শিক্ষাব্যবস্থার ব্ল্যাকবক্স খোলার এখনই সময়

Daily Inqilab ড. মো. আবু হাসান

০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম

শিক্ষা ব্যবস্থার ‘ব্ল্যাকবক্স’ ধারণাটি একটি রূপক, যেখানে ‘ইনপুট’ (যেমন: শিক্ষার্থী, পাঠ্যক্রম, শিক্ষক, সম্পদ) এবং ‘আউটপুট’ (যেমন: পরীক্ষার ফলাফল, ডিগ্রি) স্পষ্টভাবে দেখা যায়, কিন্তু মধ্যবর্তী প্রক্রিয়া (কীভাবে শিক্ষার্থী শিখছে, আদৌও কিছু শিখছে কি-না, শিখন-শেখানো কৌশল) অস্পষ্ট বা অজানা থাকে। এই অস্পষ্টতাই ‘ব্ল্যাক বক্স’-এর মূল বৈশিষ্ট্য। শিক্ষা ব্যবস্থার ‘ব্ল্যাক বক্স’ খোলার অর্থ হলো শিখন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, বৈজ্ঞানিক, এবং শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক করা, যা শিক্ষার মানোন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। তাই, গুরুত্বপূর্ণ হলো, আজ কিংবা কাল, শিক্ষা ব্যবস্থার ‘ব্ল্যাক বক্স’ খুলতেই হবে। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চেয়ে যোগ্য, মেধাবী, সৃষ্টিশীল ও দেশপ্রেমিক ব্যক্তি বাংলাদেশে নিঃসন্দেহে দ্বিতীয়টি নেই। তাই, ২৪ এর ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের পর দেশের সকল বিবেকবান মানুষ বিশ্বাস করেছিল, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার শুধু রাষ্ট্র সংস্কার করে আমাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর করে দেবেন না; উপরন্তু, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক সম্পদ এ দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর পথের বাধা সরিয়ে দেবেন। কিন্তু, পরিহাসের বিষয় এই যে, অতীতের মতোই স্পেশালাইজেশন, ডিভিশন অফ লেবার, মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতাকে প্রাধান্য না দিয়ে আমলাতন্ত্র নির্ভরতা স্পষ্ট হয়ে গেছে। ফলে, দলীয়করণ, কোটা, আত্মীয়তা, সোশ্যাল ক্যাপিটাল কিংবা ভাগ্যের সহায়তায় ডানিং-ক্রুগার ইফেক্টে আক্রান্ত আমলা ও নীতিনির্ধারকরা আপাতত তরুণ জনগোষ্ঠীর পথের বাধা সরিয়ে দেবেন এই আশা বাতুলতা। কারণ, বাস্তবসম্মত, দক্ষতাভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করে মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার কোনও উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। অথচ, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের এই আন্তঃসম্পর্কের গুরুত্ব উপলব্ধি করেই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তাঁর ‘পথের বাধা সরিয়ে দিন, মানুষকে এগুতে দিন’ শিরোনামের বক্তৃতার সংকলনে উল্লেখ করেছেন, মানুষ জন্মগতভাবে সৃজনশীল কিন্তু সমাজের বাধা তাকে পঙ্গু করে দেয় এবং বাংলাদেশ ‘গরিব দেশ’ নয়; বরং, ‘মানবসম্পদ ব্যবহারে ব্যর্থ দেশ’। দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক উন্নয়নে বিশ্ববাসীকে অবিরাম অনুপ্রেরণা জোগানো একজন আলোকিত বিশ্বমানব জীবনের পড়ন্ত বেলায় তাঁর নিজ দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর পথের বাধা সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। আর তাই, শিক্ষাবিদ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা প্রধান উপদেষ্টার নিকট বিনীত আহ্বান জানাই, শিক্ষা ব্যবস্থার ব্ল্যাক বক্স খুলে ‘পথের বাধা সরিয়ে দিন, মানুষকে এগুতে দিন’।

তর্কাতীতভাবে, বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম বড় স্ক্যাম হলো বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা। ব্রিটিশ আমলের উত্তরাধিকার বয়ে নেওয়া বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা যেন সাম্রাজ্যবাদ আর বাণিজ্যিকীকরণের এক নতুন নীল নকশা। নীতিনির্ধারক, রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী ও বুদ্ধিজীবীরা সম্মিলিতভাবে একটি অলিগার্ক গঠন করে তাদের সন্তানদের জন্য বিদেশে লেখাপড়া নিশ্চিত করেছে আর আমজনতার জন্য বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসলীলায় পরিণত করে লুটপাটের হাতিয়ার করেছে। ফলে, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার উদ্দেশ্য, পদ্ধতি এবং ফলাফল ধারাবাহিকভাবে শহর ও গ্রামের মধ্যে, ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে এবং শিক্ষার মান ও সুযোগের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি করে চলেছে। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এখনও যেন ব্রিটিশদের মতোই কেরানি উৎপাদন কারখানা। বর্তমানে বাংলাদেশের ২০ হাজার ৩১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোট ৩৮টি সরকারি ও ৭২টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, ৫৫টি পাবলিক ও ১১৫টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ১৯২১টি স্নাতক পাস (ডিগ্রি), ৮৮১টি স্নাতক, ১৭৬টি স্নাতকোত্তর ও ৩১৭টি পেশাদার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন একেকটি শিক্ষা কারখানা। সেখান থেকে প্রতিবছর প্রায় ২৫ লাখ তরুণ-তরুণী চাকরির বাজারে প্রবেশ করলেও সবার চাকরি জোটে না। আর বড় বড় চাকরিগুলো চলে যায় ভারতীয় আর শ্রীলঙ্কানদের হাতে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে শুরু হওয়া অটো পাস, শর্ট সিলেবাস, উচ্চতর গণিত ও বিজ্ঞানে অবহেলা আর অবাধ নকলনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে পেছনে হাঁটার যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, গত দেড় দশকে তাকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ধ্বংসলীলার দ্বারপ্রান্তে। ল্যাব ও ল্যাবের উপকরণ এবং তা পরিচালনায় দক্ষ শিক্ষক সৃষ্টি না করে মাধ্যমিক স্তরে ‘এসো নিজে করি’ নির্ভর বিজ্ঞান বইয়ের প্রচলন করে আশির দশকে দেশের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে কফিনে পোরার প্রস্তুতি শুরু হয়। এই বিভীষিকার কারণে নব্বইয়ের দশকে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা নেমে আসে অর্ধেকে আর বাড়তে থাকে মানবিক আর বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী। স্থাপিত নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাঁচামাল যোগান দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮০% নারী শিক্ষক নিয়োগের বিধান বাস্তবায়ন করতে চালু হয় এমসিকিউ পদ্ধতি, ৫০০টি নির্বাচিত প্রশ্নের প্রশ্ন ব্যাংক আর শিথিল মূল্যায়ন পদ্ধতি। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে একে একে চালু হয় জিপিএ সিস্টেম, পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষা, সৃজনশীল পদ্ধতি, স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে লটারি ও কোটা প্রথা, কলেজে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও অনার্সে ভর্তি। প্রোজেক্ট আর লুটপাটকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষাক্রম নিয়ে একের পর এক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, নকল প্রথার পুনঃপ্রচলন, প্রশ্ন ফাঁস, শিথিল মূল্যায়ন পদ্ধতি এবং বিজ্ঞান ও গণিতকে গুরুত্বহীন করে এমনকি অটোপাস করিয়ে হলেও ৯০% জেন-জি প্রজন্মকে ন্যূনতম গ্রামের কলেজে ডিগ্রি অথবা উপজেলার কলেজে অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রী বানিয়ে ক্লাস রুমে আটকে রাখা হয়েছে। ফলে, যত বেশি মানুষ মানহীন শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে, বেকারের সংখ্যা তত বাড়ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে থেকে উচ্চশিক্ষা স্তরে বেকারত্বের হার দ্বিগুণের বেশি এবং গত এক দশকে দেশে শিক্ষিত বেকার তিন গুণ বেড়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী প্রায় ১১ কোটি কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫৮.২% শতাংশ কর্মে নিয়োজিত। কর্মসংস্থানের মান নিয়েও চিন্তিত হওয়ার অবকাশ রয়েছে; কারণ, কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর ৮৫.১% অনানুষ্ঠানিক পেশায় (চাকুরির নিরাপত্তা শূন্য) নিয়োজিত। বিবিএসের সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, মোট বেকার জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭৯ শতাংশই তরুণ (১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী)। আর, তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে যাঁরা উচ্চশিক্ষিত, তাঁদের বড় অংশই বেকারত্বে ভুগছেন। বিবিএসের বাস্তবায়নাধীন অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর প্রাক্-প্রতিবেদন বলছে, গত ১০ বছরে মাত্র সাড়ে ৬২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলেও ২০২৪ সালেই বেকার হয়েছে ৬২ লাখ মানুষ। অথচ, দশকব্যাপী মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৭ শতাংশ কর্মক্ষম জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বোনাসকালের স্বর্ণযুগ পার করে এসেছে; কারণ, দেশের তরুণ কর্মজীবীর সংখ্যা ইতোমধ্যেই কমতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশের গণমানুষের পথের সেই চিরচেনা, ক্লান্তিকর ও অনিশ্চিত বাঁধা সরিয়ে মানুষকে এগিয়ে নিতে করণীয়সমূহ:

১। শিক্ষা খাতে বিশ্বের প্রায় সর্বনি¤œ; এমনকি, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বনি¤œ ব্যয় করার ফলাফল হিসেবে আমরা দেখতে পাচ্ছি শিক্ষার মান নির্দেশক তিনটি বৈশ্বিক শিক্ষা সূচকেই (বৈশ্বিক জ্ঞান সূচক, বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচক এবং গ্লোবাল ট্যালেন্ট কম্পিটিটিভনেস ইনডেক্স) বাংলাদেশের অবস্থান প্রত্যাশিতভাবে তলানিতে; এমনকি দুটি সূচকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার নিচে। সুতরাং, জিডিপির অন্তত ৫% শিক্ষা ও গবেষণায় বরাদ্দ দিতে হবে।

২। বাংলাদেশ ছাড়া এমন একটি দেশও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে শিক্ষকের কদর এত কম। শিক্ষার মান বাড়াতে হলে ভালো মানের শিক্ষক লাগবে। শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে ও প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতা হতে হবে পিএইচডি; পোস্টডক ও ইমপ্যাক্ট জার্নালে প্রকাশনা থাকা যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ও বিসিএস (কারিগরি শিক্ষা) এর নিয়োগের মতোই পিএসসি থেকে বিসিএস (প্রাথমিক) ও বিসিএস (মাধ্যমিক) ক্যাডার সৃষ্টি করে মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ দিতে হবে।

৩। কোয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের গণহারে পাস করতে ও শিক্ষকদের পাস করাতে বাধ্য না করে মানসম্মত ও আন্তর্জাতিক মানদ- অনুসরণ করে ফলাফল মূল্যায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। শ্রমবাজারের ডিমান্ড ফোরকাস্ট করে সে অনুসারে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দিকনির্দেশনা প্রদান করে ধাপে ধাপে পাসের হার যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। গণহারে এসএসসি/এইচএসসি পাস করিয়ে সবাইকে শ্রেণীকক্ষে আটকে রাখার প্রবণতা বন্ধ করে প্রকৃত মূল্যায়নে অকৃতকার্য সিংহভাগ শিক্ষার্থীদের কর্মে নিয়োজিত করার উদ্যোগ নিতে হবে।

৪। গুণগত ও পরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জাতীয় শিক্ষাক্রম এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন উৎপাদনশীল নাগরিক হয়ে ওঠে। নবম ও দশম শ্রেণিতে বিভাগ (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা ইত্যাদি শাখা) বিভাজন না করে পাঠ্যক্রমে বাধ্যতামূলক বিষয় (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান ইত্যাদি) নির্ধারণ করুন। ১৫-২০টি বিষয়ের গুচ্ছ (পদার্থ, সমাজবিজ্ঞান, রসায়ন, ফিন্যান্স, মনোবিজ্ঞান, মিউজিক, আর্ট/ডিজাইন, অর্থনীতি ইত্যাদি) থেকে শিক্ষার্থীদের ঐচ্ছিক বিষয়গুলো পছন্দ করার স্বাধীনতা দিন।

৫। প্রতি বছর জব মার্কেটে প্রবেশ করা ২৫ লাখের মধ্যে ৫ থেকে ১০ লাখ দেশের বাইরে যান, যাঁদের অধিকাংশই অদক্ষ। ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরা ঠেকান; এদেরকে দক্ষ বানিয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নিন। প্রায় সমান সংখ্যক প্রবাসী পাঠিয়ে ভারত কীভাবে বাংলাদেশের চেয়ে ৫ গুণ রেমিট্যান্স বেশি অর্জন করে সেটা পর্যালোচনা করে করণীয় ঠিক করুন।

৬। প্রতিটি জেলায় একটি/দুটি করে সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত অনুযায়ী বিষয়ভিত্তিক যৌক্তিক আসনসংখ্যা রেখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বাদবাকি সকল সরকারি-বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স প্রোগ্রাম বন্ধ করতে হবে। অনার্সের প্রতিটি বিষয়ে ২৫০-৩০০ ছাত্র ভর্তির বিধান বাতিল করে সর্বোচ্চ ৫০-১০০ আসন রাখুন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সকল কলেজে বাধ্যতামূলক ভোকেশনাল কোর্স চালু করুন।

৭। শিক্ষা সংস্কার কমিশন ব্যতীত অন্যান্য সংস্কার কমিশনগুলো প্রয়োজনীয় কিন্তু অপর্যাপ্ত। অথচ, শিক্ষা সংস্কার কমিশন ছিল বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র সংস্কারের পর্যাপ্ত শর্ত। আবার, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়ায় অতীতের মতোই মানব সম্পদ উন্নয়ন ও শিক্ষাখাতকে অবহেলা করা হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কার অর্থবহ ও টেকসই করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কমিশনগুলোর পাশাপাশি অতীব জরুরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বোনাসকালের প্রায় হারিয়ে ফেলা সম্ভাবনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

লেখক: বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার কর্মকর্তা, অর্থনীতির শিক্ষক ও গবেষক
Email: hhafij@yahoo.com


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বই আত্মার মহৌষধ
পহেলা বৈশাখ শুধু একটি দিন নয়
সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে
শুভ নববর্ষ
আন্তঃধর্মীয় সংলাপের গুরুত্ব
আরও
X

আরও পড়ুন

মতলবে উপজেলা বিএনপির বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

মতলবে উপজেলা বিএনপির বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

ফিলিস্তিনবাসীদের শান্তি কামনায়   বিশেষ দোয়া মাহফিল

ফিলিস্তিনবাসীদের শান্তি কামনায়  বিশেষ দোয়া মাহফিল

বর্ণাঢ্য ‘ড্রোন শো’ দেখে মুগ্ধ লাখো মানুষ

বর্ণাঢ্য ‘ড্রোন শো’ দেখে মুগ্ধ লাখো মানুষ

নতুন বছরে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হোক  : মঞ্জু

নতুন বছরে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হোক : মঞ্জু

বুধবার ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বুধবার ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পুরোনো পদে ফিরলেন গাঙ্গুলি

পুরোনো পদে ফিরলেন গাঙ্গুলি

আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং নারী ক্রিকেট দল

আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং নারী ক্রিকেট দল

রূপায়ণ সিটিতে শতকন্ঠে বর্ষবরণ

রূপায়ণ সিটিতে শতকন্ঠে বর্ষবরণ

বর্ষবরণকে স্বাগত জানিয়ে গাজীপুরে জেলা বিএনপির শোভাযাত্রা

বর্ষবরণকে স্বাগত জানিয়ে গাজীপুরে জেলা বিএনপির শোভাযাত্রা

আমরা নতুন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি: ফারুকী

আমরা নতুন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি: ফারুকী

ভারতীয়দের হজ কোটা ৮০ শতাংশ কমাল সৌদি

ভারতীয়দের হজ কোটা ৮০ শতাংশ কমাল সৌদি

চীনা দূতাবাসের সৌজন্যে ঢাকার আকাশে ব্যতিক্রমী ড্রোন শো

চীনা দূতাবাসের সৌজন্যে ঢাকার আকাশে ব্যতিক্রমী ড্রোন শো

নাসিরনগর প্রশাসনের বর্ষবরণে উপস্থাপক ছাত্রলীগ কর্মী, সাংবাদিককে এসিল্যান্ড বললেন কিছু হবে না!

নাসিরনগর প্রশাসনের বর্ষবরণে উপস্থাপক ছাত্রলীগ কর্মী, সাংবাদিককে এসিল্যান্ড বললেন কিছু হবে না!

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আহমাদ মারা গেছেন

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আহমাদ মারা গেছেন

পহেলা বৈশাখ আমাদের সংস্কৃতি, ভালোবাসা আর আনন্দের  প্রতীক : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা

পহেলা বৈশাখ আমাদের সংস্কৃতি, ভালোবাসা আর আনন্দের প্রতীক : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা

নববর্ষে আইন শৃঙ্খলা সুরক্ষায়  প্রশংসনীয় ভূমিকায় র‍‍্যাব - ৯

নববর্ষে আইন শৃঙ্খলা সুরক্ষায়  প্রশংসনীয় ভূমিকায় র‍‍্যাব - ৯

ছাত্রদলের সহ সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করায় কুপিয়ে আহত করলো সভাপতি-সম্পাদক

ছাত্রদলের সহ সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করায় কুপিয়ে আহত করলো সভাপতি-সম্পাদক

সর্বাধুনিক যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে উত্তর কোরিয়া

সর্বাধুনিক যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে উত্তর কোরিয়া

লৌহজংয়ে বিএনপির পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা

লৌহজংয়ে বিএনপির পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা

নতুন বছরের প্রথমার্ধে এর মাধ্যমে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে আসবে - প্রিন্স

নতুন বছরের প্রথমার্ধে এর মাধ্যমে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে আসবে - প্রিন্স