তবুও সিরিজ বাঁচলো না
২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
সৌম্য সরকারের ক্যারিয়ার সেরা সেঞ্চুরিতেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচাতে পারেনি বাংলাদেশ! গতকাল নেলসনের সাক্সটন ওভালে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ২২ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটে হারায় বাংলাদেশকে। এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে কিউইরা। আগে ব্যাট করে ওপেনার সৌম্য সরকারের দৃষ্টিনন্দন শতকে ৪৯.৫ ওভারে ২৯১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে উইল ইয়াং ও হেনরি নিকোলসের দারুণ হাফসেঞ্চুরিতে ৪৬.২ ওভারে ৩ উইকেটে ২৯৬ রান তুলে বড় জয়ের সঙ্গে সিরিজ নিশ্চিত করে নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য ছিল সিরিজ বাঁচানোর লড়াই। তাই এ ম্যাচ জেতার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছে টাইগাররা। সৌম্য সরকারের দেড়শ’ ছাড়ানো দুর্দান্ত ইনিংসের উপর ভর করে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহও পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে শেষ পর্যন্ত কিউইদের আটকানো যায়নি। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নেয় তারা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। এনামুল হক বিজয় ও সৌম্যর উদ্বোধনী জুটি ভাঙে পঞ্চম ওভারে দলীয় ১১ রানেই। অ্যাডাম মিলনের বেরিয়ে যাওয়া বল ডিফেন্ড করতে গিয়ে দ্বিতীয় সিøপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বিজয় (১২ বলে ২)। সঙ্গী হারালেও সৌম্যকে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল, উইল ও’রউর্কের করা ইনিংসের অষ্টম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান এ বাঁহাতি। কিন্তু পরের ওভারেই ফের ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এবার সৌম্যকে রেখে ড্রেসিংরুমে ফেরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বরাবরের মতো দৃষ্টিকটু আউট হন শান্ত (৯ বলে ৬)। জ্যাকব ডাফির বলটি আলগাভাবে ফ্লিক করতে গেলে ব্যাটের সাইডে লেগে উঠে যায় আকাশে। সহজ ক্যাচ নেন নিকোলস। দলীয় ৩৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর লিটন কিউই পেসার ডাফির বলে দৃষ্টিনন্দন এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পরের বলেই কভার পয়েন্টে উইকেট বিলিয়ে দেন। তিনি ১১ বলে করেন ৬ রান। ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সৌম্য আর তাওহিদ হৃদয়ের জুটিটা ভালোভাবেই এগোচ্ছিল। ৩৬ রানে তাদের জুটি ভাঙে দুর্ভাগ্যজনকভাবে। সৌম্যর শট বোলার ক্লার্কসনের হাতে লেগে ভেঙে যায় ননস্ট্রাইকের স্টাম্প। হৃদয় কিছুটা বাইরে ছিলেন। ১৬ বলে ১২ করে ফিরতে হয় তাকে। ফলে ১৬.৫ ওভারে ৮০ রানে বাংলাদেশ হারায় ৪ উইকেট। সেখান থেকে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে দারুণ এক জুটি গড়েন সৌম্য। ১০৭ বলে তারা যোগ করেন ৯১ রান। অবশেষে মুশফিককে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ বানিয়ে জুটিটি ভাঙেন ডাফি। ৫৪ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৪৫ রান করেন মুশফিক। তবে সৌম্য তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন ১১৬ বলে। অসাধারণ ব্যাটিংয়ে চার-ছক্কায় মাঠ গরম করা সৌম্যের সুযোগ ছিল দেশের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ডটি গড়া। ২০২০ সালে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন লিটন দাস। সৌম্য মাত্র ৮ রানের জন্য তাকে পেছনে ফেলতে পারেননি। ইনিংসের পাঁচ বল বাকি থাকতে দলীয় ২৯০ রানে উইলিয়াম ও’রোর্কের বলে এক্সট্রা কভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য। ১৫১ বলে গড়া সৌম্যের ১৬৯ রানের ইনিংসে ছিল ২২টি চার ও ২টি ছক্কার মার। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ও’রোর্কের বলে নিকোলসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সৌম্য আউট হওয়ার পর দলীয় সংগ্রহে মাত্র ১ রান যোগ করতে পেরেছেন পরবর্তী দুই ব্যাটার। বিলিয়ে দিয়েছেন আরও দুই উইকেট। অর্থাৎ শেষ ওভারে বাংলাদেশ মাত্র ১ রানে হারায় তিনটি উইকেট। ১ বলে ১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে তিনশ’ থেকে মাত্র ৯ রান দূরে থেকে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের উইলিয়াম ও’রোর্ক এবং জ্যাকব ডাফি যথাক্রমে ৪৭ ও ৫১ রানে প৪ান ৩টি করে উইকেট।
জয়ের জন্য বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার উইল ইয়াং ও রাচিন রাবিন্দ্রা। উদ্বোধনী জুটিতে ৭৬ রান তোলেন তারা। ১১ ওভারে ফিফটির (৩৩ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় ৪৫ রান) কাছাকাছি গিয়ে হাসান মাহমুদের বলে রিসাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন রাবিন্দ্রা। তবে সেঞ্চুরির দিকে ঠিকই এগিয়ে যান ইয়াং। কিন্তু হাসান মাহমুদ তাকে সেঞ্চুরি করতে দেননি। ৮৯ রানের মাথায় (৯৪ বলে) ইয়াংকে বোল্ড করে দেন এই ডানহাতি পেসার। ইয়াংয়ের ইনিংসে ৮টি চার ও ২টি ছয়ের মার ছিল। ফলে ৩২.৫ ওভারে দলীয় ২০৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় কিউইরা। তবে তিন নম্বরে নেমে আরও একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন হেনরি নিকোলস। ফিফটি হাঁকানোর পর সেঞ্চুরির একেবারে কাছাকাছি গিয়ে ফেরেন তিনি। ৪০.৪ ওভারে দলীয় ২৬০ রানে শরিফুলের বলে রিসাদকে ক্যাচ দেন নিকোলস। ফেরার আগে ৯৯ বলে ৮ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় করেন ৯৫ রান। এরপর অধিনায়ক টম ল্যাথাম ৩২ বলে ৩৪ আর টম ব্লান্ডেল ২০ বলে ২৪ রান তুলে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন। বাংলাদেশের হয়ে ৫৭ রানে ২ উইকেট পান হাসান মাহমুদ। শরিফুল ৪৯ রান খরচায় পান ১টি উইকেট। হেরেও ম্যাচসেরার পুরস্কার পান সৌম্য সরকার। সিরিজের শেষ ম্যাচটি আগামী শনিবার মাঠে গড়াবে।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বিএনপিকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে: ইঞ্জিনিয়ার সহিদুজ্জামান
যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগ
নওফেল পরিবারের ২৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ
ময়মনসিংহে পুলিশ রেঞ্জ কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের উদ্বোধন
গফরগাঁও সাবেক এমপি বাবেল গোলন্দাজ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা
ফরিদপুরে প্রিন্সিপালের ওপর অতর্কিত হামলা
প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা পুনর্মূল্যায়নে ১৭ সদস্যের কমিটি গঠিত
‘সম্মিলিতভাবে কাজ করলে পুলিশের প্রতি জনগণের পূর্ণ আস্থা ফিরে আসবে’
অসহায় শীতার্তদের মাঝে রূপালী ব্যাংকের কম্বল বিতরণ
জনগণের সেবক হয়ে কাজ করতে চাই: ফখরুল ইসলাম
মীরসরাইয়ে অবৈধ বেহুন্দি ও মশারি জাল জব্দ
গণঅভ্যুত্থানে সংবাদমাধ্যমের চিত্র প্রদর্শনী করছে তরুণ কলাম লেখক ফোরাম
মারা গেলেন আসামি ধরতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ এসআই মেহেদী
নালিতাবাড়ীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড
ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর ১৩ হত্যার নির্দেশদাতা নাসিমের খুঁটির জোর কোথায়?
যে কারণে ছাত্রদের ঘোষণাপত্র দিতে মানা করেছিলেন ড. ইউনূস
মানিকগঞ্জে এলজিইডির উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
বাংলাদেশে কখনো স্বৈরাচারের শাসন জনগণ মেনে নিবেনা: আমিনুল হক
প্রতিনিয়ত মোশাররফ করিমের থেকে শিখি: মম
অবৈধ ৭টি কয়লা তৈরির চুল্লি গুড়িয়ে দিয়েছে বরগুনার জেলা প্রশাসন