নারায়ণগঞ্জ থেকে পালিয়েছে ওসমান পরিবার, তবু কাটেনি আতঙ্ক!

Daily Inqilab মোক্তার হোসেন মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ থেকে

১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম


রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সন্ত্রাস আর পেশির জোরে প্রাচ্যের ড্যান্ডি খ্যাত নারায়ণগঞ্জে রাজত্ব করেছেন ওসমান পরিবার। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের পুরোটা সময় ওসমান পরিবারের দুই সন্তান অয়ন ওসমান ও আজমেরী ওসমান নিজেকে নারায়নগঞ্জের কিং বলে পরিচয় দিতেন।

রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পুরো ওসমান পরিবার বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে পুরো নারায়ণগঞ্জ রেখেছিলেন হাতের মুঠোয়। আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শামীম ওসমান হয়ে উঠেন নারায়নগঞ্জের অলিখিত মালিক। শামীম ওসমান প্রায় সময়ই বিভিন্ন সভা-সমাবেশে প্রশাসনের সামনে প্রকাশ্যেই অহঙ্কার করে নিজের অস্ত্রবাজিসহ নানা অপকর্মের কথা তুলে ধরতেন। সন্ত্রাস ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার কারণেই পরবর্তীতে ‘গডফাদার’ উপাধি দেয়া হয় তাকে। বহু টর্চার সেল নির্মাণ করে গুম-খুন, নির্যাতন, প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ক্যাডার বাহিনী নিয়ন্ত্রন, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ নিজ দলের রাজনীতিবিদদের ঘায়েল ও প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে রাখতে শামীম ছিলেন দশে দশ! সর্বমহলেই তার একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ থাকতো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় নারায়ণগঞ্জে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও তার পরিবার।

যে কেউ তার মতের বাইরে গেলেই তাকে নানাভাবে হুমকি-ধামকির শিকার হতে হতো। নিজ দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্মকর্তারাও তার হয়রানি থেকে মুক্তি পেতেন না।
এখন ওসমান পরিবারহীন নারায়ণগঞ্জে বইছে স্বস্থি। জনসাধারণের মুখে মুখে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কথা, ওসমান পরিবার এতটাই ভয়ঙ্কর যে তাদের পালিত সন্ত্রাসীদের ভয়ে এখনো আতঙ্ক কাটেনি জনমনে।

যে ভাবে শুরু : ১৯৯৬ সালে শামীম ওসমান এমপি হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবারের ঐতিহ্য ও খ্যাতি এবং রাজনৈতিক আদর্শের পতন শুরু হয়। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পুরো নারায়ণগঞ্জের রাজত্ব নিজের কব্জায় নিতে শামীম ওসমান গড়ে তোলে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। নারায়ণগঞ্জে শুরু হয় ওসমানী পরিবারের একচ্ছত্র শাসন ব্যবস্থা। ২০০০ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে নারায়ণগঞ্জে গোলাম আযম, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়। এরপরেই মূলত ওই এলাকার নামকরণ হয় সাইনবোর্ড। ওই সমাবেশের তিনদিন পর মুন্সিগঞ্জে একটি কর্মসূচি ছিল মতিউর রহমান নিজামীর। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি নিজামী। জামায়েত ও জামায়েত ইসলামির আমির গোলাম আযমকে নিষিদ্ধ ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা, খালেদা জিয়ার লংমার্চের গাড়ি বহর আটকে দেওয়াসহ পুরো নারায়ণগঞ্জে হত্যা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি এবং লোটপাটের কারণেই লোকমুখে শামীম ওসমান হয়ে ওঠেন নারায়ণগঞ্জের ‘গডফাদার’।

২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের পর গডফাদারের রাজত্ব ছেড়ে শামীম ওসমান পালিয়ে যান। সংসদ নির্বাচন এগিয়ে এলে ২০০৬ সালের শেষদিকে পুনরায় তিনি দেশে আসেন। কিন্তু ২০০৭ সালে ‘ওয়ান ইলেভেনের’ একদিন আগে তিনি আবার দেশ ছাড়েন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠন করা হলে এপ্রিলে তিনি আবার দেশে ফেরেন। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করে ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভীর জনপ্রিয়তার কাছে হেরে যান। এরপর ২০১৪, ১৮ ও ২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমপি হয়ে পুরো নারায়ণগঞ্জে ওসমানী রাজত্ব কায়েম করেন শামীম ওসমান। স্থানীয় নির্বাচনে নিজের পছন্দের প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। পছন্দের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় নিশ্চিত করতে তিনি পিছপা হতেন না। নির্বাচনে প্রশাসনের কর্তব্যাক্তিরা তার প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে প্রকাশ্যে হুমকি দিতেও দেখা গেছে শামীম ওসমানকে।

আলোচিত সেভেন মার্ডারে শামীম ওসমানের সম্পৃক্ততা : ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম। তাদের অপহরণ করেন র‌্যাব-১১ এর কিছু অর্থলোভী সদস্য। অপহরণের তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুলসহ ছয়জনের হাত-পা বাঁধা লাশ নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে। পরদিন ভেসে ওঠে নজরুলের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ। ওই ঘটনার সঙ্গে নূর হোসেনের পাশাপাশি শামীম ওসমানের জড়িত থাকার কথা গণমাধ্যমকর্মীদের জানায় প্রয়াত নজরুল ইসলামের পরিবার।

বিচার কার্যক্রম শেষে ঘোষণা করা হয় রায়। তবে আলোচিত সেই রোমহর্ষক হত্যাকা-ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আড়ালে রয়ে যান নারায়ণগঞ্জের গডফাদার খ্যাত শামীম ওসমান।
মেধাবী শিক্ষার্থী ত্বকী হত্যায় ওসমান পরিবার : নারায়ণগঞ্জে আরেক আলোচিত ঘটনা মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর মোহাম্মদ ত্বকী হত্যাকা-। তানভীর মোহাম্মদ ত্বকী হত্যায় ওসমান পরিবারের সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা অভিযোগ করে আসছিলেন ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। তিনি গণমাধ্যমে অভিযোগ করে বলেন, ত্বকী হত্যায় শামীম ওসমান জড়িত। আর তা ঘটিয়েছে শামীমের ভাতিজা আজমেরী ওসমান। কিন্তু ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সেই বিচার কার্যক্রমও ব্যাহত করেছেন দূর্দন্ত প্রতাবশালী শামীম ওসমান।

নির্বাচনী হলফনামায় সম্পদ : সর্বশেষ নির্বাচনীয় হলফনামা অনুযায়ি শামীম সাড়ে ১২ গুণের বেশি কৃষিজমির মালিক বনে যান। পূর্বাচলে রাজউকের ১০ কাঠার প্লট আর দুটি টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়িতো রয়েছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছিল স্ত্রীর সম্পদও। দশম সংসদ নির্বাচনে শামীম ওসমানের স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে নিজের নামে ১০ শতাংশ কৃষিজমি, ১৬ শতাংশ জমির ওপর ৭৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের দোতলা আবাসিক বাড়ি, উত্তরায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের ৯ কাঠার জমি দেখিয়েছিলেন। তার নিজের নামে ছিল ১০ তোলা সোনা।
২০২৪ সালের নির্বাচনী হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে শামীম তাঁর নিজের নামে ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ১২৩ শতাংশ কৃষিজমি, ১০ শতাংশ অকৃষি জমি। যার মূল্য ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের পূর্বাচল রাজউক নিউ টাউনে ১০ কাঠার প্লট এবং ১৬ শতাংশ জমির ওপর ৭৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের দোতলা আবাসিক বাড়ি দেখান। এ সময় পর্যন্ত সোয়া ১২ গুণের বেশি কৃষি জমির মালিক হয়েছেন। তবে এসব স্থাবর সম্পত্তির মূল্য ২০১৪ সাল থেকে ২ শতাংশ কম দেখিয়েছেন।

১০ বছর আগে শামীমের নামে কোনো গাড়ি ছিল না। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় নিজের নামে দুটি গাড়ি দেখিয়েছেন তিনি। একটি ৫৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকা মূল্যের টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার ভি-৮ গাড়ি, অন্যটি ৮১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা দামের টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার। এ ছাড়া একটি পিস্তল ও একটি রাইফেল দেখিয়েছেন। নিজের নামে ৩৮ তোলা সোনাসহ ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার এফডিআরসহ ৭ কোটি ৯৮ লাখ ৩ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পত্তি দেখিয়েছিলেন।

বিদেশে অর্থ পাচার : দশম সংসদ নির্বাচনের সময় শামীম ওসমানের জমা দেয়া হলফনামার সঙ্গে দ্বাদশ নির্বাচনের হলফনামা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১০ বছরে তার অস্থাবর সম্পত্তি তিন গুণ বেড়ে দাড়িয়েছে ৭ কোটি ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। যা আগে ছিল ২ কোটি ৪১ লাখ টাকার ৭৩ হাজার টাকা। আর হুন্ডি ও মানি লন্ডারিং করে ওসমান পরিবার পাচার করেছেন ৫ হাজার কোটি টাকার ওপর। শামীম ওসমান, তার ভাই সেলিম ওসমান, শামীমের ছেলে অয়ন ওসমান, স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি, শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু, বড় ভাইয়ের স্ত্রী পারভীন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমানসহ গোটা ওসমান পরিবার হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে গত সাড়ে ১৫ বছরে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে শামীম ওসমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

শামীম ওসমান নানা ভাবে দুবাই, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে এই টাকা পাচার করেন। সেখানে বাড়ি, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুই করেছেন শামীম ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
সূত্র জানায়, শামীম তাঁর শ্যালক টিটু, ভাই সেলিম, ভাবি পারভীন, ভাতিজা আজমেরীও দুবাইয়ে বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আজমেরী ওসমান তার স্ত্রী ও মাকে নিয়ে দুবাইয়ের বাড়িতে ওঠেছেন। সেলিম ওসমানের বাড়ি রয়েছে মালয়েশিয়ায়। শামীমের বাড়ি রয়েছে তুরস্ক, কানাডার টরন্টো, দুবাইয়ের আজমান ও আমেরিকাতে। শামীমের শ্যালক টিটু পাঁচ থেকে ছয়টি বাড়ি কিনেছেন যুক্তরাষ্ট্রে।
সূত্র জানায়, পাচার করা এসব অর্থের মূল উৎস ছিল চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা, জমি দখলবাজি, পরিবহন ব্যবসা, ইন্টারনেট-ডিশ ব্যবসা, নৌপথে পণ্য পরিবহনের নিজস্ব বেশ কয়েকটি বড় ট্যাঙ্কার জাহাজ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে।

নারায়ণগঞ্জের অপরাধ জগতের মাফিয়া ভাতিজা আজমেরী : শামীম ওসমানের ভাই জাতীয় পার্টির প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের একমাত্র ছেলে আজমেরী ওসমান। পুরো নারায়ণগঞ্জের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, খুন, ক্যাডার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ, প্রকাশ্যে ২ থেকে ৩শ’ ক্যাডার বাহিনীর হাতে বিদেশী অস্ত্রসহ শতাধিক গাড়ির মহড়াসহ এমন কোন অপরাধ নেই যার সাথে আজমেরি ওসমান জড়িত নেই। তার হামলা থেকে রেহাই পায়নি সময়ের নারায়ণগঞ্জ নামের পত্রিকা অফিসও।
শামীমের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১৬ হত্যার অভিযোগ রয়েছে। তারপরও প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াতেন নারায়ণগঞ্জ। আলোচিত মেধাবীছাত্র ত্বকী হত্যার ঘটনায় র‌্যাব তার বিরুদ্ধে খসড়া অভিযোগপত্র দিয়েছিল। তবে রাষ্ট্রীয় শীর্ষ পর্যায় থেকে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা থাকায় কখনও গ্রেফতার হননি আজমেরী।

এমনকি হত্যা মামলায় তার নাম দিতে চাইলেও থানা পুলিশ তা নিতো না। নারায়ণগঞ্জের সকল সন্ত্রাসী কর্মকা- ও অপরাধের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকলেও বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি তাকে। বাবা-চাচাদের আস্কারায় খুনি আজমেরী ওসমান নারায়ণগঞ্জে অপরাধের স্বর্গ রাজত্ব গড়ে তুলেছিলেন। তিনি কাউকেই মানতেন না। যা চাইতেন তাই হতো। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা লিখলে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি এমনকি হামলা শিকার হতে হয়েছে। শুধু ত্বকী হত্যা নয় আরও বিভিন্ন খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন আজমেরী ওসমান। ৫ আগস্টে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

ক্যাডার বাহিনীতে পদহীন নেতা : শামীমের কুকর্মে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের কোনো পদ-পদবি ছিল না। ‘সহজে টাকা কামানো যায়’- এ কারণে আওয়ামী লীগের পদের চাইতে শামীমের ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতিকেই অনেকে বেশি পছন্দ করতেন।

সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পেছন থেকে খেলেন শামীম। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগের কমিটি ভেঙে দিলেও সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি। মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, ছাত্রলীগ নেতা রাফেল প্রধান, হিমেল খান, বিন্দু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাফায়াত আলম সানি, বন্দরের ক্যাডার খান মাসুদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, সিদ্ধিরগঞ্জ যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি, সিদ্ধিরগঞ্জ ছাত্রলীগ নেতা শাহজালাল বাদলসহ কয়েকশ’ ব্যক্তিকে পদের লোভ দেখিয়ে তাদের মাধ্যমে অপকর্ম করে সম্পদের পাহাড় গড়েন তিনি।

পরিবহন মাফিয়া শামীম : নারায়ণগঞ্জের এমন কোন খাত নেই যা নিয়ন্ত্রণ করেনি ওসমান পরিবার, পরিবহন খাত এর ব্যতিক্রম ছিলো না। শামীম ওসমানের নিজের বাস ছিলো শীতল পরিবহন। নারায়ণগঞ্জ থেকে যাতায়াতকারী সকল পরিবহননেই চাঁদা দিতে হতো শামীম ওসমানকে। পরিবহন সুবিধা দেয়ার জন্য ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলকেও অনেক সময় বাধাগ্রস্থ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে।

ওসমান পরিবারের টর্চার : নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবারের অসংখ্য টর্চার সেল ছিল। এর মধ্যে আজমেরী ওসমান আলোচিত মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে অপহরণের পর প্রথমে আল্লামা ইকবাল সড়কে আজমেরীর মালিকানাধীন ‘উইনার ফ্যাশন’- টর্চার সেলে ও পরে আরেকটি টর্চার সেলে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ তোলেন তাঁর বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বী। একটি টর্চার সেল থেকে ত্বকীর ব্যবহৃত রক্তমাখা প্যান্ট উদ্ধার করেছিল র‌্যাব। ওসমান পরিবারের আরেকটি টর্চার সেল ছিলো নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্ক, সংক্ষেপে নম পার্ক। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা স্টেডিয়াম এলাকায় অবস্থিত এই পার্ক বিভিন্ন কারণে কয়েক বছর ধরে আলোচনায়। এখানে বসেই শামীম ওসমানের লোকজন নানা অপকর্ম করত বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।

সরকারি তোলারাম কলেজের ছাত্র সংসদ ছিল ওসমান পরিবারের প্রকাশ্য টর্চার সেল। সংবাদকর্মী থেকে সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রদলের কর্মী কেউই বাদ যায়নি এই টর্চার সেলের নির্যাতন থেকে। ২০২২ সালের ১৫ জুলাই রাতে এই কলেজের সামনের সড়ক দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ছাত্রদলের চার নেতাকর্মীকে ওই টর্চাল সেলে নিয়ে নির্যাতন চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় দুই সাংবাদিক সেখানে গিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে চাইলে বাধা দিয়ে তাদেরকে মারধর করা হয়।
শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের অফিস ছিল চাষাঢ়ায় ডাকবাংলোর পাশে একটি বহুতল ভবনে। মূলত ওই অফিসটি ব্যবহার করা হতো টর্চার সেল হিসেবে। চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবটিকে অঘোষিত কার্যালয় ও টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতেন শামীম ওসমান। এই রাইফেল ক্লাবে বসে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, কাউকে শাসানোসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতো শামীম ওসমান।

এলিট শ্রেণির ক্লাব হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের ৩০৪ নম্বর কক্ষটি শামীম ওসমানের নামে বরাদ্দ ছিল। শামীম ওসমান শহরের অপছন্দের ব্যবসায়ীদের ডেকে এনে এখানে শায়েস্তা করতেন। সাবেক জাতীয় ফুটবলার সম্রাট হোসেন এমিলি একবার অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, এ ক্লাবে তাকে ডেকে নিয়ে শামীম ওসমান অস্ত্র ঠেকিয়েন। নারায়ণগঞ্জ শহরের টর্চার সেল গুলোতে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে আটকে রেখে নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি চালাত ওসমান পরিবার। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের সাথে সাথে ওসমান সাম্রাজ্য হানা দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় প্রতিটি টর্চার সেল গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।

ক্ষমতার সাম্রাজ্যে পিছিয়ে ছিল না ওসমান পতিœ আম্মাজান-ভাবীজান : ফতুল্লা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে বন্দর সর্বত্রই ছিল তাদের সন্তানদের বাহিনীর একচ্ছত্র আধিপত্য। একদিকে আম্মাজান খ্যাত পারভীন ওসমান। অপরদিকে ভাবীজান খ্যাত লিপি ওসমান। আম্মাজানের গুনধর পুত্র আজমেরী ওসমানের ছিল বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। এই বাহিনীর কাজই ছিল ধনাঢ্য নিরিহ ব্যক্তিদের তালিকা করা। আর রাতের আঁধারে তাদেরকে তুলে এনে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়া। আর টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেই নানা রকম অত্যাচার। অপরদিকে ভাবীজান সালমা ওসমান লিপির কাছে শহরের ধনাঢ্য ব্যাক্তিরা ধা দিতেন স্বামী শামীম ওসমান ও ছেলে ওয়ন ওসমানকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের কাজ বাগিয়ে নিতে। ছেলে অয়ন ওসমান ছাত্রলীগের কোনো পদে না থেকেই জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন বিগত প্রায় ১ যুগেরও বেশী সময়। অয়ন ওসমান বাহিনীরও কাজও ছিলো ভাইজানের বাহিনীর মতোই। বড় ভাই আজমেরীর আধিপত্য যেখানে ছোটো ভাই অয়ন সেই স্থান পাশ কাটিয়ে চলে যেতেন। একইভাবে অয়নের যেখানে আধিপত্য আজমেরী পাশ কেটে চলে যেতেন। দুই ভাই ও তাদের আম্মাজানদের কাছে অদৃশ্যভাবে পুরো জেলার রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা জিম্মি ছিলেন বলে একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।

অয়ন ওসমানের ছত্রছায়ায় নারায়ণগঞ্জে বেপরোয়া ছাত্রলীগ : বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে অয়ন ওসমানও আওয়ামী লীগের কোনো পদ পদবীতে না থেকেও রাজনীতির মাঠে অনেক প্রভাব ফেলতেন। বিশেষ করে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগকে তিনি এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন। জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের পদে আসতে হলে তার অনুগত হতে হতো। তার আনুগত্যের বাইরে কেউ ছাত্রলীগের পদে আসতে পারতেন না। সেই সঙ্গে অয়ন ওসমানের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতারা অনেক সময় মূল দলের নেতাদেরও অপমান অপদস্থ করতেন। তাদের কারণে ত্যাগী নেতারাও মূল্যায়ন পেতেন না। ছাত্র অবস্থায়ই অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল তাদের হাতে। সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় শামীম ওসমানের অস্ত্রের মহড়ায় তারা অস্ত্র সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বর্তমানে তাদের মধ্যে অনেকে দেশের বাইরে ও দেশেই আত্মগোপনে রয়েছেন।

বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেননি ওসমান পরিবার : গত ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও নারায়ণগঞ্জ জেলায় অন্তত ৫৫টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা পড়েনি। এর মধ্যে শামীম ওসমান ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছে রয়েছে আটটি আগ্নেয়াস্ত্র। পরবর্তীতে এসব অস্ত্র অবৈধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে গুলিবর্ষণ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলন চলাকালীন সময়ে গত ১৯ জুলাই বিকেলে শহরের চাষাঢ়ায় শামীম ওসমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মীসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী মিছিল বের করেন। আর ওই মিছিলে শামীম ওসমান ও তার কয়েক শতাধিক অনুসারী আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে শহরের ২ নম্বর রেলগেইট এলাকার আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিয়েছিলেন। একপর্যায়ে শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ (টিটু) আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়েন। শামীম ওসমানের আত্মীয় (অয়ন ওসমানের শ্বশুর) ফয়েজ উদ্দিন (লাভলু), তার ছেলে মিনহাজুল ইসলাম ও শীতল পরিবহনের বাসের পরিচালক অনুপ কুমার সাহা, ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নিয়াজুল ইসলামকে দেখা গিয়েছিল।

ওসমান অনুসারীদের খুঁজছে বিক্ষুদ্ধ জনতা, বিগত দিনের জুলুমে ক্ষোভ : গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর সংবাদে বিক্ষুদ্ধ জনতা ওসমান সাম্রাজ্যে হানা দেয়। এসময় সেলিম ওসমান, শামিম ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমানের বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর, লুটপাট করাসহ ও বিভিন্ন টর্চার সেল গুড়িয়ে দেয়। বিক্ষুদ্ধ জনতার রোষারলে তাদের বাড়ি-ঘর বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় হত্যাকা-ের অভিযোগের তদন্তের দাবি জানালেও প্রশাসন আমলে নেয়নি।’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ঢাকা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহবুবুর রহমান মাসুম গণমাধ্যম বলেন, ‘আজমেরী নারায়ণগঞ্জে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করে, সে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে পারত। মানুষকে পুরো গুম এবং টুকরো টুকরো করে হত্যা করলেও কাগজপত্রে তার নাম আনা যেত না। প্রশাসন ছিল তাদের পকেটে। ত্বকী হত্যার পর নারায়ণগঞ্জে গণআন্দোলন গড়ে উঠলে সে সময় শেখ হাসিনা সংসদে ওসমান পরিবারকে রক্ষার কথা বলেন। ফলে আজমেরীর বিচারের বিরুদ্ধে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা তৈরি হয়।’ ##


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব

এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার