দাম বাড়ানোর এই প্রতিযোগিতা কবে কমবে?
০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:০২ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:২২ পিএম
চীনাদের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘নববর্ষ’। এই উৎসবকে চীনে জাতীয়ভাবে পালন করা হয়ে থাকে। কোনো উৎসবের আমেজ যে এত বেশিদিন স্থায়ী হতে পারে, সেটা আমি চীনাদের দেখে বুঝেছি। চীনাদের এই উৎসবের আমেজ সর্বত্র সমভাবে বিরাজ করে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের অফিস-আদালত এই সময়ে দীর্ঘ ছুটির আওতায় চলে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি প্রায় মাস দু’য়েক হয়ে থাকে। তবে চীনা নববর্ষকে ঘিরে জাতীয় পর্যায়ে প্রায় ১০ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। যেখানে সকল কর্মজীবী এই ছুটির আওতায় ছুটি ভোগ করে। এই নববর্ষে দেখেছি, সবার ভিতর একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। কর্মজীবীদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে বোনাস প্রদান করা হয়। সবাই নিত্য নতুন পোশাকাদি ক্রয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। নববর্ষের প্রায় মাস খানিক আগে থেকে লোকাল মার্কেট থেকে শুরু করে মেগা সুপার মলগুলোতে সব জায়গায় ব্যাপক ছাড় দেওয়া হয়। একদিকে জাতীয় উৎসবের আনন্দ, অন্যদিকে মানুষের মুখে হাসি দেখতে কম লাভে বেশি পণ্য বিক্রির চিন্তাভাবনা করে চীনা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো। অনলাইন শপিংয়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপক ছাড়ের প্রচলন আছে চীনে। সকল প্রকার যানবাহনে অনলাইনে শতভাগ অগ্রিম টিকিট বিক্রয় করার ব্যবস্থা থাকে। বিমানের টিকিটের ক্ষেত্রেও দেওয়া হয় বিশেষ ছাড়। এই টিকিট কেটেও অনেকে বেশ বড় আকারের ডিসকাউন্ট পায়। আবার কোনো কারণে তাদের টিকিট বাতিল করার প্রয়োজন পড়লেও অনলাইনের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে সেগুলো করার ব্যবস্থা আছে। এই টিকিট বাতিলের ক্ষেত্রে যাত্রীদের থেকে কোনরকম বাড়তি টাকা নেওয়ার ব্যবস্থা নেই। অর্থাৎ যে টাকা দিয়ে টিকিট ক্রয় করা হয়, ঠিক সমপরিমাণ টাকা রিফান্ড করা হয়। চীনে থাকাকালীন আমি নিজেও বেশ কয়েকবার এই রিফান্ড পলিসির সুবিধা নিয়েছি। জাতীয় দিবসের ছুটি কীভাবে কাটাবে বা কোথায় ঘুরবে সে বিষয়ে চীনারা সবাই যার যার মতো বহু আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখে। সুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থাপনা, সুশৃঙ্খল নিয়মনীতি ও শতভাগ ডিজিটাইলজড পদ্ধতি চীনাদের জীবনযাত্রায় এনে দিয়েছে বিশেষ ধরনের ছন্দময়তা। আর সে কারণেই সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ চীনের জনগণ পরিবহন সংকটে পড়ে তাদের গন্তব্যে যেতে পারেনি এমনটা কখনো শোনা যায় না।
চীনাদের সংস্কৃতির সাথে আমাদের সংস্কৃতি মেলাতে গেলে বেশ মুশকিলে পড়ে যাই। কেননা, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশের প্রধান ধর্মীয়, পবিত্র, সিয়াম সাধানার রমজান মাসকে ঘিরে দেশের ব্যবসায়ী মহল ওৎপেতে থাকে। সারাবছর ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ রমজান মাসের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষায় থাকে। সে প্রতীক্ষার অবসান হয় নিষ্ঠার সাথে একমাস রোজা পালনের পর ঈদ উৎসবের মধ্য দিয়ে। এই ঈদ উৎসবকে ঘিরেও বছর জুড়ে মানুষের বহু পরিকল্পনা থাকে। কিন্তু, রোজা শুরুর বেশ আগে থেকেই নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। রমজান মাস শুরুর ২-৩ মাস পূর্ব হতেই ব্যবসায়ী মহল রমজানকে সামনে রেখে দ্রব্যসামগ্রীর বাড়তি দাম হাঁকে। কথায় কথায় তারা ক্রেতাদের শোনায় ‘রমজান আসতেছে দাম আরও বাড়ব’। হ্যাঁ, তাদের কথা সত্য। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। সবজি থেকে শুরু করে যাবতীয় নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের বেশ কিছু খোঁড়া অজুহাত বরাবরই খেয়াল করেছি, যার মধ্যে অন্যতম রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ইঙ্গিত করা। ব্যবসায়ীদের এসব কথা শুনলে মনে হয়, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছে বাংলাদেশ। আর এ কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে চলেছে। রমজান আসার বহু আগে থেকে এই যুদ্ধের সাথে যুক্ত করা হচ্ছে রমজানের মতো পবিত্র ইস্যুকে। ব্যবসায়ীদের এসব ইস্যু বানচাল করার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ হতে আবার নেওয়া হয়েছে নানান পদক্ষেপ। সম্প্রতি দেখলাম, জেলা প্রশাসকদের বাজার তদারকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙা। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসায়ীমহল যেন পণ্য মার্কেট আউট করে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা। বিষয়গুলো জানার পরে সত্যিই খুব বিপাকে পড়ে যাই। একদিকে সরকারের তরফ থেকে জনগণকে আশ্বাস দেওয়া হয়, দেশে যথেষ্ট খাদ্যদ্রব্যের মজুদ আছে এই বলে, অন্যদিকে ব্যবসায়ী মহল বাজারের পণ্য লুকিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে নিত্যপণ্যের বাজার অসহনীয় করে তোলে। মাঝদিয়ে সাধারণ জনগণের চাপে একরকম নাভিশ্বাস উঠে যায়।
বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন পর্যন্ত হিমশিম খায়। নিয়মিতভাবে ভ্রম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেও অনেক ক্ষেত্রে বাজার সহনশীল রাখতে ব্যর্থ হয়। ব্যর্থ হয় ব্যবসায়ী মহলের গঠিত সিন্ডিকেট ভাঙতে। লাগাতারভাবে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ জনগণ আজ দিশেহারা। বিগত দিনের বাজার পরিস্থিতি দেখে এমনটাই মনে হয়েছে। একসময়ে দেখতাম গমের আটা ছিল সমাজের নি¤œ আয়ের মানুষের খাদ্য। এখন বাজারে সেই আটার কেজি ৭০ টাকা। মুরগির মাংস, চাষের পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, কই আজ মানুষের নাগালের বাইরে। নিউজে দেখলাম, মানুষ এখন আস্ত ব্রয়লার মুরগি কেনা বাদ দিয়ে টুকরো মুরগি কেনার দিকে ঝুঁকছে। মুরগির গিলা কলিজা ক্রয় করছে। গরুর মাংসের বিক্রেতা এখন আর আগের মতো ১ কেজি মাংস কেনার মতো ক্রেতা খুঁজে পায় না। তাই বাধ্য হয়ে এখন এক কেজির নিচে যেকোন পরিমাণ মাংস বিক্রি শুরু করেছে। খাশির মাংস এখন প্রতিকেজি হাজার টাকার উপরে। মানুষ এখন বাজারে গিয়ে একটু কম দাম পাওয়ার আশায় ভালো ডিমের পরিবর্তে ফাটা ডিম খুঁজতে থাকে। পোলাওর চালের দাম নাগালের বাইরে হওয়ায় চিনিগুড়া চালের খুদ খোঁজে পোলাও রান্নার জন্য। সবজির বাজারে গিয়ে টাটকা সবজির দাম বেশি হওয়ায় বাসি সবজি একটু কম দাম পাওয়ার আশায় সেদিকে ঝোঁকে। বাজারে এখন ৫০ টাকা হালি দিয়ে শরবতের লেবু কেনা লাগে। বেগুনের দামও বাড়তি।
বাজারে একবার দাম বাড়লে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই দাম স্থায়ী হয়ে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দাম দ্বিগুণ বাড়িয়ে পরবর্তীতে ২-৫ টাকা কমানো হয়। ভোজ্যতেল, চিনি, আটা, ব্রয়লার মুরগির মাংসের ক্ষেত্রে তেমনটাই দেখা যাচ্ছে। অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বাজারে মৌসুমি সবজির দাম এখন দ্বিগুণ। গত সপ্তাহে যে সবজির ৩০ টাকা কেজি ছিল এই সপ্তাহে সেটা ৬০-৭০ টাকা কেজি। দিনকে দিন এসব মৌসুমি সবজির দাম কমার কথা থাকলেও বিপরীতপক্ষে তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন পণ্যের বাড়তি এই ৫০ টাকা বা ১০০ টাকার অংকগুলো প্রভাবশালী ও পয়সাওয়ালা মানুষদের কাছে হয়ত অতি নগণ্য। কিন্তু খেটে খাওয়া দিনমজুরের কাছে এই অংকগুলো শুনলে চোখের কোনায় জল ছলছল করে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে এসব মানুষদের বাড়তি ব্যয় সামাল দিতে অর্ধপেট খেয়ে অথবা না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হয়। দৈনন্দিন আয়ের পথই যাদের কাছে অনিশ্চিত সেখানে সংসারের বাড়তি ব্যয়ের সামাল দেওয়াটা বেশ মুশকিল। তাই এসব মানুষের কাছে উৎসব আসে দুশ্চিন্তা নিয়ে।
এই আধুনিক সভ্যতার যুগেও যখন দেখি বহু শ্রমজীবী মানুষ সূর্যদয়ের সাথে সাথে কাঁধে ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে দলবেঁধে বের হয় প্রতিদিনকার কাজের খোঁজে তখন একটু বেশিই অবাক হই। অবাক হওয়ার আরও বেশি কারণ খুঁজে পাই যখন চোখে পড়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এসব শ্রমজীবী মানুষের সাথে প্রতিদিনকার পারিশ্রমিক নিয়ে মহাজনের দরকষাকষি চলে। মহাজন পক্ষ সর্বনি¤œ পারিশ্রমিক দিয়ে এসব শ্রমিক ক্রয় করতে পেরে নিজেদের বেশ লাভবান মনে করে। দর কষাকষির এক পর্যায়ে বহু শ্রমজীবী মানুষ মহাজনের হাঁকানো দামের বিপরীতে নিজেদের বিক্রি করে। বিক্রির শর্ত সেদিনে ঐ মহাজনের অধীনে কাজ করতে হবে। এখানে ক্রয় বা বিক্রয় বললে হয়ত কথাগুলো খারাপ শোনায় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটাই বাস্তবতা। মাঝেমধ্যে মহাজনের হাকানো শ্রমের মূল্য এতটা কম হয় যে অনেক শ্রমিকের বিমুখ হয়ে ফিরতে হয় বাড়ির পানে। এসব শ্রমিকের সাথে মহাজনের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য যে ব্যবহার সেটা দেখলে সবারই খারাপ লাগার কথা। যখন দেখি সাত সকালে ঝুড়ি-কোদাল নিয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে কাজের উদ্দেশে বের হয়ে বেলা ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে কাজ না পেয়ে বিমুখ হয়ে ফিরে আসে তখন নিজেকে ধরে রাখতে পারি না। জীবনযুদ্ধে কোনরকমে টিকে থাকা এসব শ্রমজীবী মানুষের ব্যর্থ ও পরাজিত বদনে যখন একরাশ হতাশা নিয়ে বাসায় ফেরে তখন নিজেকে কাঁদিয়ে তোলে। আধুনিক এই সভ্যতার বিনির্মাণে এসব মানুষের ভূমিকা বেশি থাকলেও তাদের পরিবারে অন্ন রান্না হলো কিনা তার খোঁজ কেউ রাখে না। এই শ্রেণির মানুষদের মাথাপিছু আয় ডলারে হিসাব করার প্রয়োজন পড়ে না। ইউরোপ বা আমেরিকার মতো উন্নত দেশও তারা চায় না। চায় শুধু দু’বেলা দ’মুঠো অন্ন জোগানোর নিশ্চয়তা। কিন্তু আমাদের দেশের নিষ্ঠুর ব্যবস্থাপনা এসব মানুষের সেই সুযোগ দিতে ব্যর্থ। ব্যর্থ শ্রমজীবী মানুষের নায্য পাওনা দিতে। আর তাইতো কায়িক শ্রমের বিনিময়ে কোনরকমে টিকে থাকা এই সমস্ত মানুষের উপর জুলুম অত্যাচার চিরকাল চলে আসছে। ঈদ আসার আগ মুহূর্তে এসব শ্রমজীবীর প্রতি মালিক পক্ষের অত্যাচার বেশ সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। যেখানে এসব শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষের বেতন, ভাতা ও বোনাসের দাবিতে রাস্তায় নামা লাগে। মহাসড়ক অবরোধ করা লাগে। নায্য পাওনার দাবিতে মাঝেমধ্যে ভাংচুর পর্যন্ত করা লাগে। শ্রমিক পক্ষের আন্দোলনের দাবিতে মালিক পক্ষের যখন কোণঠাসা অবস্থা হয় তখন তাদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হয়। ভাবতে অবাক লাগে যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এদেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রেখেছে তাদের শ্রমের নায্য পাওনাটুকু তো কখনোই দেওয়া হয় না, বরং পাওনা টাকা আদায় করতে গিয়ে শক্ত অবস্থানে যেতে হয়।
কিছুদিন পরেই শুরু হবে পরিবহন টিকিটের জন্য হাহাকার। টিকিট নিয়ে কালোবাজারি। মানুষের বাড়ি ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা। মানুষকে নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুণ বা তিনগুণ ভাড়া দিয়ে যেতে হবে প্রিয়জনের সাথে উৎসব উদযাপন করতে। সে যাত্রার ভিতরেও আছে অনেক অনিশ্চিয়তা। কেননা, পরিবহন মালিকের অধিক লাভের আশায় লাগামহীন গতি কেড়ে নেবে কারও কারও জীবন। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এই রীতি আছে কিনা আমার জানা নেই। পরিবহন সংকটে পড়ে মানুষ তার গন্তব্যে যেতে পারেনি এমনটা অন্য দেশের ইতিহাসে বিরল। আবার যাত্রীদের থেকে পরিবহনের বাড়তি ভাড়া আদায় রোধ করতে প্রশাসনের তদারকি বা শক্ত অবস্থানও বিরল। আমার জানা নেই, কোনো দেশের প্রধান উৎসবে প্রাপ্য শ্রমিকদের নায্য পাওনা বুঝে নিতে রাজপথে আন্দোলনে নামতে হয় কিনা। তবে এটুকু জানি, বাইরের দেশগুলোর প্রধান উৎসবে দ্রব্যমূল্য, ভ্রমণ থেকে শুরু করে যাবতীয় কেনাকাটায় ছাড় দেওয়া হয়। উৎসব উদযাপনের জন্য ধনী-গরিব সকলে যাতে সাধ্যমত আনন্দ করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হয়। পক্ষান্তরে আমাদের দেশে ছাড়ের পরিবর্তে নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে যাবতীয় ক্ষেত্রে বাড়তি দাম হাঁকানো হয়। অধিক লাভের আশায় বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়। পরিবহন টিকিটের ক্ষেত্রে কালোবাজারি করা হয়। আরও কতকিছু।
দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে অল্প কিছুদিনের ভিতরে দেশ ইউরোপ, আমেরিকাকে ছাড়িয়ে যাবে। এই খবর নিঃসন্দেহে অতীব আনন্দের। তবে উন্নয়নের প্রধান মাপকাঠি ‘মাথাপিছু আয়’কে শুধু কাগজে-কলমে হিসাব না করে বাস্তবতার আলোকে হিসাব করাটা জরুরি। একজন দিনমজুর সপ্তাহে কতদিন তার শ্রম খাটানোর সুযোগ পাচ্ছে বা সেখান থেকে তার গড়ে প্রতিদিন কত আয় হচ্ছে সেগুলো হিসাব করে মাথাপিছু আয় বের করাটাই শ্রেয়। কেননা দেশে এই শ্রেণির মানুষের সংখ্যার বেশ আধিক্য রয়েছে। মাসিক লক্ষাধিক টাকার আয়ের কোনো ব্যক্তির সাথে যখন দিনমজুরের আয়ের হিসাব মেলানো হয় তখন কাগজে-কলমে এই দিনমজুরের মাসিক আয় হয়ে যায় ৫০ হাজার টাকার বেশি। দিনমজুরের ঘরে জন্ম নেওয়া সদ্যজাত সন্তানসহ পরিবারের সদস্য সংখ্যার সাথে এই ৫০ হাজার দিয়ে গুণ করলে কাগজে-কলমে ঐ দিনমজুরের আয় গিয়ে দাঁড়াবে লক্ষ লক্ষ টাকা। যে অংকগুলো বাস্তবতার আলোকে বড্ড বেশি বেমানান। তাই মাথাপিছু আয়ের এই অলীক উদাহরণ নিয়ে মাতামাতি না করে বাস্তবতায় ফিরে আসাটাই শ্রেয়।
দেশ উন্নত হলে উন্নয়নের হাওয়া শুধুমাত্র দ্রব্যমূল্যের গায়ে না লেগে সকল ক্ষেত্রে লাগা বাঞ্ছনীয়। মাথাপিছু আয় কাগজে-কলমে না বাড়িয়ে শ্রমের বাজারে বাড়াতে হবে, যাতে করে উন্নয়নের সুফল একজন দিনমজুর থেকে শুরু করে নি¤œ আয়ের লোক পায় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে যাতে করে সকলে সুস্থ সুন্দরভাবে দিনাতিপাত করতে পারে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ধনী-গরিব সকলের স্বাচ্ছন্দের সহিত প্রতিটি উৎসব পালনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সমাজে ধনী-গরিব বৈষম্য দূর হবে। নীতি নির্ধারকদের বিষয়গুলো অন্তর দিয়ে অনুভব করে আশু সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের বিপক্ষে যে একাদশ দিয়ে মাঠে নামছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান