সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে
২৬ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪৩ পিএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৩, ১২:১৪ এএম
‘এক্সপ্রেসওয়েতে বাস খাদে পড়ে নিহত ১৬’ শিরোনামের সংবাদটি পড়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। বিস্তারিত পড়ে জানতে পারলাম, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর এলাকায় ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে ১৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই কলাম লেখার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৯ জনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপর খবরের বিস্তারিত জানতে চেষ্টা করলাম। এক একে জানতে পারলাম আজব সব তথ্য। হাইওয়ে পুলিশের তথ্যমতে, ক্লান্ত দেহে ঘুমচোখে অতিরিক্ত গতিতে বাস চালানোর কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরিবহনটির চালকের পারিবারিক সূত্রধরেও ঠিক একই তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, পরিবহনটির চালক জাহিদ হাসান বৃহস্পতিবার ঢাকার দোলাইরপাড়ের বাসা থেকে বের হন। ওইদিন রাতেই যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ে যান পিরোজপুরে। পরের দিন শুক্রবার সকালে পিরোজপুর থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসেন। শুক্রবার বিকেলে আবার যাত্রী নিয়ে ছুটে যান পিরোজপুরে। রাতে পিরোজপুর পৌঁছে পরের দিন শনিবার সকালে আবার যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসেন। ঢাকা থেকে শনিবার দুপুরে আবার ছুটে যান খুলনায়। রাতে বাসের মধ্যে তিন থেকে চার ঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে রোববার ভোর চারটায় খুলনার ফুলতলা থেকে বাসটি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন। এভাবে তিনি গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় বাস চালিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ফলে এই দুর্ঘটনা, যে দুর্ঘটনায় চালক সহ অনেকগুলো তরতাজা প্রাণ চলে গেছে।
ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তা শুরু হয়ে পদ্মা সেতুসহ ৭৫ কিলোমিটারের এই সড়কটি শেষ হয়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। সরকার এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির গতি নির্ধারণ করেছে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কি. মি.। বেশ অল্প দূরত্ব পরপর এক্সপ্রেসওয়ের পাশে এই গতি বিষয়ক সাইনবোর্ড ও সাটা আছে। কিন্তু কোন পরিবহনের গতি যদি ঘন্টায় ১০০ কি. মি. বা ১২০ কি. মি. তারও বেশি ওঠে তাহলে কে দেখবে বা কে এই বেশি গতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সেই বিষয়ে আদৌ কোন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আছে কিনা বা থাকলেও সেগুলোর প্রয়োগ আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে আমি নিশ্চিত যদি কোন জরিপ চালানো হয় তাহলে দেখা যাবে, এই নবনির্মিত এক্সপ্রেসওয়েতে দূরপাল্লার পরিবহন বা প্রাইভেটকারগুলোর গড় গতিবেগ ঘন্টায় ১০০ কি. মি. এর চেয়ে বেশি। ফলে যেটা ঘটার কথা সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। গত ১৭ জানুয়ারি অতি গতিতে চলতে গিয়ে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স ট্রাকের পেছনে ঢুকে যায়। এতে ছয়জন নিহত হন। ঘটনাটি ঘটে সড়কটির জাজিরার নাওডোবা এলাকায়। সড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ফলে সংঘটিত দুর্ঘটনার এরকম হাজার হাজার উদাহরণ থাকলেও এক্সপ্রেসওয়ের ক্ষেত্রে এমন দুর্ঘটনা বিরল বলা যায়।
খবরে প্রকাশিত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট থেকে জানা যায়, দুর্ঘটনার শিকার ওই বাসটি আগেও দুর্ঘটনায় পড়েছিল। গত নভেম্বরে বাসটি গোপালগঞ্জে দুর্ঘটনায় পড়েছিল যেটায় মারা যায় তিনজন। তখন বাসটির চলাচলের অনুমতি স্থগিত রাখা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, এরপরও যদি চলাচল করে তাহলে সেটা মহা অন্যায়। এজন্য বাসের নিবন্ধন বাতিল ও মালিকের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিআরটিএ’র অন্য একজন কর্মকর্তা বলেন, রুট পারমিট দেওয়ার পর সড়কে বাস চলল কি না বা স্থগিত করার পর পুনরায় চলাচল করছে কি না, তা দেখার মতো বিআরটিএর লোকবল বা ব্যবস্থা নেই। পুলিশ চাইলে যেকোনো সময় ব্যবস্থা নিতে পারে। এখন পুলিশ নীরব থাকলে শাস্তি কার্যকর করা কঠিন। অর্থাৎ বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা তাদের দ্বায় এড়াতে পুলিশের দিকে সম্পূর্ণ দোষ চাপিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত করেছেন। অবশ্য এধরণের ইঙ্গিত আমাদের দেশে বড্ড পরিচিত। এখানে কেউ কারও দোষ নিতে চায়না। কোনরকম দুর্ঘটনা ঘটে গেলে এক দপ্তর অন্য দপ্তরকে দোষারোপ করে। আর মাঝ দিয়ে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায় নিরীহ মানুষজনের। আমার বিশ্বাস এরকম হাজারো পরিবহন আছে যেগুলোর রোড পারমিট, ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা নেই। কিন্তু সেসকল পরিবহন মালিকদের ক্ষমতার দাপটে বা অন্য কোন অদৃশ্য শক্তির ছত্রছায়ায় বহাল তবিয়তে সেগুলো হাইওয়েতে চলাচল করছে।
ইমাদ পরিবহনের চালকের অতি বেগে গাড়ি চালানোর জন্য দুর্ঘটনা ঘটলেও ওই রুটে চলাচলকারী সকল পরিবহনের অবস্থা একই রকম। এখানে আমার ব্যক্তিগত কিছু উদাহরণ তুলে ধরলাম। পদ্মাসেতু নির্মিত হওয়ার পূর্ব হতে ওই রুটে বহুবার চলাচলের অভিজ্ঞতা আছে। বিশেষ করে ওই রুটে ঢাকা হতে খুলনার দূরত্ব অনেক কম হওয়ায় গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে ওই রুটকে বেছে নিতাম। ওই রুটে দেখেছি, চালকেরা একটা ট্রিপ শেষ করেই গাড়ি ঘুরিয়ে পরবর্তী ট্রিপ নিয়ে আবার ফিরতি যাত্রা করে। টিকিটের সময় অনুযায়ী কাউন্টারে গিয়ে বসে থাকতাম বাসের অপেক্ষায়। কোন কোন সময় বাস কাউন্টারেই রেডি থাকত। আবার কোন কোন সময় দেখতাম বাস মাত্র ফিরল, ফিরতি যাত্রী নামাল এবং যাওয়ার যাত্রী উঠাল। একই চালক, একই হেল্পার কোনরকম বিশ্রাম ছাড়া পরিবর্তী ট্রিপ শুরু হল। এই রুটে যারা নিয়মিত যাতায়াত করে তারা আমার সাথে একমত হবে। বিশেষ করে যারা যাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যায় তাদের বিষয়টি নজরে আসবে। কিছুদিন আগে একবার সাতক্ষীরা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকায় আসব বলে টিকিট করলাম। নির্দিষ্ট সময়ে কাউন্টারে গাড়ির অপেক্ষায় বসে আছি। গাড়ির কাউন্টারে থাকা ব্যক্তিরা বারবার ফোনে জানতে চাইছে গাড়ি কাউন্টারে পৌঁছাতে কত বাকি। কেননা পরবর্তী ট্রিপের সময় হয়ে গেছে। আমার মত অনেক যাত্রীই কাউন্টারে বসে আছে। নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট পরে গাড়ি আসল। যাত্রী নামল, গাড়ি ঘুরালো, আমরা উঠলাম, গাড়ি আবার ছাড়ল। একই চালক, একই হেল্পার। গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধও হলোনা। আবারো চালকের গাড়ি ভর্তি যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা। গাড়িতে উঠেই চোখ পড়ল চালকের দিকে। তার চেহারা দেখে মনে হল চোখদুটো ফুলে গেছে। তার যে ঘুমে বড় ধরণের ঘাটতি আছে চেহারায় সুস্পষ্ট তার প্রমান মিলছে। গাড়ির স্টিয়ার হাতে ধরে চালাচ্ছেও বেপরোয়া গতিতে। গাড়ি যখন সাতক্ষীরা খুলনা মহাসড়কে উঠছে তখন কয়েকবার বেশ ঝুঁকিপূর্ণভাবে সে গাড়ি চালিয়েছে। গাড়ি ভর্তি যাত্রীর মধ্য থেকে কেউ কেউ তাকে সাবধানে চালাতে বলছে। এরপর সুপারভাইজার যখন টিকিট চেক করতে আসল তখন সুপারভাইজারকে বিষয়টি বললাম। আমি প্রথমেই তার চেহারায় যে ঘুমের ঘাটতি আছে সেটা সুপারভাইজারকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম। সুপারভাইজার ও আমার সাথে একমত। তিনি বললেন ‘স্যার, ড্রাইভারের সঙ্কট আছে। এই ড্রাইভার খুলনা পর্যন্ত গিয়ে নেমে যাবে এবং অন্য একজন ড্রাইভার উঠবে’। যাইহোক, একটু ভরসা পেলাম। কিন্তু সেই খুলনা পর্যন্ত যেতে নিজের ভিতরে বেশ আতঙ্ক কাজ করছিল।
ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হলেও চালকেরা এই এক্সপ্রেসওয়ের গতির রেশ পুরো পথ জুড়েই পেতে চায়। তাই এক্সপ্রেসওয়ে শেষ হলেও সুযোগ পেলেই গাড়ির গতি ঘন্টায় ১০০ কি. মি. ছুঁই ছুঁই হয়। আর এক্সপ্রেসওয়েতে এসে তার সমস্ত পথের ঘাটতি একেবারে পুশিয়ে নিতে চায়। গাড়ির গতির সর্বোচ্চ সীমায় পৌছিয়ে নিজেদের কতৃত্ব জাহির করতে চায়। এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে সেখানে গাড়ির নির্দিষ্ট গতি সীমা আছে। কিন্তু সুযোগ পেলেই সব নিয়মের তোয়াক্কা না করে নিজের ক্ষমতার বাহাদুরি দেখানোর অভ্যাস আমাদের বাঙালিদের সবসময় বেশি। এই এক্সপ্রেসওয়েতে যদি ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে চলাচলকৃত মুড়ির টিন নামে খ্যাত লোকাল বাসগুলোও চলতে দেওয়া হয় তাহলেও তারা চেষ্টা করবে ঘন্টায় ১০০ কি. মি. বেগে গতি তুলতে চাই কি তাদের ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা থাকুক বা না থাকুক, গাড়ির রোড পারমিট থাকুক বা না থাকুক। কথাগুলো সত্য। মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে যখন এসব পরিবহন চলতে থাকে তখন গাড়ির ইঞ্জিনের অস্বাভাবিক হারে নির্গত উচ্চ শব্দ শুনলেই বোঝা যায় গাড়িগুলো এত বেশি গতি নিতে পারছে না। কিন্তু চালকের সেসব ভ্রুক্ষেপ থাকেনা। তাদের উদ্দেশ্য যত তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে তাদের জন্য তত মঙ্গল। কেননা, পরের ট্রিপের জন্য সেখানে যাত্রী রেডি রাখা আছে। শুধুমাত্র গাড়ি কাউন্টারে পৌঁছাবে আর আবার ফিরতি যাত্রা শুরু হবে। যত বেশি ট্রিপ তত বেশি আয়। সেজন্য চালক বা হেল্পারের সবসময় উদ্দেশ্যই থাকে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর।
খুলনা বা এর আশপাশের অনেক এলাকা থেকেই রবিবার ভোরের গাড়িতে ঢাকা রওনা দিয়ে সকালে ঢাকার অফিস ধরার রীতির প্রচলন আছে। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বাড়ি গিয়ে সাপ্তাহিক দুইদিন ছুটি কাঁটিয়ে আবার ঢাকায় আসেন আমার পরিচিত মহলের মধ্যে এমন বহুজন আছে। তার জন্য রবিবার ভোরের পরিবহনের যাত্রীর চাপও বেশি হয়। যাত্রীদের ভিতরেও একটা তাড়া থাকে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য। এজন্য চালকের বেপরোয়া গতির বিরুদ্ধে তেমন কেউ কিছু বলে না। অধিকাংশ চাকুরিজীবীরা এই ভোরের পরিবহনের যাত্রী হয়। ঠিক যেমন দুর্ঘটনায় কবলিত ইমাদ পরিবহনের অধিকাংশ যাত্রীই ছিল চাকরিজীবী। এসকল যাত্রীর অনেকেই হয়ত ভেবেছিল গাড়িতে উঠে রাতের ঘুমের ঘাটতিটা পুষিয়ে নেবে। এক ঘুমেই ঢাকা পৌঁছে যাবে। ঘুমিয়েছিল ঠিকই হয়ত কিন্তু তাদের সেই ঘুম আর ভাঙেনি। ঢাকায় পৌঁছানো হয়নি আবার বাড়ি ফেরত গিয়েছে। কিন্তু সেই আগের মত পায়ে হেঁটে নয়। সাদা কাপড়ে মুড়ে। কিছুক্ষণ আগেও যে মানুষটাকে হাসিমুখে বিদায় জানানো হয়েছে তার এভাবে সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় বাড়ি ফেরা মোটেই স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তাই প্রিয়জনেরা পাগলের মত প্রলাপ করছে, বারবার মূর্ছা যাচ্ছে। দুর্ঘটনার পরে বিভিন্ন পত্র পত্রিকার নিউজে এসব স্বজনের আহাজারির কথা প্রকাশিত হয়। সময়ের কালক্রমে আবার চাপা পড়ে যায়। নতুন দুর্ঘটনা ঘটলে সেগুলোর দাপটে পুরানো গুলো হারিয়ে যায়। কিন্তু হতাহতদের স্বজনেরা ভুলতে পারে না এই বেদনাদায়ক মুহূর্তগুলোকে। তারা স্মৃতি আওড়াতে থাকে।
একটি পরিবহন বা বাসের একজন চালকের হাতে অনেকগুলো মানুষের জীবন সমর্পিত থাকে। যদি সেই চালক অনুপযোগী হয়, তাহলে যাত্রী কিংবা পথচারীদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে সে ব্যর্থ হবে। অপ্রিয় হলেও সত্য, আমাদের দেশের অধিকাংশ চালকের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নেই এবং তাঁরা জানে না কোন সড়ক কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। কোন সড়কে কতটুকু গতি তুলতে হয়। অধিকাংশ চালকের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ না থাকায় তারা সড়কে নিজের খাম খেয়াল মত চলে। সড়কের চরিত্র সম্পর্কে অনভিজ্ঞ সাইন, সিগন্যাল বা নির্দেশিকা না জানা থাকা এই চালকেরাই তখন দুর্ঘটনা ঘটায়। বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটার প্রধান কারণগুলো উদঘাটন করলে দেখা যায়, অল্প বয়সী ও অনভিজ্ঞ চালক, বেপরোয়া গতি, উপযুক্ত ট্রেনিংয়ের অভাব, নিয়মকানুন না মানা ইত্যাদি অন্যতম। তার সাথে যোগ করা যেতে পারে রোড পারমিট না থাকা, চলাচলের অনুপযোগী, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামানো।
মানুষের ঘরে ফেরার নিশ্চয়তা আমাদের দেশের জনগণের নেই। সড়ক দুর্ঘটনা এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে বেপরোয়া গতি। আমাদের রাস্তাঘাটের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সীমাবদ্ধতা রয়েছে মাথাপিছু জনসংখ্যার তুলনায় প্রয়োজনীয় পরিবহনের। সেজন্য অধিক লাভের আশায় মালিক পক্ষ বা গাড়ির চালক সবসময় চায় অতি দ্রুত ট্রিপ শেষ করে নতুন ট্রিপ ধরতে। আর চালকদের এই মানসিকতা অনেকের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। যেকোন কাজ যখন অতিদ্রুত শেষ করার তাড়া থাকবে, সেখানে ভুলত্রুটি হওয়ার আশঙ্কাও প্রবল। ঠিক যেমনটি হয় ঈদের সময়। এসময়গুলোতে শুধুমাত্র চালকের তাড়াহুড়ো এবং বেপরোয়া গতির কারণে অনেক বেশি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। কিছুদিন পরেই ঈদ আসবে। ঈদে জনগণ আপনজনের সাথে উৎসব পালন করতে আপন আলয়ে ফেরার উদ্দেশে রওনা দেবে। সড়কে বেপরোয়া গতি অনেকের প্রাণ কেড়ে নেবে। উৎসব পরিণত হবে শোকে। আমরা এমন গতি চাইনা যেটা জীবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। প্রতিটা মৃত্যুই বেদনাদায়ক। কিন্তু সামান্য কিছু ভুলের কারণে অকালে এমন জলজ্যান্ত মানুষগুলোর চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হয়। যার পরিবারের যায় তারাই বোঝে এই চলে যাওয়া কতটা অপূরণীয় ক্ষতি। নীতি নির্ধারকদের উচিত বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে বাচনিক বিভিন্ন অঙ্গীকার না দিয়ে প্রায়োগিক পন্থা অবলম্বনে সংকটের আশু সমাধান করা।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের বিপক্ষে যে একাদশ দিয়ে মাঠে নামছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান