বিধি লংঘন করে সিনিয়র সচিব হলেন হামিদুর রহমান খান
০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম | আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪২ পিএম

প্রশাসনে ৯ ব্যাচ-১০ এবং ১১ ব্যাচের সিনিয়রিটি লঙ্ঘন করে ১৩ ব্যাচের কর্মকর্তা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খানকে অবসরে যাওয়ার পরে পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়র সচিব পরে একই মন্ত্রণালয়ে পদায়ন। বিকালে তাকে অবসর প্রদান করা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া মো. হামিদুর রহমান খানকে কিভাবে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশাসনে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অথচ পদোন্নতি বঞ্চিত প্রশাসনে শত শত সৎ, যোগ্য এবং মেধাবী কর্মকর্তা থাকার পরেও পদায়ন করা হচ্ছে না।
বঞ্চিতদের পদায়ন ও পদোন্নতিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব ও জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব বলে জানিয়েছেন বঞ্চিত কর্মকর্তারা। প্রশাসনের ৯ ব্যাচ-১০ এবং ১১ ব্যাচের সিনিয়রিটি লঙ্ঘন করে ১৩ ব্যাচের কর্মকর্তা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খানকে অবসরে যাওয়ার পরে পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়র সচিব করে একই মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করে পরে তাকে অবসর প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
আজ রবিবার সচিবালয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সচিব ইনকিলাবকে বলেন, ছাত্র-জনতা আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিনিয়র সচিব পদ সৃষ্টি করা হয়। তখন ক্রমানুযায়ী সচিব হিসেবে যিনি সিনিয়র তাকেই সিনিয়র সচিব পদোন্নতি দেয়া শুরু হয়। কিন্তু গত ২৭ মার্চ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদুর রহমান খান জুনিয়র হলেও তাকে সিনিয়র সচিব নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে। অথচ তার আগে সিনিয়র নবম, দশম ও একাদশ ব্যাচের সচিবও রয়েছেন। তারা এখনো সিনিয়র সচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেনি। তাদের মত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে আর যা হোক কেউ বৈষম্যের শিকার হতে পারেন না। সেটি হলে প্রশাসনে চেইন অব কমান্ড নষ্ট হতে বাধ্য।
এদিকে প্রশাসনে এক সচিবকে পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়র সচিব করে একই মন্ত্রণালয়ে পদায়ন এবং বিকালে অবসর প্রদান, অন্যদিকে আর এক সচিবকে জনপ্রশাসনে সংযুক্ত এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল উদ্দিনকে বাস্তবায়ন পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (আইএমইডি) বদলি করা হয়েছে। গতকাল রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো পৃথক তিন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল উদ্দিনকে বাস্তবায়ন পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (আইএমইডি) বদলি করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. নিজাম উদ্দিনকে জনপ্রশাসনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়। জনপ্রশাসনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খানকে পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়র সচিব করে একই মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। বিকালে আরেক প্রজ্ঞাপনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খানকে অবসর প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া সিনিয়র সচিব কামাল হোসেন গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ধীরে ধীরে পদোন্নতির সব সোপান অতিক্রম করে ক্যাবিনেটের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব হন। এরপর যান কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে। সেখানে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত হন। ঐ সময় তিনি একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন। বিশেষ করে তার ব্যাচমেট তোফাজ্জেল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর সচিব (পরবর্তীতে মুখ্য সচিব) হওয়ায় তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। করোনা প্যান্ডেমিকের সময় সে খুলনা জেলায় করোনা প্রতিরোধ ও রিলিফ ওয়ার্কে সরকারের মুখ্য সমন্বয়কারী ছিলেন এবং তার নিজ জেলা খুলনাতে ত্রাণ কার্যে তদারকির দায়িত্ব পালন করেন। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলেই সে পিআরএলে গিয়ে ২০২৩ সাল থেকে আবার সরকারের একটি নতুন দপ্তরের প্রধান অর্থাৎ এনএইচআরডিএফ-এর এমডি পদে যোগদান করেন। এই এমডি পদটি অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার।
অথচ তিনি সিনিয়র সচিব থেকে বিদায় নিয়ে এই পদে ২০২৩ সালে ক্ষমতার জোরে ঢুকেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো অর্গানাইজেশনকে ফান্ডিং করতে পারেননি। এখানে প্রত্যেকটা ফাংশনিং করার কথা ছিল। পলিসিতে ১২টি সেক্টর যেমন লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, কনস্ট্রাকশন, সিরামিক, আরএমজি, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার, কৃষি, আইটি, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস ইত্যাদি সেক্টরগুলোতে এনএসসি-এর মাধ্যমে কয়েক হাজার বেকার যুবককে স্কিল ট্রেনিং করে উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলে বেকার সমস্যার সমাধান করার কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত এটার কিছুই হয়নি, শুধু বেতন দিয়েই খালাস।
তাছাড়া কামাল হোসেন অত্যন্ত মেজাজী স্বভাবের এবং তার কাছে কেউ ভিড়তে পারে না বলে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়। স্বৈরাচারের ল্যাপডগ হয়েও এখনো চাকরিতে বহাল থাকা একটা বিস্ময়কর ব্যাপার। জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন, অভ্যুত্থান ও রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের পরেও কামাল তার দপ্তরে ফ্যাসিবাদী সরকার কর্তৃক উপহৃত পদে অটুট রয়েছেন, কী সৌভাগ্য কামালের।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

কুরআন-সুন্নাহর আদর্শ সমাজ-রাষ্ট্রে প্রতিফলন ঘটাতে হবে: সাইফুল আলম খান মিলন

নারায়ণগগঞ্জের সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান মুক্তি পেলেন

নাটোরে মাদ্রাসা থেকে শিক্ষার্থীর মৃতদেহ উদ্ধার

প্রফেসর ড. ইউনুস ছাড়া পথ হারাবে বাংলাদেশ

৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পেছালো

আগামী দিনে যুবুকরা জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবে: মঞ্জুরুল ইসলাম

নিষেজ্ঞা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের কুয়েটে প্রবেশের চেষ্ট, দুপুর হতে উত্তেজনা

আনোয়ারায় ওয়ারেন্টভুক্ত ৮ আসামি আটক
প্রতি ছক্কা ও উইকেটে ফিলিস্তিনে লাখ রুপি দেবে মুলতান

লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

যে কারণে চিরতরে বন্ধ হবে যুক্তরাষ্ট্রের দরজা

রামুতে গাছে ঝুলিয়ে প্রবাসী যুবকের মৃত্যু নিয়ে ধুম্র জাল

শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি: আইন উপদেষ্টা

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে খোশগল্পে সাকিব, সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে তোলপাড়!

চৈত্র সংক্রান্তি আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার শিক্ষা দেয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চান এনবিআর চেয়ারম্যান

ফের মিয়ানমারে ভূমিকম্প

পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আকাশচুম্বী ইলিশের দাম

আলাদা সচিবালয় ছাড়া সংস্কার অসম্ভব: প্রধান বিচারপতি