রিজার্ভ ৩০ বিলিয়নে নামছে
০৪ জুলাই ২০২৩, ১০:৩৭ পিএম | আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০১ এএম
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু)- এর ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল আজ বুধবার পরিশোধ করা হবে। বিল পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র জাকির হোসেন চৌধুরী জানান, আকু’র বিল পরিশোধিত হবে বুধবার। গত ৩০ জুন পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। এই হিসাবে, বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ থাকবে ৩০ বিলিয়নের কিছু বেশি। গত মে মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের বাজেট সহায়তার কারণে তা আবারও বাড়ে। নয়টি সদস্য দেশের আঞ্চলিক আমদানির আর্থিক লেনদেনের কাজ করা হয় আকু পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে। দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। প্রতি দুই মাস অন্তর এ বিল পরিশোধ করা হয়। এর আগে মে মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক আকু’র ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ করে, যার ফলে রিজার্ভ ২৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। এদিকে
চলতি মাস থেকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ হিসাবায়নে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পদ্ধতি অনুসরণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই পদ্ধতিতে বেশ কয়েকটি তহবিলের অর্থ বাদ দিয়ে হিসাবায়নে গেলে রিজার্ভ কমবে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার। অর তাহলে দেশের প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ দাড়াবে ২২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। নতুন মুদ্রানীতিতে আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন (বিপিএম-৬) ম্যানুয়াল অনুসারে রিজার্ভ হিসাবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
আইএমএফ’র বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, এসব দায় রিজার্ভ হিসেবে বিবেচিত হবে না। সংস্থাটির ভাষায় এগুলো নন-লিকুইড সম্পদ বা ইনভেস্টমেন্ট গ্রেড সিকিউরিটিজ। তাই রিজার্ভ থেকে এসব অর্থ বাদ দিয়ে প্রকৃত রিজার্ভ দেখানোর পরামর্শ দিয়ে আসছে আইএমএফ।
জানা গেছে, রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) সরবরাহ করা সাত বিলিয়ন ও শ্রীলঙ্কাকে দেয়া ২০ কোটি ডলার রিজার্ভে দেখাচ্ছে। এছাড়া গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ) ২০ কোটি, লং টার্ম ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) তহবিলে ৩ কোটি ৮৫ লাখ, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানকে ৪ কোটি ৮০ লাখ এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) আমানত রিজার্ভে দেখাচ্ছে। সবমিলিয়ে বর্তমানে রিজার্ভে যে অর্থ দেখানো হচ্ছে, সেখান থেকে ৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে বলে মনে করে আইএমএফ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আকু’র সদস্য দেশগুলো থেকে আমদানি-রফতানির বিল প্রতি দুই মাস অন্তর পরিশোধ করা হয়। সে অনুযায়ী, মে ও জুন মাসে আমদানি-রফতানির বিল চলতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। আমরা খুব শিগগিরই এ অর্থ পরিশোধ করবো।
আমদানি কমার কারণে আক’তে অর্থপ্রদানের পরিমাণ কমছে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আমদানির বিল প্রদান করত। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে চলতি বছরের মে মাসে বিল পরিশোধের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। আমরা আকু পেমেন্টের ক্ষেত্রে এর প্রভাব দেখতে পাচ্ছি। গত বছরের মে-জুন মাসে আমদানির জন্য আকু পেমেন্টে আমাদের প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার দিতে হয়েছিল। আমদানি কমে আসায় এই বছরের একই সময় আমাদের ১ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
২০২১ সালের আগস্টে দেশের রিজার্ভ রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। এরপর করোনা থেকে পুনরুদ্ধারের সময়টায় ক্রমবর্ধমান আমদানি ও কমতে থাকা রেমিট্যান্সের কারণে ধীরে ধীরে কমে যায় রিজার্ভ। এসবের মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যায়।
এদিকে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাঁচাতে সরকার গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, ফলে এলসি খোলার পরিমাণ কমে আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের নয় মাসে (জুলাই-মে) এলসি খোলার পরিমাণ ২৫ শতাংশ এর চেয়েও কমে দাঁড়ায় ৬২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার; যেখানে এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৮৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, যদিও আমাদের আমদানি ২০২৩ অর্থবছর জুড়ে কমেছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলাকালীন বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে আমাদের অতিরিক্ত আমদানি বিল পরিশোধ করতে হয়েছে। গত সোমবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের পণ্য রফতানি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়ে ৫৫ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে; যা আগের অর্থবছরের একই সময় ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে; যা আগের অর্থবছরের ২১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সের তুলনায় ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
টঙ্গীবাড়ীতে মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে জখম
জার্মানিতে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন
চীনে ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এনআইডি : আইন পর্যালোচনায় রোববার বৈঠকে বসছে ইসি
কুমিল্লায় জনসম্মুখে শিশুকে দুগ্ধপান
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চূড়ান্ত লড়াই
টিউলিপ সিদ্দিককে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর কথা ভাবছেন কিয়ার স্টারমার
আগুনে পুড়ল ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ, চলছে লুটপাট
লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল, প্রবল বাতাসে পরিস্থিতি ভয়াবহ
কাতারের আমিরের উদ্দেশে ফেসবুকে যা লিখলেন তারেক রহমান
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত আরও ৭০ ফিলিস্তিনি, মানবিক বিপর্যয় অব্যাহত
নারী শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুমে ভিডিও ধারণ, যুবক আটক
শেখ হাসিনার সাথে হত্যা মামলায় জড়িত পটুয়াখালীর ইটবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মোজাম্মেল আটক
বেরোবিতে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ
ঠাকুরগাঁওয়ে ইত্যাদি চিত্রায়ন অনুষ্ঠানে চেয়ার ভাঙচুর-মারামারি, অনুষ্ঠান স্থগিত
কেসিসির সাবেক কাউন্সিলর টিপু কক্সবাজারে খুন
লক্ষ্মীপুরে বিদেশি পিস্তলসহ গৃহবধূ আটক
ফটিকছড়িতে অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা দেয়ায় কৃষককে পিটিয়ে হত্যা!
৭ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা
ম্যাচের আগে হঠাৎ বরখাস্ত এভারটন কোচ