ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয় লেন প্রকল্প কাজে ধীরগতি
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনের কাজ তোড়জোড় শুরু হলেও প্রকল্পের কাজ তিন বছরে মাত্র ১০ শতাংশের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের ২১ কিলোমিটার কাজের ৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় আটকে আছে সিলেটবাসীর স্বপ্নের ৬ লেন প্রকল্পের কাজ। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সহজ হবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জনপদের যাতায়াত ব্যবস্থা। একইসঙ্গে বদলে যাবে পুরো অঞ্চলের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপট। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যা সমাধান করে কাজের গতি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
সওজ সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সিলেট-ঢাকা ৬ লেন মহাসড়ক প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এই প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ২০৯ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ সম্প্রসারণ এবং সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৫৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার এলাকা চার লেনে উন্নীতকরণ করার কথা। এর মধ্যে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের প্রায় চার বছর চলে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পের এক চতুর্থাংশ কাজও সম্পন্ন হয়নি। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে জমি অধিগ্রহণ জটিলতাও রয়েছে।
মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে একপাশ বন্ধ রেখে সম্প্রসারণ কাজ চলছে। বেশ কয়েকটি স্থানে চলছে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ কাজ। নির্মাণ কাজের কারণে সড়ক সরু হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের। এছাড়া মহাসড়কের সিলেট বিভাগ অংশের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ কাজ ছাড়াও ভোগান্তি বাড়িয়েছে মহাসড়কের খানাখন্দ। বিভিন্ন স্থানে সড়ক দেবে গেছে, কোথাও তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্তের। আবার কোথাও পিচ সরে গিয়ে নিচের পাথর বের হয়ে এসেছে। এসব কারণে যানবাহনের গতি কমে আসায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যাও।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়কের সিলেট অংশের হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে অলিপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়ক এবং সেতু ও কালভার্ট সম্প্রসারণ কাজ চলছে। সিলেটের ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমার কয়েকটি স্থানে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। কিন্তু কাজে ধীরগতি থাকায় দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। মহাসড়কের সিলেট অংশের শতাধিক স্থানে খানাখন্দ ও ভাঙা থাকায় অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহনকে।
চালকরা জানান, আগে সিলেট থেকে ঢাকায় যেতে বা আসতে ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগতো। মহাসড়কের অবস্থা ছিল ভালো। কিন্তু ছয়লেনের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে মহাসড়কের সংস্কার কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তাই একদিকে সম্প্রসারণ কাজের জন্য ভোগান্তি, অন্যদিকে ভাঙাচোরা মহাসড়কের কারণে এখন ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। একেক স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকতে হয়। তাই এখন সিলেট-ঢাকা যাতায়াতে আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগছে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক-৩ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আমিমুল এহসান বলেন, আমাদের কাজের মেয়াদ ২০২৮ সাল পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে কাজ হবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, এই সড়কের কাজ শেষ হলে ১০০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। পর্যাপ্ত আন্ডারপাস ও ওভারপাস দেওয়া হবে, যাতে মানুষ নিরাপদে রাস্তা পারাপার হতে পারে। বড় গাড়ি এক লেনে চলবে, ছোট গাড়ি আরেক লেনে। এতে দুর্ঘটনা কমবে। সেইসঙ্গে সড়কের বাঁকগুলো সোজা করে দেওয়া হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জীবনযাত্রার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যেও গতি আসবে। জয়েন ভেনচারের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে ১২টি কালভার্ট এবং ১১টি ব্রিজের কাজ রয়েছে। ১২টি কালর্ভাটের মধ্যে সাতটির কাজ চলছে, তিনটির কাজ শেষ হয়েছে। ১১টি ব্রিজের মধ্যে ৯টির কাজ চলছে। বাকিগুলো পরে ধরবো। আমরা ২০২৩ সালে কাজ শুরু করেছি। এজন্য শেষ হতে সময় লাগবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে এক হাজার ৩০০ কোটির কাজ চলছে। মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড এবং পিডিএল নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটি বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে এই অংশের ৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হবে ২৮ সালের জুনে। সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, এই প্রকল্পের কোনো জমি আমরা এখন পর্যন্ত হস্তান্তর করতে পারিনি। তবে আমরা অনেকগুলো মামলার শেষ দিকে আছি। আশা করি আগামী ৬ মাস নাগাদ আমরা জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় যেতে পারবো। এই মহাসড়কটি একদিকে এশিয়ান হাইওয়ে, বিমসটেক করিডোর এবং সার্ক হাইওয়ে করিডোর এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অন্যদিকে বাণিজ্যিক দিক দিয়েও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই সব দিক বিবেচনায় দ্রুত সড়কের কাজ করার তাগিদ ব্যবসায়ী নেতাদের। সিলেট দি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্টিজ লিমিটেডের সভাপতি এমদাদ হোসেন বলেন, কানেক্টিভিটি মানবসভ্যতা, অর্থনৈতিক উন্নতি থেকে শুরু করে সবকিছুতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি থাকবে যতদ্রুত সম্ভব এই ৬ লেনের কাজ সম্পন্ন করা উচিত।
এ প্রসঙ্গে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন জানান, মহাসড়কটি নতুন করে নির্মাণ হচ্ছে। দুই লেনের মহাসড়কটি ছয় লেন হচ্ছে। তাই পুরনো সড়কে খুব বেশি ব্যয় করা হচ্ছে না। যানবাহান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন কেবল ততটুকু করা হচ্ছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত
অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে
দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১
নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে
অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন
ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ
মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি
রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী
বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের
আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া
ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী
সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির
রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার