এই ম্যাচও জিততে পারেনি ইংল্যান্ড!
৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:১২ এএম | আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:১২ এএম
লক্ষ্য মাত্র ২৩০ রান। এই ম্যাচও জিততে পারেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের সামনে মুখ থুবরে পড়ে ইংলিশরা। ফলে ১০০ রানের বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতে টানা ষষ্ঠ জয়ের দেখা পায় টুর্নামেন্টে উড়তে থাকা ভারত। গতকাল লক্ষেèৗর অটল বিহারি বাজপেয়ী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে অধিনায়ক রোহিত শর্মার হাফসেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৯ রান তোলে ভারত। জবাবে মোহাম্মদ শামি, জসপ্রিত বুমরাহ ও কুলদীপ যাদবের আগুন ঝরা বোলিংয়ে ৩৪.৫ ওভারে মাত্র ১২৯ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। এই জয়ে ছয় ম্যাচের সবগুলো জিতে ১২ পয়েন্ট পেয়ে তালিকার শীর্ষে উঠলেন রোহিত শর্মারা।
লক্ষেèৗর এই স্টেডিয়াম খুব একটা ব্যাটিং বান্ধব নয়। স্লো উইকেট বিধায় এখনে রান ওঠে ধীরে। যে কারণে ইংলিশদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি বিরাট কোহলি, শুভমান গিলরা।
টস জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুকেই বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। ৪০ রান তুলতেই তারা তিন সেরা ব্যাটারকে হারায়। যদিও দলের ব্যাটিং উদ্বোধন করতে এসে ৪ ওভারে ২৬ রানের এনে দেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। কিন্তু এরপরই বিচ্ছিন্ন হয় এই জুটি। ১৩ বল খেলে এক বাউন্ডারিতে ৯ রান করা গিল বোল্ড আউট হন ইংল্যান্ড পেসার ক্রিস ওকসের বলে। গিলের বিদায়ে উইকেটে এসে রানের খাতা খোলার আগেই পেসার ডেভিড উইলির শিকার হয়ে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন ফর্মে থাকা বিরাট কোহলি। ২৮৭ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি ১৬তম ডাক কোহলির। ৬.৫ ওভারে দলীয় মাত্র ২৭ রানে ২ উইকেট হারায় ভারত। গিল ও কোহলির মত দু’অংকে পা দেয়ার আগে আউট হন শ্রেয়াস আইয়ার। ১১.৫ ওভারে দলীয় ৪০ রানে ওকসের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ১৬ বলে ৪ রান করেন শ্রেয়াস। এমন অবস্থায় ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। এই পরিস্থিতিতে জুটি গড়ার চেষ্টায় সফল হন রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল। দেখেশুনে খেলে রানের চাকা সচল রাখেন তারা। ২৪তম ওভারে ক্যারিয়ারের ৫৪তম হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রোহিত। বিশ^কাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২তম হাফসেঞ্চুরি করতে ৬৬ বল খেলেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক। বিশ^কাপে সর্বোচ্চ ২১ হাফসেঞ্চুরির মালিক ভারতের শচীন টেন্ডুলকার। ইনিংসের ২৫তম ওভারে ১শ রান পূর্ণ করে ভারত। ৩১তম ওভারে রোহিত-রাহুলের জুটি ভাঙ্গেন উইলি। ৫৮ বল খেলে ৩ চারের মারে ৩৯ রান করে আউট হন রাহুল। রোহিতের সঙ্গে রাহুল ১১১ বলে ৯১ রান যোগ করেন দলীয় সংগ্রহে। দলীয় ১৩১ রানে রাহুল ফেরার পর ছয় নম্বরে নামা সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন রোহিত। সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জেগেছিল তার। তবে ৩৭তম ওভারে ইংলিশ স্পিনার আদিল রশিদের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে দলীয় ১৬৪ রানে লিভিংস্টোনকে ক্যাচ দেন রোহিত। ফেরার আগে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ১০১ বলে দলের সর্বোচ্চ ৮৭ রান করেন তিনি। এই ইনিংস খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৮ হাজার পূর্ণ করেন ভারত অধিনায়ক। রোহিতের বিদায়ের পরই বড় সংগ্রহের আশা শেষ হয়ে যায় ভারতের। তারপরও সূর্যকুমার যাদবকে শেষের দিকে জসপ্রিত বুমরাহ ও কুলদীপ যাদব দারুণ সঙ্গ দিলে মোটামুটি সংগ্রহ পায় ভারতীয়রা। সূর্যকুমার ৪৭ বল খেলে ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কার মারে দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন। রবীন্দ্র জাদেজা ১৩ বলে ৮ ও কুলদীপ যাদব ১৩ বলে ৯ রান করে আউট হলেও ২৫ বলে এক চারের মারে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন বুমরাহ। ইংল্যান্ডের উইলি ৪৫ রানে ৩টি উইকেট শিকার করেন। ওকস ও রশিদ যথাক্রমে ৩৩ এবং ৩৫ রানে ২টি করে উইকেট পান।
জয়ের জন্য ২৩০ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই ছিল ইংল্যান্ডের। প্রথম চার ওভারে তাদের রান এসেছিল ৭ এর উপর রানরেটে। ইংলিশদের ব্যাটিং সুখ টিকেছে ওই পর্যন্তই। পঞ্চম ওভারের শেষ দুই বলে দাউদ মালান ও জো রুটকে ফেরান জসপ্রিত বুমরাহ। ইংল্যান্ডের ধ্বংসযজ্ঞের সূচনা ওখান থেকেই। সাবধানী বেন স্টোকস এ ম্যাচে রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ১০ বলে করেন শূন্য। ৮ ওভারে দলীয় ৩৩ রানে আউট হন স্টোকস। তাকে বোল্ড করে মোহাম্মদ শামি। জনি বেয়ারস্টো খেলতে চেয়েছিলেন ধীরে। তিনিও আউট হন ব্যক্তিগত ১৪ রানে (২৩ বল)। তার ইনিংসে ছিল দু’টি বাউন্ডারির মার। বেয়ারস্টোকেও শামি বোল্ড করলে ৯.১ ওভারে মাত্র ৩৯ রানে ইংল্যান্ড হারায় চতুর্থ উইকেট। এরপরও ধুঁকতে থাকা ইংলিশদের রক্ষা করতে ক্রিজে এসে সবাইকে হতাশ করেন অধিনায়ক জস বাটলার। ২৩ বলে ১ চারের মারে ১০ রান করে কুলদীপ যাদবের শিকার হন তিনি। ১৫.১ ওভারে মাত্র ৫২ রানে সেরা পাঁচ ব্যাটার আউট হলে দারুণ ব্যাটিং বিপর্যয়ে দিশেহারা হয় ইংল্যান্ড। সেখানে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। মঈন আলী ও লিয়াম লিভিংস্টোন প্রতিরোধ করতে চাইলেও কাজে আসেনি। দু’জনে বিস্তর বল খেলে সময় কাটালেও রান আসেনি তেমন। এ দু’জনের জুটি ২৯ রানের। দলীয় ৮১ রানে আউট হন মঈন। করেন ৩১ বলে ১৫ রান। তার উইকেটও তুলে নেন সেই শামি। ইংলিশদের পরাজয় তখন কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র। ২৮.১ ওভারে দলীয় ৯৮ রানে ক্রিস ওকস শিকার হন রবীন্দ্র জাদেজার। ফেরার আগে ২০ বলে করেন ১০ রান। লিভিংস্টোন ছিলেন দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। ৪৬ বলে করেন ২৭ রান। ২৯.২ ওভারে লিভিংস্টোন শিকার হন কুলদীপ যাদবের। এরপরই যেন শেষ হয়ে যায় ইংলিশদের সব আশা।
এরপর দুই চারে আদিল রশিদের ১৩ আর ডেভিড উইলির অপরাজিত ১৬ ইংল্যান্ডের ১০০ রানের গন্ডি ছাড়াতেই কেবল সাহায্য করে। ইংলিশরা ১২৯-এ থামলে তাদের হারের ব্যবধান ঠিক ঠিক ১০০ রান।
ভারতের মোহাম্মদ শামি মাত্র ২২ রানে পান ৪টি উইকেট। জসপ্রিত বুমরাহ ৩২ রানে ৩টি এবং কুলদীপ যাদব ২৪ রানে ২ উইকেট শিকার করেন। ম্যাচসেরা হন রোহিত শর্মা।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহত আরও ৩২,মানবিক সংকট চরমে
চাটমোহর পৌর বিএনপির কাউন্সিলে আরশেদ-তাইজুল-সিন্টু নির্বাচিত
‘একদল খাইছে আরেকদল খাওয়ার জন্য রেডি হয়ে আছে’ কথাটি ছিল ভেরি জেনারেল: আজহারী
নোয়াখালীর মাইজদী হর্কাস মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড
ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশে দিল জাবি ছাত্রদল
গরু চুরি করে বিএনপি নেতা ও তার স্ত্রীর ভূরিভোজ, অতঃপর...
মানসিক ভারসাম্যহীন বোনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ভাই আটক
থানা থেকে ছিনিয়ে নেওয়া সেই যুবদল নেতা গ্রেফতার
এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত
অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে
দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১
নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে
অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন
ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ
মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি
রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী