দেশে কোন সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নেই : প্রিন্স
১০ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:২৫ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:০৬ পিএম
বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন,
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও তাদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহত আছে। দেশে কোন সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নেই। সরকারীদল ছাড়া আর কারো রাজনীতি করার অধিকার নাই। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকার দেশ থেকে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ধ্বংস করে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে রাষ্ট্রযন্ত্রসহ সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করেছে।
সোমবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রিন্স অভিযোগ করে বলেন, ৮ এপ্রিল দেশব্যাপী বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং বিএনপি’র সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাসহ নেতৃবৃন্দের গাড়ী ভাংচুর করে আওয়ামী দুস্কৃতিকারীরা। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি’র উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলও পন্ড করে দেয়া হয়েছে। বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনসহ সারাদেশে অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অগণিত নেতাকর্মীকে। এসব আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় আবারো প্রমাণিত হলো-বর্তমান ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকার দেশ থেকে বিরোধী দলের অস্তিত্ব ধ্বংস করতে এখন মরণকামড় দিতে শুরু করেছে।
সারাদেশে বিএনপির বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলার বর্ণনা দিয়ে প্রিন্স বলেন, সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতে দেশের বিরোধীমতকে নিঃচিহ্ন করতে চায়।
তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দামের উর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা। রমজান মাসেও মানুষ ঠিক মতো এক বেলা খেতে পাচ্ছে না। অর্ধেকের বেশী জনগোষ্ঠী ঋণ করে সঞ্চয় ভেঙ্গে দিনাতিপাত করছে, ঋণে জর্জরিত হয়ে মানুষ ঋণ শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে, অভাবের তাড়নায় মা তার আদরের সন্তানকেও বিক্রি করে দিচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদপুষ্টরা দুর্নীতি করে, ব্যাংক থেকে ঋণের নামে লুট করে দেশ-বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে। আর এসবের প্রতিবাদ করলে এবং সংবাদ প্রকাশ করলে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে চলছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার খড়গ।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমানে ভোটারবিহীন সরকার সত্য প্রকাশ ও সমালোচনা সহ্য করতেই পারে না। সরকারের অবৈধ কাজের সমালোচনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে একের পর এক গণমাধ্যম। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিরোধী দলের মুখপত্র দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন বাতিল করে দেয়া হয়েছে। র্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কিভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে, সেইসব লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। যা দেশবাসীর জন্য লজ্জার, অন্যদিকে আতঙ্কেরও। ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরী করে মানুষের মনে ভীতি ছড়িয়ে দিতে সরকারী বাহিনীকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারের হাতেই আজ চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। গণতন্ত্র বিনাশী সরকারের লোকেরাই একজন আরেকজনকে রাতের ভোটের এমপি হিসেবে অভিহিত করছে। তাদের মুখ থেকেই বেরিয়ে আসছে নিশিরাতের ভোটের কথা।
তিনি বলেন, সংসদকে পরিণত করা হয়েছে একদলীয় ক্লাবে। নিশিরাতের ভোটে ঘোষিত এমপিদের সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না, স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও কর্তৃত্ববাদী সরকারপ্রধানের ইচ্ছায় এখন যে সংসদ চলছে তা অকার্যকর, জনপ্রতিনিধিত্বহীন ও বিরোধী দলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার এবং দুই ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের স্তুতি ও জয়গান করা হচ্ছে, যেখানে দেশ-জাতি-জনগণের চাওয়া পাওয়া কিংবা কল্যাণকরা কিছু হয় না, বরং জনঅধিকার হরণের কালো আইন তৈরী করা হয়।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখতে নিশিরাতের সরকার এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকেও বরদাশত করছে নাা। বিএনপিকে নানাভাবে হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্ত করার ধারাবাহিক সরকারি মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবেই উল্লিখিত নেতৃবৃন্দকে পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা আহত করা হয়েছে। দেশের বৃহত্তম ও সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত বর্তমান শাসকগোষ্ঠী অব্যাহত গতিতে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে কারান্তরীণ করছে।
প্রিন্স জানান, চলমান গণআন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে আজ থেকে দেশব্যাপী বিভাগ ভিত্তিক ইউনিয়ন পর্যায়ে মানববন্ধন/অবস্থান, প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি পালিত হবে। এই কর্মসূচি চলবে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। ১০ এপ্রিল, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ। ১১ এপ্রিল, খুলনা ও কুমিল্লা বিভাগ। ১২ এপ্রিল, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ। ১৩ এপ্রিল, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগ।১৬ এপ্রিল, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগ।
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
টাঙ্গাইলে মহাসড়কে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
ভোটার তালিকা হালনাগাদে ইসির প্রস্তুতি
গফরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত
দোয়ারাবাজারে স্ত্রীর যৌতুক মামলায় যুবক গ্রেপ্তার
সচিবালয়ে আগুন পরিকল্পিত: প্রকৌশলী ইকরামুল খান
সেন্ট মার্টিন থেকে ফেরার পথে আটকা পড়েছেন ৭১ পর্যটক
জকিগঞ্জে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু
বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের অগ্রগতির লক্ষে ইসিফোরজে’র প্রি-ওয়ার্কশপ
উচ্চ পর্যায়ের নতুন কমিটি গঠন, ৩ কর্মদিবসে প্রাথমিক প্রতিবেদন
ব্রাহ্মণপাড়ায় ছুরিকাঘাতে এক যুবককে হত্যা
কালীগঞ্জে পুকুর থেকে ২ শিশুর লাশ উদ্ধার
নিবন্ধন চূড়ান্ত: হজযাত্রী ৮৩ হাজার ২৪২ জন
হল্যান্ডের পেনাল্টি মিস,বিবর্ণ সিটি ফের হারাল পয়েন্ট
শরীফ থেকে শরীফার গল্প বাতিল করতে হবে: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
বিসিএ নির্বাচন সম্পন্ন: মিজান সভাপতি, মতিন সম্পাদক
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৩
বিএনপি মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী: শাহজাহান চৌধুরী
সচিবালয়ে আগুন: গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাকে দায়ী করলো এবি পার্টি
পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক
‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’