প্রফেসর ড. ইউনুস ছাড়া পথ হারাবে বাংলাদেশ

Daily Inqilab দাউদকান্দি (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা

১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম

গেল বছরের গণ-অভ্যুত্থানের পর ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে এই দেশ নতুন পথে হাঁটতে শুরু করেছে। এই নতুন পথ চলার নাবিক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একটা বিশাল সমুদ্রের বিশাল বিশাল তরঙ্গমালা উপেক্ষা করে শক্ত হাতে হাল ধরে একটি দুর্বল জাহাজকে বৈতরণি পার নিয়ে যাচ্ছেন। যদি ভিন্নভাবে বলি, নীল মনিহার একটি মূল্যবান রত্ন তা হাতে পেলে যত্ন করে রাখতে হয়ে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের নীল মনিহার। তাই এই নীল মনিহার যত্ন করে রাখতে হবে।

 

এমন রত্ন আর হাজার বছরে এই দেশে পাব কী না তা কেবল আল্লাহ জানেন। কে ক্ষমতায় আসল, কে গেল সে বিষয়ে বিন্দু পরিমান আমার আকাঙ্খা নেই। তবে এই বিশ্ব নন্দিত মানুষটি যেদিন ক্ষমতার মসনদ ছেড়ে চলে যাবে সেদিন এই বাংলাদেশ তার ভারসাম্য হারাবে, সার্বভৌমত্ব হারাবে, পরাধীনতার গ্লানি এসে ভর করে— আধিপত্য বিস্তার বাড়াবে। যেই ক্ষমতায় আসবেন ওনাকে হাতছাড়া করবেন না, যথাযথ সম্মান দিয়ে অন্তত ওনাকে বগলদাবা করে রাখবেন। ওনাকে যদি অসম্মান করেন, ওনাকে যদি মূল্য না দেন তাহলে একটি দল ছাড়া সবায় স্থলে ডুবে যাবেন, জলের প্রয়োজন হবে না। ওনাকে অসম্মান করে শেখ হাসিনাই ধূলিসাৎ হয়ে গেছে! শেখ হাসিনার এই পতনের আসল উৎপত্তিস্থল ছিল প্রফেসর ড. ইউনূসকে অসম্মান করা। আর আপনারা নতুন করে যারা ওনাকে নিয়ে বাগাড়ম্বর করছেন, হম্বিতম্বি করছেন, হুমকিধামকি দিয়ে ওনাকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামানোর জুজুর ভয় দেখাচ্ছেন তা নিছক বোকামো করছেন।

 

এতে নিজেদের সর্বনাশ নিজেরা ঢেকে আনছেন। তাই আগ থেকেই আপনারা সতর্ক ও সাবধান হয়ে সমযে চলুন। তাহলে আপনারাই বেশি ভেনিফিসিয়ারি হবেন। তাই ওনি যতদিন বাঁচবেন ওনাকে কদর দিবেন। এই লোক আমাদের দেশে এই সময়ে যে ফলদ গাছ লাগিয়ে দিয়ে যাবে এর সুফল অন্তত তিন পুরুষ ভুগ করতে পারবেন এটা নিশ্চিত অনুমান করা যায়। ওনি ৫ ই আগষ্ট পরবর্তী সময়ে যেদিন বাংলাদেশে আসেন সেদিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদেরকে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, " এই দেশের মানুষ চাইলে আমি ক্ষমতায় থাকব, নচেৎ না চাইলে আমি চলে যাব।" এই কথাটার ওজন ও ব্যাখা একটু চিন্তা করে দেখেন। আমার মনে হয় ওনি করবেনও তাই। এদেশের জনগণ যদি আজই ওনাকে আর ক্ষমতায় না দেখতে চায় তাহলে ওনি সঙ্গে সঙ্গে এই দেশ ছেড়ে চলে যাবেন। সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়ায় সবগুলো নিউজের মন্তব্য দেখলে সাধারণ মানুষের পালস পিটিশন বুঝা যায় আসলে মানুষ কী চায়। আশা করি রাজনৈতিক দলগুলো অতীতের পথে না হেঁটে নতুন পথে চলে নতুন দিগন্ত তৈরি করবেন।

 

দেশের যে পরিবর্তনের পদক্ষেপ প্রধান উপদেষ্টা হাতে নিয়েছিলেন, তা তিনি করতে পারলে হাজারো ছাত্র জনতার রক্তের দায় কিছুটা মুক্ত হতো। দেশ স্থিতিশীল হতে হলে সংস্কার অক্সিজেনের মতো জরুরি। সংস্থার কাজে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনিহা ও অসহযোগিতার কারণে সংস্কার হয়তো আলোর মুখ দেখবে না। এছাড়া যেই দলই ক্ষমতায় আসুক, কোনো ধরনের কোনো সংস্থার করবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা থাকলে দ্রুত সংস্কার হয়ে যেত। আমরা একটা আদর্শিক দেশ উপহার পেতাম। বোধ করছি, এদেশের মানুষ দুর্যোগের ঘনঘটা লেগেই থাকবে,সহজে দূর হবে না। সর্বশেষ, গতকাল প্রধান উপদেষ্টা আগামী ডিসেম্বর থেকে ছাব্বিশের জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

 

ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের সঙ্গে শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকালে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এক বৈঠকে তিনি এই তাগিদ দেন। আমি সকল রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে বলব, এই সময়টা একটু ধৈর্য ধারণ করুন। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে হাত বাড়িয়ে সহযোগিতা করুন। তা নাহলে সামনে আপনারা পশ্চাতে হবে। এর মাশুল গুনতে হবে এটাই বাস্তব। প্রফেসর ড. ইউনূস যে ম্যাজিক্যাল পারসন তা বলার অপেক্ষা রাখেন না। তার জীবন সায়াহ্নে এসে অদম্য ক্লান্তিহীন অবিরাম ছুটে চলে অচল দেশের মানুষের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। মানুষ তার কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করছেন তা পরিলক্ষিত। দেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক মহলে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন তিনি। তিনি যতদিন দায়িত্ব পালন করবেন দুর্নীতি তাকে ছুঁতে পারবে না। দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও কল্যাণ হবে এটাই বুঝে গেছে এ দেশের সাধারণ জনগণ। এই কয় মাসে খাদের কিনার থেকে বাংলাদেশকে টেনে তুলতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। সফলতার পালকে দিনেদিনে যুক্ত হচ্ছে নতুন কিছু। অর্থনৈতিক সংকট কেটে যাচ্ছে, বাড়ছে রিজার্ভ, কমতে শুরু করেছে মূল্যস্ফীতি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা ভালোর পথে,আলোর পথে ক্রমশঃ ধাবিত হচ্ছি।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড ২ লাখ টাকা জরিমানা
আনোয়ারায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মৎস্য অফিসের অভিযান
শরীয়তপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জাল-জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান
রাজবাড়ীতে ইউপি চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও গ্রেপ্তা‌রের দা‌বি‌তে মানববন্ধন
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় শিশু সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যাকারীর ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন
আরও
X

আরও পড়ুন

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড ২ লাখ টাকা জরিমানা

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড ২ লাখ টাকা জরিমানা

আনোয়ারায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মৎস্য অফিসের অভিযান

আনোয়ারায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মৎস্য অফিসের অভিযান

শরীয়তপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জাল-জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে  দুদকের অভিযান

শরীয়তপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জাল-জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান

চীনের ওপর এবার ২৪৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

চীনের ওপর এবার ২৪৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

তীব্র গরমের পর রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি

তীব্র গরমের পর রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি

চীনা পোশাকে চীনবিরোধী মন্তব্য: বিতর্কে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র

চীনা পোশাকে চীনবিরোধী মন্তব্য: বিতর্কে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র

রাজবাড়ীতে ইউপি চেয়ারম্যানকে  অপসারণ ও গ্রেপ্তা‌রের  দা‌বি‌তে মানববন্ধন

রাজবাড়ীতে ইউপি চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও গ্রেপ্তা‌রের দা‌বি‌তে মানববন্ধন

পুরুষদের চেয়ে নারীরা কানে শোনেন ভালো, বলছে বৈজ্ঞানিক গবেষণা

পুরুষদের চেয়ে নারীরা কানে শোনেন ভালো, বলছে বৈজ্ঞানিক গবেষণা

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় শিশু সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যাকারীর ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় শিশু সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যাকারীর ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

বাংলাদেশকে ৫০ লাখ ইউরো অনুদান দিচ্ছে ইইউ

বাংলাদেশকে ৫০ লাখ ইউরো অনুদান দিচ্ছে ইইউ

জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল এখন সিলেটে

জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল এখন সিলেটে

গাজায় স্থায়ী সেনা উপস্থিতির ঘোষণা দিল ইসরায়েল

গাজায় স্থায়ী সেনা উপস্থিতির ঘোষণা দিল ইসরায়েল

জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল এখন সিলেটে

জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল এখন সিলেটে

হোসেনপুরে বিদ্যুৎপিষ্ট হয়ে পল্লি চিকিৎসকের মৃত্যু

হোসেনপুরে বিদ্যুৎপিষ্ট হয়ে পল্লি চিকিৎসকের মৃত্যু

ছয় দফা দাবীতে বরিশালে জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করল পরিটেকনিক ছাত্র-ছাত্রীরা

ছয় দফা দাবীতে বরিশালে জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করল পরিটেকনিক ছাত্র-ছাত্রীরা

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে রিয়াল

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে রিয়াল

ভোলায়'মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল

ভোলায়'মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল

২ জুন বাজেট পেশ করবে অন্তর্বর্তী সরকার

২ জুন বাজেট পেশ করবে অন্তর্বর্তী সরকার

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রদল কর্মীদের অবরোধ মূক্ত করে ছাত্রলীগ নেত্রীকে পুলিশে দিলেন প্রক্টর

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রদল কর্মীদের অবরোধ মূক্ত করে ছাত্রলীগ নেত্রীকে পুলিশে দিলেন প্রক্টর

আগামী রমজানের আগে নির্বাচন চায় জামায়াত

আগামী রমজানের আগে নির্বাচন চায় জামায়াত