উই রিভোল্ট : স্বাধীনতার ঘোষণা
২৬ মার্চ ২০২৫, ০১:৩০ এএম | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০১:৩০ এএম

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যোদ্ধা, বীর, বীরোত্তম। মহান স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি ভূষিত হয়েছিলেন ‘হিলাল-ই-জুরাত’ খেতাবে। মেজর জিয়াউর রহমান ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের পক্ষে লাহোর সীমান্তে ভারতীয়দের সাথে যুদ্ধ করেছিলেন। সেই যুদ্ধে বীরত্বের জন্য তিনি হিলাল-ই-জুরাত পেয়েছিলেন। অন্যদিকে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রাখার জন্য পেয়েছিলেন বীরোত্তম খেতাব। তিনি প্রকৃতপক্ষে ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী ইবনে আবু তালিব (রা.)-এর মতো অসীম শক্তি ও বীরত্বের পথীকৃত হয়ে উঠলেন মুক্তিযুদ্ধের সময়। আলী ইবনে আবু তালিব (রা.)-এর অসীম বীরত্বের জন্য মহানবী (সা.) তাঁকে ‘জুলফিকার’ তরবারি উপহার দিয়েছিলেন। খায়বরের যুদ্ধে কাফিরদের পরাজিত করে বিখ্যাত কামুস দুর্গ জয়ে অসাধারণ শৌর্যবীর্যের পরিচয় দেন। তাঁর বীরত্বে সন্তুষ্ট হয়ে মহানবী (সা.) তাঁকে ‘আসাদুল্লাহ বা আল্লাহর বাঘ’ উপাধিতে ভূষিত করেন। মক্কা বিজয়ের পতাকাও তিনি বহন করেছিলেন। ঠিক একইভাবে মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শন করে জিয়াউর রহমান দেশপ্রেমের উজ্জ্বল ও ব্যক্তিক্রমী দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের জনগণের কাছে এবং বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে সুপরিচিত। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, যা জাতীয় সংহতি দিবস নামে পরিচিত, এই ঘটনাটি ভবিষ্যতের বাংলাদেশের এই ব্যক্তিত্বকে প্রধান নেতাতে পরিণত করে। এই জনপ্রিয় নেতার স্বপ্ন, অবদান এবং সৃষ্টিকর্ম তাকে সার্বভৌম বাংলাদেশের জনগণের একান্ত আপনজনে পরিণত করেছিল। শহীদ জিয়ার শাসনকাল(সাড়ে তিন বছর) ৩০শে মে, ১৯৮১ সালে হত্যার মাধ্যমে শেষ হয়, তবুও ঈর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তাঁর ভাবনা-চিন্তা এবং অবদান তাঁকে বাংলাদেশের রাজনীতির অনন্য ব্যক্তিত্বে রূপান্তরিত করে। তিনি সার্বভৌম বাংলাদেশের আদর্শ, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রাণপুরুষ।
তিনি সাংবিধানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাকশালীয় সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে শৃঙ্খলিত করার পাশাপাশি স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। ১৫ই আগস্ট, ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মুজিব পরবর্তী সরকারকে কবরস্থ করে ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করার এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা অন্বেষণের উদ্দেশ্যে টেকসই আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরির পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল। পঞ্চম সাংবিধানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কেবল সংবিধানে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও মূল্যবোধ অন্তর্ভুক্ত করেননি, বরং প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীতে বাঙালি সেনা সদস্যদের মধ্যে অনেকেই তখন কর্নেল, মেজর পদবির সদস্য ছিলেন। জিয়া ছিলেন ভিন্ন। তার মধ্যে দেশপ্রেম তীব্র ছিল। গভীর কমিটমেন্ড ও প্রত্যয় থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন। গৌরবময় সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত থেকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে অমিত সম্ভাবনার মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। ‘জ্বালা রে মশাল জ্বাল অনল!/অগ্রযাত্রী রে সেনাদল, জোর কদম চল রে চল’Ñএকথা বলেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন।
মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণায় বিদ্রোহ করে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্যরা, ৮ম ইস্ট বেঙ্গল ছিল গুরুত্বপূর্ণ। মেজর জিয়া অষ্টম রেজিমেন্ট থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার স্বাধীনতার ঘোষণা জাতিকে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করেছিল এবং ঐক্যের উৎস হিসেবে কাজ করেছিল। মেজর জিয়া চাকরি, পরিবার ও জীবনের মায়া পরিহার করে সৈন্যদের পক্ষে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ফলে প্রাথমিকভাবে, হাজার হাজার ছাত্র-যুবকের সক্রিয় অংশগ্রহণে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআরের বাঙালি সৈন্যরা যুদ্ধের প্রেরণা পায়; উব্ধুদ্ধ হয় মুক্তিযুদ্ধে জীবনবাজি রেখে অংশগ্রহণ করতে। অতএব, স্বাধীনতার ঘোষণা এবং পরবর্তী যুদ্ধকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা অসম্ভব।
একাত্তরের মার্চ মাসের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন না। শেখ মুজিবের রাজনৈতিক নেতৃত্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ক্ষমতা চাওয়ার চেষ্টায় কেন্দ্রীভূত থাকলেও, স্বাধীনতার ধারণা তার এজেন্ডার অগ্রভাগে ছিল না। ২৫শে মার্চের গভীর রাতে যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র পূর্ব পাকিস্তানিদের উপর গণহত্যা চালাচ্ছিল তখন শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে নির্দেশনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে মেজর জিয়া, একজন দেশপ্রেমী সেনা কর্মকর্তা, ২৭শে মার্চ, ১৯৭১ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং জাতি অস্ত্র হাতে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। উদ্ভূতভাবে লক্ষণীয় স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার মেজর জিয়াকে সম্মান জানায়নি। চাকরি এবং পদমর্যাদায় সিনিয়র হওয়া সত্ত্বেও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাই-জনতার বিপ্লবে জিয়াউর রহমান সর্বস্তরের মানুষের মধ্যমণিতে পরিণত হন। সেনাবাহিনীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় অফিসার ছিলেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছিল। অভ্যুত্থান পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জিয়ার অজান্তেই জনমানস তাকে ভবিষ্যত বাংলাদেশের নেতা ঘোষণা করে। অপ্রতিদ্বন্দ্বীরূপে জিয়া সাধারণ মানুষের পছন্দেও ব্যক্তি হয়ে ওঠেন, কিন্তু তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেননি। পরিবর্তে তিনি রাষ্ট্রপতি সায়েমের অধীনে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল রাষ্ট্রপতি সায়েম জিয়ার কাছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। একাত্তরে যুদ্ধের ময়দানে থাকার সময় যুদ্ধের ধরণ এবং গতি নিয়ে তিনি ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ভারতের উপর খুব বেশি নির্ভরতা পছন্দ করতেন না। বলেছিলেন, ‘এটা আমাদের যুদ্ধ। আমাদের নিজেদের মতো করে লড়াই করা উচিত। অন্য কারো সুবিধার উপর নয়।’
যুদ্ধ পরিস্থিতি গভীর পর্যবেক্ষণ এবং জিয়ার সৈনিক মনের মনস্তত্ত্ব ও নেভিগেটিং পাওয়ার এক দুরন্ত অশনি সংকেত অনুভূত হয়। পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় মেজর জিয়া তার সহকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামে একাধিক বৈঠক করেন এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে বার্তা পাঠিয়ে জানান যে পাকিস্তানিরা বাঙালিদের নিরস্ত্রীকরণ এবং আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এবং তার পরামর্শ চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা কোনও পরামর্শ পাননি। অথচ এই কালসন্ধিক্ষণে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাঙালিদের নির্মূল করার জন্য অপারেশন সার্চ লাইট শুরু করে। সেই ভয়াল রাতে দাঁতে দাঁত চেপে গর্জন করেন মেজর জিয়া, ‘তাহলে আমরা বিদ্রোহ করি।’ সে রাতেই জিয়া কালুরঘাটে গিয়ে অন্য সেনাদের পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেন এবং তারা তীব্র সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হন। প্রাথমিক সফলতার পর ২৭শে মার্চ, ১৯৭১ তারিখে, জিয়া কালুরঘাট রেডিও স্টেশনে স্বাধীনতার বিখ্যাত ঘোষণা দেন- I Major Zia, ... do hereby declare [the] independence of Bangladesh.
১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল জিয়া রাষ্ট্রপতি হন। রাষ্ট্রপতি জিয়া সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ব্যক্তি যিনি ৩০ মে, ১৯৭৭ তারিখে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের হাতে তার রাষ্ট্রপতিত্ব তুলে দেন। শাসক হিসেবে মানুষের সাথে মিশে দেশগঠনে ভূমিকা রেখেছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া যে জনগণের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা পেয়েছেন (যা জানা গেছে যে ঢাকায় তার জানাজায় ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন)। মৃত্যুর অসাধারণ সৌন্দর্যে মৃত জিয়া জীবন্ত জিয়ার চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী রূপে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান পেয়ে গেল।
মুজিবের শাসনামলে দুর্নীতিমুক্ত সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া অকল্পনীয় ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান চতুর্থ সংশোধনী পাসের ঠিক আগে সংসদে স্বীকার করেন যে তাঁর সরকার ছিল চোরের খনি। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি জিয়া দুর্নীতি অভিযানকে একটি অনন্য মাত্রা দিয়েছিলেন। প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত, গতিশীল, দক্ষ এবং নিরপেক্ষ করার জন্য তার সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। প্রকৃতপক্ষে, রাষ্ট্রপতি জিয়া বিগত ৫৪ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে সেরা সরকার উপহার দিয়েছিলেন।
২৬ মে, ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়া তার ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গণভোটে এই কর্মসূচি ৯৮.৮৭% সমর্থন পায়। এই কর্মসূচিকে বিএনপির রাজনৈতিক এজেন্ডা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। মূলত দ্বিতীয় সংসদে বিএনপি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এই কর্মসূচিকে পুঁজি করে। জিয়া শহীদ হওয়ার পর ১৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আব্দুস সাত্তার জয়লাভ করেন। এর অনেক পরে ১৯৯১ সালে জিয়ার ১৯ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হন। এটি ছিল ১৯৯১ সালে বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার।
জিয়া সারা বাংলাদেশে পায়ে হেঁটে মানুষের দুঃখ দুর্দশা ও সমস্যা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া জন সমাবেশে বক্তৃতা করেছেন। যে দিকে হেঁটেছেন সেদিকেই ধানের শীষ এবং তার সহজ-সরল ব্যক্তিত্বের আলো ছড়িয়ে পড়েছিল। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ একটি জাতি হিসেবে বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং বাঙালি নাগরিকত্বের কারণে পরিচয় সংকটে ভুগছিল। বাঙালি জাতীয়তাবাদ নবজাত বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়ের একটি বিভ্রান্তিকর ধারণা ছিল। রাষ্ট্রপতি জিয়া জনগণকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ এবং বাংলাদেশী নাগরিকত্ব প্রদান করেন। তিনি সর্বদা বলতেন, ‘প্রথমে বাংলাদেশী হও এবং শেষেও বাংলাদেশী হও’।
আজকের যে বিএনপি, তার কর্মকা-ের সত্যিকার সম্পদ শহীদ জিয়া। দল হিসেবে টিকে থাকা, রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হওয়ার জন্য ১৯ দফা কিংবা আজকের ৩১ দফা সবই শহীদ জিয়ার জীবন ও কর্ম মথিত। তার রেখে যাওয়া সংগঠনের এক্সপান্ডেড রূপ হলো আজকের বিএনপি। জিয়া যাদের নিয়ে দল গড়েছিলেন তাদের অনেকেই এখন বেঁচে নেই। যারা আছেন তারাই এখন এ দলের ফোকাসড। আবার অনেকেই এসেছেন কিংবা চলে গেছেন কিন্তু শহীদ জিয়ার আদর্শে অধিকাংশ নেতা-কর্মীই দলের জন্য এখনো নিবেদিতপ্রাণ।
রাষ্ট্রপতি জিয়ার মধ্যে পরিবারতন্ত্র বা স্বজন প্রীতি ছিল না। সরকারের নিয়মিত কর্মকা-ের সব কিছুতে হস্তক্ষেপ করতেন না। খুবই সাধারণ জীবন-যাপন করতেন। তার খাদ্য ছিল ডাল-ভাত-সবজি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কঠোর ও সৎ জীবনযাত্রা ছিল কিংবদন্তিতুল্য। এমনকি তার সবচেয়ে বড় শত্রুও এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করতে পারে না। ৩০ মে, ১৯৮১ সালে বীর চট্টলার সার্কিট হাউসে বাংলাদেশের জননন্দিত নেতা জিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশ দেখতে পেল জুলিয়াস সিজারের মতো দেশপ্রেমিক এক মহানায়কের ট্রাজিক মৃত্যু। তিনি একটি স্যুটকেস ব্যবহার করতেন। সেটিও ছিল খুবই সাধারণ, ভাঙা ও পুরানো। তার মৃত্যুর পরে সেই ভাঙা স্যুটকেসে কী ছিল তা সকলের জানা। জিয়ার সততা ছিল অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
মূলত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্পার্টাকাসের মতো স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার জন্য একাত্তরে বলেছিলেনÑ‘উই রিভোল্ট’। তার এই আহ্বান স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। সারাদেশের মানুষ যুদ্ধে জয়লাভের হতাশ সম্ভাবনাকে প্রত্যাখ্যান করে স্বাধীনতার সূর্য সংগ্রামে নতুনভাবে রক্তমিছিলে জীবনবাজি রাখলেন। আসলে উই রিভোল্ড বলার সঙ্গে সঙ্গে দেশে-বিদেশে মুক্তিকামী মানুষ শিহরণ জাগরণে শরীর ও মনে এক বিদ্যুৎ স্পারকিং অনুভব করেছিল। এখানেই জিয়া হয়ে উঠেন অনন্য, অসাধারণ, সকলের চেয়ে ভিন্ন ও বড়। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হলো, যুদ্ধের পরে দেশ স্বাধীন হলো। মেজর জিয়া থেকে রাষ্ট্রনায়ক জিয়ার হাত ধরে গড়ে উঠল সাধারণ মানুষের মধ্যপন্থী এক সংগঠন- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। শহীদ জিয়ার দেশপ্রেম, সাহস, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন এবং সৎ প্রচেষ্টাÑসবই স্বাধীনতার সারণি বেয়ে তৈরি হয়েছিল এক চূড়ান্ত সেতুবন্ধন। মহান স্বাধীনতা দিবস ২৬ শে মার্চের এই দিনে বাংলাদেশের মানুষকে শৃঙ্খল মুক্ত করে স্বাধীনতা অর্জনের অগ্রনায়ক স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

এমবাপের জোড়া গোলে রিয়াল মাদ্রিদের জয়

দোষী প্রমাণিত হলে কি শাস্তি হতে পারে আনচেলত্তির?

আনুষ্ঠানিক বন্ধ ইউএসএআইডি

৯৫ বছরে এমন ভূমিকম্প দেখেনি থাইল্যান্ড

রাজতন্ত্রের দাবিতে নেপালে বিক্ষোভ সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ নিহত ২

ফিলিস্তিনপন্থি প্রতিবাদে ৩০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল

নালিতাবাড়ীতে ৯৫ ড্রেজার ধ্বংস কারাদণ্ড ৩ জন কে

ডিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপকে কাজে লাগাতে পারে পেন্টাগন

‘রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের জাতি ক্ষমা করবে না’

নাটক প্রেম ভাই

নাটক লাস্ট উইশ

ঈদে সায়েরা রেজার নতুন গান

ঈদ উপলক্ষে মুক্তি পেয়েছে অপার্থিবের প্রথম অ্যালবাম আবছা নীল কণা

নগরকৃষকদের নিয়ে কৃষকের ঈদ আনন্দ

হানিফ সংকেতের ঈদের নাটক ‘ঘরের কথা ঘরেই থাক’

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়াল

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত থাইল্যান্ডের রাস্তায় সন্তানের জন্ম দিলেন তরুণী

তালেবানের ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা পাকিস্তান সেনার, নিহত ১১

বিক্রি হয়ে গেল এক্স, দাম উঠল ৩,৩০০ কোটি ডলার, কিনল কে?

চপলকে নিয়ে এ কেমন নাটক এনএসসির?