নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় গরাডোবা ইউনিয়নের ভরাপাড়া গ্রামে সাজানো চুরির মামলায় আসামী করা ৩ জনই মামলা থেকে বেকুসুর খালাস পায় নেত্রকোণা আদালতের রায়ে। রহস্যজনক চুরির ঘটনার সাথে কারা জড়িত বা আদৌও চুরির ঘটনা ঘটেছিল কিনা, নাকি মামলার বাদী কুদ্দুস নিজেই ঘটনাটি সাজিয়েছে এমন প্রশ্ন রেখে ৭/১২/২৪ ইং তারিখ সিরাজুল ইসলাম সেকান্দর সাংবাদিক সম্মেলন করেন। যা জাতীয় গণমাধ্যম সহ স্থানীয় পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়।
এরই জেরে সাজানো চুরির মামলার (নং-২১/২৬৫, ১৫/০৭/২২ ইং) বাদী গগডী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস ও তার ইন্ধনদাতারা বিষয়টি সহজভাবে মেনে নিতে পারে নাই। কুদ্দুস ও তার ইন্ধনদাতারা খালাস প্রাপ্ত আসামীদের উপর চড়াও হওয়ার জন্য ছক কষতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় কুদ্দুস গংরা কিশোর গ্যাং এর সমন্বয়ে সদ্য মামলা থেকে অব্যহতি পাওয়া ১ নম্বর আসামী সেকান্দর ও তার ছেলে ৩নং আসামী আমীর সোহেলসহ তাদের পরিবারের উপর ১৫ জনেক একটি কিশোর দল কুদ্দুসের ছেলে ইয়াসিন ও তোয়াসিনের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলার উদ্দেশ্যে সেকান্দরের গ্রাম ভরাপাড়ায় হামলা করে।
এমন একটি ভয়ঙ্ক ঘটনার খবর পাওয়া গেছে নেত্রকোণার কেন্দুয়ার গরাডোবা ইউনিয়নের ভরাপাড়া গ্রামবাসীর কাছ থেকে। তথ্যমতে ২৬/১২/২০২৪ ইং তারিখ দুপুর ১ টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে সেকান্দরের বাড়িতে হামলার উদ্দেশ্যে আনুমানিক ১৫ জনের একটি কিশোর গ্যাং দল ভারাপাড়া গ্রামের তালুকদারের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। পুরো গ্যাংটির নিয়ন্ত্রণে ছিল সান্দিকোনা ইউনিয়নের গগডী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে ইয়াসিন ও তোয়াসিন। কিশোর গ্যাং সদস্যদের অনেকের হাতে ছিল দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঠা। স্থানীয় গ্রামবাসী কিশোর গ্যাং সদস্যদের স্থান ত্যাগ করতে বললে গ্যাং লিডার ইয়াসিন ও তোয়াসিন গালাগাল শুরু করে একপর্যায়ে সেকান্দর ও তার আত্মীয় স্বজনের উপর দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। হামলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ১জন আহত হয়। ইতিমধ্যেই হামলার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
সূত্রমতে কিশোর গ্যাং এর আক্রমণের পরের দিন ২৭/১২/২৪ ইং তারিখ কুদ্দুস ও তার ইন্ধনদাতারা ভরাপাড়া তালুকদারের বাড়িতে আসে এবং কিশোর গ্যাং এর হামলার ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে কেন্দুয়া থানায় নির্যাতিতদের বিপক্ষে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। সেকান্দরের পরিবার ও সেকান্দরের পক্ষে থাকা সাধারণ গ্রামবাসীদেরকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে কিশোর গ্যাং সদস্যদের পক্ষ নিয়ে ঢাকা থেকে চলে আসে পররাষ্ট্র উপ সচিব রাফিদ আবরার মিঞা। পররাষ্ট্র উপ সচিব পদর্মযাদার পরিচয় দিলে কেন্দুয়া থানা অভিযোগের সাথে সাথে আগন্তক উপ সচিবের সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরণ করে। অশিক্ষিত ও নিরীহ সেকান্দরকে ভীতি প্রদর্শনের লক্ষ্যে একজন উপ সচিব পদমর্যাদার লোক পুলিশ সহ গ্রামে হাজির হওয়ায় যেমন ভীতি ছড়িয়েছে তেমনি গ্রামবাসীদের মধ্যে কানাঘোষা শুরু হয়। কে এই উপ সচিব এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে জানতে পারে উনার নাম মোঃ রাফিদ আবরার মিঞা, গবেষণা কর্মকর্তা, অপ্রথাগত নিরাপত্তা অধ্যয়ন বিভাগ, বাংলদেশ ইনিষ্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (চুক্তি ভিত্তিক)। উপ সচিবের সাথে আগত কেন্দুয়া থানা পুলিশ সেকান্দর গংদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন সত্যতা না পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
অনুসন্ধানে জানা যায় বিগত দিনেও সেকান্দর গংদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা তালুকদার বাড়ির লোক হওয়ায় সেই দাপট ধরে রাখার জন্য নিরীহ গ্রামবাসীর উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য পূর্বের ন্যায় এভাবেই মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ স্থানীয় থানায় দিয়ে ভিন্ন প্রভাবশালী আত্মীয় স্বজনকে ব্যবহার করে গ্রামের নিরীহ প্রতিবেশীদেরকে হেনস্থা করে আসছে। তালুকদারের বাড়ির কিছু লোকজনের হীন কার্যকলাপে অতিষ্ট হয়ে প্রতিবেশীরা তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খোলা শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্যাতিত সিরাজুল ইসলাম সেকান্দর ও তার পরিবার গ্রামের গণ্যমাণ্য ব্যক্তি বর্গের সাথে পরামর্শক্রমে কিশোর গ্যাং এর হামলার ২ দিন পর ২৮/১২/২০২৪ ইং তারিখে কেন্দুয়া থানায় কিশোর গ্যাংদের নাম উল্লেখ পূর্বক লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিরাজুল ইসলাম সেকান্দরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি।
তবে রাফিদ আবরার থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ করার ভিত্তিতেই গ্রামে পুলিশের ফোর্স পাঠিয়েছেন কেন্দুয়া থানার ওসি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এই প্রতিবেদকের কাছে।এসব বিষয়ে জানতে রাফিদ আবরার এর সাথে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি।