আগামী ১০ নভেম্বর রাজধানী ঢাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের আড়ালে পতিত আওয়ামী লীগের ভয়ঙ্কর হামলার ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়েছে। পলাতক হাসিনা ও তার দলের নেতাকর্মীদের ফাঁস হওয়া একাধিক ফোনালাপে বড় ধরনের এই হামলার ষড়যন্ত্র নিয়ে তোলপাড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপে ১০ নভেম্বর রাজধানী ঢাকায় কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছে। শেখ হাসিনার ওই সংলাপের অডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।

গণ-জমায়েত ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালনের নির্দেশনায় হাসিনা বলেছেন, ১০ নভেম্বর ওই কর্মসূচি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রঙ্গিন ছবি এ-৪ সাইজের প্রিন্ট করে সাথে নিয়ে সবাইকে আসতে বলা হয়েছে।

এদিকে, জনপ্রিয় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের আরেকটি ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের অডিও ফাঁস করেছেন। ভিডিওতে ঢাকার ডেমরা এলাকার স্বৈরাচারের দোসরদের এক গ্রুপ মিটিংয়ে সোহাগ নামে একজন নেতা বলছেন, আমাদের বিরুদ্ধে যারা যাচ্ছে, কোনো কুত্তার বাচ্চাকেও ছাড় দিব না। আমাদের কোনো আত্মীয় স্বজনকেও ছাড় দেয়া হবে না।

মিটিংয়ে আবদুল জলিল বলেন, একদিকে ট্রাম্প পাস করছে, বিএনপি কিন্তু এত সাহসী নয়। যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তারা লোক পাবে না। আমরা ছোট করে করব। আমাদের প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়াবে জামাত-শিবির, হিজবুত তাহরীর। নেতা সোহাগ বলেন, কুত্তা বাচ্চাদের বাংলার মাটিতে কোনো ঠাই না।এদেশে ওদের কোনো ঠাই নেই। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

আবদুল জলিল আরও বলেন, আপা বলে দিয়েছেন, আত্মীয় স্বজন পরিচিত হলেও ছাড় নেই। আমার আপন ভাই হলেও কোনো ছাড় নেই। এটা একটা স্পষ্ট কথা।

ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্র-জনতা। ফেসবুকে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপ থেকে।

ফেসুবকে মোঃ আনারুল ইসলাম লিখেছেন, বাংলাদেশে কয়েকশো কি বা কয়েক হাজার কিছু আওয়ামী লীগ এখনও লুকিয়ে থেকে ম্যাও ম্যাও করতেছে। তারা হয়তো জানে না কোটি কোটি বাংলার মানুষ তাদের অপেক্ষায় আছে মোকাবেলা করার জন্য। আওয়ামী লীগ নামটা এখন মানুষের কাছে গণহত্যাকারী পরিচিত। তাই এই কোন গণহত্যাকারীদের কোন ছাড় নেই। এদের বিচার বাংলার মাটিতে করতেই হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।

শামীম আজাদ লিখেছেন, আওয়ামী লীগের লোকজনের মধ্যে মিনিমাম অনুশোচনা নাই। এটাই ভয়ের কারন যে এরা কতবড় সন্ত্রাস ও ডাকাত দল।যে দলই ক্ষমতা থাকুক না কেন অন্তত পক্ষে এদের আর কোন দিন সুযোগ দেওয়া উচিৎ হবে না।

জিদান আল হাদি লিখেছেন, ১৬ বছর পরে যেহেতু পরিবর্তন হয়েছে তাই বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন যদি আওয়ামী লীগ করতে চায় তাহলে তাকে অন্তত ১৬ বছর অপেক্ষা করতে হবে। কারণ দেশের মানুষ মাতৃভূমি রক্ষা করার জন্য এতটাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে কোন শক্তি এখন আপাতত তাদেরকে টলাতে পারবে না।

মোঃ রবিউল ইসলাম লিখেছেন, যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে তারা আবার বলে গণতন্ত্র উদ্ধার করবে....!! দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যার নেতাকর্মী দেশ ছেড়ে পালায় এবং পরে দলীয় প্রধানও পালায়। যারা গণঅভ্যুত্থানের পরে একটা পাল্টা অভ্যুত্থান করতে পারেনি। তারা সমবেত হবে এটা মনে হয় বাংলাদেশে আর হবে না..!

ইলিয়াস আলীর ভিডিওর নিচে মন্তব্যঘরে আব্দুর রাকিব লিখেছেন, এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তি চাই। এখনই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। ধন্যবাদ ইলিয়াস ভাই আপনাকে দেশের জনগণ ও দেশের জন্য কাজ করাতে
।

লিটন আহমেদ লিখেছেন, ৩মাস হতে চলেছে আওয়ামী সরকার ক্ষমতাচ্যুত। এই তিন মাসে বহু আওয়ামী সমর্থকদের ফেসবুকে পোস্ট দেখেছি, কথাও হয়েছে কয়েকজন সমর্থকের সাথে কিন্তু কাউকে বলতে শুনিনি যিনি সবকিছু মিলে খুব অনুতপ্ত। আমি কোন আওয়ামীকে বলতে শুনিনি আবু সাঈদ, মুগ্ধ সহ শত শত নিরীহ ছোট ভাইদের করুণ মৃ'ত্যুতে তারা একটু অনুতপ্ত। আমি কোন আওয়ামীকে বলতে শুনিনি দেশ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার হওয়াতে তারা খুবই দুঃখিত।
আমি কোন আওয়ামীকে বলতে শুনিনি যে, বিচার বহির্ভূত গুম, খুন ও আয়না ঘরে বছরের পর বছর আটকে রেখে একজন মানুষের প্রতি নির্মম অবিচার খুবই দুঃখজনক!

আমি শুধুই বলতে শুনেছি,,,,,
"দেখবো ইউনুস কয়দিন চালায়"
"আগের সরকারই ভাল ছিল"
"এই স্বাধীনতা কি জনগণ চেয়েছিল"
"দেশ ২০ বছর পিছিয়ে গেল"

এদিকে, আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণার পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভঙ্গের কোনো প্রচেষ্টাকে তারা বরদাশত করবে না। তিনিও নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ কথা লেখেন।

প্রেস সচিব তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলের বাংলাদেশে প্রতিবাদ করার কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশ নিয়ে কেউ সমাবেশ ও মিছিল করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পূর্ণাঙ্গভাবে মোকাবিলা করবে। অন্তর্বর্তী সরকার কোনো সহিংসতা বা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভঙ্গের কোনো প্রচেষ্টাকে বরদাশত করবে না।