সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিনা অনুমতিতে "প্রোডাক্টিভ রমাদান" শীর্ষক রমজানের আলোচনা সভা করতে গিয়ে আইন বিভাগের একদল শিক্ষার্থীর সাথে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার সকল হলের প্রভোস্ট, অনুষদের ডিন ও ইনস্টিটিউটের পরিচালককে এ ধরনের আয়োজন করার অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিস।

গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মাকসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ অনুরোধ করা হয়।

বুধবার (২০ মার্চ) বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। চিঠিতে বলা হয়, আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি আইন বিভাগের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পূর্ব অনুমতি না দিয়ে 'প্রোডাক্টিভ রমাদান' শিরোনামে একটি সেমিনার আয়োজনের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়স্থ বঙ্গবন্ধু টাওয়ার ভবনে জমায়েত করে। ফলে সেখানে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে এবং আইন অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছে। পরবর্তীতে কিছু রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনৈতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিবর্গ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কাজ করছে।

এমতবস্থায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি স্যা দেওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

এদিকে আইন অনুষদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সহকারী প্রক্টর ফার্মেসি অনুষদের প্রফেসর ড. আব্দুল মুহিতের নেতৃত্বে কমিটিতে রয়েছেন ইলেকট্রিকাল ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. এম এল পলাশ এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
কমিটিকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর মাকসুদুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা সিরিয়াসলি কাজ করছি। আমাদের তদন্ত কমিটি এটা নিয়ে কাজ করছে। দোষীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ মার্চ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের আবাসিক ভবন "বঙ্গবন্ধু টাওয়ার" এ আইন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী "প্রোডাক্টিভ রমাদান" শীর্ষক একটি ইসলামিক সেমিনার আয়োজন করে। সেখানে তারা ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়ে অন্তত ৬জন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরবর্তীতে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্য মতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের ১৪জন অনুসারীকে হামলায় জড়িত উল্লেখ করে গত ১৭ মার্চ দৈনিক ইনকিলাবে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।