কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অনুকুল আবহওয়া ও সঠিক পরিচর্চায় বোরো ধান খেত সবুজ ও সতেজ হয়ে উঠেছে। আর কিছু দিনের মধ্যই ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন বুনছে কৃষক। এমনি সময়ে বোরো ধান ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণে কৃষকের সে স্বপ্ন মøান হতে চলেছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় সব এলাকার বোরো ক্ষেতে ইদুরের উৎপাত বেড়েই চলেছে। দিগন্তজোড়া সবুজ ধানক্ষেতের মাঝের রাস্তা দিয়ে চলাচল করলেই ডানে-বামে চোখে পড়বে অসংখ্য ইদুর তাড়ানোর ঝা-া, নিশান ও কাকতাড়ুয়া।
কাইছথোড়, (পেটে শিষ থাকে) হাওয়া ধান কেটে ইঁদুর সাবাড় করলেও প্রতিকার করতে পারছে না কৃষক। ইঁদুরের হাত থেকে ফসল রক্ষার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগে আমন মৌসুমে এমন ইঁদুরের উৎপাত দেখা যেত। কিন্তু এবার বোরো মৌসুমে ধান ক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত আমন মৌসুমের মত বেড়েই চলেছে। ধানের কচি শিষ খাওয়া ইঁদুর গর্তে থাকেনা। এরা ডোবা লালার কুচুরিপানায়, জোপ-ঝাড়, জঙ্গলে ও গাছে বাস করে। রাতের বেলা ঐসব এলাকা থেকে বের হয়ে ধান কেটে সাবার করে দিনের বেলায় আবার বাসস্থান চলে যায়। দেখতে স্বাভাবিক ইঁদুর এর চেয়ে অনেক বড়। খুব দ্রুত চলাফেরা করতে পারে। ইঁদুরের হাত থেকে রক্ষা পেতে কৃষক ঝান্ডা লাগিয়ে, কাকতাড়ুয়া দিয়ে ইঁদুর তারানোর চেষ্টা করছেন। অনেক জায়গায় ফসল রক্ষায় কৃষক রাত জেগে ফাঁসি জাল ও হাতে তৈরি ঢিকা ফাঁদ পেতে দু’একটি ইদুর ধরছেন। অনেকে টসলাইট জ্বালিয়ে রাতে ক্ষেত থেকে ইদুর তাড়াচ্ছেন। তবে কোন ব্যবস্তাই গেছো ইদুরের হাত থেকে শতভাগ ফসল রক্ষা করা যাচ্ছে না।
বড়ভিটা গ্রামের কৃষক মো. আব্দুল গফুর বলেন, তার ধানক্ষেত কাইচথোর হওয়ার পর থেকে ইঁদুর কেটেই চলেছে। কোন ব্যবস্থাই ইদুরের উৎপাত থেকে ধান রক্ষা করতে পারছেন না। ফলে খর ও ধানের উৎপাদন অনেক কম হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, ফুলবাড়ীতে এবার ১০ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ইঁদুরের উৎপাত ঠেকাতে ধানক্ষেতের আশপাশের জঙ্গল পরিষ্কার, ধানগাছের ১ হাত উপরে খুটি দিয়ে নিশান, কাকতাড়ুয়া লাগানোর পাশাপাশি জমিতে গ্যাসবোম প্রয়োগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।