প্রচন্ড তাপদহে তৃপ্তিদায়ক রসালো স্বাদের পানি তাল বরিশালের বাজার থেকে অলিগলিতেও বিক্রি হচ্ছে। গ্রীস্মকালীন এ ফলটিকে ঘিরে গ্রামীণ অথর্নীতিও কিছুটা সচল। প্রতি বছর গ্রীস্মের শুরুতে বাজারে ওঠে দারুন স্বাদের দেশীয় ফল পানিতাল। এ বছরও ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী দোকানে নগরীর বিভিন্ন স্থানে উঠেছে ফলটি। বৈশাখের শেষভাগ থেকে সমগ্র বরিশাল অঞ্চল জুড়ে কমবেশি দেখা মিললেও গত কয়েকদিন ধরে মহানগরী সয়লাব হয়ে গেছে মজাদার মৌসুমী ফল পানিতাল’ এ।

বরিশালে বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করে এনে শহরে বিক্রি হচ্ছে পানিতাল। মূলত একটি পূর্ণাঙ্গ তালের কৈশরকালই পানিতাল। পানিতাল থেকেই পূণ তালের রূপ লাভ করে। দাম তুলনামূলকভাবে কম হবার সাথে স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় সব শ্রেণী-পেশার মানুষই আগ্রহের সাথে পানিতাল কিনছেন। আগামী অন্তত ১৫ দিন এভাবেই বেচাকেনায় আশাবাদী বিক্রেতারা। এমনকি বরিশালের পানিতাল সড়ক ও নৌপথে দেশের বিভিন্ন শহরেও পৌঁছে যাচ্ছে। জৈষ্ঠের মধ্যভাগ থেকেই তাল পরিপক্ক হতে শুরু করবে। ফলে তখন আর তালের মধ্যে রসালো শাষযুক্ত খাবার থাকবে না।
অন্যান্য শহরের মতো বরিশাল মহানগরীর বিভিন্ন রাস্তার পাশে ও রিকশা ভ্যান গাড়িতেও পানিতাল বিক্রি হচ্ছে। আকার ও শাঁসের পরিমাণ ভেদে ১০ টাকা থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি তাল। দুই শাঁসের একটি তাল ১০ টাকা এবং ৩/৪ শাঁসের তালের মূল্য ২০-২৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানায়, নগরীর বিভিন্ন স্থানে ক্রেতারা কেউ কিনছে ২-৩টি থেকে পুরো ছড়া। তবে দাম কম হওয়ায় সব শ্রেণী পেশার মানুষ সহজেই এ ফল কিনতে পারছে।

বরিশাল বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা গ্রামের ফোরকান তাল নিয়ে মহানগরীতে এসে জানান, প্রতি বছর এ মৌসুমে গ্রামে গ্রামে ঘুরে তিনি পানি তাল সংগ্রহ করেন। প্রতিটি গাছ তাল অনুপাতে ৪০০-৫০০ টাকায় কিনে রাখেন। এছাড়া তাল পাড়তে গাছ প্রতি ২০০-২৫০ টাকা মজুরি দিতে হয়। এর বাইরে শহরে আনতে পরিবহণ খরচ লাগে। তাতে প্রতিটি তাল কিনতে গড়ে ৩-৪ টাকা খরচ হয়। আর তিনি প্রত্যেকটি তাল ৫-৬ টাকা হিসেবে পাইকারী বিক্রি করে কিছুটা মুনাফা করেন। তবে মুনাফার বাইরে শহরের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে দেশী একটি ফল তুলে দিতে পেরে তার আত্মতৃপ্তি অনেক বেশি বলেই জানান ফোরকান।