ইসরায়েলি গণহত্যায় মার্কিন সমর্থন বন্ধের আহ্বান ইরানের

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৭ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৮ এএম | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৮ এএম

ইসরায়েলের গণহত্যা ও সন্ত্রাসবাদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি। একই সঙ্গে তিনি মার্কিন প্রশাসনকে ইয়েমেনি জনগণের বিরুদ্ধে হামলা বন্ধের আহ্বান জানান। ইরান দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিন ও মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির কঠোর সমালোচনা করে আসছে, আর এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

 

রবিবার (১৭ মার্চ) নিজের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে আরাকচি বলেন, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরানের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের ওপর আমেরিকার কোনো অধিকার নেই। তিনি উল্লেখ করেন, সেই বিপ্লবের মাধ্যমেই মার্কিন সমর্থিত শাহ সরকার ক্ষমতা হারিয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। তাই ওয়াশিংটনের উচিত ইরানের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি মেনে নেওয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের হস্তক্ষেপ কমানো।

 

গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও হত্যাযজ্ঞের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সহযোগিতা রয়েছে বলে দাবি করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মার্কিন প্রশাসন ইসরায়েলকে হাজার হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র সরবরাহ করেছে, যা মূলত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি এই পদক্ষেপের জন্য আমেরিকাকে সরাসরি দায়ী করেন।

 

আরাকচি আরও বলেন, বাইডেন প্রশাসন ২,৩০০ কোটি ডলারের সমরাস্ত্র ইসরায়েলকে দিয়েছে, যা তাদের নির্বিচার হত্যাকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে। তিনি দাবি করেন, গাজায় ৬০,০০০-এর বেশি নিরপরাধ মানুষ নিহত হয়েছেন, যার সম্পূর্ণ দায় আমেরিকার। ইরানের পক্ষ থেকে বারবার এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধের আহ্বান জানানো হলেও ওয়াশিংটন ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করেনি, বরং তাদের সমর্থন আরও জোরদার করেছে।

 

তিনি আমেরিকার নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি সত্যিই তারা মানবাধিকারের পক্ষে থাকে, তবে অবিলম্বে ইসরায়েলের প্রতি সব ধরনের সহযোগিতা বন্ধ করা উচিত। পাশাপাশি তিনি মার্কিন নীতির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান, যাতে মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা যায়।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এমন উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। ইরান বরাবরই ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যভাবেই ইসরায়েলের পক্ষে রয়েছে। ফলে এই উত্তেজনা সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা। তথ্যসূত্র : পার্সটুডে


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

হিন্দুত্ববাদীদের টার্গেট আওরঙ্গজেবের মাজার, ভারতে নতুন উত্তেজনা
গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহত ২০৫, স্থল আক্রমণের হুমকি
কোর্টের আদেশ অমান্য করে ট্রাম্পের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন!
গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা, নিহত ১৩১ জনের বেশি
শান্তিরক্ষীই যুদ্ধ
আরও
X

আরও পড়ুন

ঈদে ট্রেনযাত্রা : আজ বিক্রি হবে ২৮ মার্চের টিকিট

ঈদে ট্রেনযাত্রা : আজ বিক্রি হবে ২৮ মার্চের টিকিট

হিন্দুত্ববাদীদের টার্গেট আওরঙ্গজেবের মাজার, ভারতে নতুন উত্তেজনা

হিন্দুত্ববাদীদের টার্গেট আওরঙ্গজেবের মাজার, ভারতে নতুন উত্তেজনা

বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় জরুরি: প্রধান বিচারপতি

বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় জরুরি: প্রধান বিচারপতি

গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহত ২০৫, স্থল আক্রমণের হুমকি

গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহত ২০৫, স্থল আক্রমণের হুমকি

বিজিবির প্রতিবাদে পিছু হটলো বিএসএফ

বিজিবির প্রতিবাদে পিছু হটলো বিএসএফ

শাহরাস্তিতে প্রবাসীর বাড়ির ছাদে যুবককে ছুরিকাঘাত ও গলা কেটে হত্যা

শাহরাস্তিতে প্রবাসীর বাড়ির ছাদে যুবককে ছুরিকাঘাত ও গলা কেটে হত্যা

কোর্টের আদেশ অমান্য করে ট্রাম্পের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন!

কোর্টের আদেশ অমান্য করে ট্রাম্পের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন!

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই : প্রেস উইং

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই : প্রেস উইং

গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা, নিহত ১৩১ জনের বেশি

গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা, নিহত ১৩১ জনের বেশি

জবি শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, ১০ বাস আটক

জবি শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, ১০ বাস আটক

জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনায় জাবির ২৮৯ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী বহিষ্কার

জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনায় জাবির ২৮৯ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী বহিষ্কার

লামায় জাল সনদ দিয়ে চাকুরী করছে প্রাথমিকের ৫ শিক্ষক, সরকারি টাকা আত্মসাৎ

লামায় জাল সনদ দিয়ে চাকুরী করছে প্রাথমিকের ৫ শিক্ষক, সরকারি টাকা আত্মসাৎ

সঙ্গে থাকা বাচ্চা মেরে কুকুরটি কামড়ালো বৃদ্ধ, শিশুসহ ছয়জনকে

সঙ্গে থাকা বাচ্চা মেরে কুকুরটি কামড়ালো বৃদ্ধ, শিশুসহ ছয়জনকে

তাহাজ্জুদ নামাজের পর বেতের পড়তে গিয়ে তাহাজ্জুদ বেতের দু’টোই মিস হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে।

তাহাজ্জুদ নামাজের পর বেতের পড়তে গিয়ে তাহাজ্জুদ বেতের দু’টোই মিস হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে।

গুলিস্তানে মার্কেট দখল করতে গিয়ে গ্রেফতার

গুলিস্তানে মার্কেট দখল করতে গিয়ে গ্রেফতার

জামানত ছাড়াই ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা

জামানত ছাড়াই ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা

ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘনিয়ে আসছে রাশিয়ার কুর্স্ক আক্রমণে ভরাডুবি কিয়েভের

ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘনিয়ে আসছে রাশিয়ার কুর্স্ক আক্রমণে ভরাডুবি কিয়েভের

ঢাকায় মার্কিন সিনেটর চার্লস পিটার্স

ঢাকায় মার্কিন সিনেটর চার্লস পিটার্স

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের স্থায়িত্ব নির্ভর করে বিচার বিভাগের ওপর

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের স্থায়িত্ব নির্ভর করে বিচার বিভাগের ওপর

ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ আজ?

ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ আজ?