রোহিতের সামনে অসহায় আফগানরা
১২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৪ এএম
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে বড় ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের সামনেও দাঁড়াতে পারেনি আফগানরা। ম্য্যাচে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার সামনে অসহায় ছিলেন আফগান বোলাররা। গতকাল দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ৯০ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে আফগানিস্তানকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নেয় ভারত। আগে ব্যাট করে লড়াকু পুঁজিই পেয়েছিল আফগানিস্তান। অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শহিদী ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের দারুণ হাফসেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৭২ রান তুলেছিল তারা। জবাবে অধিনায়ক রোহিত শর্মার সেঞ্চুরি ও বিরাট কোহলির হার না মানা হাফসেঞ্চুরিতে ৩৫ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান তুলে বড় জয় নিশ্চিত করে ভারত।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। ব্যাট করতে নেমে দুই আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ভালোই শুরু করেছিলেন। তবে প্রথম পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে যায় তাদের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে জসপ্রীত বুমরাহকে খোঁচা দিতে গিয়ে আউট হন ইব্রাহিম। তার আউটসাইড এডজ হওয়া বল ক্যাচ ধরেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল। ফেরার আগে ৪ চারের মারে এই ওপেনার ২৮ বলে করেন ২২ রান। এরপর ক্রিজে আসা রহমত শাহকে নিয়ে বড় জুটি গড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন গুরবাজ। তবে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার তার ইনিংসটি লম্বা করতে পারেননি। ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে হার্দিক পান্ডিয়াকে পুল করেন গুরবাজ। ডিপ ফাইন লেগে দাড়িয়ে থাকা শার্দুল ঠাকুর প্রথমে ছয় বাঁচান, বাউন্ডারি লাইন ছাড়িয়ে যাওয়ার আগে বলটি তিনি উপরের দিকে ছুঁড়ে দেন। এরপর সেটি আবার ক্যাচ বানিয়ে নেন শার্দুল। ৩ চার ও ১ ছক্কায় গুরবাজ করেন ২৮ বলে ২১ রান। দ্বিতীয় উইকেটে গুরবাজ-রহমতের জুটি ছিল ৩৭ বলে ৩১ রানের। এরপর দলীয় ৬৩ রানেই বিদায় নেন রহমতও। শার্দুল ঠাকুরের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে তিনি ফেরেন মাত্র ১৬ রানে। ভারতীয় বোলিং বিভাগের চিন্তা বাড়িয়ে ১২১ রানের জুটি গড়েন শহিদী-ওমরজাই। ওমরজাইয়ের শুরুটা ধীরস্থির হলেও পরে তিনি বাউন্ডারির দিকে মনোযোগ দেন। চারের চেয়ে ছয় হাঁকানোতেই যেন তিনি বেশি পারদর্শী। ২টি চার ও ৪ ছক্কায় ৬৯ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন ওমরজাই। রানের গতি আরও বাড়াতে গিয়ে ওমরজাই পান্ডিয়ার বলে বড় শট খেলতে যান, কিন্তু আউটসাইড এডজ হয়ে সেটি তার স্টাম্প ভেঙে দেয়। ওমরজাই আউট হওয়ার পর রানের গতি কমতে থাকে আফগানিস্তানের। একপ্রান্তে সেট ব্যাটসম্যান শহিদী সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছিলেন, অন্যপ্রান্তে মোহাম্মদ নবীর ব্যাটে একের পর এক বল ডট হতে থাকায় চাপ বাড়তে থাকে। ফলে ছন্দে থাকা শহিদীও যেন খেই হারিয়ে ফেলেন। কুলদীপ যাদবের বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে আটকান আফগান অধিনায়ক। সেঞ্চুরি পাওয়া হলো না তার। ৮টি চার ও এক ছক্কায় শহিদী ৮৮ বলে করেন ৮০ রান। শেষদিকে বুমরাহ একাই আফগানিস্তানের তিন ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন। টানা রানখরায় ভোগা নাজিবুল্লাহ জাদরান এদিন ফেরেন মাত্র ২ রানে। এছাড়া নবী ১৯, রশিদ খান ১৬ এবং মুজিব-উর-রহমান করেন ১০ রান।
ভারতের হয়ে ৩৯ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন বুমরাহ। এছাড়া পান্ডিয়া ৪৩ রানে পান ২ উইকেট। শার্দুল ও কুলদীপ যথাক্রমে ৩১ এবং ৪০ রানে পান ১টি করে উইকেট।
২৭৩ রানের মোটামুটি চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য। কিন্তু অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে যেখানে রানের বন্যা বয়ে যায়, সেখানে ভারতের সামনে এই রান যেন একেবারেই মামুলি এক লক্ষ্যে পরিণত হয়েছিল। রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিরা সেটাই প্রমাণ করলেন।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শুরু থেকেই ছিলেন খুনে মেজাজে। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৫০ ওভারের ম্যাচকে তিনি যেন টি-টোয়েন্টিতে পরিণত করলেন! ৩০ বলে ফিফটি হাঁকানোর পর রোহিত সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৬৩ বলে। ফলে মাত্র ১০ ওভারেই বিনা উইকেটে ভারত তোলে ৯৪ রান। একদিকে রোহিত মারমুখী মেজাজে, অন্যপ্রান্তে ইশান কিষাণ খেলছেন ধীরস্থির ইনিংস। তাদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ১৫৬ রানে। ইশান কিষাণ অল্পের জন্য অর্ধশতক হাতছাড়া করেন। রশিদ খানের করা গুগলি বলটিকে স্কুপ করতে গিয়ে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি ইশান। আউট হওয়ার আগে ৪৭ বলে ৫টি চার ও দুই ছক্কায় তিনি করেন ৪৭ রান। ১৮.৫ ওভারেই ১৫৬ রান করা ভারতের জন্য ম্যাচ জেতাটা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। কেননা সেঞ্চুরি হাঁকানো রোহিতের ব্যাটের ধার যে তখনও কমেনি। তিনিও আউট হয়েছেন রশিদের বলে। তবে রশিদ এর আগে কেন বোলিংয়ে আসলেন না তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ আক্রমণে থাকা মুজিব-উর-রহমান, ফজলহক ফারুকি ও নাভিন-উল হকদের বল একের পর এক সীমানাছাড়া করেছেন রোহিত। ২৬তম ওভারে রশিদ খানের বলে সুইপ করতে গিয়ে স্টাম্প উপড়ে যায় রোহিতের। এর আগেই ৮৪ বল খেলে ১৬টি চার ও পাঁচ ছক্কায় ভারত অধিনায়ক করেন ১৩১ রান। এই সেঞ্চুরির সুবাদে তিনি এখন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ৭টি শতকের মালিক। যার মাধ্যমে রোহিত ছাড়িয়ে গেলেন স্বদেশি কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারকে। রোহিত ফিরলেও ভারতের জন্য চিন্তার কোনো কারণই ছিল না। ক্রিজে নামা কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়াররা বাকি পথ সামলেছেন ঠা-া মাথায়। ৫৬ বল খেলে ৬ বাউন্ডারির মারে কোহলি ৫৫ এবং একটি করে চার ও ছয়ের মারে আইয়ার ২৩ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন। আফগানিস্তানের রশিদ খান ৫৭ রানে পান ২টি উইকেট। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন রোহিত শর্মা।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মেসির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন সেই সাংবাদিক
দেশের মানুষ হাসিনার ফাঁসি চায় :ভোলায় সারজিস আলম
জীবনযাত্রা ব্যয় আরো বাড়তে পারে
সাবেক ওসি শাহ আলমকে ধরতে সারা দেশে রেড অ্যালার্ট
মনে হচ্ছে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ভালোভাবেই হচ্ছে
চাল ও মুরগির বাজার অস্থিতিশীল
সামরিক খাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় তুরস্ক
মানুষ জবাই করা আর হাত-পা ভেঙে দেয়ার নাম তাবলিগ নয় :জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান
মুজিব কোট এখন ‘বাচ্চাদের পটি’
সীমান্তে প্রতিরোধ ব্যূহ
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আরও ৬ জনের লাশ ঢামেক মর্গে
মালয়েশিয়ায় এনআইডি ও স্মার্ট কার্ড সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার
ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সাধারণ সম্পাদক বাদশাহ্
মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ : আহত ২৫
ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সহযোগী মনে করে তালেবান
মাইনাস টু ফর্মুলার আশা কখনো পূরণ হবে না : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
গাজীপুর কারাগারে শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে শীর্ষ পর্যায়ের দূত পাঠাবে চীন