মহাসমাবেশ থেকে আসছে নতুন কর্মসূচি
২৮ জুলাই ২০২৩, ১০:০০ এএম | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩, ১০:০০ এএম
অনেক নাটকীয়তার পর রাজধানীতে মহাসমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। আজ শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। মহাসমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আগামী রবিবার সচিবালয়ের সামনে ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালনের ঘোষণা দিতে পারে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো। তবে সমাবেশ শান্তিপূর্ণ এবং সংঘাতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে কর্মসূচির ধরনও পরিবর্তন হতে পারে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে দুইদিন ধরে প্রশাসন ও বিএনপির মধ্যে চলছিল টানাপোড়েন। কর্মসূচি একদিন পিছিয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিন আজ শুক্রবার দেওয়ার পরও গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর অনুমতি নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকতে হয়েছে দলটির নেতাকর্মীকে। কার্যালয়ের সামনে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন, দলের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। অবশ্য বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ২৩ শর্তে নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ায় অবসান ঘটে সব শঙ্কার। একই সময়ে রাজধানীর পৃথক স্থানে সমাবেশ করবে সমমনা ৩৭ দলও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক, দ্রব্যমূল্যসহ নানাবিধ কারণে সরকার যেমন চাপে রয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিকভাবেও কোণঠাসা অবস্থায় আছে। সর্বশেষ ভিসা নীতির কারণে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ছাড়াও প্রশাসনের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে। সেখান থেকেই শেষ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারায় সভা-সমাবেশে প্রত্যক্ষ বাধা সৃষ্টি করা হয়নি।
গত ২২ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ থেকে মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৪ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কিংবা নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপিকে চিঠি দেয় দলটি। তবে গত বুধবার ডিএমপি থেকে কর্মদিবসে জনদুর্ভোগের কারণ দেখিয়ে এ দুই জায়গার পরিবর্তে সায়েদাবাদ এলাকায় গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেয়। গোলাপবাগের ছোট মাঠে এত বড় কর্মসূচি পালন সম্ভব নয় বলে মনে করে বিএনপি। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা জনদুর্ভোগ এড়াতে একদিন পর শুক্রবার নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দেন।
বিএনপির ঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার পর্যন্ত মোটামুটি নির্বিঘ্নে প্রবেশ করেন। কিন্তু বুধবার থেকে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে, সন্ধ্যায় বিভিন্ন হোটেল ও বাসাবাড়িতে রেইড দিয়ে কয়েক শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে। এতে দলটির নেতাকর্মীরা সুষ্ঠুভাবে কর্মসূচি পালনে সন্দিহান হয়ে পড়েন। তবে যেকোনো মূল্যে মহাসমাবেশের এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মী। গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সারাদেশে নেতাকর্মী আটকের চিত্র তুলে ধরে বলেন, যেকোনো মূল্যে তারা নয়াপল্টনেই মহাসমাবেশ করবেন। এ জন্য তারা সব প্রস্তুতি নিয়েছেন।
এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মহাসমাবেশের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মদিবসের অজুহাত তোলা হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো যেকোনো দিবসেই, সেটি কর্মদিবসই হোক অথবা বন্ধের দিন, তা পালন করতে বাধা দেওয়া হয় না। তার পরও সব দিক বিবেচনা করে দলের পক্ষ থেকে কর্মসূচির দিন পরিবর্তন করে শুক্রবার বন্ধের দিন দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। মহাসমাবেশকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য এরই মধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। দলের নেতাকর্মী অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনায় শান্তিপূর্ণ এই মহাসমাবেশে দলে দলে যোগ দেবেন।
কয়েক দিন ধরে বিভিন্নভাবে নেতাকর্মীর ঢাকামুখী স্রোত চলছে। গ্রেপ্তার, হয়রানি এড়াতে মেস-আবাসিক হোটেলে না উঠে আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে উঠছেন নেতাকর্মীরা। আজকের কর্মসূচিতে জেলাভিত্তিক ও নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানারে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে অংশ নেবেন তারা। জেলার নেতারা জানান, তাদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে এবং দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে অংশ নিয়ে তারা ইতিহাসে স্থান পেতে নিজ উদ্যোগে ঢাকায় ছুটে এসেছেন। থাকা-খাওয়া সবকিছু নিজেরাই বহন করছেন। মহাসমাবেশ সফল করতে দলের যেকোনো নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন।
বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচি বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত না হয়ে এক দিন পিছিয়ে যাওয়ায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণাতেও কিছুটা রদবদল হতে পারে। এর মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম থেকে সরে যেতে পারে। কাল শনিবার পবিত্র আশুরা হওয়ায় তেমন বড় কোনো কর্মসূচি না দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে রবিবার থেকে টানা অবস্থান, ঘেরাও, বিক্ষোভের মতো কর্মসূচি আসতে পারে। প্রথম কর্মসূচি হিসেবে আগামী রবিবার সচিবালয়ের সামনে ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালনের ঘোষণা করতে পারে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো। কিন্তু সবকিছু নির্ভর করবে আজকের মহাসমাবেশে সরকার কতটুকু বাধাবিঘ্ন সৃষ্টি করে, তার ওপর। যদি হামলা-নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে শনিবারও বড় কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে চিন্তা করছে দলটি। সম্ভাব্য নতুন কর্মসূচি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে এসব আলোচনা করা হয় বলে জানা গেছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জুনে ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন ১৭ শতাংশ কমেছে
রাঙামাটিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট
গারো পাহাড়ের বালু খেকোদের বিরুদ্ধে এসিল্যান্ডের সতর্কবার্তা
রেকর্ডের মালা গেঁথে দ. আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়
মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর, চীনকে ঠেকাতে কোয়াড কি এখনও প্রাসঙ্গিক?
টেলর সুইফটের পর কমলাকে বিখ্যাত বিজ্ঞান ম্যাগাজিনের সমর্থন নিয়ে বিতর্ক
ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়
কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার
মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের
মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি
শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল
‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের
সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই
নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি
স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন
গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন