শুক্রবার বিকেলে উপজেলার শিল্পাঞ্চল খ্যাত গোড়াই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন কৃষক দল আয়োজিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। মির্জাপুর উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, টাঙ্গাইল জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব শামীমুর রহমান খান, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম মৃধা, টাঙ্গাইল জেলা পৌর কৃষক দলের সদস্য সচিব রুহুল আমিন, গাজীপুর জেলা কৃষক দলের সদস্য তানভীর আহমেদ, মির্জাপুর পৌর কৃষক দলের আহ্বায়ক মান্নান খান মান্না, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক ফরিদুর রহমান ফরিদ প্রমুখ।
কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক দিপু হায়দার খান
তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বিএনপি কারো পৈত্রিক সম্পত্তি না। বিএনপির মালিক দেশের আঠারো কোটি
মানুষ। বিএনপির মালিক খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। তারেক রহমান কাউকে চাঁদাবাজির নির্দেশ
দেননি। সাবেক ওই সংসদ সদস্য ও মির্জাপুর উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতার নাম ইঙ্গিত করে কৃষক
দল নেতা দিপু হায়দার খান বলেন, বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে এই অঞ্চলের সংসদ সদস্য হয়েছেন। সততার ফুলঝুড়ি সারা মির্জাপুরবাসীর কাছে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনিই এখন দখলদারিত্ব এবং চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছেন। তিনি বলেন, আপনাকে অনুরোধ করবো, অনেক করেছেন। সাংবাদিকদের সামনে কারখানার নাম উল্লেখ করে বলতে পারি বলে কৃষক দল নেতা বলেন, এই মুহূর্তে আপনি গোড়াইয়ের কমফিট মিল, বেঙ্গল মিল, সাউথ ইস্ট ফেব্রিক্স, নাসির গ্লাস, খান গার্মেন্টস, নিউটেক্সসহ যত মিলকারখানা আছে প্রত্যেকটি মিলকারখানাতে দখলদারিত্ব করছেন। সেখান থেকে আওয়ামী লীগদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সরিয়ে দিয়ে প্রতিমাসে এক কোটি এগারো লক্ষ টাকা চাঁদা তুলেছেন। সেই টাকার গরমে আপনি গোড়াইকে রক্তাক্ত করার অপচেষ্টা করছেন। গোড়াইয়ের নিরীহ সাধারণ নেতাকর্মীদের ভুলভাল বুঝিয়ে শান্তি বিনষ্ট করছেন। আপনি বিএনপির ক্ষতি করতে পারেন না।এই অধিকার আপনাকে কেউ দেয়নি। আপনাকে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করছি। আপনি দখলদারিত্ব থেকে ফিরে আসুন। এই দখলদারিত্ব আপনার কাজ না, দখলদারিত্ব আমার কাজ না। আমরা দখলদারিত্ব করতে পারি না।
তিনি বলেন, গত পনের বছরে হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে যাদের দেখতে পাইনি, তাদেরকে দেখি
হাটুভাঙা ব্রিজের নিচে অস্থায়ী বাজারের প্রতি মাসে সতেরো আঠারো লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করে।
আমরা কোনো চাঁদাবাজকে দেখতে চাই না। বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজের স্থান নাই। বিএনপি ভদ্র
লোকের দল, বিএনপি একটি শালীন ও সভ্য লোকের দল। এই সংগঠনে চাঁদাবাজি থাকবে না, উশৃঙ্খলতা থাকবে না, হানাহানি থাকবে না। বিনয়ের সাথে অনুরোধ করবো, আজকের পর থেকে যে সমস্ত নেতাকে সঙ্গে নিয়ে আপনি দখলদারিত্ব করছেন, আপনার এই দেড় কোটি, সোয়া দুই কোটি টাকা চাঁদাবাজি থেকে আপনি ফিরে আসুন। এই হাটুভাঙা বাসস্ট্যান্ডে ওভার ব্রিজের নিচের যে বাজার
সেই বাজার থেকে প্রতিদিন আঠারো-বিশ হাজার টাকা চাঁদাবাজি থেকে ফিরে আসুন। চাঁদাবাজির দল এইটা না, চাঁদাবাজি করা যাবে না।
দিপু হায়দার খান তাঁর বক্তৃতায় আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত
করার পর দেখলাম নব্য বিএনপি। গত পনের বছর তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে আন্দোলন সংগ্রাম
হয়েছে, মিছিল হয়েছে, মিটিং হয়েছে, সেই আন্দোলন সংগ্রামে তাদের আমরা একটি দিনের জন্যেও দেখিনি। তারাই আজকে এই বিএনপির প্রথম সারিতে গিয়ে বসার চেষ্টা করছে। এই মিল কারখানা দখলদারিত্বে মেতে উঠছে। হাটুভাঙা রোডে বাজার দখল, ফ্যাক্টরি দখল, প্রতিষ্ঠান দখল। সেই দখল দারিত্বের রাজনীতি আমরা দেখতে চাই না। আমরা আজকে সতর্ক করতে চাই। যে যেটুকু করেছেন,
এখানেই বন্ধ করুন। আমরা এগুলো দেখতে চাই না।
বিএনপির পতাকার তলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে কৃষক দল নেতা বলেন, ফ্যাসিস্ট
হাসিনা সরকার বিতাড়িত হয়েছে, তার দোসররা কিন্তু এখনও বাংলাদেশে অবস্থান করছে। ফ্যাসিস্ট
হাসিনা প্রতিনিয়তই ভারতে বসে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। সেই
অপচেষ্টা যদি সফল হয়, তাহলে কিন্তু ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হবে। গত পনেরটি বছর এই বাংলাদেশ ছিল একটি বৃহত্তর কারাগার। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আল্লাহর রহমতে আমরা সেই কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশকে গড়তে চেয়েছিলেন, সকলের পেটে ভাত থাকবে, সকলের মুখে হাসি থাকবে, সকলে মৌলিক অধিকার ভোগ করবে, সেই আদর্শে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বো। এই দেশকে আমরা সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করবো। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলবো।