ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ৯ মাঘ ১৪৩১

রাজধানীর ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর অনুমোদনহীন: গণপূর্তমন্ত্রী

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২৭ জুন ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম | আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম


রাজধানী ঢাকার প্রায় ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর অনুমাদনহীন বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ তথ্য জানান। টেকসই শহর তৈরি: বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও বাধা’ শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে বিআইআইএসএস।
সেমিনারে স্থপতি ইকবাল হাবিবের বরাত দিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেছেন, ঢাকা শহরের প্রায় ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর অনুমোদনবিহীন। এ অনুমোদনবিহীন বাড়িঘরগুলোকে যাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনুমোদনের আওতায় আনা যায়, এজন্য একটি কমিটি আছে। এমন একটি কমিটি আছে, তা গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী হওয়ার আগে আমি জানতামই না। তিনি বলেন, ঢাকাই বাংলাদেশ নয়, ঢাকার বাইরেও বাংলাদেশ আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা যারা ঢাকায় থাকি, তারা ঢাকার বাইরে বাংলাদেশ আছে, সেটা বুঝতে চায় না। এমনকি যারা গ্রামে থাকে তারাও মনে করে ঢাকায় চলে যাওয়া ভালো, ওটাই বাংলাদেশ। নগরায়নকে শুধু বিল্ডিং তোলা এবং কিছু মানুষের বসবাসের সুবিধা ও জীবন-জীবিকার সঙ্গে যুক্ত করলে চলবে না। নগরায়নের সঙ্গে এখন প্রকৃতির বিস্তৃতির কথাও খেয়াল রাখতে হবে। ইকো-ফ্রেন্ডলি একটি অবস্থান তৈরি করতে হবে। প্রকৃতিকে ধ্বংস করে দিয়ে নগরায়ন করা হচ্ছে।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, নগরায়ন করতে গিয়ে প্রকৃতির কথা খেয়াল রাখা হচ্ছে না। নগরায়নের ক্ষেত্রে শুধু বিল্ডিং তুললেই হবে না, আরো অনেক কিছু দেখতে হবে। আমরা নগরায়নের নামে বুড়িগঙ্গাকে শেষ করে দিয়েছি। শুধু বুড়িগঙ্গা নয়, পুরো পানি ব্যবস্থাটাকেই আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি। এটাকে কিভাবে উদ্ধার করা যায়, সেটাকেও নগরায়নের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা চিন্তা করতে হবে। প্রতিদিন কৃষিজমি নগরায়নের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। আমরা নগরায়ন করতে গিয়ে যত কৃষি জমি আছে, যত জলাশয় আছে, সব তো ধ্বংস করে দিয়েছি। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন। তাই বলে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এজন্য মহাপরিকল্পনা দরকার।
মন্ত্রী বলেন, প্রকৃতি ধ্বংস না করে নগরায়ন করা সম্ভব, শুধু যারা কাজটি করবেন, তাদের মধ্যে দেশপ্রেম থাকতে হবে। তাদের এ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে হব, দেশটা তার এবং তার ভবিষ্যৎ বংশধরদের। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মনমানসিকতা থাকতে হবে। রাজনীতিবিদ ও আমলাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এক জায়গা থেকে সব পরিকল্পনা হওয়া উচিত। সেটা না হলেও অন্তত সমন্বয় থাকা উচিত। আমাদের সবাইকে দেশপ্রেমের জায়গা থেকে বিষয়গুলো দেখা উচিত। তিনি বলেন, প্রকৃতি ধ্বংসের দায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জাতীয় পার্টির ওপর চাপিয়ে দিলে হবে না। এ কাজটি আমরা সবাই মিলে করেছি। আমরা সবাই মিলে যে দুষ্কর্মটা করেছি, সেই দুষ্কর্ম থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। নিজেদের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। বিআইআইএসএস এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খানের স্বাগত বক্তব্যে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইআইএসএস এর গবেষণা পরিচালক শেগুফতা হোসেন। এছাড়া বিআইআইএসএস এর চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকারের সঞ্চালনায় সেমিনারে আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ (সিইউএস) এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, বিশ্ব ব্যাংকের নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ঈশিতা আলম অবনী, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার শাব্বির আহমেদ।
সেমিনারে আলোচকরা বলেছেন, টেকসই শহর তৈরি করা বিশ্বব্যাপী একটি অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে। দ্রুত নগরায়ন, অবকাঠামোগত অগ্রগতি ও শহরমুখী অভিবাসন বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করেছে, যার ফলস্বরূপ শহরগুলোতে প্রকৃতি, মানব জীবন এবং সম্পদের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশও এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বাংলাদেশের বড় শহরগুলো যানজট, জলাবদ্ধতা, বায়ু-জল-মাটি দূষণ এবং ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে ভুগছে। পরিকল্পিত এবং টেকসই নগরায়ন অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত এবং এসডিজি ১১ এ বর্ণিত এই প্রয়োজনীয়তাকে বাংলাদেশ গুরুত্ব প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে সরকার সেই লক্ষ্যগুলি বাস্তবায়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং তা অর্জনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সরকারের এসব প্রচেষ্টার অগ্রভাগে রয়েছে।
বক্তা ও প্যানেলিস্টরা নগরায়ণের ফলে উদ্ভূত সমস্যাদি মোকাবিলায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং অন্যান্য মহানগরের ক্ষেত্রে গৃহীত সর্বোত্তম কার্যপদ্ধতিগুলো থেকে শিক্ষালাভের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের প্রসারের জন্য প


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে সিলেটজুড়ে স্বস্তি
রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়ককে মারধর
এক বছরে উখিয়া-টেকনাফে ১৯২ জন অপহরণ
বাণিজ্যমেলায় শেষ মুহূর্তে নিত্যপণ্য কেনাকাটার ধুম
পঞ্চগড়ে চার বিচারক অপসারণে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
আরও

আরও পড়ুন

ভারতকে ছেড়ে কেন চীনের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে শ্রীলঙ্কা?

ভারতকে ছেড়ে কেন চীনের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে শ্রীলঙ্কা?

রাজনৈতিক উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে জাপান

রাজনৈতিক উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে জাপান

প্রবাসী উপদেষ্টার আশ্বাসে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছুদের আন্দোলন স্থগিত

প্রবাসী উপদেষ্টার আশ্বাসে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছুদের আন্দোলন স্থগিত

মহার্ঘভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা

মহার্ঘভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা

পুরো বইমেলা মনিটরিং হবে ড্রোনে-ডিএমপি কমিশনার

পুরো বইমেলা মনিটরিং হবে ড্রোনে-ডিএমপি কমিশনার

যানবাহন চালক-পথচারীদের জন্য ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা

যানবাহন চালক-পথচারীদের জন্য ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা

মাস্ক বা অন্য কেউ টিকটক কিনলে বিনিয়োগ করবে প্রিন্স তালালের কোম্পানি

মাস্ক বা অন্য কেউ টিকটক কিনলে বিনিয়োগ করবে প্রিন্স তালালের কোম্পানি

মৃত বাবার রেখে যাওয়া ঋণ পাওনাদার নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে?

মৃত বাবার রেখে যাওয়া ঋণ পাওনাদার নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে?

খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকশিত হয় -ডিসি তৌফিকুর রহমান

খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকশিত হয় -ডিসি তৌফিকুর রহমান

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবি বিএসএফ বৈঠক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবি বিএসএফ বৈঠক

জিয়াউল হক মাইজভা-ারী ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান

জিয়াউল হক মাইজভা-ারী ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে সিলেটজুড়ে স্বস্তি

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে সিলেটজুড়ে স্বস্তি

৪ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি আবু রেজা নদভী

৪ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি আবু রেজা নদভী

মাদারীপুরে জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবপাচারের আন্তঃসম্পর্কবিষয়ক কর্মশালা

মাদারীপুরে জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবপাচারের আন্তঃসম্পর্কবিষয়ক কর্মশালা

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়ককে মারধর

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়ককে মারধর

মাদারীপুরে হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন

মাদারীপুরে হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন

এক বছরে উখিয়া-টেকনাফে ১৯২ জন অপহরণ

এক বছরে উখিয়া-টেকনাফে ১৯২ জন অপহরণ

‘সমন্বয়ক মরার জন্য প্রস্তুত হ’ দেয়ালে লিখে হত্যার হুমকি

‘সমন্বয়ক মরার জন্য প্রস্তুত হ’ দেয়ালে লিখে হত্যার হুমকি

বিমানের এই কর্মকা- সহ্য করার মতো নয় -সিলেট সুধীজন

বিমানের এই কর্মকা- সহ্য করার মতো নয় -সিলেট সুধীজন

বাণিজ্যমেলায় শেষ মুহূর্তে নিত্যপণ্য কেনাকাটার ধুম

বাণিজ্যমেলায় শেষ মুহূর্তে নিত্যপণ্য কেনাকাটার ধুম