ধেয়ে আসছে জাহেলিয়াত

Daily Inqilab আবদুল আউওয়াল

২৩ আগস্ট ২০২৩, ০৯:০২ পিএম | আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২৩, ১০:২৯ পিএম

জাহেলিয়াত মানে অজ্ঞতা, বর্বরতা, হিং¯্রতা কিংবা দানবতা। অথবা অশ্লীল ও অনাচার ঘেরা কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজ ব্যবস্থা। যে সমাজে মিথ্যার জয়জয়কার। সত্যের ঠাঁই মেলা ভার। মানুষ আর পশুতে ব্যবধান কেবল আকৃতি। আচার-আচরণ ও কাজকামে দুয়ের মাঝেই অভিন্ন প্রকৃতি। সে সমাজে, যে যার মতো চলে। যা খুশি তাই করে। শক্তির জোরে ভক্তি পায় অর্থের জোরে মুক্তি পায়। কি ন্যায় কি অন্যায় তা বুঝার শক্তিও লোপ পায়। ঠিক যেন ইসলামপূর্ব সত্যের জ্ঞান ও আলোহীন সমাজ ব্যবস্থার মতো। ইসলাম যার নাম দিয়েছিল ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’ বা ‘অজ্ঞতার যুগ’ বলে। কাল পরিক্রমায় আবারও ‘ধেয়ে আসছে জাহেলিয়াত’। অন্ধকার হচ্ছে পৃথিবী। এর কিছু নমুনা তুলে ধরা হলোÑ

 

সৃষ্টিকর্তা ও পরকালে অবিশ্বাস : জাহেলি যুগে অনেক মানুষের ধারণা ছিল সৃষ্টিকর্তা বলতে কিছু নেই। পরকাল, হাশর-নাশর কেবল অলীক কল্পনা। দুনিয়ার জীবনই জীবন। হায়াত-মউত প্রাকৃতিক নিয়ম বা কাল বিবর্তনের ফল। কোরআনে মাজিদে তাদের কথা এভাবে এসেছে, ‘আর তারা বলে, জীবন তো শুধু দুনিয়ার জীবনই। আমাদের জীবন-মরণ এখানেই। কালের বিবর্তনই আমাদের ধ্বংস করে।’ (সুরা জাসিয়া : ২৪) অন্যত্র এসেছে, ‘তারা বলে, ‘যখন আমরা মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব?’ (সুরা মুনিুন : ৮২) কোরআন তাদের এসব অসার ও অবান্তর অনেক কথার জওয়াব খুব জোরালোভাবে দিয়ে ঘোষণা করেছে, ‘এমনকি তোমরা যদি (মাটি ও হাড্ডির চেয়ে কঠিন পদার্থ) পাথর কিংবা লোহা হয়ে যাও অথবা তারচেয়েও কোনো কঠিন পদার্থ, তোমাদের ধারণা মতে যাতে জীবনীশক্তি দেয়া সম্ভব নয় (তবু তোমাদের পুনরায় উঠাব।)’ [সুরা বনি ইসরাইল : ৫০-৫১]

 

আজকাল আমাদের সমাজে এ ধরণের বিশ্বাস ও চেতনাধারীদের নাস্তিক বলে ডাকা হয়। ইউকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, ‘বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার শতকরা ২.৩% মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচয় দেয় এবং ১১.৯% মানুষ কোনো ধর্মেই বিশ্বাস করে না।’ তন্মধ্যে ‘গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনাল’র ৬৫টি দেশ নিয়ে করা এক জরিপে দেখা গেছে চীনের শতকরা ৯০ ভাগ ও সুইডেনের ৭৬ ভাগ মানুষ পত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করে। এছাড়া চেকপ্রজাতন্ত্র, ব্রিটেন, হংকং, জার্মানি ও জাপান নাস্তিক্যবাদ চর্চায় রয়েছে শীর্ষ সাত দেশের তালিকায়। (সূত্র দৈনিক কালেরকণ্ঠ, ৩০ জুন, ২০১৯) মুসলিম দেশগুলোতেও নাস্তিকদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলছে।

 

শিরকের প্রাদুর্ভাব : শিরক হলো আল্লাহতায়ালার সত্তা কিংবা গুণাবলির সঙ্গে কোনো মানুষ, জীবজন্তু, বা কোনো নির্জীব পদার্থের গুণাবলি অথবা সত্তাকে অংশীদার বানানো। পৃথিবীর মোট ৪৩০০টি ধর্মের মধ্যে ইসলাম ছাড়া কোনো ধর্মই আল্লাহর একত্ববাদের বিশুদ্ধ শিক্ষা দেয় না। সে হিসাবে শিরককারীদের সংখ্যাও পৃথিবীতে কম নয়। অথচ ‘শিরক সবচেয়ে বড় অন্যায়।’ (সুরা লুকমান : ১৩) ‘আল্লাহতায়ালা তাঁর সঙ্গে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য পাপ ইচ্ছা করলে ক্ষমা করে দিতে পারেন। কারণ যে শিরক করে সে অবশ্যই মহাপাপ রচনা করে।’ (সুরা নিসা : ৪৮) কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো আজ তাওহিদের ধারকবাহক মুসলিমরাও নানা রকমের শিরকে লিপ্ত। মাজারগুলোর প্রতি দৃষ্টি রাখুন। পীর-মুরিদদের দিকে লক্ষ্য করুন। গণক, জ্যোতিষীদের কাছে যারা যায় তাদের দিকে তাকান। দেখবেন, কতজন কতভাবে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করছে। ঠিক যেন জাহেলি যুগের মুশরিকদের মতো তাদের আকিদা-বিশ্বাস। মাজারে পড়ে সিদজা করছে। মৃতলোকের কাছে দুনিয়ার সমস্যার সমাধান চাচ্ছে। সন্তান কামনা করছে। পীরকে ভালোমন্দ দেয়ার বা করার যোগ্য মনে করছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসবই শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

 

মূর্তিপ্রীতি : জাহেলি যুগে মূর্তি এতটাই প্রিয় হয়ে উঠেছিল, মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ক্ষেতখামার, বৈঠকখানা, ইবাদতখানা সর্বত্রই সযতেœ মূর্তি রাখত ও সংরক্ষণ করত। এমনকি মক্কার লোকেরা কাবাঘরেও ৩৬০টি মূর্তি স্থাপন করেছিল। এদের সামনে মাথা নত করত। সেজদা দিত। খাবার রাখত। এদের নামে যেকোনো কাজ শুরু ও শেষ করত। মান্নত করত। পশু জবাই দিত। বিয়ে-শাদিসহ সামাজিক সকল আচার-অনুষ্ঠান এদের নামেই হতো। এসব মূর্তি বা প্রতিকৃতি ছিল মূলত পূর্বেকার নেককার লোকদের। তাদের বিশ্বাস ছিল নেককার লোকেরা আল্লাহর প্রিয় মানুষ। তারা আল্লাহর কাছে কারো ব্যাপারে সুপারিশ করলে আল্লাহ তা কবুল করবেন। সুতরাং তাদের কোনোভাবে খুশি করা গেলে সফল হওয়া যাবে। কোরআন মাজিদে এসেছে, (মুশরিকরা বলত) ‘আমরা তাদের (মূর্তিদের) ইবাদাত একমাত্র এ উদ্দেশ্যেই করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দেবে।’ (সুরা যুমার : ৩) অন্যত্র এসেছে, ‘তারা বলে, ‘এগুলো আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে।’ (সুরা ইউনুস : ১৮) আমাদের অবস্থাও আজ তাদের মতোই। আমরাও বাড়িঘর, দোকানপাট, অফিস-আদালতসহ সকল কর্মস্থলে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় প্রিয়জনদের ছবি, বুজুর্গদের ছবি কিংবা নেতানেত্রীর ছবি লাগিয়ে রাখি। যা মূলত মূর্তিপূজারীদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এ ধরণের সাদৃশ্য ধারণও ইসলামে নিষিদ্ধ। নবী করিম সা. বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য ধারণ করবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।’ (সুনান আবু দাউদ : ৪০৩১) বলতে বাধা নেই, অনেকে বরকত লাভ ও সম্মান জানানোর জন্যও কোনো মৃত নেতানেত্রী বা বুজুর্গ ব্যক্তির ছবি কিংবা ভাস্কর্য বানিয়ে ঘরে রাখেন কিংবা কোনো জায়গায় স্থাপন করেন। এ সবকিছু মূর্তির সাদৃশ্য অবলম্বন। মূর্তিপূজার সূচনা এভাবেই হয়েছিল।

 

মাদকের ছড়াছড়ি : কোরআনের ভাষায় মদ একটি নিকৃষ্ট বস্তু ও এটা গ্রহণ করা শয়তানের কাজ। (সুরা মায়েদা: ৯১) হাদিসে একে ‘উম্মুল খাবায়েস’ বা পাপাচারের উৎস আখ্যা দেয়া হয়েছে। কারণ মদের উপকারের চেয়ে অপকার অনেক বেশি। জাহেলি যুগে মদের ব্যবহার ছিল অতি মাত্রায়। মদ খেত না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম ছিল। ইসলামের শুরু সময়টাতে তা গ্রহণে বাধা না দেয়া হলেও পরবর্তীতে তা সম্পূর্ণরূপে হারাম ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কারণ একটি আদর্শ ও সুস্থ সমাজ নির্মাণে মাদক সেবন একটি বড় অন্তরায়। আজকাল মদ্যপান ও এর বেচাকেনা ইসলাম ভিন্ন অন্যান্য জাতির কাছে যেমন স্বাভাবিক বিষয়, তেমন অনেক মুসলিমের কাছেও তা স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে কে না জানে। এরপরও মানুষ সে পথেই হাঁটছে। সমাজকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

 

অবৈধ উপার্জন : সে যুগে অর্থ উপার্জনের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা ছিল না। জীবিকার তাদিগে যে যেভাবে পারত অর্থ উপার্জন করত। অভিশপ্ত ইহুদিরা করত সুদের কারবার। যাযাবররা মরুভূমি পশুপালনের সঙ্গে জড়িত থেকে চুরি, ছিনতাই ও লুটতরাজ চালাত। অভিজাত শ্রেণি ব্যবসা-বাণিজ্য করলেও উপার্জন ছিল সীমিত। যে কারণে তারাও অসদুপায় অবলম্বন করত। দুর্বলদের ঠকাত। এতিম-মিসকিনেদর সম্পদ গ্রাস করত। মেয়েদের পিতা, স্বামী, ভাইসহ অনেক আত্মীয়ের সম্পদ থেকে বঞ্চিত করত। জুয়াকে সম্পদ উপার্জনের বৈধ পথ মনে করত। ইসলাম এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। চুরি-ডাকাতির শাস্তি নির্ধারণ করেছে। প্রত্যেকের সম্পদেরর অধিকার নিশ্চিত করেছে। সুদ, ঘোষ, ও জুয়াকে হারাম ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু আজ সমাজের চিত্র পাল্টে গেছে। উল্লিখিত অপরাধগুলো মহামারীর আকার ধারণ করেছে। বোনদের হক না দেয়া রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দুর্বলদের নানাভাবে ঠকানো হচ্ছে। জুয়া ও সুদের কারবার রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ যেন কোরআনের বিধানের প্রতি বৃদ্ধাঙুল প্রদর্শন। ইসলামের সঙ্গে ক্ষমতার আস্ফালন। এসবই কেয়ামত পূর্বলক্ষণ।

নারী নির্যাতন : জাহেলি যুগে নারী ছিল কেবলই ভোগের পণ্য। তাদের সামাজিক মান-মর্যাদা ছিল খুবই কম। যেভাবে খুশি পুরুষ তার প্রয়োজনে তাকে ব্যবহার করত। ছেলের কাছে মায়ের কদর ছিল না। বাবার কাছে কন্যার দাম ছিল না। অনেক সময় কন্যাকে বংশের কলঙ্ক ভেবে হত্যা করা হতো। জীবন্ত কবর দিয়ে বাবা তার আত্মমর্যাদা রক্ষা করত। স্ত্রীরা ছিল দাসীতুল্য। বোনরা ছিল অবহেলিত। ইসলাম এসে সবার মর্যাদা নিশ্চিত করে। কিন্তু আজ সে অধিকার নারীরা হারাতে বসেছে। সম-অধিকারের নামে তারা অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের অধিকার খর্ব করছে। ইসলাম বলে মেয়েকে পাত্রস্থ করার আগ পর্যন্ত তার যাবতীয় ব্যায়ভার বাবা ও ভাইদের ওপর। স্ত্রীর ভরণপোষণ স্বীমর ওপর। মা-বাবা কর্মক্ষম হলে সন্তানরা তাদের দেখভাল করবে। আর এখন সে চিত্র উল্টে যাচ্ছে। মা-বাবার স্থান হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। স্ত্রী সংসারের উপার্জনের উদ্দেশ্যে উড়াল দিচ্ছে বিদেশের মাটিতে। যুবতী মেয়েকে ঘরের বাহিরে কাজে দিয়ে বাপ-ভাইয়েরা ঘুমাচ্ছে বাড়িতে পড়ে। নারী যেন স্বাধীনতার নামে ফিরে যাচ্ছে পরাধীনতার জীবনে। এসবই নব্য জাহেলিয়াতের নিদর্শন।

অবৈধ যৌনাচার : অবৈধ যৌনাচার, যাকে ইসলাম জিনা হিসেবে নামকরণ করেছে। এ ক্ষেত্রে বর্তমান পৃথিবী জাহেলি যুগের পৃথিবীকে ছাড়িয়ে গেছে। বিয়ের মতো পবিত্র ও মধুর সম্পর্ক ছেড়ে ব্যভিচারকে মানুষ বেছে নিচ্ছে। বিয়ে ছাড়াই জন্ম দিচ্ছে সন্তান। অবশ্য এ ক্ষেত্রে ইউরোপ, আমেরিকা এগিয়ে থাকলেও এশিয়া কিছুটা পিছিয়ে। তবে বিনোদন কেন্দ্রগুলো, নামি-দামি হোটেলগুলো, শহরের বিভিন্ন অলিগলি আজ জিনার বাজারে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে সে বাজার দিনকে দিন বড় হচ্ছে। গ্রাম, মফস্বলের পবিত্র পরিবেশও সে বায়ুতে আক্রান্ত হচ্ছে।

অশ্লীল বিনোদন : সে যুগে গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস সবকিছুতেই ছিল অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। নারীর বিভিন্ন গোপনাঙ্গের বর্ণনা, বংশীয় আভিজাত্য, পরস্পর অহংকার প্রদর্শন ইত্যাদি কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা দিয়ে সাজানো ছিল সাহিত্যাঙ্গন। নগ্নতা ছিল আকর্ষণীয় বিনোদন। আজও সাহিত্য মানে একশ্রেণির মানুষের কাছে অশ্লীল, রুচিহীন, নোংরা, পুঁতিগন্ধময় কিছু কথাবার্তা। নগ্নতা সবার চোখেই দৃশ্যমান। এ ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের চেয়ে এগিয়ে। শয়তানের প্রধান টার্গেটই ছিল মানুষের শরীর থেকে পোশাক খুলে নেয়া। জান্নাতে সে আমাদের আদি পিতামাতার পোশাক খুলে নিয়েছিল ষড়যন্ত্র করে। আর দুনিয়ায় সে আদম সন্তানের পোশাক খুলে নিতে ব্যস্ত। এ ক্ষেত্রে মানুষরূপী শয়তানরা তাকে সাহায্য করছে। গান-বাজনার কী অবস্থা সে খবরও আমাদের জানা। এক কথায় অশ্লীলতার ও বেহাপনার জোয়ারে ভাসছে আজ পৃথিবী।

চারিত্রিক অবক্ষয় : চরিত্র মানবের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। একটি সমাজ সুস্থ কি অসুস্থ তার পরিচয় সমাজে বসবাসরত মানুষের মধ্যে দিয়ে পাওয়া যায়। আমাদের সমাজের প্রতিবিম্বটা তখনই পরিস্কার হয়ে ওঠে, যখন দেখি ছাত্রের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত। শিক্ষকের হাতে ছাত্রী যৌন হেনস্থার শিকার। সহপাঠীর হাতে সহপাঠী নিহত। বাবা-মাকে হত্যা করছে আপন সন্তান! ক্ষমতার লোভে গুম-খুন করছে মানুষ মানুষকে। সত্যকথা বলার দায়ে বিষিয়ে তোলা হচ্ছে জীবনকে। কারো সম্পদ রাখার জায়গা হচ্ছে না, কেউ আবার দু’বেলার খাবার খুঁজে পাচ্ছে না। কারো আলিশান গাড়ি বাড়ি। কারো ফুটপাতে লতাপাতার ঝুপড়ি। কেউ সামান্য রোগের চিকিৎসা করাতে বিদেশে যায়, কেউ মহারোগ নিয়ে হাসপাতালের বারান্দাতেও থাকার জন্য টাকা পায় না। মানবীয় গুণাবলি ধারী ধীরে মানুষ থেকে উঠে যাচ্ছে। এর স্থান দখল করছে পশুস্বভাব। একে অপরের প্রতি দয়া, ভ্রাতৃত্ববোধ, ভক্তি, সম্মানবোধ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। হিং¯্রতা, বর্বরতা, হিংসা-বিদ্বেষ ব্যাপকহারে বেড়ে চলছে। এ অবস্থায় মুমিনের অতি সতর্ক ও সংযত হয়ে জীবনযাপন করা প্রয়োজন। ইসলামি অনুশাসনের প্রতি ভালোবাসা ও দরদ নিয়ে তা মান্য করা কর্তব্য। নতুবা ইসলাম যেভাবে অপরিচিত ও দুর্বল অবস্থায় আত্মপ্রকাশ করেছিল অচিরেই তা আগের অবস্থাতেই ফিরে যাওয়ার ভয় রয়েছে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন!

লেখক: কবি ও কলামিস্ট


বিভাগ : ধর্ম দর্শন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বড়দিনের ধর্মীয় ইতিহাস ও তাৎপর্য
ইসলামি অর্থনীতির স্বরূপইসলামি অর্থনীতির স্বরূপ
হাজারো পীর-আউলিয়ার শিরোভূষণ সৈয়দ সুফি ফতেহ আলী ওয়াইসি (র.)
আল-কুরআন তাজকেরায়ে মীলাদ নামায়ে আম্বিয়া (আ:)
ঘুষ : দেয়া-নেয়া দুটিই অপরাধ
আরও

আরও পড়ুন

আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি আর হাসিনার ভরসা ভারতে -দুলু

আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি আর হাসিনার ভরসা ভারতে -দুলু

বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন

বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন

২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীদের

২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীদের

ঢাকায় ‘হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.) বিশ্বের নারীদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ঢাকায় ‘হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.) বিশ্বের নারীদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

চার ভাগে ফিরবেন ক্রিকেটাররা

চার ভাগে ফিরবেন ক্রিকেটাররা

চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: হাসনাত

চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: হাসনাত

এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে

এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে

ইজতেমা মাঠকে যারা খুনের মাঠে পরিণত করেছে তারা সন্ত্রাসী

ইজতেমা মাঠকে যারা খুনের মাঠে পরিণত করেছে তারা সন্ত্রাসী

আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ

আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ২ ভারতীয় নাগরিককে স্বদেশে ফেরত

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ২ ভারতীয় নাগরিককে স্বদেশে ফেরত

মুন্সীগঞ্জে বিএনপি’র দু পক্ষে সংঘর্ষ,৩ জন গুলিবিদ্ব সহ আহত ১০

মুন্সীগঞ্জে বিএনপি’র দু পক্ষে সংঘর্ষ,৩ জন গুলিবিদ্ব সহ আহত ১০

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমকে পাওয়া যাবে: ফারুক

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমকে পাওয়া যাবে: ফারুক

ইজতেমা মাঠে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন

ইজতেমা মাঠে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন

কলাপাড়ায় অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু

কলাপাড়ায় অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু

আগামীকাল পঞ্চগড়ে বিএনপির জনসমাবেশ

আগামীকাল পঞ্চগড়ে বিএনপির জনসমাবেশ

ব্যাক্তিস্বার্থ পরিহার করে, দেশ ও দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: ইলিয়াস পাটোয়ারী

ব্যাক্তিস্বার্থ পরিহার করে, দেশ ও দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: ইলিয়াস পাটোয়ারী

সখিপুরে বিদ্যুৎষ্পৃষ্টে ডিস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

সখিপুরে বিদ্যুৎষ্পৃষ্টে ডিস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

যারাই সুযোগ পেয়েছে তারাই দেশের সাথে বেঈমানী করেছে: ডা. মু. তাহের

যারাই সুযোগ পেয়েছে তারাই দেশের সাথে বেঈমানী করেছে: ডা. মু. তাহের

পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন

পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন

শীতের দিনে ঝিরঝিরে বৃষ্টি স্থবির খুলনা শহুরে জীবন

শীতের দিনে ঝিরঝিরে বৃষ্টি স্থবির খুলনা শহুরে জীবন