ঢাকা   সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৮ আশ্বিন ১৪৩১
তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আ.লীগের আলোচনা সভা

আটচল্লিশেই দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধু : শেখ হাসিনা

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৮ মার্চ ২০২৪, ১২:১১ এএম | আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১২:১১ এএম

 

পাকিস্তানিরা বাঙালির মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়ার পদক্ষেপের পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, দেশের স্বাধীনতার কথা আপনি কখন থেকে চিন্তা করেন। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ১৯৪৮ সালে যখন মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পাকিস্তানিরা কেড়ে নিয়েছিল, সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ওদের সঙ্গে আর থাকবো না।’

“ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই কিন্তু স্বাধীনতা। একজন নেতা নিজের জীবনের সব বিসর্জন দিয়ে একটি জাতির জন্য তিনি দিনের পর দিন অধিকার বঞ্চিত-শোষিত মানুষের কথা বলতে গিয়ে বারবার কারাবরণ করেছেন। জেল-জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন। যে লক্ষ্য তিনি স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি চুয়ান্ন সালে নির্বাচনও করেছেন, ছাপ্পান্ন সালে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। নিয়ম মেনেই কিন্তু এগিয়ে গেছেন। একটি লক্ষ্য স্থির রেখে। যেটা কখনো তিনি মুখে উচ্চারণ করেননি। কিন্তু একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা বা তাদের সংগঠিত করা, ঐক্যবদ্ধ করা এটা একটি কঠিন কাজ ছিল। সেই কঠিন কাজ তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যান।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটাই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কাজটা তিনি করতে গিয়েও করতে দেওয়া হয়নি। ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। কাজেই এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

“যারা জয়বাংলা স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে যারা প্রেরণা বলে মনে করে না, তার অর্থ তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। দেশের মানুষের অর্থসামাজিক উন্নতি চায় না। তাদের কেন মানুষ ভোট দেবে। সেই জন্যই তারা বারবার ইলেকশন বানচাল করে কীভাবে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে বারবার অগ্নি সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়।”

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করবার জন্য, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এখন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধাকে উদ্বুদ্ধ করেছে। ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এই ভাষণই মানুষকে প্রেরণা দিয়েছে। এই ভাষণের প্রতিটি কথা, প্রতিটি লাইনই হচ্ছে একটা কোটেশন। সেই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি একটা যুদ্ধের রূপরেখা দিয়ে যান। বাঙালিরা স্লোগান দিতে দিতে হাতে লাঠি, কেউ বৈইঠা নিয়ে এসেছিল। সবাই প্রেরণা নিয়ে চলে যায় যার যার এলাকায়। ঠিকই যার যা কিছু আছে, অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। ৭ মার্চের ভাষণ এখন ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক প্রামাণিক দলিল স্বীকৃতি পেয়েছে।’

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এ ভাষণ বাজাতে গিয়ে আমাদের বহু লোক জীবন দিয়েছে। পৃথিবীতে কোনো ভাষণ এতদিন পর্যন্ত মানুষকে প্রেরণা জোগায়নি। পৃথিবীতে যত ভাষণ আছে হয় লিখিত, না হয় একবারই ভাষণ দেওয়া হয়েছে। জাতির পিতা হত্যা করার পর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা ৭ মার্চে এই ভাষণটা বাজিয়েছে, ২৬ মার্চ বাজিয়েছে, ১৫ আগস্ট বাজিয়েছে। এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে নিজে জেল খেটেছে, এমনকি অনেকে জীবন পর্যন্ত দিয়েছে। কিন্তু থেমে যায়নি। যতই তারা নিষিদ্ধ করুক, সেটা কিন্তু তারা নিষিদ্ধ করতে পারেনি। মানুষের হৃদয়ে গেতে গিয়েছিল।

৭ মার্চের দিবসটি আমরা পালন করছি, পালন করছে এই কারণে, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন, সেটাই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এ কাজটি তিনি করতে গিয়েও তাকে করতে দেওয়া হয়নি, ১৫ আগস্টে তাকে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এদেশে মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে বার্সার ছয়ে ছয়

গোল উৎসবে বার্সার ছয়ে ছয়

রোনালদোর দ্রততম শত গোলের রেকর্ড ছুঁলেন হল্যান্ড

রোনালদোর দ্রততম শত গোলের রেকর্ড ছুঁলেন হল্যান্ড

ঘটনাবহুল ড্রয়ে শেষ আর্সনাল-সিটি মহারণ

ঘটনাবহুল ড্রয়ে শেষ আর্সনাল-সিটি মহারণ

বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার

বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার

কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?

কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?

এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী

এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে

রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি

রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি

নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা

নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা

ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে

ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে

দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী

দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী

ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়

ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়

বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি

বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি

পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ

পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ

শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক

শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক

অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল

অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল

‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’

‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’

হেলিকপ্টারে যেতে পারলেন না ভারতের দুই মন্ত্রী

হেলিকপ্টারে যেতে পারলেন না ভারতের দুই মন্ত্রী