ঢাকা   রোববার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪ | ১২ কার্তিক ১৪৩১

তারেক রহমানের ঐতিহাসিক দায়

Daily Inqilab মাহবুব নাহিদ

২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম

কালের বিবর্তনে দেশে বহু ঘটনার জন্ম হয়েছে। বহু নেতা এসেছেন, লড়েছেন, জিতেছেন অনেক কিছু; কেউ কেউ আবার হারিয়েও গেছেন। নেতার সাথে সাথে এসেছে অনেক রাজনৈতিক দলও। রাজনৈতিক দলের সাথে সন্নিবেশ হয়ে মিশে যায় অনেক পরিবারের নাম। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে গেঁথে আছে জিয়া পরিবারের নাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান ঘোষক জেড ফোর্সের মহানায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া এই সংগঠন। বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়া একটি দলের নাম বিএনপি। বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির সকল সংগ্রামের সাথে জড়িয়ে থাকা নাম জিয়া পরিবার। দেশের মানুষের যখন যেভাবে প্রয়োজন হয়েছে, জিয়া পরিবার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আজও বটবৃক্ষের মতো দাঁড়িয়ে আছে, মাথার উপরে ছায়া হয়ে। হয়তো নামের জায়গায় পরিবর্তন এসেছে জিয়াউর রহমান থেকে খালেদা জিয়া হয়ে, আজ তারেক রহমানের কাছে এসেছে, কিন্তু পরিবারটি ওই একই আছে।
জিয়া পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার শুরু স্বাধীনতার মহান ঘোষক জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। বাংলাদেশের আকাশে তখন আঁধারের ঘনঘটা। দেশের প্রত্যেকটি মানুষের মনের গহীনে যখন বাংলাদেশ নামক দেশ হয়ে ওঠার যাতনা, তখন এল একটি ঘোষণা। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে চমকে দিয়েছিলেন একজন মানুষ, তাঁর নাম মেজর জিয়া। যোদ্ধাদের জন্য ঘোষণাই সব নয়, যুদ্ধও যে করতে হবে, সেটিও তিনি করেছেন, সেক্টর কমান্ডার হয়ে সম্মুখযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন।

দেশ স্বাধীন হলো, অনেক ঘটনার পট পরিবর্তন হলো। একে একে ঘটতে থাকলো অনেক কিছুই। শেখ মুজিব ক্ষমতা নিয়ে দেশকে বানিয়ে ফেললেন একটি আস্ত জেলখানা। তিনি নিহত হলেন। একের পর এক ঘটনা ঘটলো। একসময় জিয়া বন্দী হলেন, কিন্তু সেই বন্দীদশা মুক্তি করে আনলো সিপাহী জনতা। সেই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট ছিল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা। সেই আদর্শের আদর্শিক নেতা হিসেবে কোটি মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় জায়গা করে নিলেন জিয়া। দেশের দায়িত্ব নিয়ে চমকে দিলেন। শুধু দেশের নয়, জিয়া হয়ে গেলেন বিশ্বনেতা। বহুদলীয় গণতন্ত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশ স্বাদ পেল বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের। আজও সেই জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে অটল জিয়া পরিবার। জিয়া পরিবার মনে করে, দেশের বন্ধু অনেকেই থাকতে পারে, কিন্তু প্রভূ কেউ নয়।

জিয়া দেশের দায়িত্ব নিলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের উদাহরণ তৈরি করলেন, বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিলেন নিজের নাম, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করে দেশকে দিলেন গণতন্ত্রের স্বাদ!

যে মানুষটাকে এই দেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক বলা হয়, সেই মানুষটাকে বেশিদিন পেলো না দুর্ভাগা দেশ! দেশের শত্রুদের সহ্য হয়নি, ঘাতকের বুলেটে শহীদ হয়েছেন জিয়া। আবারো হায়েনাদের হানা দেশের মাঝে, আবারো দীর্ঘ নয় বছরের স্বৈরশাসন। ঝড় থেমেছে, স্বৈরশাসক নেমেছে। এমনি এমনিই কি নেমেছে? নিকষ কালো আঁধারের বুক চিঁরে বাংলাদেশের বুকে নেমে এলো এক আলোকবর্তিকা, সেই মানুষটির নাম আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অগ্রসেনানী ছিলেন তিনি। দেশের মানুষও সেই লড়াইয়ের প্রতিদান দিয়েছেন। লড়াইয়ের পরে নির্বাচনে মানুষ বেছে নেয় তাদের প্রিয় দল বিএনপিকে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও বহুবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। কিন্তু বিশ্বের বুকে এমন নেতা আর হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি গণতন্ত্রের প্রশ্নে, দেশের প্রশ্নে, দলের প্রশ্নে এবং মানুষের প্রশ্নে কখনোই আপোষ করেননি, কখনো পিছপা হননি। শত বাঁধা-বিপত্তির মাঝেও এগিয়ে গেছেন দুরন্ত দুর্বার গতিতে। দেশে এনেছেন সংসদীয় গণতন্ত্র। দেশের গণতন্ত্র রক্ষা ও অগ্রযাত্রার পথে লড়াই করে গেছেন অবিরাম।

জিয়া পরিবারের ওপর নানা ষড়যন্ত্র ও নির্যাতনের ঘটনা সর্বজনবিদিত। ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকারের আমলে বেগম খালেদা জিয়ার বন্দিত্ব সেই ষড়যন্ত্রের একটি কৌশল ছিল, যা আসলে মানবতার প্রতি অবিচারের চিত্র ফুটিয়ে তোলে। তৃণমূলের প্রত্যেকটা মানুষের কাছে ছুটে যাওয়া নেতা তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানকে নির্যাতন করে ফ্যাসিস্ট সরকার মনে করেছিল, এই পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার মাধ্যমে তাঁরা জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাকে নির্মূল করতে পারবে। কিন্তু তারা জানতো না, জিয়া পরিবার কখনো শেষ হয় না; সে মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবে। সে দেশের জন্য, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়, উন্নয়নকল্পে সর্বদা নিয়োজিত।

ষোল বছর ধরে জেল, জুলুম ও অত্যাচারের পরেও বিএনপি আজও আগের মতোই দৃঢ়। দেশের জনসাধারণের মধ্যে তারেক রহমানের নেতৃত্বে এক অনন্য প্রেরণা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি আজ একটি শক্তি, যেটি দেশের কোটি কোটি মানুষের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করছে। তারেক রহমানের এই সংগ্রাম শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিরোধ নয়; এটি একটি সামাজিক আন্দোলন, যা মুক্তি ও ন্যায়ের পক্ষে।

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ছিল বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের প্রাণের একটি জোরালো কণ্ঠস্বর। এই সংগ্রাম কেবল রাজনৈতিক প্রতিরোধের এক প্রকাশ ছিল না, বরং দেশের মানুষের গভীর আশা ও আকাক্সক্ষার একটি অবিরাম ¯্রােত। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে লড়াই করে আসছে, যেখানে হাজারো সাহসী মানুষের জীবন ব্যয় হয়েছে, লাখো নেতা-কর্মী জেল খেটেছে, এবং তাদের অসহনীয় অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু তাদের মানসিকতা কখনও ভেঙে যায়নি, কারণ তাদের পেছনে ছিল এক অদম্য শক্তি—তারেক রহমান।
তারেক রহমান হচ্ছেন সেই প্রত্যাশার প্রতীক, যিনি দেশের স্বার্থের জন্য কখনো আপোষ করেননি। তিনি সংকটে কখনো পিছপা হননি, বরং বিপদকে স্বাগত জানিয়ে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। মানুষ যখন বলেছিল বিএনপি ভেঙে যাবে, তখন বাস্তবে দেখা গেছে, একসঙ্গে দাঁড়িয়ে লড়াই করার সাহসী নেতৃবৃন্দ নিজেদের অটুট রেখেছে, ১৫৫১ জন মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যার মধ্য দিয়ে সরকারের চক্রান্তগুলো প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু বিএনপির দৃঢ়তা এবং একতার কথা কখনো ভুলে যায়নি। বিদেশে থেকে তৃণমূলে পৌঁছে দিয়েছেন নির্দেশনা, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রেখে আন্দোলন পরিচালনা করেছেন, তৈরি করেছেন সবাইকে সাথে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের প্রেক্ষাপট।

বিএনপির শক্তির আঁধার তারেক রহমান, যিনি নিপীড়নের বিরুদ্ধে এক অবিচল কণ্ঠস্বর। তাঁর নেতৃত্বে আন্দোলন এবং সংগ্রাম যেন অনন্য এক প্রতিশ্রুতি, একটি সংগ্রামী মনোভাবের স্ফূরণ। মানুষ জানে, সংগ্রামের এই পথে চলতে গেলে রক্ত ও ঘামের মূল্য দিতে হয়, এবং তারা প্রস্তুত। দেশবাসীর প্রতি তাঁর অনমনীয় অঙ্গীকার ও উদ্যমই আজ বাংলাদেশের মুক্তির আশা, যা এখনও জীবন্ত। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের বহু আগে, তারেক রহমান ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের এক দফা দাবি উত্থাপন করে দেশের রাজনৈতিক আকাশে এক চিলতে আশা জাগিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে সারা দেশে যে অদম্য আন্দোলনের ঢেউ উঠেছে, তা শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং মানুষের অধিকার ও মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। তিনি ফ্যাসিস্টবিরোধী সকল রাজনৈতিক শক্তিকে একত্রিত করে একটি ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশনা দিয়েছেন। এই সমন্বয়ের ফলস্বরূপ, আন্দোলন জনস্রোতে পরিণত হয়েছে, যেখানে মানুষের হৃদয়ে একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশের স্বপ্ন জেগে উঠেছে।

দেশের মানুষ আজ তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি আলোকিত ভবিষ্যতের প্রত্যাশা করছে। তাঁদের প্রতিশ্রুতি, তাঁদের সংগ্রাম, এটাই আমাদের পরিচয়; একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য, যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এই সংগ্রাম কেবল একটি রাজনৈতিক লক্ষ্য নয়, এটি সকলের অন্তরের গভীর আকাক্সক্ষা, যেখানে মানুষের কষ্ট, সংগ্রাম এবং আশা একসাথে মিশে যায়। আমরা জানি, এই যুদ্ধে আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে হবে। কারণ, আমাদের সংগ্রামই আমাদের ভবিষ্যত গড়বে।

লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ভিনিসিয়ুসের হাতে উঠছে ব্যালন ডি'অর?

ভিনিসিয়ুসের হাতে উঠছে ব্যালন ডি'অর?

হল্যান্ডের গোলে জিতে সবার উপরে সিটি

হল্যান্ডের গোলে জিতে সবার উপরে সিটি

বেনাপোলে গৃহবধূকে বালিশ চাপায় শ্বাসরোধ করে হত্যা, আটক -৪

বেনাপোলে গৃহবধূকে বালিশ চাপায় শ্বাসরোধ করে হত্যা, আটক -৪

এত সংস্কারের কথা হচ্ছে, কিন্তু গরিব মানুষের কথা ভাবছি না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

এত সংস্কারের কথা হচ্ছে, কিন্তু গরিব মানুষের কথা ভাবছি না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

সিটি ব্যাংক এর এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্টে দেয়া যাবে মেটলাইফের প্রিমিয়াম

সিটি ব্যাংক এর এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্টে দেয়া যাবে মেটলাইফের প্রিমিয়াম

বাজার পরিদর্শনে উপদেষ্টা আসিফ

বাজার পরিদর্শনে উপদেষ্টা আসিফ

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা

জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা

সুন্দরগঞ্জে গৃহবধূর একসঙ্গে তিন ছেলের জন্ম, দর্শকের উপচে পড়া ভীর

সুন্দরগঞ্জে গৃহবধূর একসঙ্গে তিন ছেলের জন্ম, দর্শকের উপচে পড়া ভীর

গৌরনদীতে শিক্ষকের চড়থাপ্পরে পরীক্ষাথীর্র কানের পর্দা ফেটে গুরুতর আহত

গৌরনদীতে শিক্ষকের চড়থাপ্পরে পরীক্ষাথীর্র কানের পর্দা ফেটে গুরুতর আহত

প্রেসিডেন্টের অপসারণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপি

প্রেসিডেন্টের অপসারণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপি

নোয়াখালীতে গাছের ঢাল কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যু

নোয়াখালীতে গাছের ঢাল কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যু

প্রেসিডেন্ট অপসারণ: ‘পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত’

প্রেসিডেন্ট অপসারণ: ‘পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত’

ডিএমপিতে যুক্ত হচ্ছে ভারতের মাহিন্দ্রা গাড়ি

ডিএমপিতে যুক্ত হচ্ছে ভারতের মাহিন্দ্রা গাড়ি

অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বিপ্লবী সরকার’ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বিপ্লবী সরকার’ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

গাজী ছিলেন একজন আপোষহীন সাংবাদিক নেতা - সিকৃবি ভিসি ড. মো. আলিমুল ইসলাম

গাজী ছিলেন একজন আপোষহীন সাংবাদিক নেতা - সিকৃবি ভিসি ড. মো. আলিমুল ইসলাম

মারাত্মক শব্দদূষণ

মারাত্মক শব্দদূষণ

দলে গণতন্ত্র চর্চা অপরিহার্য

দলে গণতন্ত্র চর্চা অপরিহার্য

বিএনপি এখন সংশোধিত -জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি

বিএনপি এখন সংশোধিত -জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি

রফতানির বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে

রফতানির বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে

আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা

আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা