নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরিতে ২০৫ রানের বড় লিড পেয়ে তৃতীয় দিন শেষ করলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে দুই ওপেনারের দ্রুত বিদায়ের পর বাংলাদেশ দলের হাল ধরেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। অভিজ্ঞ মুমিনুল ফিফটির আগে ফিরলেও দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন শান্ত। তিনি ১৯২ বলে নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। শতক হাঁকাতে শান্ত খেলেন ৯টি চারের মার। শান্তর হার না মানা শতক ও মুশফিকুর রহিমের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৬৮ ওভারে ৩ উইকেটে ২১২ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ। দিন শেষে শান্ত ১০৪ ও মুশফিক ৪৩ রানে অপরাজিত আছেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে চাপে পড়েছিল স্বাগতিকরা। লাঞ্চের আগে বেশ দেখেশুনে খেললেও লাঞ্চ বিরতির পর বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়। ৩০ বলে ১৭ রান করে অ্যাজাজ প্যাটেলের টার্ন করা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন জাকির। ৪৬ বলে ৮ রান করে জয় হন দুর্ভাগ্যজনক রানআউট। সাউদির বলে ড্রাইভ খেলেন শান্ত। বল বোলারের হাত স্পর্শ করে ভেঙে যায় ননস্ট্রাইকের স্ট্যাম্প। ২৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে শান্ত ও মুমিনুলের দারুণ জুটি। এই জুটি দলকে ভালো একটা অবস্থানে পৌঁছে দেয়। ২ উইকেটে ১১১ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দারুণভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন শান্ত ও মুমিনুল। অপ্রত্যাশিত রানআউটের মাধ্যমে শতরানের (৯০) কাছাকাছি এসে ভাঙে এই জুটি। ভুল বোঝাবুঝিতে ৬৮ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৪০ রান করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন মুমিনুল। প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড খুব বড় পার্থক্য গড়তে পারেনি বাংলাদেশের সঙ্গে। লিড নেয় খুব ছোট রানের। এর আগে দ্বিতীয় দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৮ উইকেটে ২৬৬ রান। কিউইরা পিছিয়ে ছিল ৪৪ রানে। স্বীকৃত ব্যাটার বলতে কেউই নেই। প্রথম ইনিংসে ছোট করে হলেও লিড পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এটা ধরে নিয়েছিলেন সমর্থকরা। তবে তাদের সেই আশায় গুঁড়েবালি। কাইল জেমিসন আর টিম সাউদির মতো লোয়ার অর্ডার দুই ব্যাটার নবম উইকেটে দলকে এনে দেন গুরুত্বপূর্ণ ৫২ রান। নবম উইকেটে টিম সাউদি ও কাইল জেমিসনের এই জুটিটাই ক্ষতি করে দিলো বাংলাদেশের। নাহলে টাইগাররা প্রথম ইনিংসে লিড পেতে পারতো। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৩১০ রানের জবাবে ১০১.৫ ওভার খেলে ৩১৭ রানে অলআউট হন নিউজিল্যান্ড। তাদের লিড ৭ রানের। কাল তৃতীয় দিনের সকালে প্রথম ঘণ্টা অনায়াসেই পার করে দেন সাউদি ও জেমিসন। কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। অবশেষে ট্রাম্পকার্ড মুমিনুল হকের হাত ধরেই সাফল্য পায় টাইগাররা। এক ওভারে জেমিসনকে (২৩) এলবিডব্লিউ আর সাউদিকে (৩৫) বোল্ড করেন বাঁহাতি এই পার্টটাইম স্পিনার। তাইজুল ইসলাম ১০৯ রানে ৪ উইকেট ও মুমিনুল হক ৪ রানে নেন ৩টি করে উইকেট।