স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা
২৪ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:২৪ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:৩২ পিএম
নানা শঙ্কার মধ্যে এবারের ঈদযাত্রা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশ স্বস্তির এবং আরামদায়ক ছিল। মহাসড়কের কোথাও বড় ধরনের যানজট ছিল না। ফলে বাড়িমুখী মানুষ কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়া পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদ করতে যেতে পারেন। প্রতি বছর এই সময়ে বাস, ট্রেন ও লঞ্চের টিকেট পাওয়া নিয়ে যাত্রীদের যে অশেষ ভোগান্তির চিত্র খবরের শিরোনাম হতো, তা এবার হয়নি। যাত্রীরা নিশ্চিন্তে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ স্টেশনে গিয়ে স্বাভাবিকভাবে যাত্রা শুরু করতে পেরেছে। এবার বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বাধিক মানুষ রাজধানী ছেড়ে বাড়ি গিয়েছে। সূত্র মতে, প্রায় এক কোটি ১৫ লাখের মতো মানুষ ঢাকা ছেড়েছে। স্বস্তিদায়ক যাত্রায় যাত্রীদের মধ্যেও ছিল ঈদ আনন্দের ছোঁয়া। তবে রাজধানীর কোনো কোনো প্রবেশ মুখে দীর্ঘসময় যানজট দেখা গেলেও বের হওয়ার পর মহাসড়কে মসৃণভাবে যানবাহন চলাচল করতে পেরেছে। এবার পদ্মাসেতুতে মোটর সাইকেল চলার অনুমতি থাকায়, অসংখ্য মানুষ স্বচ্ছন্দ্যে তাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পেরেছে। অন্যান্য বছরের মতো সড়ক দুর্ঘটনার হারও ছিল কম। অনলাইনের পত্র-পত্রিকার সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ জনের মতো মানুষ নিহত হয়েছে। অন্যান্য বছর এই দুর্ঘটনার হার অনেক বেশি থাকে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বিগত প্রায় দেড় দশকে দেশের সড়ক যোগাযোগের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সড়কের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে দেশে মোট সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কিলোমিটার। যোগাযোগ ক্ষেত্রে পদ্মাসেতু এক যুগান্তকারি ভূমিকা রেখে চলেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার সাথে রাজধানীর দূরত্ব যেমন কমিয়ে দিয়েছে, তেমনি যাতায়াতও সহজ ও মসৃণ করেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইলসহ অন্যান্য মহাসড়ক চার থেকে আট লেনে উন্নীত হয়েছে এবং হচ্ছে। সড়কের আরও বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এসব কাজ শেষ হলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুতগতি লাভ করবে এবং অর্থনীতিও বেগবান হবে। পশ্চিমবঙ্গের মতো পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে কলকাতায় এসে যেমন মানুষ অফিস ও কাজকর্ম সেরে ফিরে যেতে পারে, তেমনি ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে মানুষ রাজধানীতে এসে অফিস ও প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে যেতে পারবে। এতে রাজধানীর ওপর থেকে চাপ অনেকটা কমে যাবে। এবার যাতায়াত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুব্যবস্থাপনা ও সুশৃঙ্খলার কারণে ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করা সম্ভব হয়েছে। রেলে অনলাইনে টিকেট বুকিং করার কারণে যাত্রীদের ভোর রাত থেকে স্টেশনে গিয়ে লাইন ধরতে এবং টিকেটের জন্য হাহাকারও করতে হয়নি। বাস ও লঞ্চের টিকেট নিয়েও বড় ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি। তাছাড়া, ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় যাত্রীরা যানজট ও পরিস্থিতি বুঝে যাত্রার সময় নির্ধারণ করতে পেরেছে। এতে পরিবহনে চাপও কমে যায়।
সড়ক-মহাসড়কের যাতায়াত মসৃণ হওয়া দেশের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। সরকারকে এখন রাজধানীর দিকে আরও বেশি নজর দিতে হবে। রাজধানীর যানজট এখনও বড় সমস্যা হয়ে রয়েছে। ঈদ শেষে মানুষ রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে। এখন ফাঁকা থাকলেও ধীরে ধীরে যানজট যে বৃদ্ধি পাবে, তাতে সন্দেহ নেই। এমনিতেই রাজধানী বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে রয়েছে। ঢাকার বাইরের যাতায়াত মসৃণ অথচ যানজটে বছরের পর বছর ধরে রাজধানী অচল হয়ে থাকছে। ২০২৬ সালের দিকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করব। রাজধানীকে অনাবাসযোগ্য রেখে এ মর্যাদা লাভ সুখকর নয়। কারণ, দেশ-বিদেশের মানুষ সবার আগে রাজধানীর সুযোগ-সুবিধা দেখে। বলা বাহুল্য, রাজধানীর যাতায়াত এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা কোনোভাবেই মানসম্পন্ন নয়। এর অন্যতম কারণ, সেবা সংস্থাগুলোর যথাযথ পরিকল্পনা ও সেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে শৈথিল্য রয়েছে। ফুটপাত দখল, সড়কে যত্রতত্র যানবাহন পাকিং ও বাস থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করানো, বাস টার্মিনালগুলোর সামনের মূল সড়ক দখল করে বাস পার্কিং করা থেকে শুরু করে দোকানপাট বসে সড়ককে যান চলাচলের ক্ষেত্রে বিঘœ ঘটাচ্ছে। রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতেও যানজট লেগে থাকে। এসব সমস্যা সমাধান এবং বিদ্যমান সড়ককে মসৃণ করে যাতায়াতের উপযোগী করে তোলার জন্য সিটি করপোরেশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজধানীকে বাসযোগ্য করে তোলার জন্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তরিকতার সাথে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। যেসব মহাসড়কে উন্নয়ন প্রকল্প চলছে, সেগুলো আগামী কোরবানির ঈদ আসার আগেই দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে, যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত ও মসৃণ হয়।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জানা গেল ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ব্রাজিলের একাদশ
বাংলাদেশে ন্যায্য রুপান্তরে অর্থায়নের জন্য ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান
গোপালগঞ্জে কারাগারে থাকা বাবার অবশেষে জামিন মঞ্জর
ওসমানী বিমান বন্দরে বিদেশী বিমান উঠা-নামার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী- প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে সিলেটে স্মারকলিপি
ময়মনসিংহে ফিলিং স্টেশনে আগুনের ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে ৬
জানুয়ারি পর্যন্ত ছিটকে গেলেন এনগিডি
দুবাইয়ে নবনিযুক্ত কনসাল জেনারেলের সাথে বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্টস ট্রেডার্স আজমানের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুবিধা নিশ্চিতে দেওয়া হবে ইউনিক আইডি কার্ড
যে কারণে হারপিকে মেতেছে নেটিজেনরা
আ.লীগের মতো পরিবারতন্ত্র করবে না বিএনপি: তারেক রহমান
প্যারাগুয়ে ম্যাচে কেমন হবে আর্জেন্টিনার একাদশ
অর্থাভাবে ব্যক্তিগত বিমান ভাড়া দিয়েছেন শন ডিডি, বিক্রি করবেন বাড়ি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শ্রেনী কক্ষে অসুস্থ ১০ শিক্ষার্থী
ভারতীয় গণমাধ্যম আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নরসিংদীতে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
পুলিশ সংস্কার ও একটি কৌশলপত্র
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে কেন উপদেষ্টা করতে হবে?
শ্যামনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
অভ্যুত্থানে আহতদের প্রতি এই অবহেলা অমার্জনীয়
নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ