পাক-ভারত ম্যাচের ঐতিহাসিক ছয় দ্বৈরথ
১৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩৯ পিএম | আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩৯ পিএম
ক্রিকেটের সবচেয়ে কাঙ্খিত ম্যাচে শনিবার আহমেদাবাদে মুখোমুখি হচ্ছে দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তান। দুই দলের মধ্যে চলা দীর্ঘ দিনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে নতুন করে উপস্থাপন করবে পার্শবর্তী দুই দেশের ক্রিকেটাররা।
এর আগে দেখে নেওয়া যাক দুই দলের মধ্যকার স্মরণীয় ছয় দ্বৈরথ:
>>মিঁয়াদাদের ছক্কা (১৯৯৬ সালের ১৮ এপ্রিল-শারজাহ):
মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি শারজাহতে জাভেদ মিয়াঁদাদের শেষ বলে ছক্কাটি তর্কাতীতভাবে দুই দলের মধ্যে সবচেয়ে নাটকীয় ওয়ানডে ফলাফল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ভারতের বিপক্ষে নাটকীয় ওই ম্যাচে পাকিস্তান এক উইকেটে জয় পায়।
জয়ের জন্য ৫০ ওভারে ২৪৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৬১ রানে তিন উইকেট হারানোর পর পাকিস্তানের হয়ে মিয়াঁদাদ মাঠে নেমে ১১৪ বলে অপরাজিত ১১৬ রান করেন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপুর্ন ওই ম্যাচে জয় পেতে শেষ বলে চার রানের প্রয়োজন ছিল পাকিস্তানের। ভারতীয় ফাস্ট বোলার চেতন শর্মার ফুলটস বল গ্যালারিতে উড়িয়ে দেন মিয়াঁদাদ। সাথে সাথে বন্য উদযাপনে নেমে পড়ে পাকিস্তানের ভক্তরা। ওই বীরত্বের জন্য পরে একটি সোনার তলোয়ার উপহার দেওয়া হয় মিয়াঁদাদকে।
>>ইমরান খানের কষ্ট (১৯৮৫ সালের ২২ মার্চ-শারজাহ):
ভারতের বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতি ম্যাচে ইমরান খানের সেরা বোলিং ফিগার ছিল ৬-১৪, কিন্তু পাকিস্তানি ফাস্ট বোলারের জন্য সবই বৃথায় পর্যবসিত হয়। শারজায় অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপকে ১২৫ রানে আটকে দেয়ার পরও ম্যাচটিতে জিততে পারেনি ইমরানের দল। জবাবে মাত্র ৮৭ রানেই আটকে যায় পাকিস্তান। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন রমিজ রাজা। তার সঙ্গে মাত্র চারজন ব্যাটার ওই ম্যাচে দুই অংকের কোটা স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
লো স্কোরিং ওই ম্যাচে অবশ্য সেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমানে কারাগারে বন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। যদিও দূর্নীতির অভিযোগটি অস্বীকার করে আসছেন বিশ্বকাপ জয়ী সাবেক ওই অল রাউন্ডার।
>>জাদেজার আগ্রাসন (১৯৯৬ সালের ৯ মার্চ-ব্যাঙ্গালোর):
বিশ্বকাপের হাই ভোল্টেজ কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটির শেষ দিকে অজয় জাদেজার ২৫ বলে ৪৫ রানের আগ্রাসী ব্যাটিং পাকিস্তানকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিয়েছিল। পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনিসের বোলিংকে তছনছ করে দেন জাদেজা। শেষ কয়েক ওভারে তারকা এ পেস বোলারকে চারটি চার ও দুটি ছক্কা মেরে ভারতকে আট উইকেটে ২৮৭ রানে পৌঁছে দেন তিনি।
জবাবে ওপেনার আমির সোহেল প্রথমে ভেঙ্কটেশ প্রসাদকে বাউন্ডারি হাকিয়ে ভারত শিবিরে কিছুটা আতংক ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত তার শিকারে পরিণত হন পাকিস্তানের ওই বাঁহাতি। শেষ পর্যন্ত ৩৯ রানে ভারতের কাছে ম্যাচটি হেরে যায় পাকিস্তান।
>>গাঙ্গুলীর সেঞ্চুরি (১৯৯৮ সালের ১৮ জানুয়ারি-ঢাকা):
বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা কাপে বেস্ট অব থ্রির ফাইনালে পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ারের ১৪০ রানকে ছাপিয়ে ম্যাচ জয়ী সেঞ্চুরি করেন ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলী। ভারতীয় ব্যাটারের ম্যাচ বাঁচানো ১২৪ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১১টি চার এবং একটি ছয়ে। ফলে এক বল হাতে রেখে ৩১৫ রানের জয়ের টার্গেট পুরণ করে ভারত।
বাঁ-হাতি গাঙ্গুলিকে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত করা হলেও আকর্ষনের কেন্দ্রেবিন্দুতে চলে আসেন অখ্যাত হৃষিকেশ কানিতকার। জয়ের জন্য শেষ দুই বলে ভারতের প্রয়োজন ছিল তিন রান এবং শেষ ডেলিভারিতে একটি বাউন্ডারি হাকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তিনি। ওই সময় বিশাল টার্গেট অতিক্রম করে ম্যাচ জয়ের মাধ্যমে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল ভারত।
>>টেন্ডুলকারের শাসন (২০০৩ সালের ১ মার্চ-সেঞ্চুরিয়ন):
ভারতের হয়ে অনেক ম্যাচ জিতেছেন শচিন টেন্ডুলকার। কিন্তু ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতারের বোলিংয়ের বিপরীতে লিটল মাস্টারের ৯৮ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংসটি ছিল স্পেশাল।
৭৫ বলের মোকাবেলায় শচিনের ওই ব্যাটিং দৃঢ়তায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৭৪ রানের টার্গেট অতিক্রম করে ভারত। যেখানে পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপে ছিলেন ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিস ও শোয়েব আখতারের মতো কিংবদন্তী বোলাররা।
ম্যাচে শোয়েব আকতারের একটি ডেলিভারি শচিন যেভাবে আপার কাট করে থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে ছক্কা হাকিয়েছিলেন, তা এখনো তার ক্যারিয়ারের আইকনিক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। শেষপর্যন্ত অবশ্য শচিনের উইকেটটি নিয়েছিলেন শোয়েব আখতারই। কিন্তু ভারতের কাছে ছয় উইকেটের হার এড়াতে পারেনি তার দল পাকিস্তান।
>>ফখর জামান স্পেশাল (২০১৭ সালের ১৮ জুন-লন্ডন):
আন্ডরডগ হিসেবে টুর্নামেন্ট শুরু করে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠেছিল পাকিস্তান। কিন্তু ফখর জামানের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে ভর করে ভারতের বিপক্ষে ১৮০ রানের তাক লাগানো জয় পায় পাকিস্তান।
ফখর জামানের ১০৬ বলে ১১৪ এবং আজহার আলির সঙ্গে ১২৮ রানের ওপেনিং পার্টনারশীপে ভর করে ওভালে অনুষ্ঠিত ম্যাচে চার উইকেটে ৩৩৮ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। ওই পুঁজিতে শেষ পর্যন্ত বিরাট কোহলির ভারতকে বিধ্বস্ত করে তারা।
ম্যাচে ভারতীয় বোলিংকে তুলোধুনা করেছেন ফখর। ফাস্ট বোলার ভুবনেশ্বর কুমার ও জসপ্রিত বুমরাহদের বোলিংয়ের বিপরীতে ১২ বাউন্ডারী ও তিনটি ওভার বাউন্ডারী হাঁকান পাকিস্তানের ওই বাঁহাতি ব্যাটার।
বড় সংগ্রহ দাঁড় করানোর পর ভারতীয় ব্যাটারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে পাকিস্তানের বোলাররা। হার্ডিক পান্ডিয়ার ৭৬ রান সত্বেও মাত্র ৩০.৩ ওভারে ১৫৮ রানেই ভারতকে অলআউট করে দেয় তারা। ১৯ রানে তিন উইকেট নেন পাকিস্তানি পেসার হাসান আলী।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মেসির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন সেই সাংবাদিক
দেশের মানুষ হাসিনার ফাঁসি চায় :ভোলায় সারজিস আলম
জীবনযাত্রা ব্যয় আরো বাড়তে পারে
সাবেক ওসি শাহ আলমকে ধরতে সারা দেশে রেড অ্যালার্ট
মনে হচ্ছে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ভালোভাবেই হচ্ছে
চাল ও মুরগির বাজার অস্থিতিশীল
সামরিক খাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় তুরস্ক
মানুষ জবাই করা আর হাত-পা ভেঙে দেয়ার নাম তাবলিগ নয় :জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান
মুজিব কোট এখন ‘বাচ্চাদের পটি’
সীমান্তে প্রতিরোধ ব্যূহ
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আরও ৬ জনের লাশ ঢামেক মর্গে
মালয়েশিয়ায় এনআইডি ও স্মার্ট কার্ড সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার
ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সাধারণ সম্পাদক বাদশাহ্
মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ : আহত ২৫
ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সহযোগী মনে করে তালেবান
মাইনাস টু ফর্মুলার আশা কখনো পূরণ হবে না : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
গাজীপুর কারাগারে শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে শীর্ষ পর্যায়ের দূত পাঠাবে চীন