বিগত ১৬ বছর বিদেশি অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল: সারজিস

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম

বিগত ১৬ বছর বিদেশি অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

 

রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের নায়েক পাড়া এলাকায় শহীদ সাগর ইসলামের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

 

এনসিপির এ মুখ্য সংগঠক দেশবাসীকে পহেলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, গত ১৬ বছর দেশে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে দলীয় প্রভাবের পাশাপাশি বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল। তাদের মতো করে দলের ও বিদেশি রাষ্ট্রের এজেন্সির কনসেপ্টে এই নববর্ষগুলোর সেগমেন্ট তৈরি করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হতো।

 

তিনি বলেন, এই যে ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমতার জায়গা থেকে কোনকিছু চাপিয়ে দেওয়া এটি কখনোই টেকসই নয়। এটি আমরা প্রত্যাশাও করি না। আমি মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকার সেই জায়গাটা করে দিয়েছে জনগণকে। আমি বিশ্বাস করি, যারাই ক্ষমতায় থাকুক না কেন তারা যেন ক্ষমতার অপব্যবহার না করে, জনগণের ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়ার সাহস না করে।

 

সারজিস আলম বলেন, দেশের ৫৩ থেকে ৫৪ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। ফিলিস্তিনের মজলুমদের পাশে দাঁড়াতে কোনো ব্যানার নিয়ে নয়, দলমত নির্বিশেষে সবাই পাশে দাঁড়িয়েছে। জাতিসংঘ ইউনিসেফ মানবাধিকারের বড় বড় লেকচার দেয়। কিন্তু গাজায় সেটা তারা করেনি। জাতিসংঘ এবং ইউনিসেফসহ সকল মানবাধিকারের চোখ বিবেক গাজায় গিয়ে তালাবদ্ধ হয়ে যায়, সেখানে সকল মানবাধিকার ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। আগামীর পৃথিবীতে মানবাধিকারের বয়ান দেওয়ার আগে গাজার চিত্র সামনে আনতে হবে। সেই জায়গায় যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারেন তাহলে পুরো পৃথিবীর মানুষের সামনে মানবাধিকার নিয়ে জ্ঞান দেওয়ার মতো মুখ আপনার নাই। ওই মুখে আপনি তালা দিয়ে রাখুন। 

 

তিনি বলেন, গাজায় গণহত্যার রক্তের দাগ নেতানিয়াহুর হাতে আছে। এই নেতানিয়াহুকে যারা আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেন তাদের প্রত্যেকের গায়ে রক্ত লেগে আছে। আমি পুরো পৃথিবীর মানুষের কাছে আহ্বান জানাই, নিজ নিজ অবস্থান থেকে গাজার ভাইদের জন্য কথা বলা শুরু করেন। আমাদের অবস্থান থেকে স্পষ্ট ঘোষণা গাজায় যে গণহত্যা চলছে এটা যদি ঘটতে দেওয়া হয়, এটা শুধু গাজায় সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটা একদিন পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে যাবে। এই গণহত্যা মুসলিম কেন্দ্রীক নয়, কারণ গাজায় গণহত্যাকারীরা এমন রক্তপিপাসু যে, তাদের যদি কোনো দিন স্বার্থের প্রয়োজন হয় তারা অন্য ধর্মের মানুষেরও রক্ত নেবে। গাজায় গণহত্যা ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, জাতির মধ্যেও সীমাবদ্ধ নয়, এই গণহত্যা নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যেও নয়। গণহত্যার বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হবে। 

 

ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে সারজিস আলম বলেন, পুরো বাংলাদেশ তথা পুরো পৃথিবী আপনাদের সঙ্গে আছে। গাজার ভাইদের যে লড়াই, এই লড়াই পুরো পৃথিবীকে সাহসের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য শক্তি জোগায়। 

 

এ সময় চাকলাহাট ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম, শহীদ সাগরের বাবা রবিউল ইসলাম, নাগরিক পার্টির পঞ্চগড়ের সংগঠক তানভিরুল বারী নয়ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

 

পরে সারজিস শহীদ সাগরের স্মৃতিফলক পরিদর্শন করে তার মা সখিনা বেগমের সঙ্গে কথা বলে পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।


বিভাগ : রাজনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আমি শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ শুরু করলে নিতে পারবেন না: হাসনাত
লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ
সয়াবিন তেল ও শিল্পগ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জামায়াতের
নববর্ষেও দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ : দুলু
ভোটের অধিকারের জন্যই তো মানুষ সংগ্রাম করেছে : রিজভী
আরও
X

আরও পড়ুন

হাসিনার মুখাকৃতি বানানোর সন্দেহে চিত্রশিল্পীর বাড়িতে আগুন

হাসিনার মুখাকৃতি বানানোর সন্দেহে চিত্রশিল্পীর বাড়িতে আগুন

রাজধানীতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন: ছয় দফা দাবিতে সাতরাস্তা অবরোধ

রাজধানীতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন: ছয় দফা দাবিতে সাতরাস্তা অবরোধ

তেল ও চাল নিয়ে তেলেসমাতি বন্ধ করতে হবে সরকারকে : বাংলাদেশ ন্যাপ

তেল ও চাল নিয়ে তেলেসমাতি বন্ধ করতে হবে সরকারকে : বাংলাদেশ ন্যাপ

পাকুন্দিয়ায় দিন দিন বাড়ছে ভুট্টার আবাদ

পাকুন্দিয়ায় দিন দিন বাড়ছে ভুট্টার আবাদ

মহিপুরে স্ত্রী হত্যা মামলার আসামীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

মহিপুরে স্ত্রী হত্যা মামলার আসামীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধের প্রস্তাব

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধের প্রস্তাব

মারা গেছেন হিরো আলমের বাবা

মারা গেছেন হিরো আলমের বাবা

গাজায় ফের উত্তেজনা: ইসরাইলি-মার্কিন জিম্মির সঙ্গে ‘যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন’, জানাল হামাস

গাজায় ফের উত্তেজনা: ইসরাইলি-মার্কিন জিম্মির সঙ্গে ‘যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন’, জানাল হামাস

ভারতীয় ধারাবাহিকে ইসলাম অবমাননা, নেটিজেনদের ক্ষোভ প্রকাশ

ভারতীয় ধারাবাহিকে ইসলাম অবমাননা, নেটিজেনদের ক্ষোভ প্রকাশ

সিরিয়ায় সেনা উপস্থিতি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

সিরিয়ায় সেনা উপস্থিতি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

দিনাজপুরে পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ

দিনাজপুরে পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ

তাজউদ্দিন ও আইভি রহমানের নামে থাকা ২ জলযানের নাম পরিবর্তন

তাজউদ্দিন ও আইভি রহমানের নামে থাকা ২ জলযানের নাম পরিবর্তন

ধেয়ে আসছে দুর্বার সৌরঝড়! বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট বিপর্যয়ের আশঙ্কায় বিশ্বজুড়ে সতর্কতা

ধেয়ে আসছে দুর্বার সৌরঝড়! বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট বিপর্যয়ের আশঙ্কায় বিশ্বজুড়ে সতর্কতা

সাভার ও আশুলিয়ায় ভিজিটিং কার্ডে চলছে গেস্ট হাউজের প্রচার!

সাভার ও আশুলিয়ায় ভিজিটিং কার্ডে চলছে গেস্ট হাউজের প্রচার!

দৌলতপুর উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় অসাধু উপায় অবলম্বন করায় এক পরীক্ষার্থী বহিষ্কার

দৌলতপুর উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় অসাধু উপায় অবলম্বন করায় এক পরীক্ষার্থী বহিষ্কার

আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চল

আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চল

কুয়েট ভিসির অপসারণ দাবিতে চবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

কুয়েট ভিসির অপসারণ দাবিতে চবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে দেশটির জনগণ : যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে দেশটির জনগণ : যুক্তরাষ্ট্র

ধানমন্ডিতে গাড়ি থেকে চাঁদাবাজী, সেই মাস্তান আটক

ধানমন্ডিতে গাড়ি থেকে চাঁদাবাজী, সেই মাস্তান আটক

ইউরোপে ১১ বছরের সর্বোচ্চ বন্যা-তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভেঙেছে ২০২৪ সাল

ইউরোপে ১১ বছরের সর্বোচ্চ বন্যা-তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভেঙেছে ২০২৪ সাল