ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কবি নজরুল কলেজের ক্যাম্পাস সম্মেলন

শিক্ষা ও সংষ্কৃতিকে মুসলমানের উপযোগি করে সাজাতে হবে : মুফতী ফয়জুল করীম

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:২১ পিএম | আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:২১ পিএম

 

 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, শিক্ষাই মূল, শিক্ষার মাধ্যমেই পরিবর্তন করা সম্ভব। শিক্ষার মাধ্যমেই নৈতিকতা ও সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমেই একটি জাতির পরিচয় পাওয়া যায়। এজন্য কোন জাতিকে ধ্বংস করতে চাইলে তার শিক্ষা ব্যবস্থা ও সংস্কৃৃতিকে ধ্বংস করতে হয়। এজন্য বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর শকুনের দৃষ্টি পরেছে। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে তাকালে বুঝাই যাবে না এটা ৯২ ভাগ মুসলমানের শিক্ষা কারিকুলাম। শিক্ষাকে ভিনদেশি ধাঁচে সাজানো হয়েছে, ইসলামশূণ্য করার টার্গেট নিয়ে। এর মাধ্যমে মেধাসম্পন্ন জাতি এবং বিজ্ঞানী গড়ে উঠার কোন সুযোগ নেই। নেই আদর্শ জাতি গঠনের কারিকুলাম।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কবি নজরুল সরকারি কলেজ অডিটরিয়ামে ক্যাম্পাস সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা সভাপতি উবায়দুল্লাহ মাহমুদের সভাপতিত্বে ক্যাম্পাস সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম। প্রধান বক্তা ছিলেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ ইমরান হোসেন নূর।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, ইসলামী শিক্ষার মূল ভিত্তি হলো ওহী। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি অগ্রগতি করতে পারে না। শিক্ষা ছাড়া নিজ পরিচয় তুলে ধরা যায় না। কিন্তু এখন শিক্ষার নামে কী হচ্ছে? মুসলমানরা ভারত উপমহাদেশ সাড়ে সাতশত থেকে আটশত বছর শাসন করেছে। কিন্তু কোন অন্যায়ভাবে আক্রমন করেনি। ইসলাম গ্রহনেও বাধ্য করেনি। কিন্তু মুসলমান শাসকগণ যদি চাইতেন তাহলে ভারতবর্ষে কোন মন্দির কিংবা হিন্দু থাকতো না। এমনকিং হিন্দু বা অন্য কোন সম্প্রদায়ের উপর অন্যায়ভাবে কোন কিছু চাপিয়েও দেয়নি। অথচ আজ ভারত কী করছে! মুসলমানদের কলিজ্বায় আঘাত করে বাবরী মসজিদের স্থলে রামমন্দির নির্মাণ করে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করেছে। অথচ কোন শাহরিয়ার কবির গং, সুশীল সমাজ কোন নিন্দা জানায়নি। কিংবা এটা সাম্প্রাদায়িক কাজ তাও বলেনি। কারণ কী? মুসলমানরা কিছু করলে তখন তারা সাম্প্রায়িক বলে চেচামেচি করতো। এমনিভাবে স্পেনে সকল মসজিদ ভেঙে দেয়া হয়েছিলো, আরবী পড়া ও হিজাব নিষিদ্ধ করেছিলো। একমুখি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে সেখান থেকে ইসলাম তুলে দেয়া হয়েছিলো। ইসলামের ইতিহাস পড়ে দেখো মুসলমানরা কী করেছে।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে শিক্ষা ও সাংষ্কৃতি হবে ইসলামের আলোকে। অথচ আমরা কী দেখছি! বইয়ের কভারে মূর্তির ছবি, মাদরাসার বইয়ে হারমোনিয়াম-তবলা এবং হাফপ্যান্ট পড়া মেয়েদের ছবি। বই থেকে ইসলামের ইতিহাস তুলে দেয়া হয়েছে। ড. শহিদুল্লাহ, চার খলিফা ও সাহাবাদের জীবনী তুলে দেয়া হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডসহ শিক্ষা বোর্ডের অধিকাংশ কর্মকর্তা হিন্দু। এভাবেই ভিনদেশি শিক্ষা ও সংষ্কৃতি চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।

মুফতী ফয়জুল করীম আরও বলেন, পাশ্চাত্যরা জানে জন্ম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, মূল হচ্ছে শিক্ষা ও সংস্কৃতি। শিক্ষা সংস্কৃতি পরিবর্তন করা গেলে সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব হবে। এজন্য মুসলমানদের বিরোধীরা শিক্ষা নিয়ে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ইসলামের সূচনায় পড়ার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষা সংস্কৃতিতে ইসলাম থাকলে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, দুর্নীতি, ব্যাংক ডাকাতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিদেশে পাচার হতো না। বাংলাদেশে যদি ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করা যায় তবে এদেশে ৭০ গুণ উন্নয়ন হবে। বাংলাদেশে মানুষের খনি হলেও মানবসম্পদকে যথাযথভাবে প্রস্তুত না করার কারণে মানুষ সম্পদের পরিবর্তে আজ বোঝায় পরিণত হয়েছে। সীমান্তে বিজিবি খুন হয়, প্রতিনিয়ত খুন হচ্ছে দেশের সীমান্তে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষাও হারিয়ে ফেলেছে। সেই তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরাও প্রতিবাদ করছে না। কারণ কী? বুঝতে হবে। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব কোন পর্যায়ে?

সম্মেলন শেষে রাশেদুল ইসলামকে সভাপতি, কাওসার আহম্মেদ রিফাতকে সহ-সভাপতি, তাজিম দেওয়ানকে সাধারণ সম্পাদক করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি।

কেরাণীগঞ্জের কালিগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ কাল : একতরফা ডামি নির্বাচনের সংসদ এবং ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামিতাকে বৈধতাদানকারী বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা জেলা দক্ষিণের উদ্যোগে আগামিকাল ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার, বাদ জুমা কেরাণীগঞ্জের কালিগঞ্জ জোড়া ব্রিজ সংলগ্ন থেকে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ষক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের ঢাকা জেলা দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। এছাড়া জেলা ও থানা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নারাইন নৈপুণ্যে লাক্ষ্মৌর বিপক্ষে বড় জয়ে শীর্ষে কলকাতা

নারাইন নৈপুণ্যে লাক্ষ্মৌর বিপক্ষে বড় জয়ে শীর্ষে কলকাতা

লিভারপুলের বিপক্ষে হেরে অস্বস্তিতে টটেনহ্যাম

লিভারপুলের বিপক্ষে হেরে অস্বস্তিতে টটেনহ্যাম

অনিয়ন্ত্রিত মুদ্রাস্ফীতি, ঋণের ঝুঁকি ও প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি

অনিয়ন্ত্রিত মুদ্রাস্ফীতি, ঋণের ঝুঁকি ও প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি

ডিবি কার্যালয়ে মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী

ডিবি কার্যালয়ে মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী

লক্ষ্যটা নাগালেই রাখল বাংলাদেশ

লক্ষ্যটা নাগালেই রাখল বাংলাদেশ

ইসলামী শিক্ষা নিয়ে যে কোন দূরভিসন্ধি রুখে দিতে হবে পীর সাহেব চরমোনাই

ইসলামী শিক্ষা নিয়ে যে কোন দূরভিসন্ধি রুখে দিতে হবে পীর সাহেব চরমোনাই

জনসমর্থন না থাকায় বিএনপি নির্বাচন থেকে দূরে থাকছে: কুষ্টিয়ায় হানিফ

জনসমর্থন না থাকায় বিএনপি নির্বাচন থেকে দূরে থাকছে: কুষ্টিয়ায় হানিফ

উখিয়া ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা যুবককে জবাই করে হত্যা

উখিয়া ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা যুবককে জবাই করে হত্যা

ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী কারিকুলাম প্রত্যাখ্যান করুন

ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী কারিকুলাম প্রত্যাখ্যান করুন

শাহজালালে তিনদিন ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

শাহজালালে তিনদিন ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

মুস্তাফিজকে ছাড়াই চেন্নাইয়ের বড় জয়

মুস্তাফিজকে ছাড়াই চেন্নাইয়ের বড় জয়

সুদহার শিগগিরই বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হবে: গভর্নর

সুদহার শিগগিরই বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হবে: গভর্নর

মোদির মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণায় এবার উপজীব্য ভোট জিহাদ, তারপর কী?

মোদির মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণায় এবার উপজীব্য ভোট জিহাদ, তারপর কী?

‘বিশ্ব কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য দিবস ২০২৪’ পালন করলো এনার্জিপ্যাক

‘বিশ্ব কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য দিবস ২০২৪’ পালন করলো এনার্জিপ্যাক

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি. এর শরি‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির ৪৪তম সভা অনুষ্ঠিত

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি. এর শরি‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির ৪৪তম সভা অনুষ্ঠিত

দুই দিনে সোনার দাম বাড়ল ১৭৮৫ টাকা

দুই দিনে সোনার দাম বাড়ল ১৭৮৫ টাকা

এসআই পদে বয়সসীমা ৩০ করা হোক

এসআই পদে বয়সসীমা ৩০ করা হোক

ইউরোপীয় রাজনীতিতে শরণার্থী প্রসঙ্গ

ইউরোপীয় রাজনীতিতে শরণার্থী প্রসঙ্গ

হিন্দুত্ববাদের কবলে আমাদের পাঠ্যবই

হিন্দুত্ববাদের কবলে আমাদের পাঠ্যবই

রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব কী?

রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব কী?