অতীত বদলে দেওয়ার প্রত্যয়

Daily Inqilab স্পোর্টস রিপোর্টার

২১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম

সাদা বলে যেমন তেমন টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে টাইগারদের লড়াইটা বরাবরই এক পেশে। প্রায় সবগুলো ম্যাচই বড় ব্যবধানে জিতেছে পাকিস্তান। তাই রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে নামার আগে অতীত রেকর্ড ভালো কিছু বলছে না বাংলাদেশের জন্য। তবে এই রেকর্ড বদলে দেওয়া সহজ না হলেও সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সেখানে সর্বোচ্চ সাফল্য বলতে গেলে একটি মাত্র টেস্টে ড্র। খুলনায় ২০১৫ সালে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের দারুণ ব্যাটিংয়ে এসেছিল সেই ড্রটি। বাকি ১২টি ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। তব এরমধ্যে লড়াই করতে পেরেছে ২০০৩ সালে মুলতান টেস্টে। ১ উইকেটে হারে তারা। আর পাকিস্তানের মাটিতে তো সবমিলিয়ে ২০ ম্যাচের ২০টিতেই হার। তবে অতীত রেকর্ড ইতিবাচক না হলেও এবার ভালো কিছু হবে বলেই প্রত্যাশা টাইগার অধিনায়কের। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি শুধুই রেকর্ড। রেকর্ড বদলাতেই পারে। কাজটা সহজ হবে না। তবে যেটা বললাম, আমাদের দল খুব ভারসাম্যপূর্ণ। আমরা বিশ্বাস করি, এবার বিশেষ কিছু করতে পারব। ক্রিকেটাররা এখানে খেলার জন্য রোমাঞ্চিত।’

তবে সাম্প্রতিক সময়টা ভালো যায়নি বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে তারা। তারপরও আশাবাদী শান্ত, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আমাদের ভালো সিরিজ গেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে এবার আমাদের ভালো সুযোগ আছে। আমাদের দল ভালো ভারসাম্যপূর্ণ। আশা করি, এখানে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব।’ টেস্ট শুরু আগে রাওয়ালপিন্ডির উইকেট নিয়ে ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট। টস বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে যে কোনো কিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘হ্যাঁ (টস) খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মতে, ক্রিকেটাররা ব্যাটিং-বোলিংয়ের জন্য তৈরি আছে। তবে এটি (টস) গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগতভাবে আমি টস নিয়ে বেশি ভাবছি না। ক্রিকেটার হিসেবে সব পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’

এদিকে চার পেসার নিয়ে নামছে পাকিস্তান। তাই উইকেট কেমন হবে তা এক প্রকার স্পষ্ট। তবে নিজেদের দলে সব ধরণের রশদ রয়েছে বলে জানান শান্ত, ‘গত কয়েক বছর ধরে আমাদের পেস আক্রমণ খুব ভালো। আমাদের ৩-৪ জন মানসম্পন্ন স্পিনারও আছে। তো আমাদের সব কিছু কাভারড আছে। আগামীকাল সকালে উইকেট দেখে আমরা একাদশ সাজাব। তবে এখানে পেসাররা কিছুটা সাহায্য পায়। তাই তারা এই কন্ডিশনে ভালো করার জন্য রোমাঞ্চিত।’

তবে এই রোমাঞ্চে কিছুটা ভীতির কারণ হতে পারে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। কোন সংস্করণেই ছন্দে নেই বাংলাদেশের ব্যাটাররা। টেস্টের অবস্থা আরও খারাপ। ঘরের মাঠে সর্বশেষ সিরিজেও দেখা গেছে তাদের নাজুক পারফরম্যান্স। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে চার ইনিংস খেলে মাত্র একবার দুইশো পেরুতে পারে বাংলাদেশ। এর আগেও ছিলো একই পরিস্থিতি। ম্যাচের অবস্থা বুঝে খেলা, চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তা দেখানোর ঘাটতি দেখা গেছে প্রকট।

তবে এই সংকট এবার কেটে যাওয়ার আশা দেখছেন বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। পাকিস্তানের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হওয়ায় ব্যাটারদের কাছ থেকে বড় রানের আশায় তিনি, ‘বেশ কিছু দিন ধরে ব্যাটিং একটা উদ্বেগের জায়গা। আমরা ঘরের মাঠে ফল নির্ভর পিচে খেলেছি। কখনো সেখানে ২৫০ জেতার মতন স্কোর ছিলো। যখন আপনি এই ধরণের পিচে খেলবেন তখন ব্যাটিং কঠিন হবে। পাকিস্তানের উইকেট সাধারণত ব্যাটিং সহায়ক হয়। ব্যাট ও বলের ভালো লড়াই হবে। আমরা এরকম পিচে ভালো ফল আশা করি।’ চোখের সমস্যার কারণে ভুগতে থাকা দলের অন্যতম সেরা তারকা সাকিবের ব্যাটিং নিয়ে ছিলো আলাদা চিন্তা। কোচ জানালেন সংকট পার করে ফেলেছেন বাঁহাতি ব্যাটার, ‘সে ভালো ব্যাট করছে আসলে। তার চোখের কিছু পরীক্ষা হয়েছে। সে বলেছে এসব তাকে সমস্যা সমাধানে সাহায্য করছে।’

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে কোন স্পিনার খেলাচ্ছে না পাকিস্তান। উইকেট কেমন হবে তাতে পরিস্কার। বাংলাদেশের কোচ জানান তাদের জন্য আসতে যাচ্ছে কেমন চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জের উত্তরও তাদের দলের আছে বলে জানান তিনি, ‘পিন্ডির উইকেট পেস বোলিং ও ব্যাটিংয়ের জন্য সহায়ক। তারাও কোন স্পিনার রাখেনি। আমরা বিগত দিতে বেশ কিছু পেস বোলার তৈরি করেছি। কন্ডিশন যদি সহায়ক হয় তারাও ভালো করবে। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ বিশ্ব মানের অলরাউন্ডার। তারা যেমন চ্যালেঞ্জই দিবে তা সামাল দেওয়ার সব রকম অস্ত্র আমাদের আছে।’


বিভাগ : খেলাধুলা


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব

এফএ কাপে সিটির গোল উৎসব

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখতে চায় :বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে ইরানে অস্থিরতা বাড়ছে

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

দ্রুত নির্বাচন হলে সৃষ্ট সংকট দূর হবে : মির্জা ফখরুল

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত আরও ২১

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট বাসভবনকে ‘দুর্গে’ পরিণত করেছেন

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

ভারতের সঙ্গে করা জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি আনু মুহাম্মদের

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

পাকিস্তানিদের জন্য ভিসার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐক্যবদ্ধ কার্যকরী ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবি

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

রাজনীতি হওয়া উচিত জনমানুষের কল্যাণে -বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব নয় বরং সুসম্পর্ক রয়েছে -চাঁদপুরে ডা. তাহের

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

আদমদীঘিতে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

দেশীয় চোলাই মদের ট্রানজিট বোয়ালখালী

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

সোনারগাঁওয়ে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

রূপগঞ্জ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও ফ্যাসিস্ট সরকারের নিপীড়নের শিকার : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার

সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫টি মামলা, ১০০ জন গ্রেফতার