দক্ষ জনশক্তি রফতানিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে
১৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০২ এএম

সরকার ১৯৭৬ সালে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) প্রতিষ্ঠা করে। এ সংস্থার উদ্দেশ্যে হলো, দেশের অভ্যন্তরীণ জনশক্তির চাহিদা পূরণসহ বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। বিএমইটি বৈদেশিক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দেশের জনশক্তির যথাযথ ব্যবহার সংক্রান্ত কৌশল ও সামগ্রিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। বিএমইটির অধীনে ৪২টি জেলাকর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, চারটি বিভাগীয় কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, ৪৭টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চারটি ইনস্টিটিউট অফ মেরিন টেকনোলজি ও তিনটি শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ অফিস আছে। কোনো প্রবাসী কর্মী মারা গেলে লাশ পরিবহন ও দাফনের জন্য তাঁর পরিবার কিছু অর্থ পায়। এছাড়া ক্ষতিপূরণ বাবদও কিছু পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়। তবে যে দেশে তিনি মারা যান, সেই দেশে কর্মক্ষেত্রে মারা গেলে কী ক্ষতিপূরণ আছে, তা জানতে বা সেটা আদায় করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না। আমাদের প্রবাসীদের ‘কমন’ অভিযোগ হলো, তাঁরা যখন বিদেশে কোনো বিপদে পড়েন, আইনগত ঝামেলায় পড়েন বা কোনো কারণে আহত ও অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন তাঁরা আমাদের দূতাবাসগুলোর কোনো সহায়তাই নাকি পান না।
প্রবাসে কর্মরত নাগরিকদের স্বদেশে প্রেরিত অর্থকে রেমিটেন্স বলে। বিদেশে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী ও পেশাজীবীরা তাদের অর্জিত অর্র্থের একটা অংশ ব্যাংকের মাধ্যমে পরিবারের কাছে পাঠায়। এই অর্থ কেবল তাদের পরিবারের প্রয়োজনই মিটায় না, কিংবা তাদের জীবনযাত্রার মানই বাড়ায় না, নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের একটি বড় অংশ আসছে প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্স থেকে। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, মিসর, লিবিয়া, মরক্কোসহ অনেক দেশে বাংলাদেশের শ্রমিক ও পেশাজীবীরা কাজ করছেন। একইভাবে নিকট ও দূর প্রাচ্যের মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোতেও বাংলাদেশের বহু মানুষ নানা পেশায় নিয়োজিত আছেন। ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকাতেও বহু বাংলাদেশি চাকরি ও ব্যবসাসহ নানা ধরনের কাজ করছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ও বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের সংখ্যা ছিল ৪.৭৮ লক্ষ এবং তাদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ (রেমিটেন্স) ছিল ১৮,২০৫.০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে এই রেমিটেন্সের পরিমান ছিল ৯৬৮৯ মিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, ২০০৮ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রাপ্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২তম। ২০০৯ সালে তা ৮ম স্থানে উন্নীত হয়। এ সময় সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ছিল দ্বিতীয়। বিশ্ব মন্দা পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় ধরনের কোনো সংকটের মধ্যে না পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রবাসীদের পাঠানো বিপুল অঙ্কের রেমিটেন্স। (উৎস: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২০)
প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র তৈরি করলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-কে গতিশীলতার সঙ্গে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে প্রবাসীদের জন্য বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহ করা যেতে পারে। এতে করে কর্মসংস্থান যেমন তৈরি হবে তেমনি প্রবাসীরা তাদের পাঠানো অর্থও উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করে অনেক বেশি লাভবান হবে দেশ। অথচ, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত চোখে পড়ার মতো কোনো উদ্যোগ নেই। যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে চাইছে, তাতে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কর্মসংস্থান বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। প্রবাসীদের জন্য যত বেশি সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে, ততবেশি রেমিট্যান্স আসবে দেশে। আর বেশি রেমিট্যান্স-প্রবাহ সচল থাকলে দেশের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি ঘটবে।বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, স্কুল-মাদ্রাসা, মসজিদ, হাসপাতাল স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা-েও এ অর্থ ব্যয় হচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচন ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের ভূমিকা অসাধারণ। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য মতে, রেমিট্যান্স আয়ের প্রায় ৬৩ শতাংশ ব্যয় হয় দৈনন্দিন খরচের খাতে। এতে ওই পরিবারগুলো দারিদ্র্য দূর করতে পারে। রেমিট্যান্স পাওয়ার পরে একটি পরিবারের আয় আগের তুলনায় ৮২ শতাংশ বাড়ে। রেমিট্যান্স সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পারে বিনিয়োগের মাধ্যমে। প্রবাসীদের পরিবার-পরিজন অধিকাংশ গ্রামে বসবাস করেন। ফলে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় ও সঞ্চয় বাড়ার কারণে গ্রামীণ অর্থনীতির কর্মকা-ে গতিশীলতা বাড়ছে।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন দক্ষ কর্মী। দক্ষ কর্মী তৈরিতে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া চলবে না। দক্ষ কর্মী তৈরি করতে যা করা দরকার সেটা এখন আমাদের করতে হবে। প্রথমত কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি তাদের প্রণোদনা দেওয়ার মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো সম্ভব। বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের চাইতে খরচ কম হয়। তবে রেমিট্যান্সের বড় অঙ্ক হুন্ডির মাধ্যমে আসে। রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বাড়িয়েও অবৈধ হুন্ডি বন্ধ করা যাচ্ছে না। এর জন্য প্রয়োজন কর্মীবান্ধব হওয়া। কর্মীবান্ধব হলেই বৈধ পথে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব হবে। এতে হুন্ডি বন্ধ করা সম্ভব না হলেও এর প্রবণতা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। এখান থেকেই সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে। সৌদিতে বিভিন্ন মেগাপ্রজেক্টের কাজ হচ্ছে। এর জন্য অনেক দক্ষ কর্মী প্রয়োজন। বাংলাদেশ থেকে যদি দক্ষ কর্মী পাঠানো যায় তবে রেমিট্যান্স আরো বৃদ্ধি পাবে। জীবনমান উন্নয়ন এবং আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর অনেক লোক বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন এবং উদয়াস্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির ভিতকে মজবুত করে বৈদেশিক রিজার্ভকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন তাদের অধিকাংশই অদক্ষ শ্রমিক। এ বিদেশগামী শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে বিদেশে পাঠানো হলে তারা আরও ভালো বেতনে চাকরি লাভের সুযোগ পাবেন। দেশও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবে। প্রতিবেশী ভারত বিশ্বের প্রধান রেমিট্যান্স আয়কারী দেশ। এর পরই রয়েছে চীন। এসব দেশ প্রশিক্ষিত ও দক্ষ লোকজনকে বিদেশে পাঠানোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষে অবস্থান করছে।
প্রবাসজীবনের নানা যন্ত্রণা-কষ্ট, পাওয়া-না পাওয়া, আনন্দ-বেদনা নিয়ে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও বাবা-মা-স্ত্রী-সন্তানের ভালোবাসাকে তারা ত্যাগ করে হাজার হাজার মাইল দূরে থেকে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছেন আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। প্রবাসী শ্রমিকেরা নিজেদের সাধ-আহ্লাদ সবকিছু বিসর্জন দেন শুধু পরিবারের কথা চিন্তা করে। অনেক ঘাম ঝরানো পরিশ্রমে জমানো অর্থ দেশে পাঠিয়ে থাকেন। অক্লান্ত পরিশ্রমে জীবন কিংবা ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে চলেন কেবলই একটু ভালো থাকার প্রত্যাশায়। এদিকে মাস শেষ না হতেই পরিবারের সদস্যরা নানা বায়না নিয়ে অপেক্ষায় থাকে প্রবাসে থাকা মানুষটি টাকা পাঠাবে। সবার চাহিদা মেটাবে। বিদেশের মাটিতে যাওয়ার সময়ও পরিবারের থেকে ধারদেনা করে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো। কিন্তু বিদেশে যাওয়ার পরবর্তী সময়ে পরিবারের খরচ পাঠানোর পরে নিয়মিত ভিসা পাসপোর্ট করাতে যেয়ে হিমশিম খেতে হয় তাদের। দালালের খপ্পরে পড়ে এক সময় ভিসা পাসপোর্ট সবই হারাতে হয়। আবার আমাদের দূতাবাসের পক্ষ থেকেও সঠিক সময়ে সঠিকভাবে সহযোগিতা না পাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ প্রবাসীদের। অনেক সময় দূতাবাসের অসহযোগিতা কারণে কাঙ্ক্ষিত সুযোগ-সুবিধা ও সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিশ্ব শ্রমবাজারে আজ আমাদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত, চীন, নেপাল, ফিলিপাইন এবং শ্রীলঙ্কা। তুলনামূলক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এসব দেশের শ্রমিকরা আমাদের দেশের তুলনায় বেশি দক্ষ। বিশ্ব শ্রমবাজারে আমাদের পাল্লা দিতে হলে অবশ্যই দক্ষ শ্রমিক তৈরি ও নিয়োগে সবচেয়ে বেশি মনোযোগী হতে হবে। এক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা অনুযায়ী যথাযথ সরকারি উদ্যোগ নিতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়েছে। দক্ষ জনশক্তি রফতানি হলে প্রবাসী আয় বর্তমানের তুলনায় অনেক বাড়বে। অভিবাসনের ক্ষেত্রে দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই। তাই কর্মীদের গুণগতমানের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রকল্পে অভিবাসন ব্যবস্থাপনার ওপর কার্যকর পরিকল্পনাও প্রণয়ন করবে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রতিবছর ৭ থেকে ৮ লাখ কর্মী বিভিন্ন দেশে চাকরি নিয়ে যাচ্ছে। দক্ষতার অভাবে তারা অনেক কম বেতনে চাকরি করছেন। অথচ অন্য দেশের কর্মীরা দক্ষতার কারণে বেশি বেতন পাচ্ছেন। দেশের প্রায় এক কোটি কর্মী বিদেশে চাকরি করলেও রেমিটেন্সের পরিমাণ বাড়ছে না। এক্ষেত্রে আমাদের একটি সুষ্ঠু ও সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন নিয়ে এগোতে হবে, যার মাধ্যমে দেশের আরও অধিক সংখ্যায় শ্রমিক কেবল মালয়েশিয়া কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমবাজারে প্রবেশের চেষ্টা করলে আন্তর্জাতিক পরিম-লে আমাদের জনশক্তি রপ্তানি বাজার মসৃণ করতে পারে। করোনাকালে বিশ্বমন্দা পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিদিনই প্রবাসী শ্রমিক ভাইয়েরা দেশে ফেরত এসেছে। এ সব বিদেশফেরত প্রবাসী শ্রমিকের অধিকাংশ দেশে আটকে থাকার কারণে তাদের সঞ্চিত অর্থ খরচ হয়ে যায় এবং অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আর বিদেশে যেতে পারেননি।
বিদেশগামীদের অধিকাংশই অদক্ষ হওয়ায় বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকরা হাড়ভাঙা খাটনি করেও ন্যায্য বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রবাসীরা প্রায় সময় নানাভাবে বঞ্চনা, শোষণ, অবহেলা ও নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। কখনও কখনও নির্যাতিত হচ্ছেন আবার অনেকেই ন্যায়বিচার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। কোনো কোনো দেশের কারাগারে বাংলাদেশিরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন। বিদেশে শ্রমিক প্রেরণের ক্ষেত্রে শ্রমিকরা যাতে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য সরকারের দেশ-বিদেশে তদারকি ব্যবস্থাও জোরদার করা আবশ্যক। প্রায় সময় অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে বিদেশ যেতে নৌকাডুবির ঘটনায় অনেক বাংলাদেশির করুণ মৃত্যু হয়েছে। থাইল্যান্ডের গভীর জঙ্গলে পাওয়া গিয়েছিল অসংখ্য গণকবর। টেকসই উন্নয়ন এবং দরিদ্রতা কমাতে হলে বৈশ্বিক অভিবাসন বাজারে অব্যাহতভাবে জনসম্পদ পাঠানো এবং নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে দেশ-বিদেশে সরকারি মনিটরিং প্রয়োজন।
পরিশেষে দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি বৈদেশিক রেমিট্যান্সের গুরুত্বকে অনুধাবন করে জনশক্তি রপ্তানি খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে সরকারিভাবে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে জনসংখ্যার সমস্যাকে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তর করতে পারলে দেশের বেকার সমস্যার নিরসনসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি বিকাশে বিশাল সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে বিদেশ-গমনেচ্ছুদের জন্য প্রত্যেক জেলাতে একটি করে বিশেষায়িত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা এবং প্রশিক্ষিত শ্রমিকদের বিদেশ গমনের জন্য সহজশর্তে সরকারিভাবে ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করে দেয়া। জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা হলো, যারা বিদেশে যেতে চায় তাদের টাকার অভাব। এ সমস্যা দূরীকরণে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে কাজে লাগানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকার একটি সমন্বিত পরিকল্পনা ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে, যে নীতিমালায় প্রবাসীদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স-প্রবাহ শক্তিশালী হবে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
লেখক: সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

পি কে হালদারের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

রমজানে পুরান ঢাকায় ইফতারির পাশাপাশি ভিড় থাকে স্থাপত্য দর্শনেও

নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডিবি পরিচয়ে কোটি টাকা ছিনতাই

ধর্ষণ ও নির্যাতন রোধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করুন: টিআইবি

এসএসসি-দাখিল পরীক্ষায় বসছে ১৯ লাখ শিক্ষার্থী

স্ত্রী-সন্তানসহ পাপন ও হানিফের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মেঘনা ব্যাংকের নতুন চেয়ারপারসন উজমা চৌধুরী

হাসিনার আস্থাভাজন সচিব ও আমলাদের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ

জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত ৮৫০ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন

জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশের শঙ্কা উত্তরণে ফ্যাসিস্টদের অপতৎপরতা রুখতে হবে

কৃষি বিপ্লব ঘটিয়ে দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে বিএনপি -কৃষকদলের আলোচনা সভায় বক্তারা

বেপরোয়া গাড়ি চাপায় নারীর মৃত্যু

অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে প্রিন্স

কলাপাড়ায় স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

রাজবাড়ীতে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ

মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক জুনায়েদের নেতৃত্বে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল

দখলে-দূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে কুমার নদ

ধামরাইয়ে বেপরোয়া মাটি ব্যবসায়ীরা

চিলমারী-রৌমারী রুটে ৯০ দিন ফেরি বন্ধ