ভারত উপমহাদেশে মুসলিম সভ্যতার জাগরণে আবুল হাসান আলী নদভির শিক্ষাচিন্তা
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
এক. ভারত উপমহাদেশের মুসলিম সভ্যতার হালহকিকত : ভারত উপমহাদেশে মুসলিম জাতি গঠনে কাজ হয়েছে চার পদ্ধতিতে। ১. সুন্নাহ পদ্ধতি ২. শিয়া পদ্ধতি ৩. সেক্যুলার পদ্ধতি ৪. বিদাত পদ্ধতি। যারা কাজ করছেন, তাদের মানহাজ বিশ্লেষণে ৮টি মতাদর্শ বেরিয়ে আসে। ১. বিশুদ্ধ সুন্নাহ পদ্ধতি। ২. সুন্নাহের সঙ্গে শেষের তিন পদ্ধতির যেকোনো একটির সংমিশ্রণ। ৩. শুধু শিয়ি পদ্ধতি। ৪. শিয়া মতবাদের সঙ্গে সুন্নাহের সংমিশ্রণ। ৫. সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ পদ্ধতি। ৬. সেক্যুলার পদ্ধতির সঙ্গে সুন্নাহের সংমিশ্রণ। ৭. শুধু বিদাত পদ্ধতি। ৮. বিদাতের সঙ্গে সুন্নাহের সংমিশ্রণ। উল্লেখ্য যে, ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী জাতি গঠনের কাজ দালিলিকভাবে প্রতিষ্ঠিত মুজাদ্দিদ ছাড়া অন্য কারো পক্ষে বুদ্ধি ভিত্তিক পন্থা আবিষ্কার করে জাতি গঠনের কাজ বৈধ নয়। বাকিরা পূর্ববর্তী মুজাদ্দিদ কিংবা সমসাময়িক মুজাদ্দিদের রেখে যাওয়া পদ্ধতি অনুসরণ করা জরুরি। মোগল আমল থেকে শুধু সুন্নাহ পদ্ধতিতে জাতি গঠনের কাজ করছেন মাত্র ৩-জন মনীষা। মুজাদ্দিদ শাহ আহমদ শহিদ সরহিন্দি, মুজাদ্দিদ শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভি এবং মুজাদ্দিদ শাহ মুহাম্মদ ইলিয়াস রাহ.। দু:খজনক ব্যাপার হল-উল্লিখিত মুজাদ্দিদ ত্রয়ের কারো তাজদিদি নকশা পূর্ণতায় পৌঁছেনি।
দুই. ভারত উপমহাদেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি : ভারত উপমহাদেশে দীর্ঘদিন ধরে চলছে–১. মাকসাদ বিহীন তালিম, ২. মা-বিহীন তাসাউফ, ৩. সুন্নাহ পরিপন্থী রাজনীতি, ৪. চিন্তাহীন দাওয়াত, ৫. শুদ্দিহি সংস্কৃতির প্রভাব, ৬. পশ্চিমা সভ্যতা-সংস্কৃতির আমদানি. ৭. ইসলামি পরিভাষা ব্যবহার করে প্রাচ্যবিদদের প্রতারণা, ৮. সাহায্য ও উন্নয়নের নামে কুফরির তাবলিগ! আবার এসব পরিভাষার ধারক বাহকরা নিজের চিন্তামতো জাতিগঠনে কাজ করেছেন দুইভাবে। প্রথমত: রাজনীতির কাজ হলো রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে ঘষামাজা করা, কিন্তু রাজনীতিবিদরা অন্যায্যভাবে জাতি গঠনে কাজ করে প্রতিষ্ঠা করেছেন ছোট-বড়-মাঝারি ধরণের ভিন্ন মতাদর্শিক দল। দ্বিতীয়ত: অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা স্বীকৃত মুজাদ্দিদ কর্তৃক প্রবর্তিত তাজদিদি নকশা ছাড়া নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো জাতি গঠনে কাজ করে সৃষ্টি করেছেন ভিন্ন রকমের অনুসার শ্রেণি কিংবা ব্যক্তি ভিত্তিক মানহাজি-মাসলাকি ফিরকা-গ্রুপ। যাঁর ফলশ্রুতিতে সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠেছে—কাল্পনিক ঔপন্যাস-নাটকের মতো অবিশ্বাস্য কপট সমাজ আর তাদের অনুসারীরা নাট্যকারের মতো আদর্শহীন কঙ্কাল। এ প্রসঙ্গে মহানবি সা. বলেছেন—শীঘ্রই মানুষের ওপর এমন এক যুগ আসবে, যখন শুধু নাম ব্যতিত ইসলামের কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না, সেদিন কুরআনের অক্ষরই শুধু অবশিষ্ট থাকবে। তাদের মসজিদগুলো তো বাহ্যিকভাবে আবাদ হতে থাকবে, কিন্তু হিদায়াতশূন্য থাকবে। তাদের আলেমগণ হবে আকাশের নীচে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট লোক, তাদের নিকট হতেই ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি হবে। অত:পর এ ফিতনাহ (পরিণাম) তাদের দিকেই ফিরবে।
তিন. আবুল হাসান আলী নদভির শিক্ষাচিন্তা : বিগত কয়েক যুগ থেকে মুসলিম সমাজে ‘সংঘাতময় ইসলাম’-এর রূপ পৃথিবী প্রত্যক্ষ করছে। কারণ হিসিবে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, মুসলিম সমাজের এই অস্থিতিশীল অবস্থার প্রধান কারণ যুগসন্ধিৎসার অনুকূলে একাডেমিক শিক্ষার দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পারা। এ বিষয়ে প্রচুর গবেষণা দরকার। একটি প্রবন্ধে এতো কথা তো আর বলা যায় না বিধায় আজকের আলোচনা আবুল হাসান আলী নদভির সূত্র ধরে ভারত উপমহাদেশের উদ্দেশ্যহীন শিক্ষাব্যবস্থার উত্তরণের উপায় হিসেবে নদভির শিক্ষাচিন্তার তুলে ধরার চেষ্টা করব।
১. মুসলিম উম্মাহের শিক্ষাবিষয়ক চিন্তক আলেম : বিংশ শতাব্দীর একজন খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামি চিন্তাবিদ হলেন, আবুল হাসান আলী নদভি (১৯১৩- ১৯৯৯) রাহ.। ১৯৩৪ সালে তিনি দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং তাফসির, হাদিস, যুক্তিবিদ্যা, আরবি সাহিত্য ও ইতিহাসের শিক্ষা দেন। ১৯৪৩ সালে দ্বীনি শিক্ষার জন্য তিনি ‘আন্জুমানে তা’লিমাতে দীন’ নামক একটি এ্যসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি নদওয়াতুল উলামার প্রশাসনিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শ কমিটির একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৬৮ সালে সৌদি শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষ থেকে রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ বিভাগের পাঠ্যসূচী প্রণয়নে পরামর্শ দেয়ার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মুসলিম উম্মাহর শিক্ষা নিয়ে নদভি রাহ. অনেক বেশী চিন্তিত ছিলেন।(বাংলা উইকিপিডিয়া)। শিক্ষাব্যবস্থাকে তিনি উম্মতের ‘জীবন-মরণের বিষয়’ হিসাবে আখ্যা দিয়েছিলেন। মুসলিম উম্মাহের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তাঁর লিখনি ও গবেষণা গ্রন্থগুলো খুবই জনপ্রিয়। উম্মতের শিক্ষা নিয়ে তাঁর চিন্তাগবেষাণা বিষয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখা হলেও বাস্তবায়নের উদ্যোগ এখনো দেখা যায়নি। নদভি লিখিত গ্রন্থসমগ্র ও বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে আমরা খুব সংক্ষেপে তাঁর শিক্ষাভাবনা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
২. মুসলিম জাহানের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ দৃষ্টি : মুসলিম বিশ্বের বর্তমান শিক্ষা ও জ্ঞান পরিচালনার পদ্ধতি বিষয়ে নদভি বলেন, মুসলিম জাহানের বেশির ভাগ অঞ্চল পশ্চিমা ঔপনিবেশের শিকার হয়। এই কারণে এই অঞ্চলের মুসলমানেরা পশ্চিমা শিক্ষা, শিক্ষাব্যবস্থা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, নীতি-আদর্শ, শিক্ষাদর্শন গ্রহণ করতে বাধ্য হয়, অথচ এই অঞ্চলের বোধ-বিশ্বাস, শিল্প-সাহিত্য ছিল পশ্চিমা বোধ-বিশ্বাস, শিল্প-সাহিত্য থেকে সম্পুর্ণ আলাদা। যার ফলে মুসলিম জাহানে এমন একটি প্রজন্ম বা জামাত সৃষ্টি হয়েছে যারা ইসলামি বোধ-বিশ্বাস, ইমান-আকিদাকে নিজেদের ইমান-আকিদা হিসাবে মেনে নিতে পুরাপুরি প্রস্তুত হতে পারেনি।
৩. শিক্ষাব্যবস্থা একটি জটিল ব্যবস্থা : তিনি বলেন ‘শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থা’ একটি অতি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় এবং সেই সাথে অনেক জটিল একটি বিষয়ও বটে। শিক্ষা ব্যবস্থার কাজ শুধুমাত্র কিছু বিষয়ের শিক্ষা প্রদান নয়, বরং এর উদ্দেশ্য একটি প্রজন্মের চিন্তা-চরিত্র তৈরি করা। এই গুরু দায়িত্ব আঞ্জাম দেওয়া শুধুমাত্র পাঠ্য পুস্তকের অনুবাদ বা বাইরে থেকে শিক্ষক আমদানি করা বা বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে বা বিদেশে ছাত্রদেরকে শিক্ষার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করার মাধ্যমে সম্ভব নয়, বরং এর জন্যে দরকার গভীর ও সৃজনশীল গবেষণা ও নিজেদের তাহজিব-তামাদ্দুন অনুযায়ী পাঠ্য-পুস্তক তৈরি করা এবং নিজেদের উপযোগী বিশেষ শিক্ষা কারিকুলাম তৈরি করা।
৪. ইসলামি শিক্ষা কারিকুলাম তৈরি করা জরুরি : নদভি বলেন, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দর্শনের বিষয়ে যাদের অভিজ্ঞতা আছে এটা তাদের জানা বিষয় যে, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও পাঠ্যপুস্তকের দুটি দিক থাকে ; একটি বাইরের দিক, আরেকটি ভিতরের দিক যা সেই বিষয়ের চেতনা বা স্পিরিট। ইসলাম যে সকল জ্ঞান বা জ্ঞানের শাখা সৃষ্টি করেছে সেই সকল জ্ঞানের মধ্যে আল্লাহর প্রতি ইমান, তাকওয়া, আল্লাহ ভীতি, আখেরাতের প্রতি ইমান, আখলাক স্পষ্ট ভাবে প্রকাশিত। পক্ষান্তরে যে সকল জ্ঞান গ্রীক সভ্যতার মাধ্যমে বা আধুনিক সভ্যতার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে সেখানে তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ পায়, সেগুলোর মধ্যে বস্তুবাদী চিন্তা, নাস্তিকতা, আখেরাত অস্বীকার করার মত বিষয় বিদ্যমান। সুতরাং আধুনিক শিক্ষার নামে এই সকল পাঠ্য পুস্তক আমাদের মুসলিম শিক্ষার্থীদের সামনে পেশ করা একটি বিরাট অন্যায় ও না-ইনসাফ হিসাবে বিবেচিত হবে। এই ক্ষেত্রে, আমাদেরকে পাঠ্য পুস্তক ও শিক্ষা ব্যবস্থা নতুন করে সাজাতে হবে। শিক্ষা সিলেবাসে ইমান ও আখলাকের ভিত্তি মজবুত করতে হবে।
৫. পশ্চিমা শিক্ষা ব্যবস্থার প্রভাব : এটা স্পষ্ট যে, শিক্ষা ব্যবস্থার পিছনে একটি স্পিরিট ও চেতনা কাজ করে, তাই যে কোন শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে আমরা সেই শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তনকারীদের চিন্তা-চেতনা, বোধ-বিশ্বাস, জীবন ও জগতের প্রতি তাদের মনোভাবের প্রতিফলন দেখতে পাই। এবং সেই প্রতিফলন তাদের পাঠ্য-পুস্তকের পাতায় পাতায় প্রকাশ পায়। এই অবস্থায় যদি এমন জাতির শিক্ষাব্যবস্থাকে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সামনে পেশ করি যাদের আকিদা, বোধ-বিশ্বাসের সাথে আমাদের আকিদা ও বোধ-বিশ্বাসের আমুল পার্থক্য রয়েছে তাহলে সেই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হতে থাকবে এবং সকল ক্ষেত্রে শিক্ষাব্যবস্থার সাথে আমাদের সংঘাত শুরু হবে। ইসলাম থেকে দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে। পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থাকে মুসলিম উম্মার মাঝে আমদানি করার কারণে ঠিক এই বিরূপ প্রভাবই সৃষ্টি হয়েছে। কারণ তাদের বোধ-বিশ্বাস, দর্শন, মূল্যবোধ শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে মুসলিম তরুণ সমাজের মাঝে সংক্রমিত হয়েছে –খুব সামান্য সংখ্যক ভাগ্যবান তরুণ ব্যতীত। শিক্ষা ব্যবস্থার প্রভাব দেখাতে গিয়ে তিনি ইসলাম গ্রহণকারী অস্ট্রিয়ার নাগরিক মুহাম্মাদ আসাদের রচনা থেকে কিছু উদ্বৃতি পেশ করেন: ‘ইউরোপের সাহিত্য বর্তমানে মুসলিম বিশ্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে পড়ানো হচ্ছে তার একটি নেতিবাচক প্রভাব এই যে, এর মাধ্যমে মুসলিম তরুণ সমাজের চোখেই ইসলাম ধর্ম অপরিচিত ধর্ম হিসাবে প্রকাশ পাচ্ছে। একই অবস্থা ইসলামি ইতিহাসের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ব্যাপারেও প্রযোজ্য। কারণ পশ্চিমা লেখক ও ইতিহাসবিদরা ইসলামি ইতিহাসের যে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করেছেন তার মাধ্যমে ইসলামি ইতিহাস ও সভ্যতার উপর পশ্চিমা ইতিহাস ও সভ্যতার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করার চেষ্ঠা করা হয়েছে। আসাদ আরো বলেন, ‘অতীতে মুসলিম উম্মাহ বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে বিমুখ থাকার কারণে নিজেদের যে ক্ষতি সাধন করেছে সেই ক্ষতি পূরণ সম্ভব নয় পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থাকে আমদানি করার মাধ্যমে। জাগতিক ও বৈজ্ঞানিক দৈন্যতা ও পশ্চাৎপদতার ক্ষতির পরিমাণ অনুমান করা সম্ভব নয়–পশ্চিমা বিশ্বের শিক্ষা-সংস্কৃতির অন্ধ অনুসরণের ক্ষতির সামনে। আমরা যদি ইসলামি সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে অক্ষুণ্ণ রাখতে চাই তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই পশ্চিমা চিন্তা ও ধ্যান-ধারণার পরিবেশ থেকে বেঁচে থাকতে হবে’। বৃটিশভারতের শিক্ষাবিদ লর্ড মেকলে, যিনি ভারত উপমহাদেশে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন, তিনি তার এক প্রতিবেদনে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা দেওয়ার কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন : আমাদের জন্যে জরুরি–এমন একটি গোষ্ঠী সৃষ্টি করা যারা আমাদের মাঝে ও আমাদের অগণিত ভারতীয় প্রজাদের মাঝে অনুবাদক হিসাবে কাজ করতে পারবে। এই গোষ্ঠির রক্ত ও রঙ হবে ভারতীয়, তবে তাদের চিন্তা, ভাষা, রুচি হবে ইংরেজ। এজন্য নদভি বলেছেন, ‘পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থা ছিল ইসলামি ধ্যান-ধারণা, তাহজিব-তামাদ্দুন ধ্বংস করার একটি সুক্ষ্ম চেষ্টা। ইতিপূর্বে যারা সরাসরি ইসলামি ধ্যান-ধারণা, সভ্যতা ধ্বংস করার চেষ্ঠা করে আসছিল তারা এবার সুক্ষ্মপথে শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে তা পরিপূর্ণ করার চিন্তা করল। সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যে তারা এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করা শুরু করে এবং তারা এই পথে বেশ সফলকাম হয়ে যায়”। আল্লামা ইকবাল রা. এর একটি উক্তির উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন ‘যে জ্ঞান বা বিদ্যা অধ্যয়ন করছ, সেই ব্যাপারে সতর্ক থেকো, কারণ এর মাধ্যমে একটি সমগ্র উম্মতের চেতনা (রুহ) শেষ করে দেওয়া যায়।’ ‘শিক্ষা হচ্ছে এমন একটি উপাদান যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্বকে ‘গলিয়ে’ যেমন ইচ্ছা তেমন ভাবে গঠন করা হয়ে থাকে। পশ্চিমা শিক্ষা ব্যবস্থা হচ্ছে দ্বীন, আখলাক, মরুয়াতের উপর একটি বিরাট চক্রান্ত।’ (চলবে)
লেখক: শিক্ষক ও গবেষক।
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শ্রদ্ধার প্রেম প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে অনুতপ্ত বরুণ ধাওয়ান
শেরপুরে জেল পলাতক হত্যা মামলার ৩০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
মুসলিম জাগরণের অগ্রপথিক মুন্সী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ আজ জন্মদিন
গত সাড়ে ১৫ বছর যারা শাসন করেছে, তারা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদেরকে সাজিয়েছে: আমীরে জামায়াত
রাজস্থানে ৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি ৭০০ ফুট গর্তে আটকে থাকা শিশু
জকিগঞ্জে বালাউটি ছাহেবের ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে ভক্ত-মুরিদানের ঢল
‘অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা এই কপালপোড়া জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে’
বিমান হামলায় গাজায় একসঙ্গে ৫ সাংবাদিককে হত্যা
বান্দরবানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো নির্মাণের নির্দেশ
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সচিবালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে উপদেষ্টারা
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরায়েলের
ফায়ার ফাইটার নয়নের জানাজা বাদ জোহর, অংশ নেবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সচিবালয়ের আগুন লাগা ভবনেই উপদেষ্টা নাহিদ-আসিফের মন্ত্রণালয়
সচিবালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
চাঁদপুরে দুই উপজেলার মধ্যবর্তী সেতু ভেঙ্গে পড়েছে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাস মালিককে কুপিয়ে হত্যা
মোজাম্বিকে কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় নিহত ৩৩, দেড় হাজার বন্দির পলায়ন
কেনাকাটার সময় আমরা সাধারণত যে ভুলগুলো করি
মিরপুরে সাংবাদিকদের ২১ বিঘা জমি এখনও ইলিয়াস মোল্লাহর দখলে!
রংপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মিলন গ্রেপ্তার