জনশক্তি রফতানিতে কাক্সিক্ষত গতি বাড়েনি
০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম
জনশক্তি রফতানিতে কাক্সিক্ষত গতি বাড়েনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় সোয়া কোটি নারী-পুরুষ কর্মী কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশে অর্থনীতিকে সমৃদ্ধি করছেন। ঐতিহাসিক বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর প্রবাসীরা বুকভরা আশা করেছিল বহির্বিশ্বে কর্মসংস্থানের দীর্ঘ ১৫ বছরের জঞ্জাল নিরসন হবে তা হয়নি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রেতত্মারা এখনো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে বহাল তবিয়তে। প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সপ্তাহে মাত্র দুই দিন এ মন্ত্রণালয়ে অফিস করেন। এ সুবাদে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী গা-ছাড়া ভাব নিয়ে কাজ করছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। প্রতিবছর দশ লক্ষাধিক কর্মী বিদেশে চাকরি নিয়ে যান। কিন্তু বিএমইটিতে মাত্র একজন অনুবাদক দিয়ে বহিঃগমন ছাড়পত্র ইস্যুর কার্যক্রম চলছে। প্রবাসী মন্ত্রণালয় চরম উদাসিনতা ও গাফলতির দরুন বিএমইটি যুগ যুগ ধরে একাধিক অনুবাদক নিয়োগের জন্য প্রবাসী মন্ত্রণালয়কে লিখিত আবেদন জানিয়েও কোনো সাড়া পায়নি। বায়রার পক্ষ থেকেও একাধিক অনুবাদক নিয়োগ দেয়ার অনুরোধ জানিয়েও কোনো সাড়া পায়নি।
আমলাতান্ত্রিক জটিলতার দরুন বিদেশগমনেচ্ছু কর্মীদের বহিঃগমন ছাড়পত্র হাতে পেতে এখনো এক মাস থেকে দেড় মাস সময় লেগে যায়। এতে বিদেশি নিয়োগকর্তারা বিরক্ত হয়ে অন্য দেশ থেকে কর্মী নিতে বেশি আগ্রহী হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশি কর্মীদের বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় জনশক্তি রফতানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভারত ও নেপাল থেকে একজন কর্মী বিদেশে চাকরি নিয়ে যেতে মাত্র ৭-৮ দিন সময় লাগে। আর বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যেতে কর্মীদের গলদঘর্ম। একাধিক জনশক্তি রফতানিকারক এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
বিদেশ গমনেচ্ছুদের বহিঃগমন ছাড়পত্র ইস্যু দ্রুত ও সহজীকরণের লক্ষ্যে প্রবাসী উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল গত দেড় মাস আগে অভিবাসী কর্মীদের নিয়োগানুমতির ফাইল প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের হাতে না রেখে বিএমইটির কাছে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু পতিত হাসিনার আস্থাভাজন প্রবাসী সচিব মো. রুহুল আমিন প্রবাসী উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এ নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে কর্মীদের নিয়োগানুমতির ফাইল এখনো প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের অধিনেই ধরে রেখেছেন। বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের নিয়োগানুমতির ফাইল টেবিলে টেবিলে ঘুরতে অহেতুক বিলম্ব হওয়ায় বকশিস ছাড়া ফাইল নড়ে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফলে কর্মীদের বিদেশ যাত্রায় পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির দরুন সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। সারাদেশে টিটিসিগুলোতে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের প্রশিক্ষণের মান বাড়েনি। অথচ প্রবাসী উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল প্রায় দেড় মাস আগে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলেন এক মাসের মধ্যেই টিটিসিগুলোর প্রশিক্ষণের মান বাড়ানো হবে। বিএমইটির অধিনে এসব টিটিসিগুলোতে শিক্ষকসহ বহু জনবলের পদ শূন্য রয়েছে। অনেক টিটিসির আউট সোর্সিং কর্মচারীরা বিগত ৭-৮ মাস যাবৎ বেতন ভাতা পাচ্ছে না। এসব কর্মচারীরা অনাহার-অনিদ্রায় দিন কাটিয়ে চাকরি করছেন। এ ব্যাপারে বিএমইটির টিটিসির পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিনের সাথে গতকাল একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ধরেননি। প্রবাসী সচিব মো. রুহুল আমিন তার দফতরে ইনকিলাবকে বলেন, নতুন শ্রমবাজার হিসেবে আমরা বোয়েসেলের মাধ্যমে ব্রুনাইতে কর্মী প্রেরণ শুরু করেছি। রাশিয়াতেও কিছু কিছু কর্মী যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) আরবিট্রেশন সেলে ২০২৩ সালে করা দেড় হাজারের বেশি অভিযোগ ঝুলে আছে। এতে বিদেশ গিয়ে প্রতারিত হওয়া বেশিরভাগ কর্মীই কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। প্রতারণার শিকার অভিবাসী কর্মীরা ভিটেমাটি বিক্রি করে বিদেশে গিয়ে এবং যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক প্রতারণার শিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে অফিস ভাঙচুরের মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করছে। বিএমইটিতে অভিযোগ দেয়ার পরেও বছরের পর বছর কোনো বিচার পাচ্ছে না বিদেশগমনেচ্ছু ভুক্তভোগি কর্মীরা। অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সাথে বিএমইটির অসাধু কর্মকর্তাদের দহরমহর সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। শুনানী হলেই বিএমইটির কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের শান্তনার বাণী শোনান যে তোমরা ধৈর্য্য ধরো। এতো তাড়াহুড়া করো না। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) আরবিট্রেশন সেলে ২০২৩ সালে করা দেড় হাজারের বেশি অভিযোগ ঝুলে আছে। এতে বিদেশ গিয়ে প্রতারিত হওয়া বেশিরভাগ কর্মীই কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। বছরের পর বছর হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রবাসী কর্মীরা। বিদেশ গমনেচ্ছু এসব কর্মী চড়া সুদে ঋণ এবং গবাদি পশু বিক্রি করে দালাল ও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে লাখ লাখ টাকা দিয়েও বিদেশে যেতে পারছে না। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে এসব প্রবাসী কর্মীর আত্মীয়-স্বজনরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পরিস্থিতি এমন দিকে গড়াচ্ছে যে, এসব দেখার কেউ নেই। গত ৬ নভেম্বর মেসার্স এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ (আরএল-৫২৩) রিক্রুটিং এজেন্সি রোমানিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে ৪১ জন কর্মীর কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি আত্মসাতের ঘটনায় বিএমইটি’তে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এজেন্সির মালিক বিদেশে থাকার অজুহাত দেখিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা-কর্মীদের ধৈর্য্য ধরতে বলেছেন। কর্মকর্তাদের ইচ্ছার অভাবেই মূলত বিচার পাচ্ছেন না প্রতারণার শিকার অভিবাসী কর্মীরা। গত দু’বছর যাবত রোমানিয়ায় চাকরি দেয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদেরকে বিদেশে পাঠাতে পারেনি। প্রতারণার শিকার এসব কর্মী তাদের টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত আনতে গেলে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোমানিয়া গমনেচ্ছু নাজমুল ইসলাম ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে দিন দফায় এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ বিডিকে (আর এল-৫২৩) সর্বমোট চার লাখ টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়ে বিএমইটির দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। টাকা ও পাসপোর্ট চাইতে গিয়েও কিছুই পাচ্ছে না। সে গ্রামের বাড়িও যেতে পারছে না।
এদিকে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সই দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখছে। প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতি হিসাবের ঘাটতি ছিল ১২৭ মিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৯৩ শতাংশ কম। চলতি হিসাবের ব্যালেন্স কোনো দেশের নেট অর্থ প্রবাহের অবস্থাকে তুলে ধরে। অর্থনীতিবিদরা এই ভারসাম্যকে একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার মূল সূচক হিসেবে ব্যবহার করেন। ২০২৫ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রবাসী আয় এসেছে আট দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার এবং প্রবাসী আয়ের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩০ শতাংশ। এই তিন মাসে দেশের বাণিজ্য ঘাটতিও কমেছে।
বিএমইটির সূত্র জানায়, ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৮৪ জন নারী-পুরুষ কর্মী চাকরি লাভ করেছে। ২০২৩ সালে ১৩ লাখ ৮ হাজার ৪০৩ জন কর্মী বিদেশে চাকরি লাভ করেছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে গত ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৮ লাখ ১৭ হাজার ৬৯৩ জন নারী-পুরুষ চাকরি লাভ করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কর্মী গেছে সউদী আরবে। অপরদিকে, ১শ’ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় চাকরি লাভ করেছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ কর্মী। এসব কর্মীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সিন্ডিকেট চক্র। পতিত হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মালয়েশিয়া প্রবাসী ব্যবসায়ী আলতাফ খান সাবেক প্রবাসী মন্ত্রী ইমরান আহমদ, সাবেক প্রবাসী সচিব ড. আহমদ মনিরুছ সালেহীন, একাধিক সাবেক এমপিসহ ১শ’ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কর্মীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়, অর্থ পাচার এবং মানবপাচারের মামলা দায়ের করেছে রাাজধানীর পল্টন থানায়। সাবেক প্রবাসী মন্ত্রী ইমরান আহমদ বর্তমান কারাগারে রয়েছেন। মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে প্রত্যর্পণের জন্য দেশটির সরকারের প্রতি অনুরোধ করেছে বাংলাদেশের পুলিশ সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগ রয়েছে। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এ খবর জানিয়েছে। গত ২৪ অক্টোবর এ বিষয়ে মালয়েশিয়াকে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মালয়েশিয়া পুলিশের কাছে গেলে তাদের বাংলাদেশ পুলিশে হস্তান্তর করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আমিনুল ইসলাম এবং বায়রার সাবেক মহাসচিব মো. রুহুল আমিন স্বপন নামের দুই ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে চিঠিতে বলা হয়, তারা এমন একটি ব্যবস্থায় প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন, যেখানে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জালিয়াতি করে অর্থ আদায় করা হয়েছে। এছাড়া ভুক্তভোগীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। মালয়েশিয়ায় সর্বশেষ ২০২২ সালের আগস্টে শ্রমিক পাঠাতে সরকার নির্ধারিত জনপ্রতি ব্যয় ছিল ৭৯ হাজার টাকা। কিন্তু মালয়েশিয়া যেতে একজন বাংলাদেশিকর্মী গড়ে খরচ করেছেন ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। দেড় বছরে সাড়ে ৪ লাখের মতো লোক পাঠিয়ে ২৪ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে এ খাতে। সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে বেশি নেয়া হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জনপ্রতি দেড় লাখ টাকা করে ‘চক্র ফি’ নেয়া হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশে সফরকালে দেশটিতে যেতে না পারা ১৭ লক্ষাধিক বাংলাদেশিকে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দেশটিতে যেতে না পারা কর্মীরা রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে এখনো পুরোপুরি টাকা ফেরত পায়নি। প্রবাসী উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল উক্ত দফতরে যোগদানের পর পরই দেশটিতে যেতে না পারা কর্মীদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য একাধিকবার বায়রার নেতৃবৃন্দদের সাথে বৈঠক করেছেন। মালয়েশিয়ায় প্ল্যান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে। দেশটির সরকার প্ল্যান্টেশন সেক্টরের জন্য নির্বাচিত বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়া প্রবেশের সর্বশেষ সময়সীমা ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ নির্ধারণ করেছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব গাজী মো. শাহেদ আনোয়ারের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় প্ল্যান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সভায় নিম্নরূপ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তে জানানো হয়, কর্মী পাঠানোর জন্য মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে চাহিদাপত্র সত্যায়নের শেষ তারিখ ৩১ ডিসেম্বর। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) থেকে বহিঃগমন ছাড়পত্র নেয়ার শেষ তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৫। এ সময় নির্দেশনা হিসেবে বলা হয়, রিক্রুটিং এজেন্টরা কর্মীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার অতিরিক্ত অর্থ নেবেন না। সব লেনদেন উপযুক্ত লিখিত দলিল রসিদ বা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সম্পন্ন করবেন এবং অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্ট ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কর্মীদের লেনদেন না করার বিষয় নিশ্চিত করবেন। সরকার প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে মধ্যপ্রাচ্যগামী প্রবাসী কর্মীদের জন্য প্রবাসী লাউঞ্জ চালু করে বিশেষ সেবা প্রদানের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মাইগ্রেন্টস ফাউন্ডেশন (বিএমএফ)-এর চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জয় গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, এক লাখ দশ হাজার ইতালি ভিসা ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রত্যাশীদের সমস্যা নিরসনে গত দুই মাসে ভুক্তভোগীদের যৌক্তিক দাবিকে সমর্থন জানিয়ে দুইবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ মাইগ্রেশন ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (বিএমডিএফ) ও বাংলাদেশের প্রবাসী উন্নয়ন সমিতি। ইতালি অভিবাসন জটিলতা সংক্রান্ত অসংখ্য সংবাদ প্রকাশের পর ও ইতালি অভিবাসন প্রত্যাশী ভূক্তভোগীদের সমস্যা নিরসনে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয়কে। যা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বৈধপথে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর জন্য সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার দেশ হচ্ছে ইতালি। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উচিত দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা। যারা সার্বক্ষণিক দূতাবাসের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে সমস্যা নিরসনে কাজ করবে। এমআরপি পাসপোর্ট নবায়নের আবেদনের ছয় মাসেও পাসপোর্ট পাচ্ছেন না মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীরা। যার কারণে অবৈধ হয়ে পড়েছেন, অনেকে রয়েছেন অবৈধ হওয়ার ঝুঁকিতে। এমন পরিস্থিতিতে এমআরপি আবেদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে নতুন করে ভোগান্তিতে পড়েছেন মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসী কর্মীরা। তাই দ্রুত পাসপোর্ট জটিলতা নিরসনে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে। প্রয়োজনে ই-পাসপোর্ট ইস্যু কার্যক্রম আরো দ্রুত ও গতিশীল করে কর্মীদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত সঙ্কট দ্রুত নিরসন করতে হবে।
বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মেরিটাইম সেক্টরে বিদেশীদের বিনিয়োগের আহবান উপদেষ্টার
সাঁতারে আক্ষেপের নাম ‘ইলেক্ট্রোনিক্স স্কোরবোর্ড’!
সাবিনাদের জন্য শনিবার পুরস্কার ঘোষণা করবে বাফুফে
ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-২ আহত-৩
সর্বনি¤œ হজ প্যাকেজ ৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা ঘোষণা
যশোরে মাদক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
৭ নভেম্বরের চেতনাকে যারা ধারণ করে না, তারা গণতন্ত্রের শত্রু - ডা.মাজহার
প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার ২ সেকেন্ডের মধ্যেই কার চাকরি খাবেন ট্রাম্প?
ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস; চব্বিশের প্রেরণা
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাগপার আলোচনা সভা
মানুষের মতোই কথা বলবে, আচরণ করবে এআই!
আখাউড়া প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন
পরিবহনব্যবস্থা
রমজানের নিত্যপণ্য আমদানিতে ব্যাংকে লাগবে না নগদ অর্থ: গভর্নর
ময়নামতি ও বসুরহাটে ইউসিবির দুই নতুন শাখা উদ্বোধন
অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস : সাফল্য ও ব্যর্থতা
৫ আগস্টের আয়নায় দেখা ৭ নভেম্বর
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন
জাইকার সহযোগিতায় রাজউকের তৃতীয় ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট সেমিনার অনুষ্ঠিত
হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর তৈলতত্ত্ব ও আমাদের সাহিত্য সমাজ