পিলখানা ম্যাসাকার তদন্ত কমিশন : রিপোর্টের জন্য জনগণের রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা
১৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০১ এএম

আমি এর আগেও একাধিক বার বলেছি যে, শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের নিষ্ঠুর স্বৈরাচারি শাসনামলে অন্তত ৪টি বড় ধরনের গণহত্যা সংঘঠিত হয়েছে। এসব গণহত্যা শুরু হয় পিলখানায় ৫৭ জন সেনা অফিসারসহ ৭৪ জনকে হত্যার মাধ্যমে। তারপর শাপলা চত্বরের ম্যাসাকার, যেখানে আলেম-ওলামা হত্যার সংখ্যা সঠিকভাবে এখন পর্যন্ত প্রকাশিত না হলেও বেসরকারি তদন্ত মতে নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৭০০ থেকে ২ হাজার পর্যন্ত ওঠানামা করছে। শাপলা ম্যাসাকরের ওপর এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিশন বা কমিটি গঠন করা হয়নি। তবে হেফাজতে ইসলামের একজন নেতা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হুকুমদাতা হিসেবে শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে অন্যান্য দায়িত্বশীল ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। জামায়াতে ইসলামীর নেতা মওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদ-াদেশ দেওয়ার পর দেশব্যাপী যে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয় সেই সমস্ত বিক্ষোভ সমাবেশে শেখ হাসিনার পুলিশ ও র্যাব নির্বিচার গুলি চালায়। ফলে ২৫৭ ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন। এই গণহত্যার ব্যাপারেও কোনো তদন্ত কমিশন বা কমিটি গঠন করা হয় নাই। জুলাই বিপ্লবে যে দেড় হাজার ছাত্র-জনতা নিহত এবং প্রায় ২৬ হাজার আহত হয়েছেন সেই গণহত্যার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং মে মাসের মধ্যেই চার্জশিট দেওয়া হবে বলে আইসিটির চিফ প্রসিকিউটর জানিয়েছেন।
এগুলোর মধ্যে পিলখানা ম্যাসাকারের তদন্ত নিয়ে হাস হাস (Hush Hush) বা চাপা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যদিও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সৎ এবং ন্যায়পরায়ন ব্যক্তিকে কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয়েছে তবুও এই তদন্ত নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান জেনারেল ফজলুর রহমান বিডিআরের সাবেক ডিজি। পদুয়ায় তিনি পাল্টা আঘাত করে অনেক বিএসএফ জওয়ানকে সমুচিত জবাব দিয়েছেন। তারপরেও সেই ফিসফিসানি। এর কারণ কী হতে পারে? সেই কারণটি খোঁজার চেষ্টা করছি।
জুলাই বিপ্লবের পর বিশেষ করে গত বছরের ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের ১৭ কোটি ৪০ লাখ মানুষ অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করছেন। পত্রপত্রিকায় ইচ্ছামত রিপোর্ট লেখা যাচ্ছে এবং কলামিস্টরা মন্তব্য করতে পারছেন। অনুরূপভাবে রাজনৈতিক নেতা এবং নাগরিক সমাজ যার যা মনে হচ্ছে তাই বলতে পারছেন। তথ্য প্রবাহের দ্বার অবারিত হওয়ার ফলে নানান বিষয় নিয়ে নানান জন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। তেমনি শাপলা ম্যাসাকার নিয়েও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা তাদের সাক্ষাৎকারে ভেতরের খবর জানাচ্ছেন। এই রকম কয়েকটি ইন্টারভিউ উল্লেখ করার মতো। এদের মধ্যে রয়েছেন মহিলা ক্যাপ্টেন শাহনাজ। তার স্বামী ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন মেজর। তিনি এই ম্যাসাকারে নিহত হন। অন্যজন মিসেস তানভির। তার স্বামী মি. তানভিরও এই ম্যাসাকারে নিহত হন এবং তার শরীর আগুনে পোড়ানো হয়। এসব কথা তারা নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে ইন্টারভিউয়ে বলেছেন। আরেকজন একাধিক মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির। তিনি একাধিক সাক্ষাৎকার দেওয়া ছাড়াও বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিকে এবং নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক বাংলাদেশ’ নামের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় এই ম্যাসাকারের ওপর একটি তথ্য সমৃদ্ধ প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। আরো একজন সেনা অফিসার আরেকটি ইন্টারভিউ দিয়েছেন। তিনি হলেন কর্নেল মুস্তাফিজ। এই ৪ জন ছাড়াও আরো অন্তত ৪ জন সাবেক সেনা অফিসার সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
॥দুই॥
এদের সকলেই তাদের ইন্টারভিউয়ে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন যে, এই ম্যাসাকারে যারা অংশ নিয়েছিল তাদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তিকে বিডিআরের পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখা গেলেও তারা হিন্দি ভাষায় কথা বলেছেন। ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসির স্পষ্ট বলেছেন যে, এই ম্যাসাকারে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন জাঁদরেল নেতা। তাদের নাম পর্যন্তও তিনি উল্লেখ করেছেন। এসব ইন্টারভিউ এখন ফেসবুক এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। এদের একেকজনের ইন্টারভিউয়ে লক্ষাধিক লাইক পড়ছে এবং হাজার হাজার কমেন্ট আসছে। এরা ছাড়াও ফ্রান্সের বিখ্যাত বাঙ্গালী ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য একাধিক ইউটিউব ভিডিওতে বলেছেন যে, এই হত্যাকা-ে আওয়ামী লীগ ও ভারতের হাত রয়েছে। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ও সাড়া জাগানো ইউটিউব ভিডিও হলো নিউইয়র্কের সুপরিচিত ইউটিউবার ইলিয়াস হোসাইন। ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের ভিডিওতে তিনি শুধুমাত্র চাঞ্চল্যকরই নয়, রীতিমত লোমহর্ষক তথ্যচিত্র দেখিয়েছেন।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বাংলাদেশের বর্তমান অস্থির সময়ে ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য, কনক সরোয়ার, ইলিয়াস হোসাইন প্রমুখের ইউটিউব ভিডিওর প্রভাব বাংলাদেশের জনগণ বিশেষ করে তরুণ সমাজের ওপর ব্যাপক। বেশ একটি লম্বা সময় পর শাহ্বাগীরা লাকি আক্তারের নেতৃত্বে ধর্ষণ ইস্যুকে পুঁজি করে মাঠে নেমেছিল। এখানে আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই যে, ধর্ষকদের কোনো ছাড় দেওয়ার জায়গা নাই। ইতোপূর্বে টাঙ্গাইলে ধর্ষণের মামলায় এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে। আলোচ্য ধর্ষণ কেসেও ড. ইউনূস ত্বরিৎ পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতোমধ্যেই ৮ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সংক্ষিপ্ততম সময়ে বিচার করা এবং বিচারে দোষী প্রামাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ধর্ষকের দেশের বাড়ি ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত জনতা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। সরকার এই ভাঙচুরের জন্য কারো বিরুদ্ধে কোনো মামলা করেনি।
সরকারের ত্বরিৎ পদক্ষেপ সত্ত্বেও এই শাহ্বাগীরা এটিকে ইস্যু বানিয়ে পুলিশের গায়ে হাত তুলেছে। পুলিশের আইজি সবিনয়ে বলেছেন যে, আপনারা আমাদেরকে আমাদের কাজ করতে দিন। প্লিজ, আমাদেরকে আক্রমণ করবেন না। তারপরেও লাকি আক্তাররা ডিএমপির একজন সিনিয়র অফিসারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এরপর তারা গত ১৫ মার্চ শাহ্বাগে মিলিত হওয়া এবং সেখান থেকে মিছিল করার কর্মসূচী ঘোষণা করে। এদেরকে পূর্ণ সমর্থন দেয় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিবি। সিপিবির এই চক্রান্তমূলক সমর্থনের বিরুদ্ধে পিনাকী ভট্টাচার্য গত ১৫ মার্চ সিপিবি অফিস দখল করার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। পিনাকীর আহ্বানে ভীত হয়ে সিপিবি পুলিশের আশ্রয় নিলে ১৫ মার্চ সকাল ১০টার আগেই অসংখ্য পুলিশ সিপিবি অফিস ঘিরে রাখে যাতে করে বিক্ষুব্ধ জনগণ সিপিবি অফিস ঘেরাও করতে না পারে। এই ঘটনার উল্লেখ একারণেই করলাম যে, জুলাই বিপ্লবের পর অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভিন্ন ভিন্ন মতাদর্শ থাকলেও আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী ঘরানার নেতাকর্মীদের কঠোরভাবে মোকাবেলার ব্যাপারে জনগণ আপোসহীন।
॥তিন॥
পিলখানা ম্যাসাকার নিয়ে অতীতে ৩টি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল। প্রথম দুটি কমিটি তাদের কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি। তৃতীয় কমিটি কতদূর কি পেরেছে অথবা তার রিপোর্ট জমা দিয়েছে কিনা সেটি জানা যায়নি। বিভিন্ন ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে যেসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে সেগুলো সংকলন করলে নি¤েœাক্ত চিত্রটি বেরিয়ে আসে। (১) ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এবং তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম দীর্ঘ সময় পিলখানায় কাটিয়েছেন। দুইজন মন্ত্রী ২৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে পিলখানায় অবস্থানের পরেও পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি আবার সেনা অফিসাররা নিহত হলেন কেন? (২) তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ভারত সফর থেকে ফিরে আসার পর কতিপয় আর্মি অফিসারকে বিডিআরে পোস্টিং দেওয়া হয়। এমন অফিসারকেও পোস্টিং দেওয়া হয় যারা ২৩ ফেব্রুয়ারিতেও জয়েন করেছেন। এই যে নতুন করে শেষ মুহূর্তে পোস্টিং দেওয়া হয় তাদের মধ্যে অধিকাংশ অফিসারই হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে শেষ মুহূর্তে এইসব পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল কেন? এদের মধ্যে ছিলেন কর্নেল গুলজার, ক্যাপ্টেন তানভিরসহ আরো অনেকে। (৩) অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার তোরাব আলী এবং তার ছেলে শীর্ষ সন্ত্রাসী লেদার লিটন এর দুই একদিন আগে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলে নূর তাপসের সাথে গোপন বৈঠক করেছে। কল রেকর্ড চেক করে দেখা যায় যে, এই সুবেদারের কাছে ২৪, ২৫, ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর থেকে একটা মিসডকল ও চারটা কল করা হয়। ভারত থেকেও চারটা কল হয়। তার কাছে দেশের বাইরে থেকে কল এসেছে ৯টি। রিপোর্ট মোতাবেক, ঐ সময় তোরাব আলী সহ ৫/৬ জন আওয়ামী লীগ নেতার কাছে অন্তত ৩০০টি টেলিফোন কল আসে। এরমধ্যে অন্তত ১০০টি কল ডিলিট করা হয়। কর্নেল শামসসহ ৪ জন সেনা অফিসার এই হত্যাকা-ের মধ্যেও বিকাল ৩টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অফিস যমুনায় যান। (৪) জেনারেল শাকিলসহ কয়েকজন সেনা অফিসারকে সকাল পৌনে ১০টার মধ্যে হত্যা করা হয়। কিন্তু সকাল ১০টার সময় এটিএন নিউজের রিপোর্টার মুন্নি সাহা কিভাবে একজন বিদ্রোহীর সাথে কথা বলেন? সাত মসজিদ রোডে যে গেট রয়েছে সেখান থেকে পূর্ব দিকে সামান্য এগোলে আম্বালা সুইটস। সেখানে গোয়েন্দা বিভাগের একজন সিনিয়র অফিসার ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলেন। অথচ তিনি ভেতরের হত্যাকা- সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি। বিকাল ৩টায় ১৪ জন বিডিআর জওয়ান যমুনায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। এর আগেই কিন্তু ৫ থেকে ৬ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে। দুপুর ২টায় দুই জনের ডেড বডি পাওয়া যায়। (৫) সকালবেলা যেসব বিদ্রোহীর হাত অন্তত ৮/১০ জন সেনা অফিসারের খুনে লাল হয়েছিল তাদের সাথে ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় যমুনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন কিভাবে? (৬) ঐদিন বিকালে শেখ হাসিনা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন কিভাবে? সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরেও ঐ ১৪ জন ঘাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে ফিরে এসে ঐ রাতে এবং পরদিন আবার গণহত্যা শুরু করে কীভাবে? (৭) ২০০৮ সালের ১৭-১৮ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বাসাতে হাবিলদার মনির, সিপাহি শাহাব, সিপাহি মনির বৈঠক করেন। নির্বাচনের আগের দিন সন্ধ্যায় বিডিআর দরবার সংলগ্ন মাঠে সিপাহি কাজল, সেলিম, মঈন, রেজা এবং বেসামরিক ব্যক্তি জাকিরসহ কয়েকজন বৈঠক করেন। বিডিআর হত্যাকা-ের আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় রাজধানীর বনানীতে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বাসায় বিডিআরের ডিএডি হাবিব, ডিএডি জলিল, ল্যান্সনায়েক রেজাউল, হাবিলদার মনির, সিপাহি সেলিম, কাজল, শাহাবউদ্দিন, একরাম, আইয়ুব, মঈন, রুবেল, মাসুদ, শাহাদত ও জাকির (বেসামরিক) বৈঠক করেন। ওপরের তথ্যগুলো পাওয়া যায় ব্রিগেডিয়ার (অব) হাসান নাসিরের প্রবন্ধে।
২৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট বিডিআর গেটে উপস্থিত হয়। তারা দেখে যে তার আগেই র্যাবের একটি ইউনিট সেখানে পৌঁছে গেছে। র্যাব কেন ভেতরে ঢুকছে না সেটি আর্মি ইউনিট জানতে চায়। তারা বলে যে ওপরের নির্দেশে তারা ভেতরে ঢুকছে না। আর্মি ইউনিটকে পিলখানার ভেতর থেকে একটি রকেট ছোঁড়া হয়। ফলে একজন আর্মি জওয়ান নাকি মারা যান। এরপর আর তো কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয় না। বরং এ ঘটনা জানালে ওপর থেকে নাকি নির্দেশ আসে যে তোমরা ২ মাইল দূরে সরে যাও। যেখানে কোনো অনুমতির অপেক্ষা না করে আর্মি ইউনিটের ভেতরে ঢোকার কথা এবং বিদ্রোহীদেরকে ক্রাশ করার কথা, সেখানে পেছনে হটার আদেশ সত্যি রহস্যময়।
মেজর তানভিরের স্ত্রীকে হাত ধরে টেনে হিঁচড়ে বাইরে আনা হয়। যারা তাকে ঘর থেকে বের করে দেয় তাদের ৩ জন হিন্দিতে কথা বলে। এর আগে মিসেস তানভিরের স্বামী মি. তানভির টেলিফোনে তার স্ত্রীকে বলেন যে, ভারতীয়রা পিলখানায় ঢুকেছে। ক্যাপ্টেন (অব.) শাহনাজ জাহানও স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, তিনি বিডিআরের পোশাক পরা কয়েকজন জওয়ানকে হিন্দিতে কথা বলতে শুনেছেন। কর্নেল (অব.) মুস্তাফিজও স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, ইন্ডিয়া এবং আওয়ামী লীগ যে এর পেছনে আছে তার প্রমাণ রয়েছে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান বলেন যে যেহেতু তিনি ভারত বিরোধী তাই তাকে ২ বার আয়নাঘরে নেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য তাদের ভিডিও ইন্টারভিউয়ে তারাই দিয়েছেন।
এই ধরনের আরো অসংখ্য তথ্য বেরিয়ে আসছে। যেমন ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিবশংকর মেননকে সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠান। সোয়াচের অধ্যাপক আভিনাশ পালিওয়াল তার সাম্প্রতিক বইতে জানিয়েছেন, হাসিনাকে উদ্ধার করতে তখন প্রায় ১০০০ ভারতীয় ছত্রীসেনা পশ্চিমবঙ্গের কলাইকু-া বিমানঘাঁটিতে অবস্থান নেয়।
জেনারেল ফজলুর রহমানের তদন্ত রিপোর্টে কি এগুলো স্থান পাবে? এ নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলে চাপা গুঞ্জন। সারাদেশের মানুষ এই তদন্ত কমিশনের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন।
Email: journalist15@gmail.com
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

সাঈদীকে জুডিসিয়াল ও মেডিকেল কিলিং করা হয়েছে - মাসুদ সাঈদী

ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে হিন্দু নিপীড়ন নিয়ে যা বলেছিলেন তুলসী গ্যাবার্ড

মুসলমানদের উপরে হিন্দুদের হামলায় উস্কানি দিলেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী

এনামুলের ব্যাটে মোহামেডানকে থামিয়ে গাজী গ্রুপের টানা পঞ্চম জয়

গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত বেড়ে ৪১৩, বিভিন্ন দেশের নিন্দা

রামগড়ে এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের দায়ে ২জনকে গ্রেফতার

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা, লোহিত সাগরে প্রত্যাঘাত হুথিদের

ট্রেনিংয়ে না থেকেও ভাতা নেন সহকারী শিক্ষা অফিসার

নীলফামারীতে পলিথিন মজুদ, ব্যবসায়ীর দশ হাজার টাকা জরিমানা

তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য গুরুতর: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রূপালী ব্যাংকের ব্যবসায়িক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

সুনামগঞ্জ পৌর শহরে তালা ভেঙ্গে দুই বিপণী বিতানে চুরি

নারায়ণগঞ্জে গৃহবধূ ফিজা হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

কক্সবাজার শহরে সড়ক অবরোধ করে মানব বন্ধনে উচ্ছেদ আতঙ্কগ্রস্থ হাজারো নারী পুরুষ

আনোয়ারায় বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চাল সংগ্রহ না করে ডব্লিউকেসি দিলেন গুদাম কর্মকর্তা

শেখ হাসিনা ও রেহানা পরিবারের ৩৯৪ কোটি টাকা ফ্রিজ

মায়ের সাথে দূর্ব্যবহারের জেরে চাচাকে ছুরিকাঘাত ভাইপোর

গোয়ালন্দে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ তিন যুবক গ্রেপ্তার

আশুলিয়ায় স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬, স্বর্ণ-টাকা উদ্ধার