন্ডের মধ্যেই কার চাকরি খাবেন ট্রাম্প?

ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস; চব্বিশের প্রেরণা

ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস; চব্বিশের প্রেরণা

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাগপার আলোচনা সভা

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাগপার আলোচনা সভা

মানুষের মতোই কথা বলবে, আচরণ করবে এআই!

মানুষের মতোই কথা বলবে, আচরণ করবে এআই!

আখাউড়া প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন

আখাউড়া প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন

পরিবহনব্যবস্থা

পরিবহনব্যবস্থা

রমজানের নিত্যপণ্য আমদানিতে ব্যাংকে লাগবে না নগদ অর্থ: গভর্নর

রমজানের নিত্যপণ্য আমদানিতে ব্যাংকে লাগবে না নগদ অর্থ: গভর্নর

ময়নামতি ও বসুরহাটে ইউসিবির দুই নতুন শাখা উদ্বোধন

ময়নামতি ও বসুরহাটে ইউসিবির দুই নতুন শাখা উদ্বোধন

অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস : সাফল্য ও ব্যর্থতা

অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস : সাফল্য ও ব্যর্থতা

৫ আগস্টের আয়নায় দেখা ৭ নভেম্বর

৫ আগস্টের আয়নায় দেখা ৭ নভেম্বর

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন

জাইকার সহযোগিতায় রাজউকের তৃতীয় ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট সেমিনার অনুষ্ঠিত

জাইকার সহযোগিতায় রাজউকের তৃতীয় ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট সেমিনার অনুষ্ঠিত