ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

করোনার সংক্রমণ থেকে সাবধান হতে হবে

Daily Inqilab সরদার সিরাজ

০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পুনরায় বাড়ছে। এই বৃদ্ধির কারণ নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১, যা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন এবং ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু বলেছে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ এর উৎপত্তি বিএ.২.৮৬ ভ্যারিয়েন্ট থেকে। এতে অতিরিক্ত স্পাইক প্রোটিন রয়েছে। তাই এটি সর্বত্রই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। জাপানের রিকেন-এর বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি বলেছেন, নতুন স্ট্রেন জেএন.১ এর কারণে হার্টের সমস্যা হতে পারে। এমনকি হতে পারে স্ট্রোকও! যারা রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য সমস্যা বেশি হবে। এর আগে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঘটেছে বিশ্বব্যাপীই। করোনা প্রথম শনাক্ত হয় চীনের উহানে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর। তার পর এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র বিশ্বে। হু ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি এবং ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। এই অবস্থায় কিছুদিন পরপর করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টি হয় এবং বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই বিস্তার ঘটে। তাতে অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত ও মারা যায়। ওয়ার্ল্ডোমিটারস গত ১ মার্চ’২৩ বলেছে, করোনায় শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৭ কোটি ৯৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫৯ জনে। তন্মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬৮ লাখ ১৭৮ জনের। তবে, হু বলেছে, করোনায় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে নারীর চেয়ে পুরুষ বেশি। আক্রান্ত ও মৃত্যু ব্যক্তিদের মধ্যে বয়স্ক এবং রোগগ্রস্ত লোক বেশি। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, জাপান, তাইওয়ান, রাশিয়া, ফ্রান্স, পেরু, পোল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া। প্রাথমিক পর্যায়ে ডাক্তাররা করোনার চিকিৎসা বুঝে উঠতে ব্যর্থ হন। ফলে মরণাতংক সৃষ্টি হয় বিশ্বব্যাপী। তাই করোনা মহামারি ঠেকানোর জন্য বহু দেশে দীর্ঘদিন লক ডাউন দেওয়া হয়। ফলে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক স্থবিরতায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানীদের ব্যাপক প্রচেষ্টায় আবিষ্কার হয় করোনার ভ্যাকসিন বা টিকা, যা বিপুল পরিমাণে উৎপাদন করা হয় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, রাশিয়া, চীন ও ভারতে। করোনার টিকা উৎপাদনকারী ওষুধ কোম্পানিগুলোর অন্যতম হচ্ছে- অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, মডার্না, সিনোভ্যাক ও জনসন। বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের বিল গেটস বিপুল অর্থ দিয়ে টিকা তৈরি করে নিয়ে তা গরিব দেশগুলোতে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করার ব্যবস্থা করেন। এদিকে, ধনী দেশগুলো মাত্রাতিরিক্ত টিকা কিনে নিয়ে মজুদ করে। ফলে টিকার স্বল্পতা সৃষ্টি ও মূল্য ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়ে গরিব দেশগুলো সংকটে পড়ে! তদুপরি টিকার ব্যাপক ব্যবহার ও সাবধানতা অবলম্বন করায় ২০২২ সালের শেষের দিকে করোনা হ্রাস পায় সারাবিশ্বে। কিন্তু আক্রান্তদের মধ্যে সৃষ্টি হয় স্থায়ী সমস্যা। কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্প্রতি বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীরা শরীরের থেকেও বৌদ্ধিক, স্নায়ুবিক ও মানসিক অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়েছে। অর্থাৎ ব্রেনের স্নায়ুবিক কাজকর্মের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলছে করোনা ভাইরাস। তাই করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও তাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উপর বিশেষ যতœ নেয়া, চিকিৎসা করা জরুরি।

বাংলাদেশে করোনা প্রথম শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। তার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০.৪৬ লাখের অধিক মানুষের। তন্মধ্যে মারা গেছে ২৯ হাজার ৪৭৭ জন বলে গত ২৯ ডিসেম্বর খবরে প্রকাশ। তবে, হু’র বরাত দিয়ে বিবিসি বলেছে, বাংলাদেশে করোনায় প্রকৃত মৃত্যু প্রকাশিত তথ্যের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। দেশে করোনা ব্যাপকতর হলে দেশব্যাপী লক ডাউন এবং নানা সাবধানতা অবলম্বন করা হয়। উপরন্তু ঢাকাসহ সারা দেশের কিছু হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয় শুধুমাত্র করোনার রোগীদের চিকিৎসার জন্য। ফলে অন্য রোগের চিকিৎসা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হয়। সারাদেশের মানুষ চরম আতংকিত হয়ে পড়ে। তাই করোনার রোগীর কাছে সহজে কেউ যেত না। এমনকি মারা গেলে তার দাফন-কাফনে অংশ নিত না আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে। ডাক্তার, নার্স ও স্টাফরা জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করেন। ফলে তাদের অনেকেই সংক্রমণের শিকার হন। তন্মধ্যে অনেকেই মারা যান। যারা বেঁচে আছেন, তাদের অনেকেই অবসাদে আছেন। গত ৩ মার্চ’২৩ প্রকাশিত নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক এলসেভিয়ারের উদ্যোগে বাংলাদেশসহ ৪০টি দেশের ৫৫,৫৮৯ জন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের দ্বিতীয় গবেষণা রিপোর্ট মতে, করোনাকালে স্বাস্থ্য পেশার সঙ্গে যুক্ত ২৮.৫০% মানুষ মানসিক পীড়া ও চরম অবসাদে ভুগছেন। তন্মধ্যে মানসিক পীড়ায় ভুগছেন ১৫.১৯% আর চরম অবসাদে ভুগছেন ১৩.৩১%। যা’হোক, করোনার ভয়াবহতা মোকাবেলা করার জন্য সরকার অনুদানের ও ক্রয় করে টিকা কার্যক্রম শুরু করেন ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি। গত ২৬ জুন’২২ প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে এ পর্যন্ত ১২ কোটি ৮৯ লাখ ৯৫ হাজার ৮০৯ জনকে করোনার প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৯১ লাখ ৯৯ হাজার ২৪৫ জনকে। এ ছাড়া ২ কোটি ৮৬ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৩ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। এসব টিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, মডার্না, সিনোভ্যাক ও জনসনের। তবুও টিকা গ্রহণ না করা এবং কোর্স অসম্পন্ন থাকা মানুষের সংখ্যা রয়েছে অনেক। এদিকে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি দেশে করোনার সংক্রমণ হ্রাস পায়।

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি বলেছে, নতুন করে ৬৪০ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। কলকাতার আমরি হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সায়ন চক্রবর্তী বলেন, ‘নতুন যে ভ্যারিয়েন্টটা দেখা যাচ্ছে, সেটার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা আগের অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের থেকে অনেকটাই বেশি। কিন্তু এর ধার অনেকটাই কম। তাই খুব বেশি অসুস্থ করে ফেলতে পারবে না’। পাশের দেশ হিসেবে বাংলাদেশেও জেএন.১সহ অন্য ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। তাই তার মোকাবেলা করার জন্য দেশে এখনই প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। করোনা মোকাবিলার প্রধান উপায় হচ্ছে- সাবধানতা। হু’র পরামর্শ অনুযায়ী বদ্ধ ও ভিড় রয়েছে এমন জায়গায় মাস্ক পরা, হাঁচি ও কাশি ঢেকে দেয়া, নিয়মিত হাত পরিষ্কার করা, কোভিড ও ফ্লু’র টিকা নেয়া, অসুস্থ হলে বাড়িতে থাকা ও উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করানো ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত: যারা টিকা গ্রহণ করেনি তাদের টিকার সব কোর্সের আওতায় আনা এবং যাদের সব কোর্স সমাপ্ত হয়নি তাদের তা সম্পন্ন করা। কারণ, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রধান হচ্ছে- রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করা। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর। যেমন: ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত অবকাঠামো গড়ে উঠলেও ডাক্তার, নার্স ও স্টাফের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ঘাটতি সর্বাধিক। এছাড়া, মেশিনপত্র ও ওষুধের ঘাটতিও অনেক। সরকারি চিকিৎসা সেবার সাথে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। চিকিৎসার মানও খারাপ। ওষুধ ও টেস্টের ব্যবহারও অত্যধিক। কঠিন ও জটিল রোগের বেশিরভাগের চিকিৎসা হয় না দেশে। দুর্নীতি, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনাও ব্যাপক। অবশ্য, বেসরকারি পর্যায়ের চিকিৎসা ব্যবস্থা কিছুটা ভালো। কিন্তু ব্যয় অত্যধিক। স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, দেশের হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা বছরে সোয়া ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছেন। যার ৪৮% সরকারিতে ও ৫২% বেসরকারিতে।

দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে সরকারি ব্যয় নগণ্য। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন মতে, দেশে স্বাস্থ্যসেবায় বার্ষিক মাথাপিছু ব্যয় এখন দাঁড়িয়েছে ৫৪ ডলার। অর্থাৎ দেশের স্বাস্থ্যখাতের মোট ব্যয় জিডিপির এক শতাংশেরও কম! উপরন্তু স্বাস্থ্যবিদদের মতে, বর্তমানে দেশের চিকিৎসা খাতে আউট অব পকেট ব্যয়ের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। এখানকার রোগীদের মোট ব্যয়ের ৭৪% আউট অব পকেট পেমেন্ট। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আইকিউভিআই-এর তথ্য মতে, স্বাস্থ্যসেবায় ওষুধের ব্যয় বাংলাদেশে ৪৪%, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ (বৈশ্বিক গড় ব্যয় ১৫%)। দেশের স্বাস্থ্য বিভাগও বলেছে, দেশের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৪৪ শতাংশই ওষুধ। ওষুধের চাহিদার বেশিরভাগ দেশেই উৎপাদিত হয়, কিছু রফতানিও হয়। তবে, এলডিসি উত্তোরণের পর পেটেন্ট সুবিধা বন্ধ হলে ওষুধের দাম বেড়ে যাবে। তখন স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ও বেড়ে যাবে। অন্যদিকে, কিছু লোক হ্যোমিও, আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসা নেয়। তবে, সার্বিকভাবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা খুব কম। চিকিৎসা করার আর্থিক সঙ্গতিও নেই বেশিরভাগ মানুষের। তাই দেশের অধিকাংশ মানুষ বিনা চিকিৎসাতেই থাকে বিভিন্ন ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েও। আর ধনীরা বিদেশে চিকিৎসা করায়। বিডার তথ্য অনুযায়ী, ‘প্রতি বছর ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে সাত লাখ বাংলাদেশি। প্রতি বছর এসব রোগী বিদেশে ব্যয় করছেন ৩৫০ কোটি ডলার। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের বার্ষিক মাথাপিছু গড় ব্যয় এখন ৫ হাজার ডলার’ বলে গত ২৪ নভেম্বর খবরে প্রকাশ। অপরদিকে,স্বাস্থ্যবিদদের মতে, দেশের স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিকিরণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে গড়ে ওঠেনি। ফলে স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান পার্শ্ববর্তী এলাকায় দীর্ঘ সময়ে বসবাসকারীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। ক্যান্সার, হৃদরোগ, প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষতি, সংক্রামক রোগের বিস্তারসহ বিভিন্ন ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এছাড়া, অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনিস্টিক সেন্টার রয়েছে অনেক। উপরন্তু নকল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের ব্যবহার হচ্ছে অনেক। অর্থাৎ দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রধান সমস্যা হচ্ছে অব্যবস্থাপনা।জবাবদিহিতা না থাকায় এটা হয়েছে। এছাড়া, স্বাস্থ্য সেবা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা সেকেলে এবং মান খারাপ। উপরন্তু স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। এসবের ব্যাপক প্রভাব পড়ছে স্বাস্থ্য সেবায়। তাতে দেশের উন্নতির ক্ষতি হচ্ছে।

দেশের স্বাস্থ্যখাতের পরিস্থিতি অনুযায়ী মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য রোগ প্রতিরোধের দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। তেমনি করোনার নুতন ভ্যরিয়েন্ট জিএন.১সহ অন্য ভ্যারিয়েন্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সাবধানতা অবলম্বন এবং টিকা কার্যক্রম পুনরায় জোরদার করা দরকার। জেএন.১ এর সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় বাংলাদেশেও কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি মাস্ক পরাসহ কোভিড প্রতিরোধে অন্যান্য জনস্বাস্থ্যমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে গত ৩ জানুয়ারি। এছাড়া, দেশের স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি জন্য কিছু কার্যক্রম দ্রুত গ্রহণ করা জরুরি, যার অন্যতম হচ্ছে: সরকারি স্বাস্থ্য খাতের জনবল,মেশিন ও ওষুধের ঘাটতি পূরণ, প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ও টেস্টের ব্যবহার এবং অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা, নকল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের ব্যবহার বন্ধ, সর্বত্রই জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা ও অব্যবস্থাপনা দূর করা। উপরন্তু স্বাস্থ্যখাতের ব্যয় কমপক্ষে তিনগুণ বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা আধুনিক ও মানোন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট সকলের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এসব হলেই দেশের স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি হবে, মানুষের আস্থা বাড়বে। চিকিৎসার জন্য মানুষ বিদেশে যাওয়া হ্রাস পাবে। তাতে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।সর্বোপরি দেশবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে সব ধরণের দূষণ বন্ধ, পুষ্টিহীনতা ও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা দূর করা দরকার।

লেখক:সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

দুইবার এগিয়ে গিয়েও জেতা হলো না মায়ামির

দুইবার এগিয়ে গিয়েও জেতা হলো না মায়ামির

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো