কুমিল্লার শাহ সুজা মসজিদ
০৪ জুন ২০২৪, ১২:১৮ এএম | আপডেট: ০৪ জুন ২০২৪, ১২:১৮ এএম

প্রাচীন ও মুঘল আমলের অসংখ্য মসজিদ কুমিল্লার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে মহিমান্বিত করেছে। বর্তমান কুমিল্লা অর্থাৎ পূর্বতন ত্রিপুরা জেলায় ত্রয়োদশ শতাব্দীর দিকে মুসলমানদের আগমন ঘটে। চতুর্দশ শতাব্দীতে এ জেলায় তুর্কি মুসলমানদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলিম অধিকার প্রতিষ্ঠার সাথে সাথেই এ জেলায় ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু হয়। সুলতানি আমল, পাঠান ও বার ভূঁইয়াদের আমল এবং মুঘল ছিল এ জেলার মুসলমান শাসনামল। মুসলমান শাসনামলের মধ্যে কুমিল্লায় মুঘল আমলে নির্মিত মসজিদ ও কীর্তির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরমধ্যে পাক-ভারত উপমহাদেশের প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম কুমিল্লার শাহ সুজা মসজিদ।
সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় ছেলে শাহ সুজা বাংলার সুবেদার ছিলেন ১৬৩৯ থেকে ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। ওই সময়ে ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে গোমতী নদীর কোলঘেঁষে গাংচর-মোগলটুলি এলাকায় নির্মিত হয় শাহ সুজা মসজিদ। মুঘল ইতিহাসে মুসলিম স্থাপত্যের মধ্যে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট শাহ সুজা মসজিদ ৩৬৬ বছরের অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন।
ঐতিহাসিক গ্রন্থ রাজমালায় ইতিহাসবিদ কৈলাস চন্দ্র সিংহ উল্লেখ করেন, শাহ সুজা মসজিদ একটি ইষ্টক নির্মিত বৃহৎ মসজিদ। শাহ সুজা ত্রিপুরা রাজ্য জয় করে চিরস্মরণীয় হওয়ার জন্য এটি নির্মাণ করেন। আয়তনের দিক দিয়ে এ মসজিদ খুব বেশি বড় না হলেও এর স্থাপত্যশৈলী, কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সার্বিক অবয়ব আভিজাত্য বহন করে। মসজিদটির বাইরের আয়তাকার দৈর্ঘ্য ১৭ দশমিক ৬৮ মিটার, প্রস্থ ৮ দশমিক ৫৩ মিটার। প্রাচীরগুলো ১ দশমিক ৭৫ মিটার পুরু। মসজিদের চার কোণে চারটি অষ্টকোণাকার বুরুজ রয়েছে। এগুলো কার্নিসের বেশ ওপরে ওঠে গেছে এবং এর শীর্ষে রয়েছে ছোট গম্বুজ। মসজিদের পূর্ব প্রাচীরে তিনটি এবং উত্তর-দক্ষিণ প্রাচীরে একটি করে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে। প্রধান প্রবেশপথটি অপেক্ষাকৃৃত বড় এবং এতে অধিকতর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। প্রবেশ পথগুলোর উভয় পাশে এবং উপরে প্যানেল নকশা অলঙ্কৃত। কিবলা প্রাচীরে রয়েছে তিনটি মিহরাব, কেন্দ্রীয়টি অপেক্ষাকৃত বড় ও অধিক আকর্ষণীয়। এটি ফুল, লতাপাতা ও জ্যামিতিক নকশায় শোভিত। দুই পার্শ্বে খিলান দিয়ে মসজিদের অভ্যন্তর তিন ভাগে বিভক্ত। খিলানগুলো চতুর্কেন্দ্রিক রীতিতে তৈরি। এর মধ্যের অংশটি বাইরের দিকে পূর্ব ও পশ্চিমে কিছুটা উদ্গত করে নির্মিত। এ অংশের চার কোণে চারটি সরু মিনার কার্নিসের উপরে উঠেছে। অষ্টকোণাকার ড্রামের ওপর নির্মিত তিনটি গোলাকার গম্বুজ দিয়ে মসজিদের ছাদ ঢাকা। মধ্যেরটি অপেক্ষাকৃত বড়।
কুমিল্লা জেলার ইতিহাস বই থেকে জানা যায়, শাহ সুজা মসজিদের গম্বুজের শীর্ষে পদ্ম ফুলের নকশা ও তার উপরে রয়েছে কলসি। গম্বুজের চারদিকে রয়েছে পদ্ম পাপড়ির মারলন নকশা। মসজিদের ফটক ধবধবে সাদা রঙের। ইতিহাসবিদদের মতে, এ মসজিদের উদ্বোধনী খুতবা পড়েছিলেন সম্রাট শাহজাহানের আত্মীয় ও মুঘল বংশের লোক কাজী মনসুরুল হক।
বিভিন্ন সময়ে শাহ সুজা মসজিদের পুরানো স্থাপত্যশৈলী ঠিক রেখে আধুনিক কারুকাজের সমন্বয়ে সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কুমিল্লার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মতো দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ শাহ সুজা মসজিদ।
লেখক : স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক ইনকিলাব
বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

রাঙা সকালে শাবনাজের না বলা কথা

জে-হোপের সুইট ড্রিমস

ঈদে চ্যানেল অইতে ৭ সিনেমার ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার

বিশাল আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রে জেমসের কনসার্ট

অ্যাভাটারের তৃতীয় পর্ব মুক্তি পাবে ১৯ ডিসেম্বর

মাইকেল চাকমাকে পাসপোর্ট দিতে রুল

কেউ কেউ কৃত্রিমভাবে বিরোধ তৈরির চেষ্টা করছে : মির্জা আব্বাস

জুলাই-আগস্টে ঢাবি ক্যাম্পাসে সহিংস ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন ভিসির কাছে হস্তান্তর

বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তাক্বওয়ার শিক্ষা নিয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে Ñজমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ

শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলায় খালাস পেলেন উপসচিব রেজাউল করিম

চার্চের শিক্ষক সুব্রত বৈদ্য হত্যায় সব আসামি খালাস

জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখতে নরসিংদীতে কর্মবিরতি

আছিয়ার মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য লজ্জাজনক : ইউট্যাব

সংস্কার সুপারিশ নিয়ে মতামত দিয়েছে ৭ দল, ১৬ দল সময় চেয়েছে

ঢাকা সংবাদপত্র হকার্স সুপারভাইজার সমিতি গঠিত

রামপালে অবাধে চলছে ঘের দখল ও চাঁদাবাজি

মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের আয়োজনে দোয়া ও ইফতার

সুন্দরবনের কাঠসহ ১০ চোরাকারবারী আটক

কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করার দাবিতে মানববন্ধন

নোবিপ্রবিতে ৮০০ কেভিএ বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন উদ্বোধন