প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিমত সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপি’র মতামত ইতিবাচক
০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম

জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্থলে জেলায় জেলা কমিশনার এবং উপজেলায় উপজেলা কমিশনার পদবী পরিবর্তনে জেলা/উপজেলার জনকল্যাণ, নাগরিক সুবিধা প্রদান, সুশাসন তথা ইতিবাচক আর্থ-সামাজিক কী পরিবর্তন হবে। তা স্পষ্ট নয়। নতুন পদবীতেও ডিসি ডিসিই থাকছে। এ পরিবর্তন বিদ্যমান নানা আইনে সংশোধনী আনার প্রয়োজন হবে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রস্তাবনাগুলোর বেশির ভাগই একমত পোষণ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
গণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন গড়তে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের দেওয়া প্রস্তাবগুলোকে আশার আলো দেখছে এবং স্বাগত জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে গত বছর ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিটি দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রস্তাবনাগুলো দিয়ে মতামত চেয়েছে। এতে নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রিসভার আকার বেঁধে দিয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এতে সর্বোচ্চ ২৩ মন্ত্রী এবং ১২ প্রতিমন্ত্রী দিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যমান ৪৩ মন্ত্রণালয় ও ৬১ বিভাগকে ২৫ মন্ত্রণালয় ও ৪০ বিভাগে নামিয়ে আনার সুপারিশ করেছে এই কমিশন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর হাতে কোন কোন মন্ত্রণালয় থাকবে, তাও নির্দিষ্ট করা হয়েছে প্রস্তাবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র স্থানীয় কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের জমা দেওয়া জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠনের সার-সংক্ষেপে বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা। কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়, তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর সংশোধন করা (সংশোধন প্রভাবের জন্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট দ্রষ্টব্য)। বিএনপি’র মতামতে বলা হয়, নীতিগতভাবে একমত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রদত্ত সুপারিশসমূহ থেকে সরকার। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কারের তালিকা প্রণয়ন করবে এবং চলমান প্রক্রিয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তা বাস্তবায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এভাবে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ার টেকসই বাস্তবায়নের স্বার্থে যথাসময়ে সরকার নির্বাহী আদেশে একটি স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করবে। নীতিগতভাবে একমত। তবে প্রস্তাবিত সংশোধনী প্রস্তাব আরও পর্যালোচনা করতে নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়। হবে।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯২৩ সংশোধনের মতামতে বলা হয়, বিষয়টি আরও নিবিড় পর্যালোচনা করার দরকার। নির্বাচনের পরে জাতীয় সংসদ বিবেচনা করতে পারে। এ জন্য একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করতে হবে। নাগরিক কমিটি গঠনের প্রস্তাবে বলা হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের ও ছাত্র প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি করে জেলা নাগরিক কমিটি ও উপজেলা নাগরিক কমিটি গঠন করা। এতে বলা হয়, আংশিকভাবে একমত প্রক্রিয়াগত বিষয়ে কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমত রয়েছে। নির্বাচিত সরকার বিবেচনা করতে পারে। অথবা, একমত নই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ধরনের কমিটি নানা জটিলতা এবং সমস্যার উদ্ভব ঘটাবে। প্রত্যেক সরকার তার মত করে কমিটি গঠন করবে। স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রশাসনের উপর ব্যাপকভাবে অযাচিত রাজনৈতিক খবরদারি বৃদ্ধি পেতে পারে।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের স্থানীয় অধিক্ষেত্রে তদারকিমূলক ভূমিকা পালন বাধাগ্রস্ত হবে এবং তাদের সাথে কমিটির সদস্যদের বিরোধ তৈরি হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে সংসদীয় গণতন্ত্রে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সমন্বয়ে গঠিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলো মন্ত্রণালয়ের ওয়াচডগ হিসেবে কাজ করে। মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রভাবিত অনির্বাচিত কমিটি গঠন অনাবশ্যক মনে হয়। জেলা পর্যায়ে ডিসির সভাপতিত্বে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, বিশিষ্ট নাগরিক ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এ ধরনের কয়েকটি কমিটি বিদ্যমান রয়েছে—জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি, জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটি, বিষয়ভিত্তিক কমিটি।
নতুন দুটি বিভাগ গঠন: কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করার প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদবি পরিবর্তন করে যথাক্রমে উপজেলা কমিশনার ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা কমিশনার করা। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পদবি পরিবর্তন করে অতিরিক্ত জেলা কমিশনার (ভূমি ব্যবস্থাপনা) করা। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কে মামলা গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান বিষয়ের প্রস্তাবে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সিআর মামলা প্রকৃতির অভিযোগগুলো গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া।
সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে। উপজেলা পর্যায়ে: জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্থলে জেলায় জেলা কমিশনার এবং উপজেলায় উপজেলা কমিশনার পদবি পরিবর্তনে জেলা/উপজেলার জনকল্যাণ, নাগরিক সুবিধা প্রদান, সুশাসন তথা ইতিবাচক আর্থ-সামাজিক কী পরিবর্তন হবে। তা স্পষ্ট নয়। নতুন পদবীতেও ডিসি ডিসিই থাকছে। এদিকে এ পরিবর্তন বিদ্যমান নানা আইনে সংশোধনী আনার প্রয়োজন হবে। পদবি পরিবর্তনের আর্থিক সংশ্লেষও কেবল কম নয়। যাহা হোক, নির্বাচিত সরকার জাতীয় সংসদে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াই সঠিক হবে বলে মনে করি। নীতিগতভাবে একমত। নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদের মাধ্যমে আইনটি সংশোধন করে বাস্তবায়ন করা যায়। সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সিআর মামলা ছাড়াওফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০/৪ ধারা অনুযায়ী বিভিন্ন মামলা সুয়োমোট আমলে নিয়ে বিচারের জন্য উপযুক্ত আদালতে প্রেরণের ক্ষমতা দেয়া যেতে পারে। এতে করে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মাঠ প্রশাসন পূর্বের তুলনায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অধিক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
ফ্যাসিস্ট, অপরাধী এবং দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে এবং পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি সমন্বয় আরো জোরালো হবে বলে আশা করা যায়। নীতিগতভাবে একমত। নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদে অধিকতর। উপজেলা জননিরাপত্তা অফিসার: ফৌজদারি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পুনঃস্থাপন করা। উপজেলা জননিরাপত্তা অফিসার পদ সৃষ্টি করে সেই পদে সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে পদায়ন করা। পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুনর্গঠন বিষয়ে বর্তমান পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুনর্গঠনের মাধ্যমে ৮ সদস্য বিশিষ্ট পৃথক তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করা। পাবলিক সার্ভিস কমিশন (শিক্ষা) এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশন (স্বাস্থ্য) নামে দুটি নতুন কমিশন সৃষ্টি করা। বাকি সকল সার্ভিস বর্তমান কমিশনের অধীনে রাখা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে উপজেলা পরিষদের অধীনে ন্যস্ত না রেখে তাকে শুধু সংরক্ষিত বিষয় ও বিধিবদ্ধ বিষয়াদি যেমন আইনশৃঙ্খলা, ভূমি ব্যবস্থাপনা, পরীক্ষণ নিয়ন্ত্রণ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ইত্যাদি দেখাশোনার ক্ষমতা দেওয়া। একজন সিনিয়র সহকারী আলোচনা করে বাস্তবায়নের বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে। বর্তমানে দুই থানা মিলে সার্কেলে একজন সহ পুলিশ সুপার রয়েছেন। প্রত্যেক থানায় ইন্সপেক্টর র্যাংকের ওসি আছেন। উপজেলায় নতুন করে সহ পুলিশ কমিশনার দিলে উপজেলা পুলিশিং এ অপ্রয়োজনীয়ভাবে একটি ধাপ বৃদ্ধি পেয়ে মাথাভারী পুলিশ প্রশাসন হবে যা সঠিক হবে না। নীতিগতভাবে একমত। প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিগত কিছু ভিন্নমত রয়েছে। নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদ কর্তৃক সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়। একমত নই। কিছু ক্ষেত্রে প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিগত বিষয়ে ভিন্নমত আছে। বর্তমানে ইউএনও সংরক্ষিত ও বিধিবদ্ধ বিষয়ের পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের সাচিবিক করেন। দায়িত্ব পালন উপজেলার প্রশাসনিক সমন্বয়ে কার্যকর: সচিব পদমর্যাদার অফিসারকে। উপজেলা পরিষদের সচিব হিসেবে। নিয়োগ দেওয়া।
সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এস এস বি) বাতিল এবং সচিব নিয়োগে মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস গঠন বিষয়ে বলা হয়, বর্তমান সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) বাতিল করে একটি মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা (যে কমিটি অতিরিক্ত সচিব থেকে সচিব এবং সচিব থেকে মুখ্যসচিব পদে পদোন্নতির সুপারিশ করবে। একইসঙ্গে বিভিন্ন সার্ভিসের বাছাইকৃত কর্মকর্তাদের নিয়ে উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত পদসমূহ পূরণে একটি ভূমিকা রাখা সহজ হয়। এসএসবি বাতিল জনপ্রশাসনে বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তনের প্রস্তাব। এসএসবি বাতিল করে মন্ত্রিসভা কমিটির মাধ্যমে উচ্চতর পদে নিয়োগের ব্যবস্থা চালু করা হলে, প্রশাসনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বৃদ্ধি পাবে, যা একটি নিরপেক্ষ ও পেশাদার জন প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে। নতুন করে উপজেলার সাচিবিক দায়িত্বে ভিন্ন কাউকে দিলে উপজেলায় চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাদের মধ্যে গ্রুপিং-এর সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। যা কাম্য নয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে পরিষদের সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে ফলে সরকারের সাথে পরিষদের সংযোগ দুর্বল হয়ে যাবে। এতে সমন্বয়ের ঘাটতি তৈরি হবে। আপাতত বিষয়টি অধিকতর পর্যালোচনার দাবি রাখে। নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদ অধিকতর আলোচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস গঠন করা। ঐতিহাসিকভাবে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি) উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ে দেখাশোনা করে। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভা কমিটি হস্তক্ষেপ না করাই বাঞ্ছনীয় মনে করি। ইতোপূর্বে যে কারণে সিনিয়র সার্ভিস পুল্ক বাতিল করা হয়, একই কারণে এ পর্যায়ে প্রস্তাবিত সিনিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস গঠন করা সঠিক হবে কিনা তা অধিকতর পর্যালোচনা দরকার। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০১০ সালে একটি রায় দেয় বলেও জানা যায়। বিসিএস (প্রশাসন) এর অনুকূলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত উক্ত রায়ে (উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৭৫% পদ সংরক্ষণ) চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত নিষ্পত্তিকৃত একটি বিষয় পুনরায় আদালতে না গিয়ে ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
প্রশাসন সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্টের ৭.১৩ (ঘ) অংশে উল্লেখ করেছেন যে, তবে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি মামলার রায় ও পর্যবেক্ষণ রয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টির আইনগত দিক পরীক্ষা করে দেখার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। আদালতের রায় উপেক্ষা করে এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে মাঠ প্রশাসনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এটি বাস্তবায়িত হলে প্রশাসন ক্যাডারের বিপুল সংখ্যক অফিসার (সিনিয়র সহকারী সচিবগণ) পদোন্নতি বঞ্চিত। স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়ে জুলাই অভ্যুত্থানকালে গণহত্যা নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত এবং ভোট জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের চিহ্নিতকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা।
এই বিষয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা কমিশনের পৃথক সুপারিশসংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো: জাতীয় সংসদের গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটিগুলোর চেয়ারম্যান বিরোধী হবেন। ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় এ সকল মেধাবী তরুণ কর্মকর্তা, যারা উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রশাসনের চান্দ পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা এবং কর্মোদ্দীপনা কমার আশঙ্কা রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ আসন্ন নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সিনিয়র সহকারী সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। বিষয়টি সরকারের নির্বাহী আদেশেই সম্পন্ন করা সম্ভব। বিষয়টি সাংবিধানিক সংস্কার সংশ্লিষ্ট। নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়। সভাপতি পদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের নিয়োগ দলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য হতে নিয়োগের বিধান প্রবর্তন করা। (এই বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ) প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করা দেশের পুরাতন চারটি বিভাগের সীমানাকেচারটি প্রদেশে বিভক্ত করে। প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করা। বিদ্যমান জেলা পরিষদ ব্যবস্থা বাতিল করে জেলা পরিষদসমূহের সকল সম্পত্তি প্রস্তাবিত প্রাদেশিক সরকারের কাছে হস্তান্তর করা। পৌরসভা শক্তিশালীকরণ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে। এই বিষয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা কমিশনের পৃথক সুপারিশ। ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট বা, রাজধানী মহানগর সরকার প্রস্তাবিত প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুপারিশের আলোকে ঢাকা মহানগরী, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে প্রাদেশিক সরকারের সমপর্যায়ের ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট-গঠন করা।
উপজেলা পরিষদকে: উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদটি বিলুপ্ত করা। সাংবিধানিক সংস্কার সংশ্লিষ্ট। এককেন্দ্রীক বাংলাদেশকে ৪টি প্রদেশে ভাগ করার প্রভাব গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের প্রস্তাব বাস্তবায়নে আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সাংবিধানিক সংস্কার সংশ্লিষ্ট। প্রাদেশিক সরকার গ্রহণযোগ্য নয়। জেলা পরিষদ বাতিলের বিষয়টি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবি রাখে। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতিই উত্তম। পরোক্ষ নির্বাচন বা বুনিয়াদি গণতন্ত্র চর্চা গ্রহণযোগ্য নয়। প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের সাথে একমত নই। তাই প্রাদেশিক সমপর্যায়ের ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট করার অবকাশ নেই। একমত নই। উপজেলা পরিষদকে শক্তিশালী করা: ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের এক তৃতীয়াংশকে আবর্তন পদ্ধতিতে উপজেলা পরিষদের সদস্য হওয়ার বিধান করা। ইউনিয়ন পরিষদের সংস্কার: ইউনিয়ন পরিষদে ওয়ার্ডের সংখ্যা জনসংখ্যার অনুপাতে ৯টি থেকে ১১টি করা, প্রভোক ওয়ার্ডে ১জন পুরুষ ও ১জন মহিলা সদস্য নির্বাচনের বিধান করা এবং ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচনের বিধান প্রবর্তন করা। কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল এর দপ্তরকে শক্তিশালীকরণ হিসাব বিভাগ হতে অডিট বিভাগ পৃথক করে একটি নিরীক্ষা আইন (সংশোধন) প্রণয়ন করা। জনপ্রশাসনে জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে প্রক্রিয়াগত সংস্কার ফৌজদারি (পিপি) ও দেওয়ানি মামলা (জিপি) পরিচালনার জন্য দুটি স্থায়ী প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠন করা। এজন্য একটি আইন প্রণয়ন ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে পিপি ও জিপি নিয়োগ করা। একমত। এতে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং উপজেলা পরিষদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে। প্রথম অংশের সাথে একমত। ঐতিহাসিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। প্রস্তাবিত পরোক্ষ গণতন্ত্র/বুনিয়াদি গণতন্ত্র চর্চা অনাবশ্যক।
একটি সাংবিধানিক পোস্ট বিধায় এ সংস্কারে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য। বিচার বিভাগ সংস্কার সংশ্লিষ্ট। নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদ বিবেচনা করতে পারবে। জনপ্রশাসনে জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে প্রক্রিয়াগত সংস্কার। গত ১৫ বছর চাকরি পূর্তিতে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ। মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) সহকারী একান্ত সচিব পদায়ন বিষয়ে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ। সরকারি চাকরিতে ২৫ বছর পূর্তিতে বাধ্যতামূলক অবসরের বিধান বাতিল এবং ১৫ বছর চাকরি পূর্তিতে স্বেচ্ছা অবসরের বিধান প্রবর্তন করা। মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব (পি.এস), সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মন্ত্রীদের অভিপ্রায় অনুসারে সিভিল সার্ভিসের বাইরে থেকে নিয়োগ করা। একমত নই। স্বতন্ত্র আদালত প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত। ১৫ বছর চাকরি পূর্তিতে স্বেচ্ছা অবসরের বিধানের সাথে একমত। অপর বিষয়ে প্রক্রিয়াগত ও পদ্ধতিগত ভিন্নমত রয়েছে। নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য। সরকারি নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়নযোগ্য।
বগুড়া জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হোসনা আফরোজা ইনকিলাবকে বলেন, আসলে সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে দেশের নাগরিকদের সেবা প্রদানের বিষয় উল্লেখ করা হয়নি। শুধু পদ-পদবি পরিবর্তনের বিষয় রয়েছে। ডিসি-ইউএনও পদগুলো দীর্ঘ ২০০ বছরের। এগুলো পরিবর্তন করলে দেশের মানুষ সঠিকভাবে নেবে না। বিএনপির মতামতগুলো ভালো দিয়েছে।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. মোঃ ফরিদুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, আসলে এই পদগুলো দীর্ঘদিন ধরে দেশের জনগণের সেবা প্রদান করে মানুষের মন জয় করেছে। হঠাৎ করে কেমন হবে জানি না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

কুরআন-সুন্নাহর আদর্শ সমাজ-রাষ্ট্রে প্রতিফলন ঘটাতে হবে: সাইফুল আলম খান মিলন

নারায়ণগগঞ্জের সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান মুক্তি পেলেন

নাটোরে মাদ্রাসা থেকে শিক্ষার্থীর মৃতদেহ উদ্ধার

প্রফেসর ড. ইউনুস ছাড়া পথ হারাবে বাংলাদেশ

৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পেছালো

আগামী দিনে যুবুকরা জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবে: মঞ্জুরুল ইসলাম

নিষেজ্ঞা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের কুয়েটে প্রবেশের চেষ্ট, দুপুর হতে উত্তেজনা

আনোয়ারায় ওয়ারেন্টভুক্ত ৮ আসামি আটক
প্রতি ছক্কা ও উইকেটে ফিলিস্তিনে লাখ রুপি দেবে মুলতান

লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

যে কারণে চিরতরে বন্ধ হবে যুক্তরাষ্ট্রের দরজা

রামুতে গাছে ঝুলিয়ে প্রবাসী যুবকের মৃত্যু নিয়ে ধুম্র জাল

শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি: আইন উপদেষ্টা

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে খোশগল্পে সাকিব, সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে তোলপাড়!

চৈত্র সংক্রান্তি আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার শিক্ষা দেয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চান এনবিআর চেয়ারম্যান

ফের মিয়ানমারে ভূমিকম্প

পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আকাশচুম্বী ইলিশের দাম

আলাদা সচিবালয় ছাড়া সংস্কার অসম্ভব: প্রধান বিচারপতি