সুপারশপের বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে

Daily Inqilab ড. অজয় কান্তি মন্ডল

২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম

দেশীয় সংস্কৃতিতে বাজারে যাওয়ার রীতি চিরচেনা। গ্রামে এই রীতি এখনো চলমান থাকলেও যানজট এবং নাগরিক ব্যস্ততায় শহরে কিছুটা ম্লান হয়ে পড়েছে। আগেকার দিনে দেখতাম ভোরবেলায় ব্যাগ হাতে বাবা বাজারের উদ্দেশে বের হচ্ছেন। আমাদের অনেকের কাছে এমন স্মৃতি নিত্যদিনের। টাটকা শাকসবজি, মাছ, মাংস কেনার জন্য ভোরের বাজারের কোনো বিকল্প নেই। ভোরে বাজারে যাওয়ার সঙ্গে টাটকা বাজার পাওয়ার একটা সমানুপাতিক সম্পর্ক আছে। কিন্তু এখন ওই সমীকরণ অনেকটা বদলের পথে। বিশেষ করে নাগরিক জীবনযাপনে সারাদিনের কর্মময় ব্যস্ত সময় পার করার পরে অনেকেই কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে নিত্যদিনের বাজারের কাজ সেরেই তবে বাসায় ফেরেন। এছাড়া সময়ের সাথে সাথে মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিভিন্ন দোকান থেকে ঘুরে ঘুরে যাচাই করে কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এটা অনেক সময় সাপেক্ষ এবং বিরক্তিকরও বটে। বিশেষ করে যে পরিবারে স্বামী-স্ত্রী দুইজনই কর্মজীবী তাদের জন্য বাজারে ঘুরে ঘুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা বেশ কষ্টকর। তাই বাধ্য হয়ে কাঁচাবাজারের সাথে যাবতীয় প্রয়োজনই যাতে একই স্থানে এবং স্বল্প সময়ে মেটে সেদিকে সর্বদা সবাই সচেষ্ট থাকে।

অপেক্ষাকৃত দ্রুত এবং সহজে প্রয়োজন মিটাতে সুপারশপগুলোর জুড়ি নেই। সুপারশপ এমনই একটি সমাধান যেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্য মিলবে একই ছাদের নিচে। সুপারশপে যে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সকল জিনিস হাতের নাগালে পাওয়া যায়, তা নয়, এখানে দেশি পণ্যের পাশাপাশি ভালোমানের বিদেশি পণ্য কেনার সুযোগও থাকে। সুপারশপে পছন্দের জিনিস যাচাই-বাছাই করে কেনা যায়, যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকু পণ্য নেওয়ার সুযোগ আছে। পণ্য অনুসারে আলাদা জোন থাকে। ক্রেতাদের সুবিধার্থে জোনগুলো ইন্ডিকেট করা থাকে। নানা পরিমাপের প্যাকেটজাত পণ্য থরে থরে সাজানো থাকে। বিচার-বিশ্লেষণ ও গুণমান বিচার করে জিনিস কেনার স্বাধীনতা এবং নিশ্চয়তা রয়েছে। পণ্যের গুণগতমান সম্পর্কে সুপারশপে নিযুক্ত গাইডের সাহায্য নেওয়া যায়। মাছ-মাংস নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী টুকরো করে নেওয়ার সুযোগ আছে। ক্যাশের পাশাপাশি কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে বিল পরিশোধ করার সুবিধা আছে। কার্ডে বিল পরিশোধ করার সুযোগ থাকায় টাকা বহন করার ঝুঁকি থাকে না। উপরন্তু একেক চেইন সুপারশপে একেক কার্ডে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। রয়েছে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থাও। মেম্বারশিপ কার্ড থাকলে নানান ছাড়ের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। অধিকাংশ সুপারশপে ফ্রিতে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। সুপারশপগুলোয় কেনাকাটায় সহায়ক বিভিন্ন ধরনের ট্রলি পাওয়া যায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, ক্রয়কৃত পণ্য গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে নেওয়ার সু-ব্যবস্থা আছে।

এসকল নানাবিধ কারণে আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় বহু আগে থেকে তাদের প্রতিদিনের জীবনের অনুসঙ্গ হয়ে আছে সুপারশপ বা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। ধারণাটি পাশ্চাত্যে চালু হলেও এখন দুনিয়াজুড়ে এটি কেনাকাটার নির্ভরতায় পরিণত হয়েছে। খুব সহজে চারদেয়ালের একটি সুপারশপ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় যাবতীয় পণ্য আস্থা নিয়ে নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্তভাবে কেনা যায়। প্রকৃতপক্ষে একই ছাদের নিচে মানুষের প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্য, বিশেষ করে গ্রোসারি পণ্য পাওয়ার প্রয়েজনীয়তা থেকেই সুপারশপের যাত্রা শুরু হয়। উন্নত দেশগুলোতে অর্ধশত বছরের বেশি সময় থেকে সুপার মার্কেটগুলো সুনামের সাথে ব্যবসা করলেও আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অল্প কয়েক বছর থেকে এর যাত্রা শুরু হয়েছে। যদিও প্রতি বছর সুপারশপের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে ২০০১ সাল থেকে সুপার শপের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা, বিভাগীয় এবং জেলাশহরগুলোয় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, সুপারশপ, মেগাশপ চালু হয়েছে। এসব শপে চাল, ডাল, তেল, সবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, ফলমূল, এমনকি কসমেটিকস, পোশাক, আসবাবপত্র, ক্রোকারি প্রভৃতি স্বাধীনমতো কেনা যায়। ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে সুপারশপগুলোর দেওয়া বিভিন্ন অফারে মধ্যবিত্তের অনেকের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে শহুরে আবহে সুপারশপে সুপারশপিং করার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠছে। দেশের প্রচলিত সুপারশপগুলোর মধ্যে স্বপ্ন, আগোরা, মীনাবাজার উল্লেখযোগ্য।

সুপারশপে বাজার করার বিষয়ে চীনের প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা কিছুটা তুলে ধরছি। চীনে থাকাকালীন সুপারশপেই সব থেকে বেশি নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রয়োজন মেটানো হয়েছে। চীনের খোলা বাজারের চেয়ে সুপারশপ থেকে ক্রয়কৃত পণ্যের মূল্য সর্বদা কম থাকত। সব সময় কোন না কোন পণ্যের মূল্য ছাড় থাকত। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এসব সুপারশপে উপচে পড়া ভিড় থাকত। কেননা, প্রায় প্রতি সপ্তাহের ছুটির দিনে সুপারশপে বিশেষ ছাড় থাকত। তবে চীনাদের বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠানের সব রকমের সুপারশপে বিশালাকৃতির মূল্য ছাড় দিত। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা এসে পণ্যের রেগুলার মূল্যের সাথে বাড়তি ছাড়ের একটা হিসাব করে একসাথে ছয়মাসের পর্যন্ত বাজার করে গাড়ি ভরে নিয়ে যেত। ক্রেতাদের সুবিধার্থে সুপারশপগুলোর নিজস্ব মিনিবাসের ব্যবস্থা ছিল। প্রতিদিন এসব মিনিবাস নির্দিষ্ট স্থান থেকে শিডিউল অনুযায়ী রাউন্ড দিত। যাদের নিজস্ব গাড়ি নেই তারা সচ্ছন্দে বাজার করে এসব মিনিবাসে বিনা পয়সায় পরিবহনের সুবিধা পেত। সুপারশপ থেকে পোশাক কেনার পরে বিশেষ করে প্যান্ট কিনে সেটা নিজের উচ্চতা অনুযায়ী কেটে নেওয়ার ব্যবস্থা থাকত। পণ্য কেনার পরে কোনো ত্রুটি থাকলে সেটা পরিবর্তন করে নেওয়া বা পুরো টাকা ফেরত নেওয়ার সুযোগ থাকত। অনেক পণ্যের স্বাদ নিয়ে তারপর ক্রয় করার সুযোগ থাকত। বিশেষ করে দুগ্ধজাত ও বেকারি পণ্যের এমন ব্যবস্থা থাকত। সুপারশপগুলোর নিজস্ব বেকারি কারখানা ছিল, যার ফলে বেকারি পণ্যগুলো গুণগত মান পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হত।

আমার জানা মতে, বিশ্বের উন্নতদেশের প্রায় সব সুপারশপে এই ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে। এসকল সুপারশপে পণ্যের গুণগত মানে কোনো ছাড় নাই। ভেজাল ও মেয়াদউত্তীর্ণ পণ্য এসব সুপারশপে পাওয়া কল্পনাতীত। তবে সবচেয়ে যে বিষয়টা অবাক করার মতো সেটা হলো, সুপারশপে ক্রয়কৃত পণ্যের মূল্য বাইরের অন্যান্য খোলা দোকান থেকে কমপক্ষে ১৫-২০% কম পড়ত। এজন্য ক্রেতারা অধিক আগ্রহ নিয়ে সুপারশপের দিকে ঝুঁকত। চীনের একজন দিনমজুর, নি¤œবিত্ত, মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে অভিজাত শ্রেণির সবাই সুপারশপে বাজার করার সামর্থ্য ছিল। কিন্তু আমাদের দেশের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। দেশীয় রীতিতে যত বড় শপ, দাম তত বেশি। বাড়তি দামের সাথে অনেক সুপারশপে ভেজাল, মেয়াদত্তীর্ণ ও নি¤œমানের পণ্য রাখা হয় বলে অভিযোগ আছে। দিনমজুর বা নি¤œবিত্তের কথা তো বাদ, বাড়তি মূল্যের কারণে এখানকার সুপারশপে মধ্যবিত্তরাই বাজার করার ক্ষমতা রাখে না।

আমাদের দেশের সুপারশপে পণ্যের মোড়কে নির্ধারিত মূল্যের সাথে বাড়তি মূল্য হিসেবে ভ্যাট দিতে হয়। পণ্যের মোড়কে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বা এমআরপি লেখা থাকে। যেহেতু সর্বোচ্চ মূল্য লেখা থাকে সেহেতু মুদি দোকানদার ঐ মূল্যের বাড়তি মূল্য দাবি না করে বরং ক্রেতাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও দাম কমিয়ে রাখে। হ্যাঁ, সচারাচার মুদি দোকানে কোন পণ্য কিনতে গিয়ে আমরা সবাই এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু সুপারশপে একই পণ্যের মূল্যের সাথে বাড়তি ভ্যাট যোগ হয়। বছরে বছরে আবার ভ্যাটের এই হার পরিবর্তিত হয়। যেটি ১.৫ শতাংশ থেকে বর্তমানে ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, একজন ক্রেতা যদি সুপারশপে ২০০০ টাকার বাজার করে তাহলে সেখানে ২১০০ টাকা পরিশোধ করতে হয়। আর বাইরে থেকে একই টাকার বাজারে পণ্যের ধরন অনুযায়ী ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কম পড়ে।

অর্থাৎ একই কোম্পানির পণ্য। একই এলাকায় বেচা-বিক্রি হচ্ছে। গায়ের দামও এক। কিন্তু পণ্যটি কিনতে গিয়ে ক্রেতাকে একেক জায়গায় একেক দাম দিতে হচ্ছে । সচেতন ভোক্তাদের এই বৈষম্যের পথে ঠেলে দিয়েছে বাড়তি ভ্যাট ওরফে অতিরিক্ত মূল্য সংযোজন কর। এই বাড়তি ভ্যাট দিয়ে সারাদেশের ভোক্তাদের সুপারশপ বিমুখ করা হচ্ছে। এর ফলে বেসরকারি খাতে আধুনিক, উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে পণ্য বেচাকেনার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা ভেস্তে যেতে বসেছে। সরেজমিন দেখা যায়, মহল্লার দোকান কিংবা জেনারেল স্টোর থেকে পণ্য কিনলে ক্রেতাকে বাড়তি কোনও ভ্যাট দিতে হচ্ছে না। অথচ, পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাবিক্রি করা সুপারশপ থেকে কিছু কিনতে গেলেই দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ ভ্যাট। এভাবেই বছরের পর বছর পরোক্ষ করের মাধ্যমে সুপার শপের ক্রেতাদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে। এতে সুপারশপ থেকে সরকার রাজস্ব পেলেও ক্রেতারা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।

একই পণ্য বাইরের চেয়ে সুপারশপ থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে কে চায়? এই ভ্যাটের কারণে সুপারশপের গ্রাহক বাড়ছে না। সুপারশপের সংখ্যাও বাড়ছে না। অন্যদিকে সুপারশপগুলো ক্রেতাদের থেকে আদায়কৃত ভ্যাট সঠিকভাবে সরকারকে বুঝিয়ে দিচ্ছে কিনা সে বিষয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিষ্ঠান প্রধানরা ক্রেতাদের থেকে আদায়কৃত ভ্যাটের সমপরিমাণ অর্থ রাজস্ব খাতে জমা দিচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন না। এক্ষেত্রে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে বলে তাদের ধারণা। পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন না হওয়া পর্যন্ত এই ভ্যাট ফাঁকি কমবে না বলে মন্তব্য করেছে। প্রসঙ্গত, স্বর্ণের দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ ২৫টি সেবাখাতে ইলেক্ট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার (ইসিআর) বা ইলেকট্রনিক ফিসকেল ডিভাইস (ইএফডি) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিনামূল্যে এনবিআর থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইসিআর বা ইএফডি মেশিন সরবরাহ করার কথা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ভ্যাট আইন কার্যকর হওয়ার পরে বহু বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত মেশিন সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। ইসিআর বা ইএফডি মেশিনের বালাই নেই অধিকাংশ জেনারেল স্টোরে। গুরুত্বপূর্ণ এই মেশিন না থাকার কারণে জানা যাচ্ছে না দোকানগুলোতে প্রতিদিন কত টাকার লেনদেন হচ্ছে বা কী পরিমাণ ভ্যাট আদায় হচ্ছে। ফলে জনগণের থেকে আদায়কৃত ভ্যাটের একটা অংশের উপর স্টোরগুলোর মালিক পক্ষও ভাগ বসাচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন সরকার জেনারেল স্টোরগুলো থেকে রাজস্ব পাচ্ছে না, অন্যদিকে সুপারশপগুলো ক্রেতা হারাচ্ছে। মাঝ দিয়ে জনগণই ভুক্তভোগী হচ্ছে। জনগণের উপর চাপানো বাড়তি ভ্যাটের বোঝা দিনকে দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে।

উন্নত দেশগুলোতে সুপারশপের ব্যবসাকে উৎসাহিত করতে সরকার শুল্ক, কর ও ভ্যাটে ছাড় দিয়ে থাকে। আমেরিকা, কানাডাসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই শুল্ক কর ও ভ্যাটে ছাড়সহ সুপারশপের ব্যবসায় বিভিন্ন সরকারি সুবিধা রয়েছে। অথচ, বাংলাদেশে সুপারশপের ক্রেতাদের ওপর ভ্যাট নামক অস্ত্র দিয়ে নির্যাতন করা বেড়েই চলেছে। দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের খরচে ভারসাম্য রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার সুপারস্টোরের ক্রেতাদের ওপর অতিরিক্ত কর চাপিয়ে দিয়েছে।

সময়ের পরিক্রমায় সুপারশপের প্রয়োজনীয়তা আমাদের দেশে অপরিহার্য। ক্রেতাদের উপর চাপানো বাড়তি এই ভ্যাট প্রত্যাহার করলে সুপারশপের ক্রেতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে এটা নিশ্চিত। দেশ উন্নত হচ্ছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেইসাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে সৌখিনতা। স্মার্ট দেশের সকল পদ্ধতি স্মার্ট হওয়া বাঞ্ছনীয়। যে কোনো নতুন ব্যবসা কিংবা সেবার শুরুতে একটু বিশৃঙ্খল পরিবেশ থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। সময়ের পরিক্রমায় সেটা মানিয়ে যায়। আমাদের বিশ্বাস, অল্প সময়ের মধ্যে সুপারশপগুলো আরো পেশাদারী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাস্টমার সার্ভিস দেবে। অনিয়মগুলো দূর হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের সঠিক নীতিমালা ও যথাযথ নজরদারি। সুপারশপগুলোর মালিকদের আরো বেশি ক্রেতাবান্ধব মানসিকতা থাকা প্রয়োজন। আইন করে মানুষকে ভালো করা যায় না। দরকার ব্যবসায়িক সততা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা। সুপারশপের পরিধি যত বড় হবে মানুষের কর্মসংস্থানও পাল্লা দিয়ে বাড়বে। এতে বেকারত্ব কমবে। দেশের অর্থনীতিতে গতি আসবে।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট।
[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নারাইন নৈপুণ্যে লাক্ষ্মৌর বিপক্ষে বড় জয়ে শীর্ষে কলকাতা

নারাইন নৈপুণ্যে লাক্ষ্মৌর বিপক্ষে বড় জয়ে শীর্ষে কলকাতা

লিভারপুলের বিপক্ষে হেরে অস্বস্তিতে টটেনহ্যাম

লিভারপুলের বিপক্ষে হেরে অস্বস্তিতে টটেনহ্যাম

অনিয়ন্ত্রিত মুদ্রাস্ফীতি, ঋণের ঝুঁকি ও প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি

অনিয়ন্ত্রিত মুদ্রাস্ফীতি, ঋণের ঝুঁকি ও প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি

ডিবি কার্যালয়ে মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী

ডিবি কার্যালয়ে মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী

লক্ষ্যটা নাগালেই রাখল বাংলাদেশ

লক্ষ্যটা নাগালেই রাখল বাংলাদেশ

ইসলামী শিক্ষা নিয়ে যে কোন দূরভিসন্ধি রুখে দিতে হবে পীর সাহেব চরমোনাই

ইসলামী শিক্ষা নিয়ে যে কোন দূরভিসন্ধি রুখে দিতে হবে পীর সাহেব চরমোনাই

জনসমর্থন না থাকায় বিএনপি নির্বাচন থেকে দূরে থাকছে: কুষ্টিয়ায় হানিফ

জনসমর্থন না থাকায় বিএনপি নির্বাচন থেকে দূরে থাকছে: কুষ্টিয়ায় হানিফ

উখিয়া ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা যুবককে জবাই করে হত্যা

উখিয়া ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা যুবককে জবাই করে হত্যা

ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী কারিকুলাম প্রত্যাখ্যান করুন

ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী কারিকুলাম প্রত্যাখ্যান করুন

শাহজালালে তিনদিন ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

শাহজালালে তিনদিন ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

মুস্তাফিজকে ছাড়াই চেন্নাইয়ের বড় জয়

মুস্তাফিজকে ছাড়াই চেন্নাইয়ের বড় জয়

সুদহার শিগগিরই বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হবে: গভর্নর

সুদহার শিগগিরই বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হবে: গভর্নর

মোদির মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণায় এবার উপজীব্য ভোট জিহাদ, তারপর কী?

মোদির মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণায় এবার উপজীব্য ভোট জিহাদ, তারপর কী?

‘বিশ্ব কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য দিবস ২০২৪’ পালন করলো এনার্জিপ্যাক

‘বিশ্ব কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য দিবস ২০২৪’ পালন করলো এনার্জিপ্যাক

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি. এর শরি‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির ৪৪তম সভা অনুষ্ঠিত

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি. এর শরি‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির ৪৪তম সভা অনুষ্ঠিত

দুই দিনে সোনার দাম বাড়ল ১৭৮৫ টাকা

দুই দিনে সোনার দাম বাড়ল ১৭৮৫ টাকা

এসআই পদে বয়সসীমা ৩০ করা হোক

এসআই পদে বয়সসীমা ৩০ করা হোক

ইউরোপীয় রাজনীতিতে শরণার্থী প্রসঙ্গ

ইউরোপীয় রাজনীতিতে শরণার্থী প্রসঙ্গ

হিন্দুত্ববাদের কবলে আমাদের পাঠ্যবই

হিন্দুত্ববাদের কবলে আমাদের পাঠ্যবই

রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব কী?

রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব কী?