‘ইন্ডিয়া বয়কট’ করতে যাচ্ছে পাকিস্তান
১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
খবরটা নতুন নয়। ২০২৩ এশিয়া কাপের মতো ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও পাকিস্তানে দল পাঠাবে না ভারত। নরেন্দ্র মোদি সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত আইসিসিকে ই-মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ভারতের এমন সিদ্ধান্তে যারপরনাই ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের ক্রিকেট মহল। দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা ভারত সরকারের পাকিস্তানে ক্রিকেট দল না পাঠানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপের আহŸান জানিয়েছেন। কেউ বলছেন, ‘ক্রিকেট নিয়ে ভারত তামাশা করছে’। কেউ বলছেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে’। এখনই নমনীয় অবস্থান থেকে সরে আসতে হবে।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর হামলার পর টানা ছয় বছর নিরাপত্তা শঙ্কাকে সামনে এনে কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশ পাকিস্তানে খেলতে যায়নি। তবে গত কয়েক বছরে পরিস্থিতি পাল্টেছে। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডসহ সব দেশই সেখানে খেলতে গেছে। বাকি আছে শুধু ভারত। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বন্ধ থাকলেও ২০২৩ সালে এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে যাওয়ার কথা ছিল ভারতের। কিন্তু ভারত সরকার রাজি না হওয়ায় টুর্নামেন্টটি ‘হাইব্রিড মডেলে’ পাকিস্তানের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায় আয়োজন করা হয়। এখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘিরে ভারতের একই ধরনের অবস্থান নিয়ে ত্যক্ত-বিরক্ত জাভেদ মিয়াঁদাদ। পাকিস্তানের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক তার দেশের ক্রিকেটকে ভারত ছাড়াই চলতে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘যা চলছে, সেটা তামাশা। আমরা যদি আদৌ ভারতের সঙ্গে না-ও খেলি, পাকিস্তানের ক্রিকেট শুধু টিকেই থাকবে না, উন্নতিও করবে। যেটা অতীতেও দেখা গেছে।’
পাকিস্তানের হয়ে ১২৪ টেস্ট ও ২৩৩ ওয়ানডে খেলা মিয়াঁদাদ মনে করেন, আইসিসির আয়ের জন্য ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হওয়া দরকার। এখন নিজেদের স্বার্থেই ভারতকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে আনার ব্যবস্থা করা উচিত আইসিসির, ‘আমি দেখতে চাই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ছাড়া আইসিসি ইভেন্টে কীভাবে আয় হয়।’ পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফ ভারতের পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে না চাওয়ার পেছনে রাজনৈতিক কারণই আসল বলে মনে করেন। পিটিআইকে সাবেক এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান বলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। যখন সব দলই কোনো সমস্যা ছাড়া পাকিস্তানে খেলতে পারছে, তখন ভারতের এই সিদ্ধান্তটা পুরোপুরি রাজনৈতিক। এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ভারত সরকার ক্রিকেট দল না পাঠানোর কারণ হিসেবে প্রকাশ্য কিছু না বললেও দেশটির সংবাদমাধ্যম নিরাপত্তার কথা বলে আসছে। বর্তমান বাস্তবতায় যা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও পিসিবির প্রধান নির্বাচক ইনজামাম উল হক, ‘তারা (না এসে) ক্রিকেটের বড় একটা ইভেন্টকে বঞ্চিত করছে। পাকিস্তানের মাটিতে ভারতীয় দলের ওপর কোনো হুমকি নেই। বরং এখানে খেলতে এলে পরম আতিথেয়তাই পাবে।’
শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট খেলতে যদি ভারত না-ই আসে, তবে তাদের ছাড়াই আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের কথা ভাবছে মহসিন নাকভির নেতৃত্বাধীন বোর্ড। শুধু তা-ই নয়, ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে কোনো টুর্নামেন্টে না খেলার মতো কঠোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তান সরকার ও পিসিবির সূত্রে এসব খবর দিয়েছে দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
৮ বছর বিরতি দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরবর্তী আসর শুরু হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি। এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ৮ দল। টুর্নামেন্টের সূচি ঘোষণা করার কথা ছিল গতকাল। তবে ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার পর তা স্থগিত করা হয়েছে। পিসিবি স‚ত্রে সামা টিভি অনলাইনের খবরে বলা হয়, ভারত সরকার পাকিস্তানে দল পাঠানো নিয়ে একগুঁয়েমি অবস্থান ধরে রাখায় আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ‘মাইনাস ইন্ডিয়া’ ফর্মুলার কথা ভাবা হচ্ছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও আইসিসির মাধ্যমে ভারতকে ছাড়া টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে। আইসিসি ক্রিকেটের বৈশ্বিক সংস্থাই নয়, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিরও মূল কর্তৃপক্ষ।
পাকিস্তানের আরেক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে যেকোনো মঞ্চে ক্রিকেট ম্যাচ না খেলার অবস্থান নিতে যাচ্ছে পাকিস্তান। সরকারের অবস্থান বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে, এমন ব্যক্তিদের একজন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘কোনো টুর্নামেন্টেই আমরা ভারতের সঙ্গে খেলব না, যতক্ষণ না ওরা পাকিস্তানে এসে খেলতে চাইবে।’
২০২৩ এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারত সরকার সে দেশে দল পাঠাতে রাজি না হওয়ায় টুর্নামেন্টটি ‘হাইব্রিড মডেলে’ পাকিস্তানের সঙ্গে শ্রীলঙ্কাতেও অনুষ্ঠিত হয়। ভারত সরকার ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও হাইব্রিড মডেলে আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে ভারতের ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলতে চায় তারা। কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এ দফায় আর রাজি নয়। গত বছর ভারতের অনড় অবস্থানের কারণে পুরো এশিয়া কাপ আয়োজন করতে না পারলেও বছরের শেষ দিকে বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে ঠিকই দল পাঠানো হয়েছিল, এখন আর কোনো আপস নয়- এমন অবস্থানই নিয়েছে পিসিবি।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, ভারত ক্রিকেট দলের পাকিস্তানে খেলতে না আসার সিদ্ধান্তে পাকিস্তান সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে। এর মধ্যে আছে আইনি ব্যবস্থা এবং অলিম্পিক গেমসও। ভারত সরকার গত মাসে ২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করে ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটিতে (আইওসি) চিঠি পাঠিয়েছে। পাকিস্তান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভারত সরকারের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্টকে রাজনীতিকরণ নিয়ে আইওসির কাছে বক্তব্য তুলে ধরবে তারা।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আমরা একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই: হাসনাত আবদুল্লাহ
যুবদল কর্মী হত্যার ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার ও শিবির সভাপতির উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ
এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ
টাঙ্গাইলে ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
শিক্ষা ও গবেষণায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
মানুষের দুর্দশা মোচনে সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে
সেনাবাহিনী ক্ষমতার বিকল্প সত্তা নয়
লিভ টুগেদার ইস্যুতে এবার স্বাগতাকে উকিল নোটিশ
ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইস্তাম্বুলে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ
ব্যাপক গোলাগুলিতে নিউইয়র্কে আহত ১০
গাজায় জনসংখ্যা কমেছে ৬ শতাংশ
আইএসের পতাকা উড়িয়ে হামলা, নিহত বেড়ে ১৫
নোয়াখালীতে কৃষি জমির মাটি কাটায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
ইসরাইলি পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করলেন ইয়োভ গ্যালান্ট
ঝিনাইদহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত
আশা জাগানিয়া প্রত্যাশা করা বড়ই কঠিন : গুতেরেস
মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে উন
শেনজেন অঞ্চলের পূর্ণ সদস্য হলো রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া
প্লাস্টিক দূষণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে : পরিবেশ উপদেষ্টা
১৫% ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করুন: মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ