ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৩০ কার্তিক ১৪৩১

জবাবদিহির অভাবেই সঙ্কট বাড়ছে

Daily Inqilab সরদার সিরাজ

১২ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:১৯ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:২০ এএম

দেশ নানা সংকটে জর্জরিত। কতিপয় সংকট তো ভয়াবহ। যেমন: বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, মাদক, ব্যাংকের ঋণ খেলাপি, দখল, দূষণ, পণ্যে নকল-ভেজাল ইত্যাদি। এসবের অধিকাংশই হয়েছে জবাবদিহি না থাকায়। কিছুদিন আগে ফার্মের মুরগির মূল্য বাড়তে বাড়তে দ্বিগুণ হয়ে কেজি ২৮০ টাকায় পৌঁছে। সাথে সাথে অন্য মুরগি, গরু, খাসির মাংস এবং মাছ ও ডিমের মূল্য ব্যাপক বেড়ে যায়। ফলে সাধারণ মানুষের বেশিরভাগ আমিষ খাওয়া ছেড়ে দেয়। এ অবস্থায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের কর্তৃপক্ষ ফার্মের মুরগির বড় খামারিদের সাথে মিটিং করে। তাতে খামারিরা ফার্মের মুরগির পাইকারি মূল্য প্রতি কেজি ১৯৫ টাকায় নির্ধারণ করে। ফলে কয়েক দিনের মধ্যেই ফার্মের মুরগির মূল্য প্রতি কেজি ২১০ টাকায় চলে আসে। অন্য মুরগির মূল্যও কমে যায়। অর্থাৎ জবাবদিহির সুফল মিলে যায় সাথে সাথেই। তাহলে উক্ত মিটিং মুরগির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার দীর্ঘদিন পর করা হলো কেন? মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথেই করা হলে মূল্য বাড়তো না। ক্যাবের ভাষায়, মালিকরা এক মাসের মধ্যে হাজার কোটি টাকা লুট করতে পারতো না! বণিক সমিতির সভাপতি সম্প্রতি বলেছেন, দুবাইয়ে গরু চাষ হয় না। আমদানি করে। তবুও সেখানে গরুর মাংসের মূল্য প্রতি কেজি ৫০০ টাকা। আমাদের দেশে গরু চাষ হয়। উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছে। তবুও মাংসের মূল্য কেজি প্রতি ৮০০ টাকা কেন? গরু আমদানি করার অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। খবরে প্রকাশ, ভারতে গরুর মাংস কেজি প্রতি ২০০ রুপি। তাই ভারতের গরু যদি এ দেশে আমদানি করা হয়, তাহলে দেশে গরুর মাংসের মূল্য কেজি প্রতি ৫০০ টাকার নিচে চলে আসবে। তাতে অন্য সব মাংসের এবং মাছ-ডিমের মূল্যও অনেক কমে গিয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে। এতে মানুষের পুষ্টিহীনতা কমবে। কৃষিবিদরা বহুবার বলেছে, নাজির শাইল ও মিনিকেট নামে কোন ধান নেই। মিলাররা মোটা চাল মেশিনে চিকন করে ঐসব নামে বেশি মূল্যে বিক্রি করে মানুষকে ঠকাচ্ছে। আদালতও চাল চিকন করার মেশিন জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে অনেক লেখালেখিও হয়েছে। বলা হয়েছে, চাল বস্তাবন্দী করার সময় ধানের ও মিলারের নামের সিল দেওয়ার বিধান করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে, যা অতি সহজ কাজ। তবুও তা করা হচ্ছে না। ফলে ৬০ টাকা মূল্যের চাল চিকন করে ৮০ টাকায় বিক্রি করে ব্যাপক মুনাফা করছে ব্যবসায়ীরা। কোন কোন কোম্পানি সেই চিকন চাল চটকদার মোড়কে ছোট প্যাকেট করে ১০০ টাকার বেশি বিক্রি করছে! এভাবে ভোক্তারা ঠকছে। তবুও খাদ্য বিভাগ নিশ্চুপ কেন? দ্বিতীয়ত: অনেক শুল্ক দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি করার পরও মূল্য পড়ে প্রতি কেজি ৫০ টাকা। আর এ দেশে উৎপাদিত চালের মূল্য পড়ে কেজি প্রতি ৬০ টাকা। কিন্তু কেন? তেমনি, সব জাতীয় মসল্লাসহ শাক-সবজি, ভোজ্য তেল, লবণ, চিনি, আটা ইত্যাদিরও মূল্য ভারতের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। অথচ, এফএও-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট মতে, বিশ্বে খাদ্যের দাম টানা ১২ মাস ধরে কমছে। কিন্তু বাংলাদেশে তার বিপরীত! গত ৫ এপ্রিল ইরান বেতারে প্রকাশ, গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম অপ্রত্যাশিত হারে বেড়েছে। এর মধ্যে প্রধান খাদ্য চালের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। আর মাংস চলে গেছে দরিদ্র মানুষের নাগালের বাইরে। ১৩ বছরের ব্যবধানে তিন গুণেরও বেশি বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। সানেম সম্প্রতি বলেছে, মূল্যস্ফীতির কারণে নি¤œ আয়ের ৭৪% মানুষ ধারদেনা করে চলছে! তাই ফ্যামিলি কার্ডে সাশ্রয়ী মূল্যে যারা কিছু পণ্য পাচ্ছে তারা খুবই উপকৃত হচ্ছে। দেশে কৃষিপণ্যের মূল্য অত্যধিক হওয়ার প্রধান কারণ ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা। দ্বিতীয় কারণ, কৃষি ব্যবস্থা এখনো সেকেলে এবং ব্যবহৃত বীজের উৎপাদন হার খুবই কম। তাই উৎপাদন ব্যয় বেশি। ফলে বিদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। অন্য পণ্যের ক্ষেত্রেও তাই। এ কারণে দেশ-বিদেশি পণ্যের বাজারে পরিণত হয়েছে!

দেশে পণ্যমূল্য সর্বাধিক হয় পবিত্র রমযান, ঈদ ইত্যাদিতে। এ সময়ে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছা মতো দাম নেয়। রোজা শুরুর পর থেকে আলুর মূল্য প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়েছে! খবরে প্রকাশ, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়ে ৪০ হাজার মে.টনের বেশি খেজুর আমদানি হয়েছে, যার গড়মূল্য ৮৯.৩৬ টাকা। কিন্তু বাজারে এসব খেজুর বিক্রি হচ্ছে কয়েকশ’ গুণ বেশি দামে। এরূপ অবস্থা আমদানিকৃত বেশিরভাগ পণ্যেরই। এছাড়া, দেশি পণ্যকে বিদেশি পণ্য বলে বিক্রি করে অধিক মূল্য নেওয়ারও অন্ত নেই। অন্যদিকে, দেশে উৎপাদিত বেশিরভাগ পণ্যই নকল, ভেজাল, মেয়াদ উত্তীর্ণ, ওজনে কম ইত্যাদি। এসব হচ্ছে কি বৈশ্বিক মহামন্দা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে? না, তা নয়। এসব হচ্ছে ব্যবসায়ীদের কারণেই। অথচ, বিশ্বের অধিকাংশ দেশে জাতীয় উৎসবের সময় ব্যবসায়ীরা পণ্যের মূল্য অনেক কমিয়ে দেয় মানুষের সুবিধার জন্য। কিন্তু এ দেশে তার উল্টো। এ দেশের ব্যবসায়ীরা সারা বছরের ইনকাম করে উৎসবের-দুর্যোগের সময়ে, যা চরম অনাচার। এ অন্যায় বন্ধ করার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ও তার জনবল আছে। কিন্তু ঠিক মতো কাজ করে না। ফলে অনাচারগুলো বেড়েই চলেছে, ভোক্তা অধিকার ও বিএসটিআইয়ের লোকজন মাঝে মধ্যে কোথাও কোথাও অভিযান চালায় এবং কিছু জরিমানা করে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয় না। তাই পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং নকল, ভেজাল, ওজন কম ও প্রতারণা বন্ধ করার জন্য অনবরত অভিযান চালাতে হবে ও অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। তবেই অপরাধগুলো বন্ধ হবে। খাদ্যদ্রব্য আইন-২০২৩ এর খসড়া অনুমোদিত হয়েছে গত ১০ এপ্রিলের মন্ত্রিসভায়। ২০টি ধারা সম্বলিত এই আইনে অবৈধ মজুদে যাবজ্জীবন ও খাদ্যে ভেজালে ৫ বছর কারাদ-ের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এটা কবে আইনে পরিণত হবে এবং কার্যকর হবে কি-না তা বলা কঠিন। তবে এটি পূর্ণভাবে কার্যকর হলে মানুষের কল্যাণ হবে।

পণ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য চাঁদাবাজি ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিকে দায়ী করা হয়। হ্যাঁ, এটি অনেকটা সত্য। বিশেষ করে চাঁদাবাজি। তবুও চাঁদাবাজি বন্ধ করার তেমন পদক্ষেপ নেই। বরং যারা এটা করবে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ রয়েছে। তবুও তাদের তেমন কোন শাস্তি নেই। পরিবহন খাতে তো চলছে চরম নৈরাজ্য, তাতে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তবুও নৈরাজ্য বন্ধ করা হচ্ছে না। নদীমাতৃক দেশকে নদীহীন দেশে পরিণত করছে নদীখেকোরা। তাদের তালিকাও করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। কিন্তু কোন অ্যাকশন নেই। সরকারের ভুল নীতির কারণে দেশে জ্বালানি সংকট তীব্রতর ও মূল্য অধিক হয়েছে। এসব নিয়ে সম্প্রতি কয়েকটি পৃথক কলাম লিখেছি। তাই এ ব্যাপারে পুনরুল্লেখ নিষ্প্রয়োজন। খুন, ধর্ষণ, মাদক, দুর্নীতিসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। তবুও প্রতিকারের ব্যবস্থা নেই। আর্থিক খাতেও চলছে নৈরাজ্য। জাপার এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ গত ৬ এপ্রিল সংসদে বলেছেন, ‘ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে, কারও কোনো জবাবদিহি নেই। ব্যাংকের যেমন জবাবদিহি নেই, মন্ত্রীদেরও জবাবদিহি নেই। একজনই ১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় কী করল? এসব টাকা পাচারের জবাবদিহি কে করবে? গত ৬ এপ্রিল প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, আইনের দুর্বল প্রয়োগে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে সম্পদের মান খারাপ হয়েছে। ফলে মূলধন ঘাটতি বেড়ে গেছে। খেলাপি ঋণও বেড়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চ ঝুঁকির মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে এ হার ৯.৫% (দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয়)। নন-ব্যাংকিং আর্থিক খাতে খেলাপি ঋণের হার ২৩% (দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ)। এছাড়া, আমানতের প্রবৃদ্ধি ৬% (দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনি¤œ)। মূল্যস্ফীতির হার ৯% (দক্ষিণ এশিয়ায় চতুর্থ)। ডলারের বিপরীতে টাকার গড়ে এক বছরে ২৫-৩২% অবমূল্যায়ন হয়েছে। রিজার্ভ দিয়ে আমদানি ব্যয় মেটানোর দিক থেকেও বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ায় দুর্বল। অন্যদিকে, সরকারি লোক ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য এবং বক্তব্যের বেশিরভাগই মিথ্যা, যার সর্বশেষ উদাহরণ বিবিএস’র বেকারের হিসাব। সংস্থাটির সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬.৩০ লাখ, যা পাগলেও বিশ্বাস করে না। দেশের শিক্ষার পদ্ধতি, পরিবেশ ও মান কমতে কমতে সর্বনি¤œ হয়েছে। আবার শিক্ষা ব্যয় অত্যধিক হয়েছে। তাই গরিবরা শিক্ষাবিমুখ হয়ে পড়ছে! সর্বজনীন শিক্ষার স্থলে ধনীজনের শিক্ষা প্রবর্তিত হয়েছে! চিকিৎসা ক্ষেত্রেও তথৈবচ! উপরন্তু দেশে দক্ষ জনবলের বিপুল ঘাটতি রয়েছে। তাই বিদেশ থেকে এনে ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে। ন্যায়বিচারও দুষ্প্রাপ্য হয়েছে। মামলার দীর্ঘসূত্রতা (বর্তমানে প্রায় ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন) ও ব্যয়বহুল হওয়ায় এবং গ্রাম্য সালিশ না থাকায় বেশিরভাগ মানুষ অবিচার নিয়েই জীবন কাটাচ্ছে! যেটুকু বিচার হচ্ছে, তার বেশিরভাগ নিয়ে প্রশ্ন আছে। অনেক প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা এবং অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে, অর্থে ও মানে না হওয়ায় নানা প্রশ্ন রয়েছে। প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয়ও বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক! দেশের শাসন ব্যবস্থাও কেন্দ্রীভূত। সবকিছু সরকার কেন্দ্রিক। আবার সরকারের সব কিছু প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রিক। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোও পূর্ণ স্বাধীন নয়। তাই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। এসব গণতন্ত্রের বিকাশ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার চরম অন্তরায়।

দেশের কোনো ক্ষেত্রেই জবাবদিহি ও আইনের শাসন নেই। ফলে কাক্সিক্ষত ও সার্বিক উন্নতি হচ্ছে না। উন্নতির নামে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ লুটপাট করে রাতারাতি ধনী হচ্ছে এবং বিদেশে অর্থ পাচার করছে। আর সাধারণ মানুষের অধোগতি হচ্ছে। কিন্তু দেশের ঋণের বোঝা তাদের বহন করতে হচ্ছে। যার পরিমাণ জিডিপির প্রায় অর্ধেক দাঁড়িয়েছে।

এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদে তাঁর মেয়াদকালের শেষ ভাষণে গত ৭ এপ্রিল সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি এ লক্ষ্যে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিগুলো সত্যিকার অর্থেই কার্যকর করারও আহ্বান জানান। কিন্তু তাঁর এই আহ্বান অনেক বিলম্বিত। তবুও লেট বেটার দ্যান নাথিং! অবশ্য এ ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হচ্ছে, জাতীয় সংসদ এখন আর রাজনীতিকদের হাতে নেই, ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। কারণ, হাইব্রিড গণতন্ত্র এবং বিরল ধরনের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষ অংশ না নেওয়ায় সঠিক প্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছে না। যারা নির্বাচিত হচ্ছে, তাদের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। তাদের সার্বক্ষণিক ধ্যান-জ্ঞান আত্ম সেবা!তাই তাদের দেশের কাজের জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতি গরজ নেই। বরং যত অনিয়ম চলবে, ততই তাদের লাভ। একই অবস্থা স্থানীয় সরকারের সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রেও হয়েছে। এছাড়া, বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে। তারা দলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে বা কথা বলতে পারে না। দ্বিতীয়ত: বর্তমান সরকারের সময়ে সংসদে শক্তিশালী কোন বিরোধী দল নেই। ফলে সংসদে সরকারের জবাবদিহি নেই। তাই সংসদের প্রতি মানুষের আগ্রহ নেই। অন্যদিকে, জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে এমপিদের বক্তব্যের সারমর্ম হচ্ছে, সংসদীয় কমিটিগুলো নিয়মিত বসছে না। উপরন্তু ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো কাজ করতে পারছে না। বিদ্যমান ব্যবস্থায় সংসদ আইন প্রণয়নে বৈধতা দেয়া ছাড়া আর কিছু করতে সক্ষম নয়।

দেশের বিরাজিত সংকটগুলো দূর এবং কাক্সিক্ষত সার্বিক উন্নতির জন্য সর্বত্রই জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা এবং সংসদকে সকল কর্মের প্রাণকেন্দ্র করতে হবে। কিন্তু সে জন্য প্রকৃত রাজনীতিবিদ ও গণ মানুষের নেতাদের নির্বাচিত হতে হবে। কিন্তু প্রকৃত গণতন্ত্র, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া তা হবে না।দ্বিতীয়ত: গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানকে পূর্ণ স্বাধীন করা আবশ্যক।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

মূল্যস্ফীতি রোধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে
যৌথবাহিনীর অভিযান জোরদার করতে হবে
সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায় নজর দিন
পুলিশকে জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে
মূল্যস্ফীতি রোধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে
আরও

আরও পড়ুন

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের কাছে ক্ষমা না চাইলে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের কাছে ক্ষমা না চাইলে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

বগুড়ায় মেয়েকে হত্যা করে মায়ের আত্মহত্যা, চিরকুট উদ্ধার

বগুড়ায় মেয়েকে হত্যা করে মায়ের আত্মহত্যা, চিরকুট উদ্ধার

বিবাহ বিভ্রাটে তৌহিদ আফ্রিদি, স্যোশ্যাল মিডিয়ায় শালিকা নিয়েছে বউয়ের অবস্থান

বিবাহ বিভ্রাটে তৌহিদ আফ্রিদি, স্যোশ্যাল মিডিয়ায় শালিকা নিয়েছে বউয়ের অবস্থান

বিদেশি হস্তক্ষেপে বিগত সরকার ফ্যাসিস্টে পরিণত হয়েছিলো : আসিফ নজরুল

বিদেশি হস্তক্ষেপে বিগত সরকার ফ্যাসিস্টে পরিণত হয়েছিলো : আসিফ নজরুল

মাদক নির্মূলে কঠোর অবস্থানের ঘোষনা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

মাদক নির্মূলে কঠোর অবস্থানের ঘোষনা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

নারায়ণ চন্দ্রকে আদালত চত্বরে ডিম নিক্ষেপ

নারায়ণ চন্দ্রকে আদালত চত্বরে ডিম নিক্ষেপ

সেই কবি এবার ৬৯ বছর বয়সে এইচএসসি পাস করলেন

সেই কবি এবার ৬৯ বছর বয়সে এইচএসসি পাস করলেন

ফিলিপাইনে টাইফুন উসাগির আঘাত

ফিলিপাইনে টাইফুন উসাগির আঘাত

যশোরে ছুরিকাঘাত করে নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা

যশোরে ছুরিকাঘাত করে নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা

চুয়াডাঙ্গার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হলেন যশোরের বিচারক শিমুল

চুয়াডাঙ্গার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হলেন যশোরের বিচারক শিমুল

জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতার অন্যতম লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠন : ভূমি উপদেষ্টা

জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতার অন্যতম লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠন : ভূমি উপদেষ্টা

২০ হাজার ওমরাযাত্রী অনিশ্চয়তায়, ওমরাহ টিকিটে এক লাফেই ১৭ হাজার টাকা বৃদ্ধি

২০ হাজার ওমরাযাত্রী অনিশ্চয়তায়, ওমরাহ টিকিটে এক লাফেই ১৭ হাজার টাকা বৃদ্ধি

সংষ্কার কাজ দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন -মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম

সংষ্কার কাজ দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন -মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম

কটিয়াদীতে যুবকের লাশ উদ্ধার, স্ত্রী আটক

কটিয়াদীতে যুবকের লাশ উদ্ধার, স্ত্রী আটক

বেনাপোল বন্দরে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল উদ্বোধন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, কমবে ভোগান্তি, বাড়বে বাণিজ্য

বেনাপোল বন্দরে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল উদ্বোধন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, কমবে ভোগান্তি, বাড়বে বাণিজ্য

যশোর বোর্ডে এইচএসসিতে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন ৬৬ হাজার, পরিবর্তন ৭১ জনের

যশোর বোর্ডে এইচএসসিতে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন ৬৬ হাজার, পরিবর্তন ৭১ জনের

আইএইচএফ ট্রফির বাছাইপর্বে অংশ নিবে ইয়ুথ ও জুনিয়র হ্যান্ডবল দল

আইএইচএফ ট্রফির বাছাইপর্বে অংশ নিবে ইয়ুথ ও জুনিয়র হ্যান্ডবল দল

ফের কমলো সোনার দাম

ফের কমলো সোনার দাম

সাফজয়ী দলকে আর্থিক পুরস্কার দিল সাউথ ইস্ট ব্যাংক

সাফজয়ী দলকে আর্থিক পুরস্কার দিল সাউথ ইস্ট ব্যাংক

২৪২ সদস্যবিশিষ্ট ঢাবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ

২৪২ সদস্যবিশিষ্ট ঢাবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ