কুতুবউদ্দিন আইবেকের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ-২
২৬ মে ২০২৩, ১১:২৪ পিএম | আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩, ০৮:১৫ পিএম

কুতুবউদ্দিন আইবেকের বিরুদ্ধে তথাকথিত ইতিহাস লেখকদের অভিযোগগুলোর একটি হলো, তিনি হিন্দু মন্দির ধ্বংস করে তৈরি করেন মসজিদ। কোনো ইতিহাস লেখকের দাবি, তিনি প্রায় ১০০০ মন্দির ধ্বংস করেন এবং মসজিদ বানান। তিনি এও দাবি করেন, কুতুবউদ্দিন আইবেক ধ্বংসপ্রাপ্ত, মন্দিরের পাথর ও রতœরাজি দিয়ে কুওয়াতুল মসজিদ সজ্জিত করেন।
এইসব ইতিহাস লেখকের দাবি যে সত্য ও বাস্তবতার সঙ্গে যায় না, সে কথা সত্যসন্ধ ঐতিহাসিকরা উল্লেখ করেছেন। একজন ইতিহাসবিদ লিখেছেন: কালিঞ্জর, বেনারস, কালপি, দিল্লী, আজমীর, আজাইন, বাদায়ুনের যুদ্ধে কুতুবউদ্দিন আইবেক যত মন্দির ধ্বংস করেছিলেন বলে বর্ণনা পাওয়া যায়, তা সত্য হলে উত্তর ভারতের একটি মন্দিরও অবশিষ্ট থাকতো না এবং হাজার হাজার মসজিদ হতো। কিন্তু বাস্তব অবস্থা অন্য রকম। উত্তর ভারতে তখন ১২টি মসজিদও ছিল না। পক্ষান্তরে হাজার হাজার মন্দির বিদ্যমান ছিল। দু’ একটা মন্দির যা ধ্বংস হয়েছে, তা কোনো ধর্মীয় উদ্দেশ্য অনুযায়ী হয়নি, যুদ্ধের হাঙ্গামার ফলেই হয়েছে। (‘সালাতীনে দেহলীকে মজহারি রুজহানতা’, ‘ইতিহাসের ইতিহাস’, আল্লামা গোলাম আহমদ মোর্তজা)।
কোনো কোনো ঐতিহাসিক লিখেছেন, ‘গনিমতে’র সম্পদ দিয়ে কুতুবউদ্দিন আইবেক মসজিদ ও কুতুবমিনার নির্মাণ করেন। গনিমত হলো যুদ্ধলব্ধ সম্পদ ও মালামাল। এর মধ্যে ভগ্ন ও পরিত্যক্ত মন্দিরের ইট-কাঠ-পাথর ইত্যাদিও শামিল হতে পারে। তাই মসজিদ ও মিনারে যদি মন্দিরের কোনো উপকরণ ব্যবহৃত হয়ে থাকে সেটা দোষের কিছু হতে পারে না। এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীনও নয়।
কুতুবউদ্দিন আইবেকের বিরুদ্ধে অন্য একটি অভিযোগ হলো, তিনি হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেন। যুদ্ধ ছাড়া বেসামরিক মানুষকে তিনি হত্যা করেছেন, এমন সাক্ষ্য-প্রমাণ ইতিহাসে পাওয়া যায় না। আর যুদ্ধক্ষেত্রে মানুষ হত্যা করা কোনো অন্যায় বা দোষের নয়। যুদ্ধে উভয় পক্ষেই হতাহত হয়। এ জন্য কেউ কাউকে দায়ী করে না। যুদ্ধ হবে, কেউ হতাহত হবে না, এটা হয় না।
উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, কুতুবমিনার প্রাঙ্গনে পূজা-আর্চনার আধিকার যেমন দিতে হবে, তেমনি কুতুবমিনারকে বিষ্ণুস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। এর সোজা অর্থ, মুসলিম ঐতিহ্যের পরিচয় পাল্টে হিন্দু ঐতিহ্য প্রতিস্থাপন করতে হবে। এভাবে ইতিহাস পাল্টে দিতে হবে। প্রশ্ন হলো, প্রকৃত ইতিহাস কি পাল্টে দেয়া যায়?
মুসলমান বিজেতা ও শাসকদের যেভাবে অপচিহ্নিত ও তাদের ভাবমর্যাদা বিনষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে, সেটা উগ্র মুসলিম বিদ্বেষের পরিচায়ক। কুতুবউদ্দিন আইবেক শাসক হিসেবে ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, সজ্জন ও সহৃদয়। তার সেনাবাহিনীতে বহু হিন্দু সৈন্য ছিল। প্রশাসনেও বহু হিন্দু ছিলো। রাজস্ব বিভাগে হিন্দু কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। হিন্দু বিদ্বেষী নয়, শাসক হিসেবে তিনি কতটা মহৎ ছিলেন, এটা তারই প্রমাণ বহন করে। (সমাপ্ত)
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

ইনোভেশন কনক্লেভের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ এআই সামিট ও হ্যাকাথন

দরপতনের পর বড় উত্থান শেয়ারবাজারে

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মাঝে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারীবিদ্বেষী সব ধরনের প্রচারণা বন্ধে রাষ্ট্রকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি

দ্রুত নির্বাচন দিন তাহলে দেশ রক্ষা পাবে : শামসুজ্জামান দুদু

লেবানন ও বাংলাদেশের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেয়া হবে লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন

হাইকোর্টে শাহরীনের জামিন

হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশনা

নাগরিকপত্র প্রকাশে কঠোরভাবে কাজ করছে ইসি

কৃষকবান্ধব প্রতিষ্ঠান বিএডিসিকে আরো এগিয়ে নিতে হবে -ভার্চুয়ালি আলোচনায় বিএডিসি চেয়ারম্যান

কামাল জামান মোল্লার বিরুদ্ধে দুদকের নতুন অনুসন্ধান

আদর্শ ইসলামী মিশন এতিমখানায় সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল

মাহফুজ-আসিফকে সরকার থেকে সরে যেতে বললেন এনসিপি নেত্রী

শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের ‘কাফন মিছিল’

জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন সূচক এক ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ ১৩০তম

তিনশ’ আসনে একক প্রার্থী দেবে ইসলামী দলের ৫ দলীয় জোট

মৌলিক সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে পীর সাহেব চরমোনাই

সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ সংশোধনের দাবি টিআইবি’র

আজ রাতেই আওয়ামী লীগের বিষয়ে ফয়সালা: নাহিদ ইসলাম

আগামী সোমবার কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি